![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছাত্রদলের নতুন একটি কমিটি ঘোষণার পর একটি অংশ নতুন কমিটি সম্পর্কে নানা ধরনের অভিযোগ এনে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সম্মুখে গত কয়েকদিন প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অফিসে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করছে, ককটেলবাজি করছে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে যারা দায়িত্ব পেয়েছে তারা ‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্র উদ্ধারে যোগ্য ভূমিকা রাখবে’ বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ছাত্রদলের কমিটি গঠনের বিষয়টি শুধু কেন্দ্রে নয়, অনেক জেলা শহরেও সংগঠনে বিভক্তি এনেছে বলে কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে। পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন।
ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে প্রথম আলো শুক্রবার সম্পাদকীয়তে লিখেছে— ‘ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে’ বিএনপি। বিভিন্ন পত্রিকায় এখনও প্রতিদিন ছাত্রদলের নতুন কমিটির পক্ষ-বিপক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি যেমন দেখা যাচ্ছে, নানা ধরনের সংবাদ ও প্রতিবেদনও প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টি অনেকটা জাতীয় রাজনীতির একটি ইস্যুর মতো গুরুত্ব দিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
বিএনপির ছাত্রবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাবেক ছাত্রনেতা কমিটির বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছেন, তাদের সরকারের দালাল বলেই আখ্যায়িত করেছেন। আবার যারা বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তারা নতুন কমিটিকে ‘শেখ হাসিনার মিশন বাস্তবায়নকারী’ বলে অভিহিত করছেন। এ ধরনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছে। পদবঞ্চিতরা পদপ্রাপ্তিদের ‘বিবাহিত’, ‘বুড়ো খোকা’, ‘অছাত্র’, ‘ব্যবসায়ী’ ইত্যাদি নামে অভিহিত করছে। যারা অভিযোগ করছে তারা কতজন সাধারণ ছাত্র, কতজন অছাত্র তা আমরা জানি না। তবে ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে এখন যারা অবস্থান নিয়েছে তাদের দিয়ে কমিটি করা হলে এখন যারা কমিটিতে স্থান পেয়েছে, তারা হয়তো একই ধরনের অভিযোগ তুলে বিদ্রোহ করত। তবে এ কথা ঠিক, এক সময় ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হতো, তাতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিদের গোপন ভোটে অথবা হাত তুলে সমর্থনদানের মাধ্যমে একটি কমিটির নাম ঘোষণা করা হতো— যা করতালি দিয়ে সমর্থন জানানোর মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হতো। আমরা ষাট এবং সত্তর দশকের শুরুতে অন্তত তেমনটিই দেখেছি। কিন্তু সেই দিন ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন ছাত্র সংগঠনের নতুন কমিটি গঠিত হয় কেন্দ্রীয় কোনো নেতার প্রস্তুতকৃত তালিকা দলীয় প্রধানের স্বাক্ষরের মাধ্যমে। অন্যদিকে এসব কমিটিতে যারা স্থান পায় তাদের চেহারা, বয়স, কথা বলার ধরন ইত্যাদি দেখে আগের ছাত্রনেতাদের প্রতি যে ধরনের স্নেহ ও অনুভূতি বাইরের মানুষ প্রকাশ করত, এখন কিন্তু তা করে না। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদেরও এসব কমিটিতে খুব একটা এখন দেখা যায় না।
মেধাবীরা তো নয়ই। বিষয়টি আমি ছাত্রদলের ক্ষেত্রে এককভাবে প্রযোজ্য সেভাবে দেখছি না। ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধারা অনুসরণ করা হয়। বটে, তবে তা নিয়েও যথেষ্ট কথা আছে, অভিযোগ আছে। ছোট ছোট বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের পুরনো ঐতিহ্য, শক্তি ও অবস্থান এখন আর নেই। ছাত্রশিবিরের বিষয়টি
