নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান সরকারের ১০০ দিন...

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:১৫

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে ২২ এপ্রিল। সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা বিচার করার জন্য সময়টি নিতান্তই নগণ্য। তবু যে কোনো সরকারেরই প্রথম ১০০ দিনকে বিশ্বের সব দেশেই যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সরকারের প্রথম ১০০ দিনকে বলা হয় হানিমুন পিরিয়ড। কথায় বলে, সকাল দেখে বলে দেওয়া যায় দিনটা কেমন যাবে। তেমনি সরকারের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম দেখে বলে দেওয়া যায় পরবর্তী পৌণে পাঁচ বছর দেশ কোনো পথে এগুবে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের বিচার-বিশ্লেষণ করে পর্যবেক্ষকমহল বলছেন, সরকারের শুরুটা নিঃসন্দেহে ভালো হয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর দেশে বিরাজমান চরম অস্থিরতা-অনিশ্চয়তার পরিবর্তে জনমনে স্বাভাবিক স্বস্তি ফিরে এসেছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আনয়নে সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার। শান্তি ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি নতুন-পুরাতন মিলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে জনগণের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি বিবেচনায় নিয়েই জনকল্যাণ ও জনসন্তুষ্টি অর্জনে কাজ করে সামনে এগিয়ে চলেছে বর্তমান সরকার।



শান্তি ও স্বস্তিতে জনগণ

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে দেশে চরম নৈরাজ্যকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বাসে-ট্রেনে পেট্রলবোমা ছুড়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা, হরতালের নামে সংঘাত-সংঘর্ষে জীবনহানি, লাগাতার হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের ব্যবসাবাণিজ্য প্রায় অচল হয়ে পড়াÑ সেই চূড়ান্ত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে দেশ একটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। মানুষের মনে যে শঙ্কা ছিল, তা কেটে গিয়ে সেখানে এসেছে স্বাভাবিকতা। ঈশান কোণে মেঘ জমলে যেমন ঝড়ের আশঙ্কা থাকে, সে ধরণের আশঙ্কা থেকে সরকার মানুষকে বের করে আনতে পেরেছে। মানুষ আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নিজের কাজে। মানুষের মধ্যে যদি অরাজকতার ভয় কেটে স্বস্তি ফিরে না আসত তাহলে নিজের ও দেশের উন্নয়ন কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়ত। সরকারের প্রথম ১০০ দিনের প্রধান সাফল্য হলো সরকার তার কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। সরকারের সঠিক ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- আবার গতিশীল হয়েছে, আমদানি-রপ্তানিও গতি পেয়েছে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের সেরা অবস্থানে পৌঁছেছে। মোটকথা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে পারায় সাধারণ মানুষ অবশ্যই এক ধরনের শান্তি অনুভব করছে।



সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নিরপেক্ষভাবে উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন

প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন করে জনমানুষের কাছাকাছি চলে গেছে। মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেছে বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এর চেয়ে বড় সাফল্য হলো সরকার দেশে বিদ্যমান সব রাজনৈতিক দলকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায়, যে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছিল তারা শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না, সেই তারাও উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক টানাপড়েন চললেও জামায়াত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল করেছে। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় নির্বাচনে দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে নিয়ে আসার ক্ষেত্র সৃষ্টিতে সরকারের ভূমিকাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশিষ্টজনরা। তাঁদের মতে সরকারের প্রথম ১০০ দিনের বড় সাফল্যগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল দেশে অরাজকতার মূলোৎপাটন করে শান্তি ফিরিয়ে আনা, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা, সকল রজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত করে উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন করা। সরকার তা করতে পেরেছে। এটা অবশ্যই সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



উদ্ভব ঘটেনি গডফাদার শ্রেণির

সরকারের প্রথম ১০০ দিনের আরেকটি সাফল্য হলো রাজনৈতিক কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধ করতে পারা। সামগ্রিকভাবে সরকার এ সময়ে সাধারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পেরেছে। এ সময়ে ছাত্রলীগ কিছু বেপরোয়া আচরণ করলেও সরকার চাঁদাবাজি ও দখলবাজি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। ফলে দেখা গেছে, সরকারের বিগত পাঁচ বছরে যেমন কোথায়ও কোনো গডফাদারের আবির্ভাব ঘটেনি, তেমনি বর্তমান মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনেও কোনো গডফাদার শ্রেণির উদ্ভব ঘটেনি। আর এ সবই মানুষের স্থায়ী শান্তিপূর্ণ পরিবেশের প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনও সরকারের নির্দেশিত পথে কাজ করায় মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছে।



