![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সাতজন সেনাপতি নিজ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জবর দখল করেছিলেন। এঁরা হলেন জেনারেল ইসকান্দার মির্জা, জেনারেল আইউব খান, জেনারেল ইয়াহিয়া খান, জেনারেল জিয়াউল হক, জেনারেল পারভেজ মোর্শারফ, জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ। মির্জা ইতিহাসের কুখ্যাত মীরজাফরের প্রপৌত্র ছিলেন। পাকিস্তানে ১৯৫৬ সালের সংবিধান কার্যকর হওয়ার আগমুহূর্তে পাকিস্তানের জনগণ গণতন্ত্রের জন্য এখনও যোগ্য নন এই কথা বলে সেই সংবিধান বাতিল করে দিয়ে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেন এবং ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেন। মাস শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন তাঁরই সেনাপ্রধান জেনারেল আইউব খান যিনি পাকিস্তানের প্রথম স্বৈরশাসক হিসেবে আবির্ভূত হন। মির্জা দেশত্যাগী হয়ে লন্ডনের একটি হোটেলে ম্যানেজারের চাকরি নেন এবং সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের তোড়ে আইউব খান ভেসে যাওয়ার আগমুহূর্তে তাঁর স্থলাভিসিক্ত হন জেনারেল ইয়াহিয়া খান যিনি বাংলাদেশে একাত্তর সালে গণহত্যা চালিয়ে ইতিহাসে একজন চরম হিংস্র স্বৈরাচার হিসেবে নিজের নামটি স্থায়ী করে নিয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পরবর্তীকালে ইয়াহিয়া খান নিজে ভুট্টোর কাছে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। পরে তিনি হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন। জিয়াউল হক পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোকে উৎখাত করেই ক্ষান্ত হননি তিনি তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েও হত্যা করেন। জিয়াউল হক ইসলামের দোহায় দিয়ে পাকিস্তানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেন। বর্তমানে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি যে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে তার জন্য এককভাবে জিয়াউল হক দায়ী। পরবর্তীকালে ক্ষমতায় থাকাকালীন এক বিমান দুর্ঘটনায় জিয়াউল হক নিহত হন। জেনারেল পারভেজ মোর্শারফ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফকে জোরপূর্বক সৌদি আরব পাঠিয়ে দিয়ে নিজে তাঁর দেশটির ক্ষমতা দখল করেন। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস বর্তমানে সেই নেওয়াজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আর পারভেজ মোর্শারফ কখনও ফেরারি আবার কখনও বা গৃহবন্দী। বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর খন্দকার মোশতাক রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। মোশতাকের পেছনে এক দল বিপদগামী সেনা সদস্যের সমর্থন ছিল যাদের পেছনে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জিয়ার প্রচ্ছন্ন ছায়া। বঙ্গবন্ধুকে যে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা তিনি কয়েক মাস আগে থেকেই জানতেন কিন্তু তা তিনি নিজের মধ্যে রেখে তাঁর উপর স্থাপিত রাষ্ট্র ও সরকারের আস্থার তিনি বরখেলাপ করেন। জেনারেল খালেদ মোর্শারফের নেতৃত্বে সংগঠিত এক সামরিক অভ্যূত্থানে মোশতাক ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন জেনারেল জিয়া। রাষ্ট্রপতি মনোনীত হন বিচারপতি সায়েম। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে জিয়া পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতির পদটি দখল করেন। জিয়া ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যূত্থানে চট্টগ্রামে নিহত হলে উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এই দায়িত্ব নেয়াটা ছিল খুবই ক্ষণস্থায়ী কারণ তাঁকে হটিয়ে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা বনে যান সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদ। আইউব খান হতে এরশাদ সকল সেনা শাসকের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে অভিন্নতা ছিল। এঁরা সকলেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ইসকান্দার মির্জা আর ইয়াহিয়া খান ছাড়া সকলেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ভারতবিরোধিতা