একেবারেই আলাদা। সেটিও নিয়ন্ত্রিত হয় বিশেষ একটি জায়গা থেকে। তবে তা বেশ পরিকল্পিতভাবে হয়ে থাকে। সেখানে ছাত্রশিবিরের শৃঙ্খলার ভিতর থেকেই নেতৃত্ব তুলে আনা হয়। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান এবং ধারাটিকে সম্পূর্ণরূপে আলাদাভাবেই দেখতে হবে— যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির আদর্শ, কাঠামো এবং লক্ষ্য পরিবর্তনে একটি প্রতিক্রিয়াশীল ভাবাদর্শের দীক্ষায় দীক্ষিত গোষ্ঠীরূপেই পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে আদর্শবাদী ছাত্র রাজনীতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ছাত্রশিবির গোপনে প্রকাশ্যে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের অবস্থানের ওপর ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নির্ভরশীল।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদলের রাজনীতি আদর্শগতভাবে ভিন্ন হলেও এ দুটোর রাজনীতি ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেনি। একেক সময় ছাত্রলীগ আদর্শের চর্চায় কমবেশি মনোনিবেশ করত। কিন্তু সেই জামানায় মনে হয় ব্যাপক ভাটা পড়েছে। ফলে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে এখন নেতাকর্মীর যে সমাবেশ ঘটেছে বা ঘটছে তাদের লেখাপড়ার চর্চা, ভালো ছাত্র হওয়া, জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় নিয়োজিত থাকার চেষ্টা খুব একটা চোখে পড়ে না। স্থানীয় পর্যায়ের কলেজসমূহে ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী যা করে তার সঙ্গে ছাত্র বা ছাত্র রাজনীতির কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে করার কারণ নেই। ছাত্র রাজনীতিতে অর্থ কামাই করার মাধ্যমে ধনী হওয়ার মানসিকতা এখন কলেজ পর্যায়েই বিস্তৃত হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও পরিস্থিতি একই রকম। হল দখল, টেন্ডারবাজি, সাব-টেন্ডারবাজি, ক্যান্টিনে দল বেঁধে আড্ডা দেয়া, দু’চারটা মিছিল করা, তদবির করা, ভর্তিবাণিজ্যসহ নানা ধরনের অর্থ সংশ্লিষ্ট কাজে ছাত্রনেতাদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি এখন মোটেও অস্বীকার করার উপায় নেই। এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। তাই ছাত্রলীগের ব্যানার ব্যবহার করে অনেকেই এভাবেই চলছে। তবে তারা কতটা লেখাপড়ায় নিজেদের যোগ্য নাগরিক ও উচ্চশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ হিসেবে তৈরি করছে তা নিয়ে আমার গভীর সন্দেহ রয়েছে। দেশের অপেক্ষাকৃত মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা এখন যে কোনো ছাত্র সংগঠন থেকে শতহাত দূরে থাকতে পারলে নিরাপদ মনে করে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল জীবনে ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ভালো থাকতে দেয় না। সিট বণ্টন, হলে খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা ইত্যাদিতে প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের কর্তৃত্ব, খবরদারিত্ব খুবই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সত্যিকার অর্থেই ছাত্র সংগঠনের নামে এখন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যা চলছে তা দেশের শিক্ষা, বর্তমান ছাত্র
রাজনীতি, ভবিষ্যত্ রাজনীতির
নেতৃত্ব গঠন ইত্যাদি কোনোটির জন্যই সহায়ক হচ্ছে না। কেননা, ছাত্র সংগঠনের নিচে এসে অনেকেই ভুলে যায় যে, সে একজন ছাত্র। ভুলে যায় অধ্যয়নই তার
প্রধান কাজ। বরং সে শুরু থেকেই নিজেকে একজন ‘নেতা’ হিসেবে ভাবতে শুরু করে। রাতদিন একটি সমর্থকগোষ্ঠী নিয়ে আড্ডা দেয়া, মাস্তানি করা ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। অচিরেই নানা অপকর্মের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে অনেকেই দ্বিধা করে না।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
ভরকেন্দ্র বলেছেন: ‘ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে’
এটাই রাজনীতি... সব দল একই রকম.....।
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: ছাত্রদলের মিছিল থেকে ইদানিং নাকি ছাত্রলীগ কর্মীরা গ্রেফতার হচ্ছেন। ব্যাপারটা কি বলেন তো!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪২
বিডি আইডল বলেছেন: ছাগলের বাচ্চা ছাত্রদল নিয়া তোর কান্দাকাটি ক্যান? তু্ই লিখ ছাত্রলীগরে নিয়া