নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ আমার লেখার ও সাহসের ভিত্তি। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলাই সত্যিকারের দেশপ্রেম মনে করি। সত্যম ব্রুয়ৎ!

মনোয়ার রুবেল

ফ্রিল্যান্স লেখক ও প্রাবন্ধিক

মনোয়ার রুবেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাইভ ফ্রম মন্ত্রী\'স হোম; ও ফর ওড়না

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:০০

- স্যার আমি একটা কবিতা লিখেছি।
- বাহ! তাই নাকি? কি কবিতা?
আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে
কথায় বড় না হয়ে কাজে বড় হবে!
- বাহ! বাহ! বাহ! কিন্তু এটা আগে শুনেছি।
- না স্যার। এটা নিউ। আগে যেটা শুনেছেন সেখানে ছিল আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে। কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে। কাঠামো গত দিক দিয়ে স্যার পার্থক্য আছে। আমার কবিতার প্রথম লাইনে 'হবে' শব্দটি বাক্যের শেষে চলে গেসে। দেখেন স্যার.... দেখেন...
মন্ত্রী খাতা দেখলেন।
- বললেন। ঘটনাতো সত্য। কেমনে করলা এই কাজ!!!
- হুজুর সব আমার ব্রেইনের খেলা। ব্রেইন খাটিয়ে করেছি।
- বাহ বাহ বাহ! চমেৎকার। আর কি করেছ দেখাও দেখি।
- আগের কবিতায় ছিল, মানুষ হতে হবে এই তার পণ। আমি সেটা করেছি, মানুষ হতেই হবে এই তার পণ।
- চমেৎকার। হারামজাদা পুলাপান মানুষ না হইয়া যাইবি কই। মানুষ হতেই হবে এই তার পণ। বাহ!!! তোমার ব্রেইন তো মারাত্মক!! তোমাকে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান করে দিলাম। যাও।
- হুজুর আমি তো চেয়ারম্যান আছি।
- তাই নাকি!!! যাও আরো এক মেয়াদ বাড়ায়া দিলাম। চেটে পুটে খাও।


চামচা ও মন্ত্রী মহোদয়ের এমন নন্দন কথোপকথনের সময় একজন লোককে পাঁজাকোলে করে দুজন সৈন্য ঢুকলেন। প্রথম সৈন্য বলল, হুজুর এই লোক বদমাশ। প্রাইমারির মাস্টার। বদের বদ। ছাত্রদের ফেল করায়। এই দেখেন খাতা।
মন্ত্রী মহোদয় খাতা দেখলেন। তিনি মামলার কিছুই বুঝলেন না।
- হুজুর প্রশ্ন ছিল 'বিড়াল' ইংরেজি কি?- ৫ নম্বরের প্রশ্ন। ছাত্র লিখেছে বিড়াল=Kat. কে এ টি ক্যাট। মাস্টার তাকে নাম্বার দেয় নাই।
মন্ত্রী মহোদয় শিক্ষকের দিকে তাকি বললেন- কেনরে মাস্টার?
- নাম্বার না পেলে কিভাবে দিব?
- বাহ! খুব চ্যাটাং করে উত্তর দিলা! কথার আগে পিছেতো 'স্যার' বলবা। সেইটাতো বলো না। মন্ত্রীকে স্যার বলতে গা জ্বালাপোড়া করে?
- সরি স্যার।
- যাউক গা, তো নাম্বার কি তোমার বাপের সম্পত্তি?
- না স্যার।
- যদি বলতা বাপের জমি বেচে নাম্বার দিতে হয় তাইলে আমি না করতাম। নাম্বার দিতে কষ্ট কোথায় তোমাদের সেইটাই বুঝতেসিনা।

শিক্ষক বললেন- স্যার, তার বানান ভুল ছিল। ভুল উত্তরে নাম্বার দিই কিভাবে?
- পড়াতো ঠিক ছিল। তুমি দেখবা সে জানে কিনা? সে তো জানে বিড়াল ইংরেজি ক্যাট। চমেৎকার স্টুডেন্ট সে। লিখতে না হয় ভুল করেছে। উচ্চারন তো ঠিক ছিল। তুমি তো বুঝসো সে বিড়ালই বুঝাইছে? নাকি সেইটাও বুঝো নাই। যাও যাও, দিয়ে দাও ৫নম্বর।
- স্যার এটা নীতির বিরুদ্ধ।
- ওরে বাপরে...। নীতিবান শিক্ষক দেখতেছি। আমার নীতি জানো? আমি হলাম ছাত্রবান্ধব মন্ত্রী। ছাত্রলীগের ছেলেরা সিলেট এমসি কলেজ পোড়ায়ে দিসিলো, মনে আছে? আমি গেসি সেখানে। আমি কি করেছি জানো?
- না স্যার।
- আমি কেঁদেকুটে বাসায় চলে এসেছি। দুর্মুখেরা বলে ছাত্রলীগের ভয়ে আমি কেঁদেছি। আমি কেঁদেছি ছাত্রদের কেমনে জেলে ঢুকাবো সে জইন্যে। ছাত্রলীগের দুধের শিশুগুলো কেমনে একা জেলে থাকবে সেই জন্য কেঁদেছি।
মন্ত্রী কাঁদছেন ফিচ ফিচ করেন। চামচা টিস্যু বক্স এগিয়ে দিল।

