নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি জামাত গোসসা...

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:১৪

বিএনপি জামায়াতের সম্পর্কে নতুন করে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সদ্যপ্রয়াত জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর বিএনপির নজিরবিহীন নীরবতায় চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে জামায়াত-শিবির।
জানা গেছে, গোলাম আযমের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধরনের শোক জানায়নি বিএনপি। শুধু তাই নয়, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কোনো নেতা গোলাম আযমের জানাজায়ও যাননি। এ নিয়ে জামায়াতের অভ্যন্তরে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। কারণ জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তৃণমূলের নেতাদের ধারণা দেয়া হয়েছিল গোলাম আযমের মৃত্যুর পর বিএনপি অবশ্যই সহমর্মিতা দেখাবে। শোক প্রকাশের পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতারাও অংশগ্রহণ করবেন তার জানাজায়। কিন্তু কোনোটি করেনি বিএনপি। এতে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন জামায়াত নেতারা। তাদের বক্তব্য, বিএনপি জোটের সাধারণ একজন নেতা বা তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন মারা গেলেও বিবৃতি দিয়ে শোক জানান বিএনপির চেয়ারপারসন বা মহাসচিব। কিন্তু গোলাম আযমের ক্ষেত্রেই শুধু ব্যতিক্রম করেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, তারা না চাইলেও বিএনপির আচরণের কারণে জোটের ঐক্যে যে ফাটল ধরবে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন শক্তিশালী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে 'দুর্বল' বিএনপি আন্দোলনে এমনিতেই ব্যর্থ, সেখানে তাদের শক্তিশালী মিত্র জামায়াতের আদর্শিক ও তাত্তি্বক নেতা অধ্যাপক গোলাম আযমের ব্যাপারে বিএনপির এই তাচ্ছিল্য ও অবহেলার পর কিভাবে যুগপৎ আন্দোলন করা সম্ভব?
গোলাম আযমের মৃত্যুর পর বিএনপির ভূমিকা নিয়ে যে জামায়াত-শিবিরের সবপর্যায়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তা শনিবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বাদ জোহর জানাজার আগে ও পরে এবং আগের দিন বিকালে মগবাজারে গোলাম আযমের বাসার সামনে উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মীর কথাবার্তা ও আচরণে প্রকাশ পেয়েছে। এ সময় অনেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় শীর্ষনেতাদের কাছে বিএনপি জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসারও দাবি জানান। কেউ কেউ প্রকাশ্যেই বলেন, 'দুর্নীতিবাজদের ধিক্কার দিয়ে চলে আসুন। এদের সঙ্গে আর নয়। খালেদা জিয়ার আশপাশে এখন আর কোনো ভালো লোক নেই। দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টাউট-বাটপাড় প্রকৃতির লোকরাই এখন তার চারপাশ ঘিরে রেখেছে। এদের কথায়ই খালেদা জিয়া নিজে চলেন এবং দল পরিচালনা করেন। কাজেই এই দলের জোটে আর থাকা যায় না। জোটকে ধিক্কার জানিয়ে চলে আসতে হবে।' এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, নুরুল ইসলাম ম-ল, শিবিরের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, রেজাউল করিম, মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নূরুল ইসলাম বুলবুল, জায়েদুল ইসলাম, জসিমউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, নূর মো. ম-লসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা। সেখানে গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আমান আযমীও উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই অসংখ্য নেতাকর্মী দুইদিন ধরে উচ্চৈঃস্বরে এই ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুতে যে দল নূ্যনতম একটু শোক পর্যন্তও জানায়নি_ তাদের সঙ্গে আবার জোট কিসের?
