নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

২০১৫ হোক নিরাপদ বর্ষ

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৫২

ঘটনাবহুল ২০১৪ সালটা শেষ হয়ে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে অনেক মীমাংসিত সত্যকে অস্বীকার করার মাধ্যমে। এই অস্বীকার করার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন না কেউ। তালিকায় আছেন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক সকলে। সাংবাদিক স্বদেশ রায়ের ভাষায়, নষ্টদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। আগামী বছর শেষ হতে হতে এই তালিকা হয়ত আরও দীর্ঘ হবে এবং তাতে নতুন বিষয়সহ এই তালিকায় নতুন নতুন নামও সংযোজিত হবে। দেশে অবাধ কথা বলার স্বাধীনতা না থাকলে হয়ত সহজে এমনটা হতো না। স্বাধীনতা আছে বলেই এখন অনেকের মুখের লাগাম খুলে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে তা আর লাগবে বলে মনে হয় না। কথা বলার স্বাধীনতাকে এই শ্রেণীর মানুষ অসত্য বলার লাইসেন্স হিসেবে ধরে নিয়েছেন। বেগম জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানও এদের অন্তর্ভুক্ত। প্রায় সাত বছর চিকিৎসার নাম করে তিনি লন্ডনের এক বিলাসবহুল এলাকায় থাকেন। আইনের দৃষ্টিতে তিনি একজন ফেরারি আসামি। ওই এলাকায় থাকতে গেলে মাসে কমপক্ষে সবশুদ্ধ আট হতে নয় হাজার পাউন্ড খরচ হয়। কে যোগান দেন এত বিশাল অঙ্কের টাকা। তেমন প্রশ্ন তার দলের কেউ একজনকে করলে কোন উত্তর পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে দেশে থাকা তার মা’র আইনজীবী বলেছিলেন, সরকার বেগম জিয়ার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রেখেছে বলে তিনি সময় মতো বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না। এই মর্মে আদালতে আর্জি পেশ করা হলো। আদালত সরকারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ ছাড় করার নির্দেশ দিলেন। সেই বেগম জিয়ার পুত্রের লন্ডনে এমন বিলাসী জীবন, তা নিয়ে কথা তো উঠতেই পারে। তার এই বিশাল অর্থ কোথা হতে আসে তা হয়ত তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তিনি যখন স্বজ্ঞানে বাংলাদেশের স্বীকৃত ইতিহাসকে নিয়ে লন্ডনে বসে মিথ্যাচার করেন তখন আর এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার থাকতে পারে না। প্রথম চার সাড়ে চার বছর তিনি লন্ডনে চুপচাপই ছিলেন। তারপর দলীয় সভা-সমাবেশে আসতে শুরু করলেন। একেকটিতে আসেন আর একেকটি চরম অসত্য কথা বলে বোমা ফাটান। সেই বোমার আঘাতে আর কেউ না হলেও ঘায়েল হন তার নিজ দলের নেতা-কর্মীরাই। তার বক্তব্যকে রক্ষা করতে গিয়ে তার মা পর্যন্ত মাঝে মাঝে গলদঘর্ম হয়ে পড়েন, আবার মাঝে মাঝে নিজেরাও তার খপ্পরে পরেন। তারেক লন্ডনে বসে হঠাৎ আবিষ্কার করেন বঙ্গবন্ধু নন, তার পিতা জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। একেবারে বাংলাদেশের সংবিধানের গোড়া ধরে টান। দেশের মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারেক ছাড়লেন আর এক বোমা। বঙ্গবন্ধু নাকি দেশে ফিরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়াটা বেআইনী ছিল। বলতে বাকি রেখেছেন তার বাবার হাত থেকে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির পদটি কেড়ে নিয়েছেন। তারেক বাবাজি ভুলে গিয়েছিলন তার আব্বাজান মুক্তিযুদ্ধ চলাকলীন সময় মুজিবনগর সরকারের চারশত টাকার একজন সামরিক অফিসার ছিলেন। এখানে টাকার অঙ্কটা বড় নয়। এটি একটি প্রতীকী বেতন। দেয়া হয় এটি বুঝানোর জন্য যিনি বেতনটা নিচ্ছেন তিনি প্রজাতন্ত্রের একজন বেতনভুক কর্মচারী। মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপ্রাধন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তাঁর অবর্তমানে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। সরকার প্রধান ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু আর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে এক রুপী প্রতীকী বেতন নিতেন। তারেক রহমানের এমন সব বালখিল্য সুলভ বক্তব্য শুনে দেশের শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা- কর্মীরাই নয়, ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষও। তাতে সুদূর লন্ডনে থাকা তারেকের তেমন কিছু আসে যায় না। তার বক্তব্যকে তার মা আর দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বেশ চড়া গলায় সমর্থন জানালে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বলেন, আওয়ামী লীগ হলো একটি কুলাঙ্গারের দল এবং শেখ হাসিনা সেই দলের প্রধান। বেগম জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধার দল নয়, তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ভুলে যান তাঁর প্রয়াত স্বামী জিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই একাত্তরে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বললেন, শেখ হাসিনা একটি অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। তবে কিভাবে তিনি অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তার কোন ব্যাখ্যা নেই। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি একটি অবাস্তব অজুহাতে বর্জন করেছে ঠিক, তবে তাদের বর্জনে সেই নির্বাচন ব্যর্থ হয় কিভাবে তারও কোন ব্যাখ্যা নেই। