![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সদ্যসমাপ্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয় গত কদিনে বাংলাদেশে প্রধান আলোচিত বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের প্রধান সব দল আসন্ন মোদি সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময় জাগানিয়া ছিল, ভারতের নির্বাচনের পুরো ফলাফল ঘোষণার আগেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ভাবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে বসলেন। যেন তাঁদের জোটভুক্ত কেউ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে! [অবশ্য আদর্শিকভাবে বিজেপি ও বিএনপি দুটোই উদারপন্থী ধর্মীয় দল। যদিও বিজেপির পেছনে রয়েছে উগ্র হিন্দু সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এবং বিএনপির মূল চালিকাশক্তি উগ্র ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামী।]
ভারতে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কতটা পরিবর্তন হয় বা আদৌ পরিবর্তন হয় কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে।
ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাংলাদেশের আপামর জনগণ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। কিন্তু বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক অবনতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশে ‘ভারত-বিদ্বেষী’ রাজনীতির গোড়াপত্তন করেন। খালেদা জিয়ার ১৯৯১-৯৬ শাসনামলে বাংলাদেশে ‘ভারত-বিদ্বেষী’ রাজনীতির আরও বিস্তার ঘটে। আমরা দেখেছি, বিএনপি চেয়ারপার্সন নির্বাচনপূর্ব বিভিন্ন প্রচারাভিযানে ধর্মীয় উসকানিমূলক উগ্র মন্তব্য করে দুদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবনতি ঘটান। ‘একটি দলকে ভোট দিলে ভারত বাংলাদেশকে দখল করে নেবে। সিকিমের কথা ভুলে গেছেন’ ‘একটি দলকে ভোট দিলে আজানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে উলুধ্বনি পড়বে।’ খালেদা জিয়ার এ ধরনের অপপ্রচারমূলক বক্তব্যকে অনুসরণ করে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
বাংলাদেশ-ভারত নাজুক সম্পর্কের পটভূমিতে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসীন হয়েই আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হন।
এ কথা ভুলে গেছে চলবে না যে, কংগ্রেস ভিন্ন অন্য সরকারের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের সুসম্পর্ক ছিল। পাঠক, প্রথম শেখ হাসিনা সরকারের (১৯৯৬-২০০১) সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। ওই সময় ভারতে তিনটি সরকার ক্ষমতায় ছিল। জনতা দলের এইচ ডি দেবগৌড়া (১ জুন ১৯৯৬-২১ এপ্রিল ১৯৯৭), জনতা দলের আই কে গুজরাল (২১ এপ্রিল ১৯৯৭-মার্চ ১৯৯৮) এবং বিজেপির অটলবিহারি বাজপেয়ী (১৯ মার্চ ১৯৯৮-১৯ মে ২০০৪)। তিনটি সরকারই ছিল কংগ্রেসের বাইরের সরকার। তা সত্ত্বেও সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অবনতি ঘটেনি বরং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের আরও উন্নতি হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়েই ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গার পানি বণ্টনের মতো ঐতিহাসিক চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ত্রিপুরা থেকে ফেরত পাঠানোর ফলে বাংলাদেশের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরে আবার বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। বিএনপির বিরুদ্ধে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে বিচ্ছন্নতাবাদীতের মদদ ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ ওঠে। চট্টগ্রামের ‘দশ ট্রাক অস্ত্র’ পাচার ঘটনায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অনেক মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতৃত্ব জড়িত ছিলেন। এদের বিচার এখনও চলমান।
সাংবাদিক মোস্তফা কামালের একটি লেখার দিকে পাঠককে চোখ ফেরাতে বলব। তিনি লিখেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের সঙ্গে দিল্লী সফরে গিয়েছিলাম। তখন ভারতের উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এল কে আদভানি। তিনি এখনও বিজেপিতে বড় ফ্যাক্টর। মোরশেদ খান গেলেন আদভানির সঙ্গে সাক্ষাত করতে। তাঁকে দেখে আদভানি চরম উত্তেজিত। উত্তেজনায় তিনি নিজের চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে গেলেন। মোরশেদ খানও তখন আসন নেয়ার অনুমতি পাননি। আদভানি বলতে শুরু করলেন, “আপনারা বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন। আপনারা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নবাদীদের শতাধিক ক্যাম্প রয়েছে। আমরা বারবার তালিকা দেয়ার পরও আপনারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আপনারা কি চান? কেন ভারতের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উসকে দিচ্ছেন?” মোরশেদ খান কোন কথা বলার সুযোগই পেলেন না। নীরব শ্রোতা মোরশেদ খান শেষ পর্যন্ত তাঁর কক্ষ থেকে বেরিয়ে এলেন।’ (সূত্র : মোস্তফা কামাল, কালের কণ্ঠ, ১৪ মে ২০১৪)।
এখানে এটি তো খুবই স্পষ্ট, কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপি নেতৃত্বই বিএনপির প্রতি বেশিমাত্রায় বিরাগভাজন।
তাই বলা চলে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভারতের সরকার পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে না, বরং এটি নির্ভর করে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ওপর। বিশেষত বাংলাদেশে দক্ষিণপন্থী বিএনপি সরকার এলেই এ সম্পর্কের অবনতি ঘটে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কাছ থেকে বিএনপির কিছু আশা করার নেই। মোদি সরকার বিএনপির জন্য মরীচিকা হয়েই থাকবে। রাজনীতিঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, বিএনপির এই ভুল ভাঙ্গতে মাস ছয়েক অপেক্ষাই যথেষ্ট।
পশ্চিমা বিশ্বের দিকে চেয়ে থেকে বিএনপি ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে এবার যদি তারা নরেন্দ্র মোদির দিকে চেয়ে থাকে তবে তা হবে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি। এর চেয়ে বরং বিএনপির উচিত হবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করা। তা না হলে জনগণ বিএনপিকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে, যেমনটা করেছে পাকিস্তান আমলের মুসলিম লীগ নামক প্রতাপশালী রাজনৈতিক শক্তিকে। মুসলিম লীগের আদর্শে গড়া সংগঠন বিএনপি তাই মুসলিম লীগের ঐতিহাসিক শিক্ষা গ্রহণ করবে বলেই আশা করা যায়।
বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ভারতে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বদলে গেছে এমন উদাহরণ আমরা দেখি না। তাই আমরা আশা করি, বাংলাদেশ-ভারতের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে আরও মজবুত হবে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হবে। সীমান্ত ছিটমহল বিনিময় বিল ভারত সরকার পাস করে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করবে। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে।
২| ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
নীল আকাশ ২০১৩ বলেছেন: বিএনপি হল একটা রামছাগল, তিনটা দেশী ছাগল আর কয়েকটা মারখর ছাগলের একটা দল। হাত পা দিয়ে তো কিছু করার ক্ষমতা নেই, তাই চার পা দিয়ে একটু লাফাচ্ছে যাতে কেউ দুধের বোঁটা তাদের মুখে এনে ধরিয়ে দেয়।
ছাগলের বাচ্চার দলও বিএনপির এক একটা নেতার চেয়ে বেশি বুদ্ধি রাখে
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:৩০
রেজওয়ান26 বলেছেন: বাংলাদেশকে আত্ম নির্ভরশীল হতে হবে ।