নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পররাষ্ট্রনীতিতে সফলতা বাড়ছে

০৩ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬

ভারতের বিজেপি সরকারের নতুন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশে ৭২ ঘণ্টার ঝটিকা সফর শেষে গত ২৭ জুন নিজ দেশে ফিরে গেছেন। যদিও বলা হচ্ছে, এটি ছিল তিন দিনের সফর, বাস্তবে তা ছিল এক দিনের কর্ম সফর। ২৫ জুন রাতে তিনি আসেন, পরদিন তাঁর পূর্বনির্ধারিত সব আনুষ্ঠানিক কাজকর্ম সারেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, একটি সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ২৭ জুন তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং সেখান থেকে তিনি সরাসরি বিমানবন্দরে চলে যান। এদিন সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে প্রাতরাশ করেন। ঠিক পূর্বনির্ধারিত না থাকলেও তিনি ৪০ মিনিটের জন্য বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁর হোটেল কক্ষে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। ভারতের সব সরকারের বিদেশমন্ত্রী কোনো না কোনো সময় বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, কিন্তু সুষমা স্বরাজকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে যে ধরনের হৈচৈ পড়ে গিয়েছিল, অন্য কারো বেলায় তা তেমন একটা দেখা যায়নি। সুষমা চলে যাওয়ার পরও তাঁকে নিয়ে কথাবার্তা এখনো শেষ হয়নি, হয়তো চলবে আরো কয়েক দিন। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে কার কী হলো তা নিশ্চিতভাবে আঁচ করা না গেলেও তাঁর এই আসা-যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের স্থবির রাজনীতিতে কিছুটা হলেও প্রাণসঞ্চার হয়েছে। প্রথমে সরকারি দলের নেতা-নেত্রীরা বলতে পারছেন ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর যাঁরা ধরে নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আয়ু বোধ হয় শেষ হয়ে আসছে, তাঁদের সুষমা একটি বার্তা দিয়ে গেলেন- ভারতের বিদেশনীতি কোনো একটি বিশেষ দলের ক্ষমতায় থাকা না থাকার ওপর নির্ভর করে না, তা নির্ভর করে ভারতের স্বার্থের ওপর। সে দেশে সরকার বদল হলে রাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তিত হয় না, যদি না তা রাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থী হয়। বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ ছিল না। কারণ বিএনপি-জামায়াত জোট ভারতকে যেভাবে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিল, তা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়; কারণ তা দিলে নিশ্চিতভাবে চারদিকে গেল গেল রব উঠবে।

সুষমার বাংলাদেশ সফর আরো একটি কারণে সরকারি দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যারা নিত্যদিন বলছিল, এই নির্বাচন আর সরকার দুটোই অবৈধ, তারা দেখল, ইতিপূর্বে শেখ হাসিনার সফল জাপান ও চীন সফরের পর ভারতের বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করে এই বার্তা দিয়ে গেলেন বাংলাদেশের যে মহলটি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে হররোজ তর্ক করে তারা বুঝতে পারছে, যতই এই নির্বাচন নিয়ে তর্ক করি না কেন, তা বিশ্ব মহলে তেমন একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না; কারণ নির্বাচনটি সাংবিধানিকভাবেই হয়েছিল। ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা লিখেছে, সুষমা বেগম জিয়াকে এই বার্তা দিয়ে গেছেন যে তাঁরা ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলবেন না, এটা বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র এখনো মনে করে, বিএনপিকে নিয়ে সরকারের আরেকটি মধ্যবর্তী নির্বাচন করা উচিত; তবে তা তেমন একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। কারণ বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে; যার অন্যতম কারণ তাদের হঠকারী মধ্যপ্রাচ্যনীতি। জাতিসংঘ-বুশ-ওবামা-ডিক চেনি-কন্ডোলিৎসা রাইস-হিলারি ক্লিনটন-কলিন পাওয়েল-ডন রামসফেল্ড-টনি ব্লেয়ারের চরম হঠকারী ও ভ্রান্ত নীতির কারণে ইরাক এখন খণ্ড-বিখণ্ড হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এখন এই অমার্জনীয় অপরাধের কারণে যেসব কুশীলব দায়ী, তারা একে অন্যের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত। গত তিন দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যেখানেই হাত দিয়েছে, সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তেমন একটা ব্যতিক্রম ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত চেয়েছিল যেকোনোভাবে তথাকথিত অসাবিংধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটকে ক্ষমতায় বসাতে, যাতে বাংলাদেশ দ্রুত আরেকটি আফগানিস্তান বা ইরাক হয়ে উঠতে পারে। তেমনটি হলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে হয়তো বাংলাদেশেও আফগানিস্তান-ইরাকের মতো ট্যাংকের পিঠে করে গণতন্ত্র রপ্তানি করার সম্ভাবনা তৈরি হতো। সে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় তারা নাখোশ তো হবেই। রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া পুনরায় নিজেদের দখলে নিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র দু-একটি হুংকার ছেড়ে এখন চুপ। তাদের একান্ত মিত্র দেশ থাইল্যান্ডে যখন একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করল, তখন যুক্তরাষ্ট্র 'কাজটি ভালো হয়নি' বলেই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। অনেকের ধারণা, গত তিন দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও ভ্রান্ত পররাষ্ট্রনীতির কারণে দেশটি এখন অনেকটা কাগুজে বাঘে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে, তেমনটি আশা করা যায় না। এর পরও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন-ভারত উভয়েই চাইছে বঙ্গোপসাগর তথা ভারত মহাসাগরের ওপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে। সেটি করতে হলে উভয় দেশেরই বাংলাদেশের সহায়তা প্রয়োজন, যা হয়তো যুক্তরাষ্ট্র খুব একটা পছন্দ করবে না। এ অঞ্চলের ওপর রাশিয়ারও দৃষ্টি আছে। শেখ হাসিনার সরকার এই তিনটি দেশের সঙ্গেই ইতিমধ্যে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এটি তাঁর কূটনৈতিক সাফল্য। বলা যেতে পারে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন সাইডলাইনে বসা আছে। তারা মনে করে, সরকারে আওয়ামী লীগ না থাকলে তাদের জন্য ভালো। ইতিমধ্যে তারা পদ্মা সেতু, গ্রামীণ ব্যাংক, জিএসপি নিয়ে বেশ কিছু গেম খেলার চেষ্টা করেছে, যাতে তারা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। অনেকে মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন ছিল। তারা বুঝতে পারেনি, শেখ হাসিনা এত বড় ঝুঁকি নিয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে এই নির্বাচন করে ফেলবেন। নির্বাচনটি হয়ে যাওয়ায় অনেকেরই মন খারাপ। তবে এটাও ঠিক, যুক্তরাষ্ট্র খুব সহজে যে বাংলাদেশে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের হাল ছেড়ে দেবে, তা মনে করার কোনো কারণ নেই।