- যাও এবার, খাতায় রুনা লায়লার গান লিখলেও ফুল মার্কস দিবা। ফেল করানো চলবেনা। এটা আমার নীতি।
- রুনা লায়লার গানে মার্কস দিব কিভাবে!!
- গান মুখস্ত করার কোন ভ্যালু তোমার কাছে নাই? কত মেধা লাগে গান মুখস্ত করার জন্য তুমি জানো? তুমি একটা সিনেমার গান মুখস্ত বলতো। জানি পারবা না। তোমারা বইতে কি বালছাল লিখে রাখছো। সেটাই সব? সেটা না পারলে ফেল? কি বলদ তোমরা!!! খিক খিক খিক।

মাস্টার ভ্যাবাচেকা হয়ে বেরিয়ে গেলো। পাঠ্যপুস্তকের চেয়ারম্যান মুখ খুললো।
- আপনি বলেছিলেন বইয়ের পেছনে লিখে দিতে, Don't heart anybody. বদ সাংবাদিকরা তা নিয়ে ভীষন পেঁচাচ্ছে।
- কেন?
- তারা বলছে বানান ভুল হয়েছে। Hurt হবে, heart নয়। don't hurt anybody.
- heart মানে হৃদয়। Don't heart anybody. কাউকে মন দিও না। ছেলেপেলেরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ৮-১০টা করে প্রেম করে। তাই আমি মন্ত্রী হিসেবে উপদেশ দিয়েছি Don't heart anybody. মানে, কাউকে মন দিও না। কিন্তু মন দিয়ে পড়ো। বুঝসো?
- হুজুর আপনি ইসলামের খেদমেতগার। আপনি প্রেমবিরোধী।
বলতে বলতে চেয়ারম্যান সাহেব মন্ত্রী মহোদয়ের হাঁটুতে চুমু খেল। কি কামেল লোক। আহাহা। বেহেয়া বেহেল্লাপনা শুরতো এই প্রেম পিরিতি থেকেই।
- হুজুর আরেকটা কথা। মন দেয়া বন্ধ করার জন্য মেয়েদের বুকে ওড়না পরতে হবে। দুষ্টু ছেলেগুলো মেয়েদের বুকে তাকিয়ে মন আছে কিনা দেখে ফেলে। ওড়না দিয়ে মন ঢেকে ফেলতে হবে হুজুর।
- কেমনে?
- ওয়ানের বইতে লিখে দিব ও তে ওড়না চাই।
- বাহ! বাহ! বাহ!

মন্ত্রীর চোখে জল টলমল। মন্ত্রী পেপার চোখে চেপে জল মুছলেন। বিড়বিড় করে বললেন, Don't heart anybody. কাউকে মন দিও না।

মন দেয়া শয়তানের কাজ। শফী সাবকে টেলিফোন করে বলতে হবে। ও তে ওড়না চাই। শফি সাব চমকে যাবেন। মন্ত্রী পেপার রেখে ওয়াশ রুমে গেলেন চোখে জল দিবেন।

আজ পেপারে একটা ভালো নিউজ ছিল। মন্ত্রী কন্যার পাশে এক দাড়িওয়ালা কামেল যুবক। মন্ত্রী কন্যা ওড়না পড়ে যুবকের পাশে দাঁড়িয়ে। পেপারগুলো মন্ত্রী কন্যার মন দেয়া নেয়ার গল্প ছেপেছে।



(এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোন মিল নাই। কাকতালেও কারো সাথে মিলে যাওয়ার সম্ভব নেই। তাও যদি মিলিয়ে ফেলেন.... নাহ.... মিলবে না। এটা ১০০ভাগ কাল্পনিক গল্প)




মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: হাল আমলের চমৎকার রম্য!

২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৫৭

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:
আপনি ও তো দেখি ভাই সেই রকম কামেল লোক; ঘাড়ে কি একটা মাথা নাকি ২ টা B:-) ৫৭ ধারার ভয় তো দেখি ঠিকই পাইছেন :(( তবে লেখাটা পদ্মার ইলিশের মতোই সুস্বাদু হয়েছে :D

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০০

এইচ আর হাবিব বলেছেন: ভাই আপনি যা লিখেছেন একেবারে তা সত্যি পটেটো এবং তালের মুড়ির মত হয়েছে। হাসবেন না, তালেরও মুড়ি হয়। ধরলা নদীর মতো আকাঁবাকা হলেও এর ব্রীজটা যেন জব্বর ওয়ালা। কাল্পনিক হলেও ওই মন্ত্রীর মেয়ের পাশে শেভ করা যুবকটা বানিয়ে দাও, ভাই।

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭

বর্ষন হোমস বলেছেন: হা হা হা হা।আসলেই একখান জিনিস লিখছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.