![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারতে গান্ধি একজনই এসেছিলেন। পাকিস্তানেও জিন্নাহ একজনই ছিলেন। এমন করে অনেক দেশ ও জাতির কোনো ক্রান্তিলগ্নে গ-ি ছাড়িয়ে যাওয়া কোনো কোনো মহামানব আমাদের পৃথিবীতে আসেন। তাদের মধ্যে কেউ দেশ ও জাতির ভেতরে সীমাবদ্ধ, আবার কেউ-বা দেশ ও জাতির গ-ি ছাপিয়ে সারা পৃথিবীতেই গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন। তাদের বেশিরভাগই যে কোনো বিতর্কের ঊর্ধ্বে। অবশ্য কোনো কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির আবার কুখ্যাতির বদনামও থাকে। সারা পৃথিবীতে হিটলার নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই আজ অবধি। কিন্তু তাই বলে দেশ ও জাতির গ-ি পেরিয়ে যাওয়া বিশ্ববিখ্যাত এরিস্টোটল, স্যার আইজ্যাক নিউটন, উইলিয়াম শেকসপিয়র, আব্রাহাম লিংকন, নেলসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মা গান্ধি, মাদার তেরেসা নিয়ে কখনো কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি কোথাও। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তাদের শুধু ভক্ত আছে তা-ই নয়, যারা ভক্ত নয় তাদের মধ্যেও এদের নিয়ে কোনো বিতর্ক অবতারণার সুযোগ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, যুক্তরাজ্যের উইনস্টল চার্চিল, ভারতের মহাত্মা গান্ধি, কিউবার ফিডেল ক্যাস্ট্রো, যুক্তরাষ্ট্রের আব্রাহাম লিংকন, বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজ নিজ দেশের ক্ষেত্রে শুধু অবিসংবাদিত নেতাই ছিলেন না, তারা নিজ দেশের সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিলেন, এখনো আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। তাদের মতাদর্শের বাইরে যাদের অবস্থান, তেমন লোকও তাদের দেশের এই মহামানবদের নিয়ে কোনো বিতর্কের অবতারণা করার সুযোগ পায়নি। তবে তাদের পাশাপাশি আরও অনেক নেতা আছেন, যাদের ভালো-মন্দ নিয়ে বিতর্কও হতে পারে। ভারতের জওহরলাল নেহরু কিংবা ইন্দিরা গান্ধি, পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো কিংবা বাংলাদেশের জিয়াউর রহমানÑ এমন নেতারাও নিজ নিজ দেশে জনপ্রিয় ছিলেন এবং তাদেরও মতাদর্শগত অনুসারী আছে। কিন্তু পার্থক্যটা হলোÑ এমন নেতারা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নন। তাদের ভক্ত থাকবে, আবার তাদের নিয়ে বিতর্কও থাকবেÑ এটিই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালে ছিলেন শুধুই আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিব। ১৯৭১-এ এসে বিশেষ করে ৭ মার্চের পর থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে যান স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির প্রতীক। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে, তার নামকে ঘিরে, তার বাঙালি আদর্শ ঘিরে পুরো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ এক হয়ে যেতে পেরেছিল ১৯৭১-এ। গুটিকতক স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও শক্তি ছাড়া সব বাঙালির একমাত্র নেতা হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একেবারেই মিশে গিয়েছিল এক প্লাটফর্মে। এখান থেকে কাউকে আলাদা করার কোনো সুযোগ ছিল না। সেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘জয় বাংলা’ সেøাগান দেয়নি এমন কোনো মুক্তিযোদ্ধার অস্তিত্ব ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে ছিল না। এর বিপক্ষে যারা ছিল তারা রাজাকার, আলবদর, আলশামস, যারা বাঙালির বিরুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সপক্ষে ছিল। তাই বাঙালিকে যদি স্বীকার করে নিতে হয়, তবে বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে নিতেই হবে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১-এর মার্চের পর আর আওয়ামী লীগের সম্পদ ছিলেন নাÑ তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের, বাঙালির সম্পদ। তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির জাতীয় সম্পদ। এক বঙ্গবন্ধুই ৭ মার্চের জনসভায় বলতে পেরেছিলেনÑ ‘আর যদি আমার লোকের ওপর একটি গুলি চলে...।’ অর্থাৎ পুরো বাঙালি জাতিকে যিনি ‘আমার লোক’ বলতে পেরেছিলেন, তিনিই বাঙালির প্রাণের নেতা, বাঙালির বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী যে বঙ্গবন্ধুকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল, তার মূলে কাজ করেছিল বঙ্গবন্ধুর বাঙালি জাতির একচ্ছত্র নেতা হওয়ার বিষয়টিই। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, রাজনৈতিক কর্মী, বাঙালি ইপিআর সদস্য, বাঙালি সেনাসদস্যসহ আপামর বাঙালি জনতা। সেদিনের মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা, কণ্ঠে ছিল ‘জয় বাংলা’ আর হৃদয়ে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধু সেদিন দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়েছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ, ভাসানী ন্যাপ, আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলের কাছেই তখন জয় বাংলা এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়েছিলেন। জয় বাংলা বা বঙ্গবন্ধু নিয়ে কোনো বিতর্ক করার কিংবা ভিন্নমত প্রকাশ করার কোনো আগ্রহই কোনো মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে দেখা যায়নি। বঙ্গবন্ধুর আবেদন বাঙালির কাছ থেকে কখনো হারিয়ে যায়নি অথবা এতটুকুও ম্লান হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধিতাকারী কিছু মানুষ ছাড়া অবশিষ্ট সব বাঙালির কাছেই বঙ্গবন্ধু তাদের প্রাণের নেতা ছিলেন। সময় ও কর্মের সিঁড়ি বেয়ে একসময় বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বাঙালি জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধু এবং জাতির পিতাÑ এ দুটি পরিচয়ের সূত্রে এ দেশের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সস্তান শেখ মুজিব বাঙালি জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়ে পড়েছেন। তাকে অস্বীকার করা কিংবা তাকে নিয়ে বিতর্ক করার অর্থই হচ্ছে বাঙালি জাতিকে নিয়ে বিতর্ক করা, বাংলাদেশের অস্তিত্বকে নিয়ে বিতর্ক করা। এ সূত্রের ভিত্তি ধরে এটুকু বলা যায়, যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক করছেন কিংবা যারা বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করার সুযোগ করে দিচ্ছেনÑ তারা সবাই বড় একটি ভুল করছেন। এ দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিতর্ক করা যায়, ভারতের জওহরলাল নেহরু কিংবা ইন্দিরা গান্ধিকে নিয়ে বিতর্ক করা যায়, পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টোকে নিয়ে বিতর্ক করা যায়, দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কিংবা খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিতর্ক করা যায়, কিন্তু জিন্নাহকে নিয়ে পাকিস্তানে কিংবা মহাত্মা গান্ধিকে নিয়ে ভারতে কিংবা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই। নিজ নিজ দেশে তারা সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। বঙ্গবন্ধু নিয়ে কোনো বাঙালির বিতর্ক ছড়ানো মানে, বাংলাদেশের মূল ভিত্তির ওপর বিতর্ক সৃষ্টি করা। বঙ্গবন্ধু দলীয় সংকীর্ণতার অনেক ঊর্ধ্বে। তিনি জাতির পিতা। আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধুকে দলে টানার যেমন কোনো সুযোগ নেই, তেমনি অন্য কোনো দলের কারও পক্ষেই বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করার সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ হলেও আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধু নয়। কেননা বঙ্গবন্ধু সেই ১৯৭১ সালেই একটি দলের ঊর্ধ্বে উঠে পুরো জাতির বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ কথা কেন লিখলাম তা একটু ব্যাখ্যা করছি। বাংলাদেশের শহর-বন্দর-গ্রাম এখন নানা পোস্টারে সুশোভিত। বিভিন্ন ধরনের পোস্টার। রাজনীতির বড় নেতা, ছোট নেতাÑ এমনকি কর্মীদেরও বড় বড় পোস্টার। আওয়ামী লীগের পোস্টারগুলোতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করা হয়, যার নিচে থাকে কোনো জেলা কিংবা থানা কিংবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ছোট-বড় কোনো নেতার ছবি ও শুভেচ্ছা। বঙ্গবন্ধুর ছবিকে এতখানি সহজলভ্য করার কাজটি কী শোভনীয়? বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মাঝেমধ্যেই