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল। সেই নির্বাচনে অর্ধশতাধিক সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল রশিদকে সেই সংসদের বিরোধী দলের নেতা বানিয়েছিলেন বেগম জিয়া। সেই নির্বাচনে গঠিত সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়েছিল। তা মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগ পরবর্তীকালে তিনটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সেই তত্তা¡বধায়ক সরকার বাতিল করে দিলে সংশোধনীটি অসাংবিধানিক হয়ে যায়। এর ফলে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পুরনো কাঠামোতেই করতে হয়েছে যেটি বিএনপি ও তার মিত্রদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না বলে তারা নির্বাচন বর্জন করে। সেই ইস্যু নিয়ে তারা এখনও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অথচ নির্বাচনে তাদেরও আনার জন্য শেখ হাসিনা যত রকমের ছাড় দেয়া সম্ভব তার সবটুকুই দিয়েছেন। এর আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচন পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল মওলানা ভাসানীর ন্যাপ বর্জন করে। তাতে সেই নির্বাচন অবৈধ হয়ে যায়নি। সদ্যসমাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের নির্বাচনে ২৬জন সিনেটর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সিনেটের মোট সদস্য সংখ্যা একশ’ জন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটও অবৈধ হয়ে যায়নি। তারেক রহমান বললেন, মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিব পরিবারের কোন অবদান নেই। তার পরিবারের সদস্যরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আতিথেয়তায় ছিলেন এবং মাসোহারা পেতেন। নাদান তারেক রহমান জানেন না বেগম মুজিব ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের ধানম-ির একটি বাড়িতে গৃহবন্দী করে রেখেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। প্রথমে শেখ কামাল ও পরবর্তিতে শেখ জামাল পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম যে ৫৮ জন অফিসার কমিশনপ্রাপ্ত হন তাঁদের একজন। তাঁর ক্রমিক নম্বর ছিল ২৪। তাঁর পদায়ন হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে। শেখ জামাল কমিশন শেষ করার আগেই যুদ্ধ শেষ হয় এবং স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু তাকে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত সান্ডহার্সট মিলিটারি স্কুলে পাঠান। বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শেখ ফজলুল হক মণি মুজিব বাহিনী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর মেজর তারা বেগম মুজিবকে ধানম-ির ওই বাড়ি হতে উদ্ধার করেন। সেখানে পাহারারত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রহরীরা জানত না পাকিস্তান মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেনা প্রহরায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। সন্তানসম্ভবা শেখ হাসিনাকে বেগম মুজিবকে দেখতে যেতে দেয়া হতো না। মাঝে মাঝে দেখতে যেতেন বেগম সুফিয়া কামাল ও মিসেস নার্গিস জাফর (কবি সিকান্দর আবু জাফরের স্ত্রী)। বেগম জিয়াকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিকবার জিয়া লোক পাঠিয়েছিলেন। তিনি তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকার করেন এবং কোন কোন সময় দুর্ব্যবাহারও করেন। বেগম জিয়াকে এপ্রিল মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকায় স্থানান্তর করে এবং পুরো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেনানিবাসে তাদের নিরাপদ হেফাজতে ছিলেন। তাঁর আরাম আয়েসের কোন ঘাটতি ছিল না। গত ১৫ আগস্ট তারেক রহমানের সর্বশেষ বাণী বঙ্গবন্ধু ‘রাজাকার’ ছিলেন। এতবড় বেয়াদবি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তার চরম শত্রুও করেনি, তার বাবাও না। তা করলেন তারেক রহমান। তার উপরে বঙ্গবন্ধুকে তারেক রহমান সব সময় ‘সে’ ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করে সকল শালীনতার লেভেল অতিক্রম করেন। তিনি ভুলে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু হস্তক্ষেপ না করলে তার মার ভেঙ্গে যাওয়া ঘর-সংসার মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তিকালে জোড়া লাগত না। বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন, আমার দুই নয় তিন কন্যা। জিয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীর উপ-প্রধানের একটি পদও সৃষ্টি করেছিলেন। এই সব কথা কি তারেক রহমান জানেন? লন্ডনে তারেক রহমান যা বলেন ঢাকায় নেতা-নেত্রীরা তার প্রতিধ্বনি করে পুরো বিষয়টাকে আরও হাস্যকর করে তুলেন। বিএনপি’র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু আসলে যে কোথায় তা বোঝা মুস্কিল হয়ে পড়েছে। তারেক রহমানের এই সব চলমান বাচালতা মাঝখানে হঠাৎ করে আবার শুরু হলো একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কত মানুষ নিহত হয়েছেন সেই বিতর্ক। এবার সেই বিতর্কের মধ্যমণি আর কেউ নন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম সদস্য