নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোদির ভারতনীতি ও বাংলাদেশের ভয়-ভীতি

২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩



বিপুল ভোটে নির্বাচনে জয়ী হয়ে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোদিকে খালেদা জিয়া এবং এরশাদ অভিনন্দন জানিয়েছেন। যে যুক্তরাষ্ট্র এক সময় দাঙ্গাবাজ হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে ভিসা দিতে অপারগ হয়েছিল সেই দেশের রাষ্ট্রপতি ওবামাও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ১৭ মে (২০১৪) পদত্যাগ করেছেন মনমোহন সিং। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন রাহুল গান্ধী, সোনিয়া। অন্যদিকে মমতার তৃণমূলের দখলে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ পরিস্থিতিতে বলা হচ্ছে ভারতে নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকবে বাংলাদেশের। মূলত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পথে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। নিরঙ্কুশ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২১ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৩৬টি আসনে এগিয়ে এনডিএ জোট। এর মধ্যে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৮২টি আসন। ফলে সরকার গঠন করতে বিজেপিকে শরিক দলের সহায়তা নিতে হচ্ছে না। কারণ দেশটির সংবিধান অনুযায়ী সরকার গঠন করতে দরকার হয় ২৭২ আসন।



নরেন্দ্র মোদি ও তার দলের সাম্প্রদায়িক মনোভাব, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা, ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা ইত্যাদি কারণে কিছুটা শঙ্কিত আন্তর্জাতিক অঙ্গন, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। অনেকের আশঙ্কা, মোদি ক্ষমতায় থাকলে ভারতে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বাড়বে। এছাড়া পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি কঠোর অবস্থান নিতে পারেন। ভারতের ইন্টারনেটভিত্তিক নেটওয়ার্ক টাইমস ইন্টারনেট লিমিটেডের প্রধান সম্পাদক (চিফ এডিটর) রাজেশ কার্লার মতে, দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এগুলো হলো, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে আরও সমৃদ্ধ করা, তরুণদের ক্ষমতায়ন, আইনভঙ্গকারী মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তি প্রদান, কোন বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক চেতনা উসকে না দেয়া, নদ-নদী পুনরুদ্ধার ইত্যাদি। ভারতের জনগণের এ সুবিশাল প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়েই সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এজন্য মোদিকে নিয়ে বাংলাদেশের ভয়-ভীতির কোন কারণ আছে কি? তাছাড়া ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক অটুট থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। কারণ মোদিকে ভারতের স্বার্থেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। এজন্য তাকে রাজনৈতিক সংঘাতে না জড়িয়ে প্রতিবেশীদের প্রতি অবশ্যই সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করতে হবে। তবে এ বিষয়ে তার আন্তরিকতাই যথেষ্ট। ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখক মঞ্জরি চ্যাটার্জি মিলার মন্তব্য করেছেন, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি রাতারাতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে যাবে, এমন ধারণা ঠিক না। তার মতে, গত পাঁচ দশকে ভারতে যেসব দল বা জোট সরকার গঠন করেছে, তাদের আমলে দেশটির আগের সরকারগুলোর পররাষ্ট্রনীতি খুব একটা পাল্টায়নি বরং সেগুলোরই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে। এজন্যই মোদি সরকারের জন্য কংগ্রেস কিছু পরামর্শ রেখে যাচ্ছে। যেমন, নতুন প্রশাসন যাতে 'বাংলাদেশ সরকারের জন্য বিরক্তিকর' কিছু না করে সেজন্য জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাদের প্রতি পরামর্শ রেখেছেন। ভারতে 'অনুপ্রবেশকারীদের' বিরুদ্ধে মোদির বক্তব্য নিয়ে বিদায়ী সরকারের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ রয়েছে। 'কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হলে তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে জটিল করে তুলবে। হাসিনা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারে এমন কোন উস্কানিমূলক পদক্ষেপ চায় না বর্তমান প্রশাসন এবং এ বিষয়টি অনাগত প্রশাসনকেও অবগত করা হয়েছে বলে আমরা সংবাদ সূত্রে জানতে পেরেছি। প্রস্তাবিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই এবং ভারত-বাংলাদেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়েও বিদায়ী সরকারের পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদির প্রশাসনকে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন এমন পূর্বাভাস পেয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট দিয়েছিল কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহার করে ভারতবিরোধী শক্তিগুলোর সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকা- আবার মাথাচাড়া দিতে পারে বলে ভারতীয় গোয়েন্দাদের আশঙ্কা ছিল। ক্ষমতায় আসার জন্য বিএনপি তখন মরিয়া হয়ে ভারতের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে মনোযোগী হয়েছিল। খালেদা জিয়া সেদেশ সফরেও গিয়েছিল। অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের সূত্রপাত। ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থন ও যুদ্ধের সময় সহযোগিতার ঋণ এদেশের মানুষ কখনো ভুলতে পারবে না। এজন্য মনমোহন সিংয়ের আগমন ঐতিহাসিক সফর হিসেবে গণ্য হয়েছিল। ভারতের মন্ত্রীরাও বলছেন তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর আবেগ ও আস্থার সম্পর্ক। সে দেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলো মনমোহনের সফরের মধ্য দিয়ে মীমাংসা হয়েছে; আরও হওয়ার অপেক্ষায় আছে। বলা হচ্ছে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে পানি বণ্টন চুক্তি হবে। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে হত্যাকা- ঘটাচ্ছে ভারত_ এ ভাষ্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবসংকরের। তবে আমরা কেউ ফেলানির মতো হতভাগ্য কিশোরীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলে থাকার দৃশ্য ভুলতে পারছি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.