![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঈদের পরে সরকারবিরোধী কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও দলের নাজুক পরিস্থিতি কাটছে না বিএনপির। দলের হাইকমান্ড নানাভাবে চেষ্টা করেও পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে পারছেন না।
ইফতার মাহফিলের নামে দল গোছানোর একটা পূর্ব পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং ফিকে হয়ে যাচ্ছে সে পরিকল্পনা। চিকিৎসা কিংবা ওমরাহ পালনের নামে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা। যারা দেশে রয়েছেন তাদের মধ্যেও রয়েছে চরম অনৈক্য। চলমান এ পরিস্থিতিতে ঈদের পরে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ইতোমধ্যেই হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইফতার পার্টিকে ঘিরে ঢাকা মহানগর কমিটিসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন তিনি।
পরিকল্পনায় ছিল, ইফতার পার্টির নামে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সংগঠিত করে উজ্জীবিত করা। ঝিমিয়ে পড়া কমিটি পরিবর্তন করে নতুন কমিটি গঠন করা। সে তালিকায় ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি গঠন, যুবদল ও ছাত্রদলের কমিটিতে পরিবর্তন আনা, জেলা কমিটিতে সংস্কার করা। এর মাধ্যমে দলের ভেঙে পড়া সাংগঠনিক কাঠামো পুনরুদ্ধার করে দলকে শক্তিশালী করা, নেতাকর্মীদের নতুন করে আন্দোলনমুখী করার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেয়া হয় এই রমজানে। ঈদের পরে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া। সরকারকে নতুন নির্বাচনে বাধ্য করা।
ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার নামে দেশের বাইরে রয়েছেন। ফলে এ কমিটি পরিবর্তন করার উদ্যোগ আপাতত আবারো পিছিয়ে পড়েছে। মহানগরে ইফতার পার্টির নামে মহল্লায় মহল্লায় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কৌশলও ভেস্তে গেছে। ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান গেছেন ওমরাহ পালনে। ফলে দল গোছানোর ডাকে তেমন সারা মিলছে না।
একই অবস্থা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে। ঈদের পর আন্দোলন। অথচ সংগঠনটিতে বর্তমান কমিটি বহাল থাকবে,
না নতুন কমিটি ঘোষণা হবে। এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। কাকে কোন পদে বসালে সাংগঠনিক কার্যক্রম চাঙ্গা হবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
কমিটি পুনর্গঠন না হওয়ায় বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রদলের তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকাও ছিল না। এমনকি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াও তখন ছাত্রদলের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলে কোনো ধরনের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মামলা ও সরকারের রোষানল থেকে বাঁচতে সংগঠনের সিনিয়র নেতারা দীর্ঘদিন থেকেই ছিলেন আত্মগোপনে। সাধারণ কর্মীদের সঙ্গেও তাদের ছিল না কোনো ধরনের ন্যূনতম যোগাযোগ।
বিএনপির জেলা কমিটি গঠনের কাজে হাত দেয়া হয়। কয়েকটি কমিটির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার পরে তা থমকে গেছে। বাকি কমিটিগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অনৈক্য। একে অন্যকে সাইজ করার কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকে। দলের কোনো কর্মসূচি তাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়।
ঈদের পরের আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে জেলা নেতাকর্মীদের মধ্যেও হতাশা বিরাজ করছে। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে শীর্ষ নেতাদের কোনো ভূমিকা না থাকায় এবারো তাদের আস্থায় নিতে পারছেন না জেলা নেতারা।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান দলের নাজুক পরিস্থিতি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, দলে বিভিন্ন শ্রেণীর নেতাকর্মী থাকেন। কেউ আন্দোলনে রাজপথ কাঁপান, কেউ টিভি টকশোতে দলের পক্ষে কথা বলেন, কেউবা দলের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে ভূমিকা রাখেন। সবাই রাজপথে নামেন না।
তিনি বলেন, আন্দোলন হবে। আন্দোলনের মুখেই সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামিয়ে বেশিদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখতে পারবে না সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, খালেদা জিয়ার কথামতো রমজানের ঈদের পর আন্দোলন হবে। এবার অস্ত্র, গুলি দিয়ে কেউ আন্দোলন দমাতে পারবে না।
তিনি বলেন, গান্ধীর স্টাইলে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর দলে যারা, আমি তাদের দলে নেই। কারণ সৈয়দ আশরাফ বলেছেন বৈধভাবে আওয়ামী লীগকে সরানো যাবে না। গণতান্ত্রিক পন্থায় এ সরকারকে উৎখাত করতে চাই। যদি গণতান্ত্রিক পথে বাধার সৃষ্টি করা হয়, জনগণকে বাধা দেয়া হয়, তাহলে অবৈধ পন্থায় সরকারকে উৎখাত করা হবে।
©somewhere in net ltd.