ড. কামাল হোসেনের জামাতা ব্যারিস্টার সারা হোসেনের স্বামী ঢাকায় একটি পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যান। জামায়াতের অর্থপুষ্ট আরও অনেক দেশী আর আন্তর্জাতিক লবিস্টের সঙ্গে তিনি সুর মিলিয়ে নানাভাবে বলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একাত্তরের যুদ্ধাপারীদের যে বিচার হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক মানের নয় এবং তার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এই ব্যাপারে তিনি নিজের পত্রিকায় লেখালেখি করা ছাড়াও সামাজিক গণমাধ্যমে তার নিজস্ব ব্লগেও তার মতামত পোস্ট করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যালকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টিগোচরে আনেন। তা আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তার উপর শুনানি করেন এবং বার্গম্যানকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ২০১১ সালে নেতাজি সুভাষ বোসের নাতনি অক্সফোর্ড শিক্ষিত শর্মিলা বোস ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত উইথড্র উইলসন সেন্টারের অর্থায়নে উবধফ জবপশড়হরহম শিরোনামে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি বই লিখে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন। তিনি তাঁর গ্রন্থে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং বলেন, যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ধর্ষণের প্রমাণ নেই। পরবর্তিকালে আমার একটি প্রতিক্রিয়ার সূত্র ধরে তাঁর সহকর্মী গবেষক পাকিস্তান বংশোদ্ভূত আয়শা সিদ্দিকা লিখেন, শর্মিলা যখন এই বইটি লিখছিলেন তখন তিনি পাকিস্তানী সামরিক অফিসারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতেন। তাঁর মতে, এটি নিশ্চিত করে বলা যায় তার এই গ্রন্থ পাকিস্তানী সেনা অফিসারদের খুব খুশি করবে। শর্মিলা প্রশ্ন করেছেনÑ বলা হয়, এই যুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যা করেছে আর দুই লাখ মহিলা ধর্ষিত হয়েছেন। তাদের নাম ঠিকানা কই? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার বার্গম্যানের স্বজাতি ষাট লাখ ইহুদীকে হত্যা করেছিল বলে ঐতিহাসিকদের ধারণা। শুধু জার্মানি নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোন দেশে গিয়ে এই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করলে নির্ঘাত জেল জরিমানা। সেখানে ঐড়ষড়পধঁংঃ উবহরধষ খধি আছে। ১৯৪৩-এর মন্বন্তরে বাংলায় ত্রিশ লাখ মানুষ খাদ্যাভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাদের নাম ঠিকানা কি কোন জায়গায় লিপিবদ্ধ আছে? বার্গম্যানদের বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন আমাদের দেশেরই কিছু তথাকথিত গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁরা টিভিতে গিয়ে বলেন, যেহেতু তাঁরা সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষক সেহেতু প্রমাণ ছাড়া তারা এমন ঢালাও সংখ্যায় বিশ্বাস করতে নারাজ। বুঝা যায় জামায়াত একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের যে ব্যবস্থা বাংলাদেশে চালু হয়েছে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে তা কতদূর পর্যন্ত পৌঁছেছে। বার্গম্যানকে দেয়া আদালত অবমাননার সাজা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে দেশের ৫০জন বিশিষ্ট ব্যক্তি একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, এই রায় স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের আইনে আদালত অবমাননার দায়ে কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে সে ব্যক্তি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারেন না। এতেও স্বাক্ষরদাতদের আপত্তি। স্বাক্ষরদাতাদের প্রায় সকলকেই এই দেশের মানুষ চেনেন। তাদের কেউ কেউ ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বার্গম্যানের ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করেছেন। একদিন পর মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির স্বাক্ষরকারীদের তালিকা হতে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এই বলে, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে কোন বিতর্কে জড়াতে চান না। ঘটনা এখানে থেমে থাকেনি। ১৯ তারিখ পাকিস্তানের করাচী হতে প্রকাশিত ফ্রাইডে টাইমসে এক কালে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকারী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এক নাতিদীর্ঘ প্রতিবেদন লিখে বার্গম্যানকে সমর্থন জানান। ২৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসের এডিটরিয়াল বোর্ড বার্গম্যানকে সমর্থন জানিয়ে আর একটি মন্তব্য প্রদিবেদন প্রকাশ করে। বুঝতে হবে বার্গম্যান তার কর্মকা-ের প্রতি সমর্থন আদায় করতে দেশের বাইরে হাতপাততে কুণ্ঠিত হবেন না। এই সব বিতর্কিত কর্মকা-ের মধ্যেই ২০১৪ সাল শেষ হচ্ছে। দেশের মানুষ আশা করতেই পারে আগামী বছরটা গেল বছর হতে কিছুটা ভাল কাটবে, ইতরামো মুক্ত হবে । সকল রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এই প্রত্যাশা প্রযোজ্য। সকলকে নব বর্ষের শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.