ছিল এঁদের সকলেরই রাজনৈতিক দর্শন। এঁরা সকলেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রিয় পাত্র ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও দেশে দেশে সব সময় সামরিক অথবা স্বৈরশাসকদের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। পাকিস্তান বা বাংলাদেশ ছাড়াও যার বড় উদাহরণ ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, চিলি, আর্জেন্টিনা, থাইল্যান্ড, মিশর অথবা সৌদি আরব। এক সময় ইরাকের সাদ্দাম হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন।
বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাসহ জেনারেল জিয়ার ক্ষমতা দখলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত ছিল যা এখন প্রমাণিত। জিয়া ক্ষমতা দখল করে নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য প্রথমে একটা তথাকথিত ‘হাঁ’ ‘না’ ভোটের মাধ্যমে নিজেকে জনগণের কাছে জায়েজ করার চেষ্টা করেন। এই অপকর্মটি তিনি শিখেছিলেন তাঁর এক কালের উর্র্ধতন কর্মকর্তা জেনারেল আইউবের কাছ হতে। জিয়া তবুও একটা ব্যালট পেপারের ব্যবস্থা করেছিলেন আইউব খান তাও করেননি। যাঁরা মনে করেছেন তাঁরা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে জেনারেলকে সমর্থন জানাবেন তাঁরা পত্রিকা হতে ব্যালট পেপার কেটে নিয়ে তারপর গিয়েছেন। দুজনেই ১০ ভাগ ভোটারের কাছ হতে ৯০ ভাগের বেশি ‘জনগণের আস্থা’ অর্জন করেছিলেন। একই পথ ধরেছিলেন জেনারেল জিয়াউল হক। সব সামরিক শাসকই নিজের অবস্থানকে পাকা পোক্ত করার জন্য ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্র ও সেনা গোয়েন্দা বাহিনীর সহায়তায় রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। ব্যতিক্রম ছিলেন মির্জা আর ইয়াহিয়া। তাঁরা সময় করে উঠতে পারেননি। পাকিস্তানের জেনারেলরা মুসলিম লীগকে ভেঙ্গে নিজেরা এক টুকরার মালিক হয়েছেন। বাংলাদেশের জিয়া চরম ডান ও বামপন্থী রাজনৈতিক এতিমদের নিয়ে প্রথমে একটি তাঁর ভাষায় জাতীয়তাবাদী প্লাটফর্ম, তারপর জাগদল এবং সব শেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গঠন করেন। এই নাজায়েজ কাজে তিনি রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সায়েমকে ব্যবহার করেন এবং ব্যবহার করার পর তাঁকে টয়লেট পেপারের মতো ছুঁড়ে ফেলে দেন। এই সব কাজ যখন হচ্ছিল তখন জিয়া সেনাবাহিনীতে কর্মরত প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী। তিনি যখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন তখনও তিনি সেনাপ্রধান। জিয়ার দল বিএনপিকে এ কারণেই সব সময় বলা হয় সেনানিবাসে জন্ম নেয়া দল। একই কাজ এরশাদও করেছেন। এরশাদ শুধু তাঁর ওস্তাদ জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। দু’জনই ধর্ম ও ভারতবিরোধিতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করেছেন। এই দু’জনের শাসনামলেই বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী আর ধর্মীয় জঙ্গীবাদের উত্থান ও বিস্তার হয়েছে। তবে এই দু’জন কথায় ভারতবিরোধী হলেও তাঁদের আমলেই ভারত বাংলাদেশ হতে সব চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। দু’জনই সব সময় ভারতকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত থেকেছেন। জিয়ার আমলে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই বাংলাদেশে তিন দিনের সফরে এলে জিয়ার হুকুমে রাতারাতি ঢাকার সব সড়ক থেকে পবিত্র কোরান শরীফের বাণী সম্বলিত সকল বিল বোর্ড অপসারণ করা হয় যা তাঁর নির্দেশে লাগানো হয়েছিল।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ১৯৯০-এ এরশাদের পতন হলে ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ক্ষমতায় আসে। এই নির্বাচনে তাঁরা প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে জোট না বাঁধলেও প্রায় একশতটি আসনে সমঝোতা করে নির্বাচন করেন। এই নির্বাচনে বেগম জিয়া খুব জোরালোভাবে না হলেও সাম্প্রদায়িক ও ভারতবিরোধিতার কার্ড খেলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে বেগম জিয়া সেখানে ভারতের ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করার চেষ্টা করেন। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলেন বেড়ান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে বাংলাদেশ ভারতের অংশ হয়ে যাবে আর মসজিদে আজানের পরিবর্তে উলু ধ্বনি শোনা যাবে। ১৯৯৭ সনে সরকারের সঙ্গে শান্তিবাহিনী পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধ করলে বেগম জিয়া বলেন এবার ফেনী নদী পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়ে যাবে। ২০০১ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বেগম জিয়া বাংলাদেশকে ভারতীয় পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে উঠতে সার্বিক সহায়তা করেন। বাংলাদেশ হয়ে উঠে এই সব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র চোরাচালানের নিরাপদ রুট যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র ও বগুড়ায় লক্ষাধিক গুলি উদ্ধার। এই সব কার্যক্রমে সরকারের শীর্ষ মহল হতে শুরু করে বিভিন্ন এজেন্সি এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সার্বিক সহযোগিতা করে। বেগম জিয়ার পূত্র তারেক জিয়া ডিজেএফআইর সহায়তায় ভারতের মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে দুবাইতে সাক্ষাত করেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় যে বেগম জিয়ার আইন ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন এরা বিচ্ছিন্নতাবাদী নয়, তারা তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে এবং আমাদের উচিত তাদের সহায়তা করা।
২০০৮ এর নির্বাচনে বিপর্যয়কর পরাজয়ের পর বেগম জিয়া আওয়ামী লীগের বিজয়ের পেছনে ভারতের হাত আবিষ্কার করতে উঠেপড়ে লাগেন। তবে এতে তিনি তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। কারণ জনগণ তাঁর পূর্বের আমলের দুঃশাসন দেখেছে। খালেদা জিয়া ২০১২ সালে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে এক সরকারী সফরে দিল্লী গেলে সেখানে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান হয়। সেই সফর কালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজের (বর্তমানে বিদেশমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং তাদের অভয় দিয়ে আসেন তিনি আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে ভারত সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন করবেন এবং বাংলাদেশে কোন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীর ঘাঁটি থাকবে না। দেশে ফিরে তিনি দেখেন ভারতকে দেয়া তাঁর এসব অঙ্গীকারে তাঁর দলের অনেকেই অখুশি। ভারত যদি বিএনপির এত বড় মিত্রই হবে তা হলে তারা কি নিয়ে তাদের রাজনীতি করবে? বিএনপির জন্য ভারতবিরোধী কার্ডতো একটি বড় অস্ত্র। এত বড় অস্ত্র কেন তাঁরা সমর্পণ করবেন? এই প্রসঙ্গে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক স্বনামে তাঁর পত্রিকায় একটি মন্তব্য প্রতিবেদনও লিখে ফেললেন। বেগম জিয়া ফিরে গেলেন তাঁর পূর্বের অবস্থানে। সাংবিধানিক বাধ্যবাদকতার কারণে সরকার যখন দশম সংসদ নির্বাচন করতে চাইল তখন বিএনপি ও তার মিত্ররা দাবি তুললো অসাংবিধানিক ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। এই দাবিতে তারা সারাদেশে এক ভয়াবহ তা-ব শুরু করল। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফরে এলে বেগম জিয়া তাঁর সঙ্গে একটি পূর্ব নির্ধারিত সাক্ষাতকার বাতিল করেন। এটি ছিল একটি চরম অসৌজন্য মূলক আচরণ। সব বাধা বিপত্তি ও জামায়াত বিএনপির সৃষ্ট সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে যখন দেশে ১০ম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়েই গেল তখন বেগম জিয়া প্রকাশ্যে বললেন এই নির্বাচন ‘দিল্লীর প্রভুদের’ নির্দেশেই হয়েছে। সম্প্রতি ভারতের নতুন সরকারের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকায় তিন দিনের সফরে ঢাকা এলে বেগম জিয়া তাঁর হোটেল স্যুইটে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এক গাদা নালিশ করে এসেছেন। বলে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে এসে তাঁকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এটিও একটি কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্জিত বক্তব্য। বেগম জিয়া অবশ্য বলেননি কোন কোন রাষ্ট্রদূত তাঁকে এই নির্বাচনে অংশ নিতে বারণ করেছিলেন।