সুষমার বাংলাদেশ সফর নিয়ে যদিও একটা সাজ সাজ রব ছিল, কিন্তু তাঁর এই সফরে বাংলাদেশের কোনো কিছু প্রাপ্তি ঘটবে, তা কারো চিন্তায় ছিল না। এটি ছিল অনেকটা সৌজন্য সফর এবং ভারতের নতুন সরকার সম্পর্কে তার প্রতিবেশীদের এই ধারণা দেওয়া যে নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে যে একটা নেতিবাচক ধারণা ছিল, তা দূর করা; যা ইতিমধ্যে তারা করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছে। সুষমার সফর ভারতের জন্যও প্রয়োজন ছিল। কারণ প্রতিবেশীকে আস্থায় নিতে না পারলে ভারতের মতো এত বিশাল ও বহুমতের একটি দেশ শাসন করা সহজ নয়। ভারতের কাছে বাংলাদেশ তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের উত্তর-পশ্চিম কাশ্মীর সীমান্তে সমস্যা সেই ১৯৪৭ সাল-পরবর্তী কাল থেকে। সেই সমস্যা সহজে সমাধান হওয়ার নয়। উত্তর সীমান্তের কোনো কোনো অঞ্চলে চীনের সঙ্গে সমস্যা আছে; কিন্তু এ মুহূর্তে তেমন গুরুতর নয় এবং তা সংঘাতপূর্ণও নয়। তবে বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরে অস্থির। আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা প্রভৃতি অঞ্চলে ভারতের একাধিক সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ক্রিয়াশীল এবং তাদের সঙ্গে মিয়ানমারের কোনো কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে সখ্যও আছে। তবে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় শঙ্কার কারণ হয়ে ওঠে যখন এই সংগঠনগুলো বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এবং তাদের প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশের কোনো কোনো সরকার সহায়তা করে; যা বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় দেখা গেছে। সে সময় তারা বাংলাদেশকে তাদের অস্ত্র চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করেছে। যার বড় প্রমাণ চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আর বগুড়ায় কয়েক লাখ রাউন্ড গুলি উদ্ধার। এ সবই হয়েছে সে সময়ের সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে। সেই সময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আসলে তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে এবং বাংলাদেশের উচিত তাদের সমর্থন করা; যেভাবে ভারত বাংলাদেশকে একাত্তরে সহায়তা করেছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর এসব অপতৎপরতা বন্ধ হয়েছে। সুতরাং নতুন ভারত সরকারের বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার কোনো বিকল্প নেই।

ভারতের কাছে বাংলাদেশের পাওনা অনেক। আমরা ভারতের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আমাদের সব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হোক, তা চাই। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চিহ্নিতকরণ চুক্তি সংসদে অনুসমর্থন করেছে, যা ভারত এযাবৎ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সেই অবস্থার পরিসমাপ্তি চায়। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক গুলি করে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ চায়। বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতার অবসান চায়। এযাবৎ বাংলাদেশ ভারতকে যেসব সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশের চাহিদা খুব বেশি নয়। সদিচ্ছা থাকলে এই চাহিদা পূরণ মোটেও অসম্ভব নয়। সুষমা স্বরাজ তাঁর সফরকালে এসব সমস্যা যে আছে, তা স্বীকার করে অভয় দিয়ে বলেছেন, মোদি সরকার এসব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আন্তরিক এবং তারা সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই কাজ করবে। বাংলাদেশের মানুষ কথা নয় কাজ দেখতে চায়। ভারতের জন্য এসব সমস্যা সমাধানের এটাই সর্বোৎকৃষ্ট সময়; কারণ দীর্ঘদিন পর কেন্দ্রে ভারত এত শক্তিশালী একটা সরকার পেয়েছে যে সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত সমীহ করছে।