জামায়াত নেতাদের বক্তব্য, একদিনেই সব বিপদ শেষ হয়ে যায় না। বিএনপিরও সামনে আরো বিপদ আছে। তাদের আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। সেদিন তারাও (জামায়াত) তেমনিভাবে অংশগ্রহণ করবে না। সাড়া দেবে না বিএনপির ডাকে। জামায়াত নেতাদের আরো বক্তব্য, গোলাম আযম তো আওয়ামী লীগের কাছে যুদ্ধাপরাধী। কিন্তু জামায়াতের কাছে তিনি মহান নেতা। তাই বিএনপি যেহেতু জামায়াতের মিত্র সেহেতু তাদের শোক জানানো বা জানাজায় শরিক হতে সমস্যা কোথায় ছিল? এর আগে বিএনপিপ্র্রধান বেগম খালেদা জিয়াও তো অসংখ্যবার গোলাম আযমের সঙ্গে বৈঠক সভা সমাবেশ করেছেন, পরামর্শ নিয়েছেন। কিন্তু এখন হঠাৎ করে এত দূরত্ব সৃষ্টি করার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না জামায়াত। বিএনপির রাজনৈতিক শিষ্টাচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।
সদ্য জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য হওয়া শিবিরের সাবেক এক কেন্দ্রীয় সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে যায়যায়দিনকে বলেন, গোলাম আযম শুধু রাজনীতির কারণেই আওয়ামী লীগের কাছে 'ঘৃণিত রাজাকার' ছিলেন। কিন্তু উদারপন্থী বিএনপির কাছে তো তিনি তা ছিলেন না। কারণ ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিকাশে জিয়াউর রহমান জাগ দল নামে যে দল গঠন করেছিলেন তারও অন্যতম পরামর্শক ছিলেন গোলাম আযম। এছাড়া তিনি ১৯৯১ সালে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থারও অন্যতম রূপকার ছিলেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ হটাতে যে জোটবদ্ধ রাজনীতির ফর্মুলা দেয়া হয় সেটিও ছিল গোলাম আযমের চিন্তার ফসল। তাহলে বিএনপি কিভাবে গোলাম আযমের অবদানকে রাতারাতি অস্বীকার করে? জামায়াতের এ নেতা আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি তো আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঘুঁটি। কিন্তু বিএনপি কিভাবে তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিল তা বোধগম্য নয়। গোলাম আযমের প্রতি বিএনপির এই অশ্রদ্ধা ও অবহেলা চলমান রাজনীতিতে পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগকেই লাভবান করেছে বলে মনে করেন তিনি।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরের কর্মপরিষদ সদস্য ও শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. রেজাউল করিম যায়যায়দিনকে বলেন, গোলাম আযমকে নিয়ে বিএনপির এ ধরনের আচরণে দলীয়ভাবে জামায়াতের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ গোলাম আযমের জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে তিনি কি ধরনের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিএনপি জোট। কারণ বিএনপির আচরণের জন্য তাদের ওপর জামায়াতের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিএনপির আগামী দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত মাঠে না নামলে বিএনপিকে দমাতেও কোনো সমস্যা হবে না সরকারের। তাছাড়া আওয়ামী লীগ এখনো বিএনপিকে জামায়াতের দোসর বলেই অপবাদ দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। তাহলে মাঝখানে গোলাম আযমের মৃত্যুর পর শোক না জানানো বা জানাজায় অংশগ্রহণ না করে কি লাভ হয়েছে বিএনপির।
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগে যেমন হাইব্রিড আওয়ামী লীগার ও নষ্ট বামরা ঢুকে আওয়ামী লীগের মূল ধারাকে কলুষিত করছে, বিএনপিতেও কিছু অতি বাম ও প্রগতিশীল দাবিদার নেতার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এদের কারণেই দল ও জোটের আজকের এ অবস্থা। মূলত এরা এক সময়ে আওয়ামী লীগের গর্ভেরই সন্তান ছিল।'
এ প্রসঙ্গে ছাত্রশিবিরের প্রচার শাখার কেন্দ্রীয় এক নেতা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বিএনপির নেতারা এলে কি হতো? সর্বোচ্চ হয়তো কয়েকশ' লোক বেশি হতো। কিন্তু বিএনপি কোনোটি না করে কি হয়েছে? অথচ গোলাম আযমকে যুদ্ধাপরাধী বিবেচনা না করে একজন সাধারণ মুসলমান ভেবেও বিএনপি এ কাজটি করতে পারত। বিএনপি দলগতভাবে বাদ দিয়ে অন্তত ব্যক্তিগতভাবেই শোক জানানো বা জানাজায় শরিক হতে পারত। কিন্তু বিএনপি তা না করে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে মাত্র।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪৯

বিডি আইডল বলেছেন: ছাগল

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

সত্যের পথে আরিফ বলেছেন: কে ছাগল? জামাত না.............?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.