বন্ধুরাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীদের স্বীকৃতি

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশগুলোর বাংলাদেশ নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ আর ভোট পর্যবেক্ষণ না করার ঘোষণার পর অনেকে আরেকটি ১/১১-এর আশঙ্কা করছিলেন। পশ্চিমা এক রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের এমনও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নির্বাচনের পর নতুন এক প্রেক্ষাপট দেখা যাবে। ফলে তাঁদের নতুন করে করণীয় ঠিক করতে হবে। নির্বাচনের পর প্রভাবশালী দেশগুলো আরেক দফা হতাশা প্রকাশ করলেও সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে এক এক করে অভিনন্দনবার্তা আসতে শুরু করে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো থেকে। পশ্চিমা উন্নয়ন সহযোগীদের অনেকে সরকারপ্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দনবার্তা পাঠানোর পাশাপাশি নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রেখেছে। ফলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা নতুন সরকারকে বিদেশিরা স্বীকৃতি দেবে না বা সম্পর্ক রাখবে নাÑ এমন ভাবনা দৃশ্যত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বন্ধুরাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীরা যোগাযোগ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়ায় তথাকথিত স্বীকৃতি পাওয়া বা গ্রহণযোগ্য হওয়ার যে চ্যালেঞ্জ ছিল, তা নতুন সরকার একরকম উৎরে গেছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম ১০০ দিনে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুশিও কিশিদা বাংলাদেশ সফর করেছেন। আট বছর পর জাপানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। এ সফরে জাপান তার সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার (ওডিএ) আওতায় বাংলাদেশের পাঁচটি প্রকল্পে ১১৮ কোটি ডলার (১২০ বিলিয়ন ইয়েন) দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। প্রতিবেশী ভারত, চীন, রাশিয়ার দিক থেকেও বাংলাদেশের সরকারের প্রতি সমর্থন বজায় রয়েছে।

সরকারের প্রথম ১০০ দিনে যুক্তরাজ্যের

আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকান ঢাকা সফরকালে বলেছেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচন অস্বাভাবিক হলেও বৈধ। সরকার কতোদিন ক্ষমতায় থাকবে, তা আমার বলার বিষয় নয়। আমরা সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করব।’ সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচনের আগে ও পরে পশ্চিমা কূটনীতিকদের কয়েকজনের মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন তাঁদের সুর নরম হয়ে এসেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার সরকার সামনে এগিয়ে চলেছে।’ বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখতে নেওয়া উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়নেও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) প্রভাবশালী দেশের রাষ্ট্রদূতরা সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর উদ্বেগ কোনো আন্তর্জাতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে নয় বরং অভ্যন্তরীণ ইস্যু যেমন শান্তি-স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের মতো বিষয়ে। এগুলোর সুস্পষ্ট অগ্রগতি হওয়ায় সরকার তাঁর প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রমে প্রশংসিত হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের চেয়ে বর্তমানে দেশে যে অধিকতর শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা রয়েছে, তা বিদেশিদের কাছে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হচ্ছে। বিদেশি বন্ধুরাও এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন।



গিনেস রেকর্ড বুকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’

বর্তমান সরকারের ১০০ দিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ গেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে ঠাঁই করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আড়াই লক্ষাধিক বাঙালির কণ্ঠে গাওয়া বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রেকর্ডকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ। ৮ এপ্রিল গিনেস কর্তৃপক্ষ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

২৬ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সমবেত লাখো মানুষের কণ্ঠে ছিল একই সুর ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…।’ মাত্র দুই মিনিটে বাঙালির প্রাণের জাতীয় সংগীতের ১০ লাইন শুদ্ধভাবে গেয়ে সেদিন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে পুরো অনুষ্ঠানটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। জাতীয় সংগীত গাওয়ার ১৪তম দিনেই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ। সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের একসঙ্গে নিজ দেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার রেকর্ডে নাম খচিত হলো বাংলাদেশের। এর ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছল বাংলাদেশ।



নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ৬ অগ্রাধিকার প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু

বর্তমান মেয়াদে সরকারের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। সরকার উন্নয়নের এই চ্যালেঞ্জগুলো গ্রহণ করেছে ইতিবাচকভাবে। সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে। জনগণকে দেওয়া বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতায় পদ্মা সেতু, গভীর সমুদ্রবন্দর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতিও বেশ আশাজাগানিয়া। সরকারের প্রথম ১০০ দিনে এ সব প্রকল্প ফার্স্টট্র্যাক মনিটরিং কমিটির আওতায় নিয়ে নিবিড় পরিচর্যার সুফল ইতোমধ্যে পাওয়া শুরু হয়েছে। প্রকল্পগুলোকে ফার্স্টট্র্যাকের আওতায় নিয়ে আসাটাই সরকারের একটি কমিটমেন্টের বহিঃপ্রকাশ। এ সব প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছেন। সুতরাং এর বিশেষ গুরুত্ব আছে। যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে জবাবদিহিতার বিষয়টি চলে আসে তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও প্রকল্প পরিচালকরা অবশ্যই যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেনÑ এটিই স্বাভাবিক। প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন বেড়েছে এবং সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এসব প্রকল্পের

বাস্তবায়ন দ্রুততর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফার্স্টট্র্যাক মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর সভাপতি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের চুক্তি হচ্ছে শিগগিরই। এছাড়া পদ্মা সেতুর কাজ তদারকির জন্য প্রকল্প এলাকায় সেনানিবাস স্থাপনের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সংশ্লিষ্টদের মতে এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে যে অগ্রগতি হয়েছে তা

সন্তোষজনক। এক কথায় বলা যায়Ñ প্রকল্পটি ট্র্যাকের মধ্যেই আছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য সংশোধিত এডিপিতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ে কাজ চালানোর জন্য যথেষ্ট। এই অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের চলমান কাজ চালাতে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থছাড় হয়েছে ১ হাজার ৩৮৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে জাজিরা এ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ কাজের ২২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। মাওয়া এ্যাপ্রোচ সড়কের আর্থিক অগ্রগতি ১৫ শতাংশ। সার্ভিস এরিয়া-২ এ আর্থিক অগ্রগতি ১৫ শতাংশ। নদী শাসনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে প্রি-কোয়ালিফায়েড ৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫ প্রতিষ্ঠান কারিগরি দরপত্র দাখিল করেছে। এ ছাড়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের চুক্তি হচ্ছে শিগগিরই। পাশাপাশি প্রকল্পের জনবল নিয়োগের কাজও এগিয়ে চলছে।

রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে ভারত ও বাংলাদেশ। রামপাল প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে প্রকল্পটিকে ফার্স্টট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশ প্রকল্পটিতে ৩০ ভাগ অর্থ বিনিয়োগ করছে। বাকি ৭০ ভাগ অর্থ ঋণ নেওয়া হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। বাংলাদেশের জন্য সুখের বিষয় হচ্ছে ভারত এ প্রকল্পে ১৫ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করলেও কোনো বিদ্যুৎ নেবে না। রামপাল থেকে পুরো বিদ্যুতই পাবে বাংলাদেশ।

সরকারের বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্যই এ টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানীর সাথে প্রাথমিক চুক্তি অনুস্বাক্ষর করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা। চুক্তি অনুস্বাক্ষরের পরপরই কারিগরি সমীক্ষা শুরু করবে মার্কিন কোম্পানি ইউএস এ্যাস্ট্রা অয়েল এ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি। তার আগে আগামী ৫ মে কোম্পানিটির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করবে। এ সময় এ প্রকল্পের বিষয়ে নেগোশিয়েশন করা হবে। প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানির জন্য টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনালটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে অর্থছাড়ের তাগিদ দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের শুরুতেই। এ বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল পরিকল্পনা কমিশনে। বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবছরের (২০১৩-১৪) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দকৃত অর্থ হতে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রথম ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ অবমুক্ত করা জরুরি প্রয়োজন। এ জন্য কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সম্মতি চাওয়া হয়েছিল। চিঠি দেওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পরিকল্পনা কমিশন। নানা জটিলতায় প্রকল্পটি ফাইলবন্দি হয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান ও বাস্তবায়ন কার্যাবলী মনিটরিংয়ের জন্য ২০১০ সালের ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বিষয়ক একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।

