নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২০

রাষ্ট্র জনগণের। জনগণের শান্তি, উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও কল্যাণ সাধন রাষ্ট্রের কর্তব্য। গণনির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং সাংবিধানিক ধারায় রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করবে। জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত ও নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায় সরকার এড়াতে পারে না। সুশাসন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুরক্ষা এবং গণনিরাপত্তা প্রদান কর্মসূচি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে তৎপর রয়েছে রাজনৈতিক সন্ত্রাসী, ধর্মীয় মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও সহস্র জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী। এদের নাশকতামূলক তৎপরতা ও ষড়যন্ত্রের মুখে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত নয়। সরকারের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারিতে আটক করা সম্ভব হয়েছে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও অপতৎপরতায় সক্রিয় কিছু দুর্বৃত্তকে। তারপরও থেমে থাকছে না অপরাজনীতির আশ্রয়ে বিকশিত সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও নাশকতা। ভারত-বাংলাদেশ চুক্তিসহ দক্ষিণ এশীয় আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার আওতায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নে কোনোরূপ দুর্বলতা ও গাফিলতির সুযোগ নেই। প্রায়শ সীমান্তবর্তী এলাকায় সহস্র জঙ্গিদের তৎপরতা ও হত্যা শঙ্কিত করে তুলেছে জনগণকে। সীমান্তবর্তী এলাকা নিরাপত্তা ছাড়াও পার্বত্য এলাকার গহিন অরণ্যে জঙ্গিদের বিস্তার ও সহস্র প্রশিক্ষণ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধারসহ নানা আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। ইতোমধ্যে তালেবান নেতা জাওয়াহিরি ভিডিও বার্তায় প্রকাশিত জঙ্গি সন্ত্রাসের হুমকির পর ভারতের বর্ধমান এলাকায় যশোর, সাতক্ষীরা ও খুলনার সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতার আলামত পাওয়া গেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জঙ্গি সন্ত্রাসীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা নাশকতার জালে বন্দী করতে চাচ্ছে জনজীবন। সরকারকে ব্যর্থ করার পর্যায়ক্রমিক প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সময়ে। কখনো যুদ্ধাপরাধের রায়ের আগে ও পরে, কখনো হরতালের আগে ও পরে, কখনো নাশকতামূলক অন্তর্ঘাত ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে কেন্দ্র করে জঙ্গি সন্ত্রাসের তৎপরতা বিস্তার করে চলেছে। এতে গোয়েন্দা নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরদারি তৎপরতা বাড়লেও জনগণের শঙ্কা কমছে না। জনজীবনে অনিরাপত্তা ও ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। নির্বাচনবিমুখ ও সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি-জামাত শান্তিপূর্ণ হরতালের কথা বললেও ঘটে চলেছে নাশকতার ঘটনা।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেছেন- সন্ত্রাস সৃষ্টি, হুমকি প্রদর্শন, ভয় দেখানো, নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে মানুষের মৌলিক অধিকার বিপন্ন করার অধিকার কারো নেই। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী ও মানুষ হত্যার অপরাধে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও জবাবদিহিতাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানায়। আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধান অনুসারে এ বিচার হতে হবে স্বচ্ছ ও স্বাধীন। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ স্বীকৃত, সন্ত্রাস নয়। নাগরিকদের অধিকারে বিঘ্ন সৃষ্টির অধিকার কারো নেই। যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত স্টিফেন জে র‌্যাপ চারবার ঢাকা সফর করে বলেছেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। এ বিচারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যায়ে আরো উন্নত করার সুযোগ রয়েছে।’

৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মার্কিন সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান রয়েছে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপেও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইতিবাচক বৈঠক ও আলোচনা হয়েছিল। তৃতীয় দফা সংলাপে আলেচিত হয়েছিল গণতন্ত্র, উন্নয়ন, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা, ও আঞ্চলিক ইস্যু। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বের প্রথম ও দ্বিতীয় সংলাপে আলোচনার বিষয় ছিল কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও বন বিষয়ক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ অনেক ভালো কাজ করছে। বাংলাদেশ একদিন ‘এশিয়ান টাইগার’ হবে। সেই লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। সে জন্য নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, সমুদ্রে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান করা দরকার। আরো দরকার স্থিতিশীলতা ও উপযুক্ত অবকাঠামো। সে জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উদার, গণতান্ত্রিক ও বহুমতের একটি দেশ হলো বাংলাদেশ। ধর্মনিরপেক্ষ ও সহিষ্ণু দেশ হিসেবে এর পরিচতি ইতিবাচক। ইরাক ও সিরিয়াসহ বহু দেশের কাছে বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। উন্নয়ন, শান্তি ও অগ্রসর বিশ্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অগ্রণী ভূমিকায় থেকে সুনাম অর্জন করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও স্বদেশে তা প্রেরণ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে প্রবাসীরা। গার্মেন্টস শিল্পে অবদান বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের ফলে ক্রমাগত হরতাল দিয়ে দেশের প্রতিদিন প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনষ্ট হচ্ছে। চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনও ধ্বংস হচ্ছে। লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর অভিভাবক উদ্বিগ্ন থাকছেন। প্রতিদিন সাড়ে তিনশ কোটি টাকার পরিবহন খাতে লোকসান মেনে নেয়া যায় না। যারা বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত, যারা বাংলাদেশের শান্তি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কাজে সক্রিয়, যারা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের দোসর হয়ে রাজনীতিকে ব্যবহার করছে তারা আইনের ঊর্ধ্বে নয়। গণস্বার্থে তাদের দমন করা এবং শাস্তি প্রদান করা সরকারের কর্তব্য। গার্মেন্টস শিল্পে ধস সৃষ্টি, অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিক বিক্ষোভ উসকে দেয়া এবং নাশকতা সৃষ্টি করে অর্থনীতিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া কেবল দেশবিরোধী ও গণবিরোধীদের পক্ষেই সম্ভব। এদেরকে কঠোরভাবে দমন করে সুশাসন নিশ্চিত করা গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব। সরকারকে এ দায়িত্বই পুনরায় স্মরণ করে দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা। তিনি বাংলাদেশে অবস্থান কালে ২০১৩-২০১৪ সালের নাশকতা দেখেছেন। মারমুখী সন্ত্রাসী ও তাণ্ডব সৃষ্টিকারীদের বেপরোয়া অভিযান লক্ষ করেছেন। মহাজোট সরকার এসব সন্ত্রাস, তাণ্ডব ও সহস্র অপতৎপরতা দমন করে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছেন। জাতিসংঘে দুটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব অর্জন বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে গৌরবের অধিকারী করেছে। এ অবস্থায় সন্ত্রাসের সহযোগী রাজনীতি আর যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল ও নাশকতাপূর্ণ করার জন্য যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তা থেকে জনগণ ও সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী জনমত প্রবল করতে হবে। দেশব্যাপী সতর্কতা জারী করে সন্ত্রাসীদের বৃত্ত ভেঙে দিতে হবে এবং তাদের গ্রেপ্তার করে আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে যাবে এবং গণনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। নিশ্চিত হবে নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৫৯

খেলাঘর বলেছেন:


হয়তো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.