সুষমার সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপি কিছুটা হলেও বেকায়দায় ছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাংলাদেশে যত বিদেশি ভিআইপি এসেছেন, সবাই বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁর বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন এবং অনেকে অভয় দিয়ে বলেছেন, একটু ধৈর্য ধরুন, হারানো রাজ্য আবার ফিরে পাবেন। এই কাজকে সফল করার জন্য বেগম জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান লন্ডনে একটি বিকল্প বিএনপি অফিসও খুলেছেন। বেগম জিয়া নিয়মিত বিরতি দিয়ে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য জনগণকে রাস্তায় নেমে আসতে বলছেন। কিন্তু নাদান জনগণ তাঁর কথায় তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হলে বিএনপি একটু আশার আলো দেখতে পেয়েছিল। বেগম জিয়া সবার আগে মোদিকে অভিনন্দনবার্তা পাঠিয়েছিলেন। তাঁদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছিল নির্বাচনে বিজেপি নয়, বিএনপি জিতেছে। তাঁরা আশা করেছিলেন, মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বেগম জিয়া আমন্ত্রিত হয়ে দিল্লি যাবেন। তেমন একটা খবরও রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং এ-ও বলা হয়েছিল, ঢাকা থেকে বেগম জিয়া আর লন্ডন থেকে তারেক রহমান দিল্লির দরবারে হাজির হবেন। কিন্তু বাস্তবে আমন্ত্রণ পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তাঁর পরিবর্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানে ছিলেন। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবদার করলেন ঢাকা সফরের সময় সুষমা যেন বেগম জিয়ার বাসভবনে একটু পদধূলি দেন। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়; কারণ বেগম জিয়া এখন একটি দলের প্রধান ছাড়া অন্য কিছু নন। তিনি তো কোনো প্রটোকলে পড়েন না। আর ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা নিশ্চয়ই এটি ভুলে যাননি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে যখন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ঢাকা সফরে এসেছিলেন তখন বেগম জিয়া তাঁর সঙ্গে একটি পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎকার বাতিল করেছিলেন; কারণ সে সময় তাঁর দলের মিত্র জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা আন্দোলনের নামে রাস্তায় মানুষ পোড়াচ্ছিল আর জনগণের সম্পদে আগুন দিচ্ছিল। তিনি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এবার ঠিক হলো, সুষমা স্বরাজ বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁর হোটেল স্যুইটে কিছু সময়ের জন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। তাই সই। সব ইগো, লজ্জা পেছনে ফেলে বেগম জিয়া ছুটলেন সুষমা স্বরাজের হোটেলে। সঙ্গে নিলেন সুষমা আর তাঁর কন্যার জন্য পাঁচটি শাড়ি। ঠিক এমন কিছু উপহার প্রণব মুখোপাধ্যায় নিয়ে এসেছিলেন বেগম জিয়ার জন্য দিল্লি থেকে। সেটি তাঁর ভাগ্যে ছিল না। সুষমার সঙ্গে দেখা হলো, চা পান হলো, বেগম জিয়া তাঁর কাছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র 'না থাকার' ব্যাপারে নালিশ করলেন। এই সাক্ষাৎকারের ভালো দিকটা হচ্ছে দেরিতে হলেও বেগম জিয়া বর্তমান সময়ে তাঁর অবস্থানটা বুঝতে পেরেছেন। বুঝতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বা দলের অন্যরা। ড. মঈন খান এখনো মনে করেন জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি বেগম জিয়া, সে কারণেই বেগম জিয়ার সঙ্গে সুষমা স্বরাজ বৈঠক করেছেন। বিএনপি নেতারা এমন সব বালখিল্য সুলভ আচরণ আর বাগাড়ম্বর ছাড়তে পারলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ দলের জন্য মঙ্গল হতো।

সুষমা ২৭ জুন দিল্লি ফিরে গেছেন। তাঁর এই সংক্ষিপ্ত সফর খুলে দিতে পারে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাসহ সম্ভাবনার অনেক নতুন দ্বার। তবে তা কতটুক হবে, তা অনেকটা নির্ভর করে ভারতের নতুন সরকারের আচরণের ওপর।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: :| :P :-* :( :(( এবার বুঝে নিন

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

ইসপাত কঠিন বলেছেন: :) :D B-) ;) :( :(( X( :| X(( :-/ :P :-* :#) #:-S 8-| B-)) :!> :#> :|| :> :-< |-) /:) :-B B:-) :-P B:-/ :-& :-0 !:#P =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.