![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল কর্মসূচি জনজীবনে দুর্ভোগ তৈরি করা ছাড়াও অর্থনীতিতে হানছে চরম আঘাত। প্রতিটি হরতালে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে, ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। দেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) হরতালের ক্ষতি সম্পর্কে একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। সে হিসাবে বছরে ৪০ দিন হরতাল হলে ৬৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। প্রতিদিন গড়ে ক্ষতি হয় ১৬০০ কোটি টাকা। ডিসিসিআই তাদের পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে, তৈরি পোশাক খাতে একদিনের হরতালে ৩৬০ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। রাজস্ব ক্ষতি হয় ২৫০ কোটি টাকা। ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পাইকারি বাজার, শপিংমল, শোরুমের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা।
এছাড়া পরিসংখ্যানে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। পর্যটনশিল্পের ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা। স্টিল মিলস, সিরামিক, সিমেন্ট, রড, এডিবল অয়েল, কাগজসহ সব উৎপাদনকারী কারখানার একদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০০ কোটি টাকা। অপরদিকে একদিনের হরতালে শিক্ষা খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একদিনের হরতালে তাদের ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১১০ কোটি টাকা। হরতালের কারণে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে তাদের ক্ষতি হয়েছে ৮০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
শুধু ১৯৯৯ সালেই ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রতি বছরে ক্ষতি হয়েছে ৮ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। হরতাল সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে এমন কর্মসূচি কখনো কাম্য নয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো এগিয়ে যাচ্ছে। যদি এই মুহূর্তে হরতালের মতো কর্মসূচির কারণে দেশ উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে তাহলে কখনো অর্থনীতির মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। আর এজন্য আইন করে হরতাল বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এদিকে হরতালে সারা দেশের সঙ্গে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে পরিবহন শিল্পে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। হরতালের ক্ষতি সম্পর্কে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ খান জানান, সারা দেশে ৩ লাখ গণপরিবহন চলাচল করছে। হরতালে জেলা শহরগুলোতে পরিবহন চলাচল করে। কিন্তু রাজধানী থেকে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন চলাচল করে না। বন্ধ থাকা পরিবহনের সংখ্যা ৬০ শতাংশ। প্রতিটি পরিবহনে প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার টাকা আয় হলে হরতালের কারণে সে আয় হচ্ছে না। সে হিসেবে প্রতিদিন পরিবহন ব্যবসায়ীদের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪৪ কোটি টাকা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত বছর ৬ মাসে দেশে মোট ৫৫টি হরতাল-অবরোধ হয়েছে। এই সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতি হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮০ দিনের মধ্যে ওই হরতাল-অবরোধ হয়েছে।
সিপিডির প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে একদিনের হরতালে ক্ষতি হয় ৮৯১ কোটি টাকা। হরতাল প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি হাজি মোহাম্মদ গোলাম মাওলা বলেন, বেসরকারি হিসাবে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিদিন ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। হরতালে অধিকাংশ দোকান খোলা থাকে কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসতে পারেন না। ফলে হরতালে প্রতিদিন মোট লেনদেনের ৭৫ শতাংশ হয় না। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৫২
কিবর বলেছেন: এ ক্ষতি কি শুধু বিএনপি জামাত হরতাল ডাকলেই হয় না কি আওয়ামীলীগ ডাকলেও হয়?
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ও বিভিন্ন জেলায় তারা হরতাল করেছে, গণজাগরণ এর দেশপ্রেমীক ভাইরা হরতাল করছে, ক্ষতি কি তার বেলায় হয় না?