![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এরপর একে একে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তার শুরু হয়। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করার পর একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর জামাতের আমিরের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ২৮ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগ আমলে নেন। এরপর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গত বছরের ২৮ মে আনুষ্ঠানিকভাবে জামাত আমিরের বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খানের জবানবন্দি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে গত বছরের ২৬ আগস্ট এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে সাক্ষ্য দেন মোট ২৬ জন।
আর নিজামীর পক্ষে তার ছেলে মোঃ নাজিবুর রহমানসহ মোট চারজন সাফাই সাক্ষ্য দেন। বাকি তিনজন হলেন- এডভোকেট কে এ হামিদুর রহমান, মোঃ শামসুল আলম ও আব্দুস সালাম মুকুল। সাক্ষ্য ও জেরা শেষে গতবছর ৩ থেকে ৬ নভেম্বর প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রথম দফা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত না হওয়ায় তাদের লিখিত যুক্তিতর্ক জমা দিতে বলে ১৩ নভেম্বর মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে ট্রাইব্যুনাল। এরপর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বদল হওয়ায় চলতি বছর ১৬ থেকে ২৪ মার্চ নতুন করে এ মামলার যুক্তিতর্ক হয়। দ্বিতীয়বারের মতো অপেক্ষায় রাখা হয় মামলার রায়। চলতি বছর ২৪ জুন রায়ের তারিখ রাখা হলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারাকর্তৃপক্ষ নিজামীকে হাজির না করায় রায় আবারো পিছিয়ে যায়। সবশেষে গতকাল বুধবার বহু প্রতীক্ষিত এ রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। রায়ে নিজামীকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
ঘোষিত রায়গুলো : বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরু হয়। ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়ে জামাতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, যা প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয় হাজার হাজার মানুষ।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সেই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে জনতার দাবির মুখে সরকার ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন আনে। এর মধ্য দিয়ে রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষেরই আপিলের সমান সুযোগ তৈরি হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ এ মামলার চূড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যা কার্যকর করা হয় ১২ ডিসেম্বর রাতে। ট্রাইব্যুনালের তৃতীয় রায়ে গতবছর ২৮ ফেব্রুয়ারি জামাতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হলে দলটির ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসেবেই পুলিশসহ নিহত হয় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করলে চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর এই জামাত নেতার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। গত বছর ৯ মে ট্রাইব্যুনালের চতুর্থ রায়ে জামাতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষের আপিল শুনানি শেষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন আপিল বিভাগ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উসকানির দায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন জামাত আমির গোলাম আযমকে গত বছর ১৫ জুন ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। এটি ছিল ট্রাইব্যুনালের পঞ্চম রায়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলার মধ্যেই গত ২৩ অক্টোবর রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৯২ বছর বয়সী জামাতগুরু।
গত বছর ১৭ জুলাই ষষ্ঠ রায়ে জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকেও একই অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এরপর ১ অক্টোবর সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়। তিনিও রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।
গত বছর ৯ অক্টোবর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আদালত। যুদ্ধাপরাধের দণ্ড ভোগের মধ্যে ৮৩ বছর বয়সে গত ৩০ আগস্ট মারা যান আলীম। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ১১ মাস কারাবন্দী অবস্থায় হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলেন তিনি। আর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে একাত্তরের দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে গত বছর ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। তারা দুজনেই পলাতক রয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
জহির উদদীন বলেছেন: হে হাম্বা দালাল আর কত কাল......