সুষমা স্বরাজ দেশে ফিরে যাওয়ার পর বেগম জিয়া ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার সাংবাদিক সুভজিত রায়কে একটি দীর্ঘ সাক্ষাতকার দিয়েছেন যা জুলাই ১ তারিখে ছাপা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলোর সমাধান না হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ী, ভারত নয়। তিনি ভুলে গিয়েছেন ভারতের সঙ্গে বিরাজমান যেসব সমস্যার সমাধান হয়েছে তার সবগুলোই হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, তিনবিঘা করিডোর সার্বক্ষণিক খোলা রাখার চুক্তি, বন্দী বিনিময় চুক্তি, সীমানা চিহ্নিতকরণ চুক্তি এ সবই হয়েছে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, এরশাদ বা বেগম জিয়ার শাসনামলে নয়। যে সব সমস্যার সমাধান হয়নি তার দায় দায়িত্ব একান্তভাবে ভারতের, বাংলাদেশের নয়। তিনি আবারও বলেন কংগ্রেস তাঁকে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য চাপ দিয়েছিল। তিনি অবশ্য বলেননি এই নির্বাচনে না গিয়ে তিনি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছেন। তিনি আরও বলেন তাঁর শাসনামলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপদে ছিলেন। তিনি হয়ত ভুলে গেছেন ২০০১ সালের নির্বাচনের পর এদের ওপর তাঁর নেতাকর্মীদের বদৌলতে কী হাবিয়া দোযখ নেমে এসেছিল। বেগম জিয়া তাঁর আমলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা দানের বিষয়টি বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেন। তিনি বেমালুম বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে এদের জন্য অস্ত্র পরিবহনের বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি আরও বলেন জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কটা আদর্শিক নয় শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক। তবে তাঁর সর্বশেষ সরকারে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতাকে তাঁর মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেয়াকে তিনি কীভাবে জায়েজ করবেন? অবশ্য বর্তমানে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আদর্শিক কোন পার্থক্য তেমন একটা নেই। এই সাক্ষাতকারে বেগম জিয়া নিজে আর তাঁর দলকে ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। ভারতের জনগণ এর কতটুকু বিশ্বাস করবেন তা তাদের ব্যাপার। ইতোমধ্যে বিএনপি ঘরাণার অন্তত একটি পত্রিকা বেগম জিয়ার এসব বক্তব্যকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে। এখন দেখার বিষয় বেগম জিয়া কতক্ষণ তাঁর অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন। আগামী দিনগুলো বলবে বেগম জিয়া তাঁর দল বিএনপিকে কীভাবে আর কতটুকু আবার সুষ্ঠু ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তবে জনগণ দেশে সব সময় সুস্থ রাজনীতি প্রত্যাশা করে।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১০
গাধা গরু বলেছেন: বিএনপি নিজের দোষেই মারা খাচ্ছে। হাম্বাদের কুটচাল বুঝা কষ্টকর
৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
জহিরুলহকবাপি বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন ধর্মী লিখা । সরল ভাবে েইতিহাস উঠে এসেছে । তবে কিছু বাক্যের কারণে চমৎকার লিখাটির দিকে বিজাতীয় একটি গ্রুপ আঙ্গুল তোলার চান্স পাবে । এরা ইতিহাস েমানে না সো...............
ফেবু শেয়ার দিলাম ।
৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫৬
জহিরুলহকবাপি বলেছেন: আপনার ফেবু আইডি দেওয়া যাবে?
আমারটা --- https://www.facebook.com/zohirul.hoque.bapy
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৫৭
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: বিএনপি হল গাধা গরু আর ছাগলদের নিয়ে গড়া একটি ফিটফাট উত্তরাধুনিক রাজনৈতিক দল, যারা ক্ষমতায় যাবার জন্য অন্য কোন শক্তির উপর নির্ভরশীল। নিজেরা কোন শক্তি বা বুদ্ধি খাটাতে একেবারেই নারাজ। ধরাটাও তাই জায়গামতই খেয়েছে।