সরকারের প্রথম ১০০ দিনে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে ডেনমার্ক। গত ২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করে দেশটির এপিএম টার্মিনাল নামক সংস্থা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, গত বছরের শেষদিকে সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ডেনমার্কের কাছে অর্থায়নের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চায়। এ প্রেক্ষিতে ডেনমার্ক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, তারা আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। যে কোনো সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমন্ত্রণ জানানো হলেই তাদের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে এবং প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করবে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিষয়টি পিছিয়ে গেলেও সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাব উপস্থাপনের আমন্ত্রণ জানায়। এ প্রেক্ষিতে প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ডেনমার্ক ছাড়া যে সব দেশ কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বড় ধরনের বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে এগুলো হলো : যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, ভারত, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি।

সরকারের প্রথম ১০০ দিনে মেট্রোরেল প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এখন চলছে কারিগরি কাজ। ইতোমধ্যেই মেট্রোরেলসহ চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জাইকার সঙ্গে অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। এর আওতায় প্রথমপর্যায়ে প্রায় ৬ হাজার ২৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার ঋণ এবং ৭২ কোটি টাকার অনুদান প্রদান করবে সংস্থাটি। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এর আগে বলেছিলেন, মেট্রোরেল দেশের পরিবহণ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। তাছাড়া ঢাকাবাসীর যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করে জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটাবে। দিল্লিতে মেট্রোরেল তৈরি করতে দশ বছর সময় লেগেছে। আশা করছি ঢাকায় ছয় বছরের মধ্যে এটির নির্মাণকাজ শেষ হবে। জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পটি হচ্ছে জাইকার অর্থায়নে প্রথম এত বড় প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর প্রায় ৪ লাখ মানুষ প্রতিদিন চলাচলের সুবিধা ভোগ করবে। সহজ শর্তে দেওয়া জাইকার এই ঋণের সুদ হচ্ছে শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এ ছাড়া ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, রাজধানীর যানজট নিরসনে প্রায় ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা দেবে সরকার।



শেষ কথা

৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর সময়ে দেশে বিরাজমান অনিশ্চয়তা-অস্থিরতা, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুরসহ ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের স্থিতিশীল এ কর্মকা-কে জনগণ বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই মূল্যায়ন করছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সারাদেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে প্রাণভরে আর সরকার নতুন-পুরাতন উন্নয়ন প্রকল্প এগিয়ে নিচ্ছে দেশ ও জনকল্যাণের স্বার্থে। এতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি নিত্যনতুন প্রকল্প হাতে নিয়ে এগিয়ে চলেছে সরকার। জানা যায়, উপরোক্ত এই মেগা প্রকল্পগুলো ছাড়াও রাজধানীতে উড়াল সড়কসহ সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। দ্রুত এগিয়ে চলছে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের কাজ। শতকরা ৬০ ভাগ শেষ হয়েছে শাহজালাল সার কারখানার কাজ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে পুরোদমে। সরকারের প্রথম ১০০ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার করা জিএসপি এখনো বহাল হয়নি। তবে জিএসপি ফিরে পেতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআরের বেধে দেওয়া ১৩টি শর্তের বেশির ভাগই পূরণ করেছে সরকার। এতে আশা করা যাচ্ছে ২৭ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত টিকফা বৈঠকে জিএসপি ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। তিস্তার পানি বণ্টন কিংবা সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারের প্রথম ১০০ দিনে তেমন সাফল্য না আসলেও এ বিষয়ে সরকার ভারতের সঙ্গে দেনদরবার অব্যাহত রেখেছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে প্রধান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ইতোমধ্যে সুর নরম করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে যেখানে পানিপ্রবাহ ছিল তিন থেকে চারশ কিউসেক, মমতার সুর নরম হওয়ার পর সেখানে ২২ এপ্রিল তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ দাঁড়ায় তিন হাজার কিউসেক।

বলা যায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার দেশ পরিচালনার প্রথম ১০০ দিনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে। নির্বাচনি ইশতেহার বা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার প্রথম ১০০ দিনের মতো পুরো পাঁচ বছরকেই কাজে লাগাতে পারলে আশা করা যায় বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলের স্বীকৃতি পাবে। উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলছে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:২৬

অস্তিত্বহীন বলেছেন: ধান্ধাবাজি আর বাটপারি কত করবা। এবার পুটু চাটা বন্ধ কর। তোমাদের স্বভাব তো কুত্তার চেয়েও খারাপ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.