নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফর

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৫৯

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের মধ্যদিয়ে দুদেশের মৈত্রীর বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে_ এমনটি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২১ ঘণ্টার বাংলাদেশ সফরে এসে গত শনিবার তিনি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও শিল্পপতিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন; যা গতকাল বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, স্বাধীনতার পর থেকেই শিল্পোন্নত জাপান বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর মতো থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-শিক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছে। বাংলাদেশের যেসব বন্ধুরাষ্ট্র রয়েছে তার মধ্যে জাপানকে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের মধ্যদিয়েও তার প্রতিফলন বেশ স্পষ্ট। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ-জাপানের সম্পর্ককে ভাইবোনের দৃঢ় বন্ধন হিসেবে অভিহিত করেছেন। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে সব সময় পাশে থাকার জন্য আমরা জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই।

বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগে এক ধরনের স্থবিরতা চলছে বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়। সরকারও বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ইতোমধ্যে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে নানা ধরনের প্রণোদনায় রয়েছে এসব উদ্যোগের মধ্যে। অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশে সহজলভ্য শ্রমের কারণে এদেশ বিনিয়োগকারী স্বল্প সময়ের মধ্যেই লাভবান হয়ে থাকেন। বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের বিনিয়োগও রয়েছে এরপর সেদেশের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কথা বিবেচনায় নেয়া সঙ্গত এ কারণে যে, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রবিজয়ের পর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্মুক্ত হয়েছে। সুতরাং বিগ-বি অর্থাৎ বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে শিল্প প্রবৃদ্ধির বলয় গঠনের উদ্যোগ জাপানের কাছেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে তিনি জাপানি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করারও ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শিনবো আবেরের এ ঘোষণা আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক এবং এতে দুদেশের সম্পর্ক আরো নিবিড় হবে বলেই প্রত্যাশা করা যায়।

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সফরের মধ্য দিয়ে জাপান-বাংলাদেশ 'সমন্বিত অংশীদারিত্ব কর্মসূচি' উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদে বাংলাদেশের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন এবং জাপানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। জাপানের পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ তার উদারতাই প্রকাশ করল। যা দুদেশের সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে বলে ধারণা জন্মায়। এ কথা অনস্বীকার্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল থেকেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান এখনো বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে পাশে থেকে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে নানামুখী সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। চলতি বছরের মে মাসে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরকালেও আমরা এর নমুনা লক্ষ করেছি। সে সময় জাপান বাংলাদেশে শান্তিকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কারিগরি সহায়তার আশ্বাস দেয়। ওই কেন্দ্রের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। জাপান বাংলাদেশকে এসব খাতেও সহায়তা দেবে বলে আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই।

সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় ভৌগোলিক কারণেই বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। এদেশের প্রাকৃতিক সম্পদও মজুদ রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। এখন সেসব সম্পদ ব্যবহার উপযোগী করে দেশকে আরো সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে জাপানের কারিগরি সহায়তা আমাদের যথেষ্ট সহায়ক হতে পারে। এছাড়া অবকাঠামো খাতসহ টেক্সটাইল, চামড়া, পেট্রোকেমিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক্স, টেলিযোগাযোগ খাতসহ বিভিন্ন খাতে জাপানের দক্ষতা কাজে লাগানো সম্ভব হলে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। এজন্য সরকারের কর্তব্য হওয়া দরকার সেদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদারের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরো নিবিড় ও উষ্ণ করা। বাংলাদেশ-জাপানের বন্ধুত্বের সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পাবে এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.