বিতর্কের সূত্রপাত করেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের তুলনা করে ফেলেন প্রায়ই। জিয়াউর রহমান বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন কালুরঘাট রেডিও থেকে। তাই মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের একটি বিশেষ স্থান স্বীকার করে নিতে হবে। জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এবং বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত। কিন্তু তাই বলে তার তুলনা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে করা যায় না। বঙ্গবন্ধুর অবস্থান বাঙালি জাতির জীবনে অনেক, অনেক ওপরে। তার ছেলে তারেক রহমান আরও এক ডিগ্রি বেশি। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তারেক রহমান এমন বাক্য উচ্চারণ করেন, যা বাঙালি জাতিই লজ্জায় পড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক ছড়ানোর আগে প্রত্যেকের বোঝা উচিত একটি দেশে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, বেনজির ভুট্টো, ইন্দিরা গান্ধি, জিয়াউর রহমান অনেক আসেন এবং বারবার আসেন; কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, নেলসন ম্যান্ডেলা একটি জাতির জন্য বারবার নয়, হাজার বছরে হয়তো একবারই আসেন। তেমন একজন জাতির বিবেকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে তাকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে দেওয়ার অর্থ নিজের অস্তিত্বকেই অপমান করা, অসম্মান করা। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আজ থেকে এমনটিই হোক- ক্ষমতা, দল নির্বিশেষে বঙ্গবন্ধুর স্থানটি বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকুক।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪৪
নীল আতঙ্ক বলেছেন: http://www.somewhereinblog.net/blog/khelaghar আপনার সাথে একমত
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৪
খেলাঘর বলেছেন:
@নীল আতঙ্ক,
শেখ সাহেব শুধু মাত্র বাংগালী মনের আশা ও বৈপ্লবিক মনোবলের সমন্বয় ঘটায়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বেলেছিলেন; বাকীটুকু তিনি জানতেন না।
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৮
সাঈফ শেরিফ বলেছেন: ১৯৭১-এ এসে বিশেষ করে ৭ মার্চের পর থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে যান স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির প্রতীক। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে, তার নামকে ঘিরে, তার বাঙালি আদর্শ ঘিরে পুরো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ এক হয়ে যেতে পেরেছিল ১৯৭১-এ।
এই দুটো বাক্যের মাঝে একটা বিব্রঐতিহাসিক ফাক আছে। ৭ ই মার্চের পরে শেখ মুজিবের কোন অস্তিত্ব দেখিনা ।শুধু ৭ ই মার্চের মত ভাষণ দেয়ার জন্যই ওবামাকে নোবেল দেয়া হয়েছে। পুরো মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবে ভূমিকা একজন রাজ্যজয়ী রাজার মত, প্রজারা যুদ্ধ করে রাজাকে মুক্ত করে এনেছে । শেখ মুজিব সেই রাজ্যের রাজা হতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্থপতিকালের রাজা । পাকিস্তানিরা যখন সেই রাজাকে রাজ্য শাসনের অধিকার দিচ্ছিলনা, তখন বাঙালিরা যুদ্ধ করে শেখ মুজিবের রাজ্য শাসনের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।
শেখ মুজিব একটা চরিত্র, একটা পদ, একটা আসন । গান্ধী, ম্যান্ডেলা এক একজন সচল, সক্রিয় চরিত্র --যাদের কথা সারা বিশ্ব জানে ও শ্রদ্ধা করে।আবেগের বশে বাঙালি প্রায়ই তেল-পানি মিশিয়ে ফেলে ।
৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১৩
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: শেখ মুজিব আগে কি ছিলেন, সেটা বিবেচ্য নয়। তার ঘেঁটু অনুসারীরা তাকে কি বানিয়েছে, সেটাই এখন তার নাম ডুবাচ্ছে।
৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
নিজাম বলেছেন: যে জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মর্যাদা দিতে পারে না সে জাতির কোন উন্নতি হয় না এবং সে জাতির আর কোন শ্রেষ্ঠ সন্তান জন্ম নেয় না।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩১
খেলাঘর বলেছেন:
"বঙ্গবন্ধু ১৯৭১-এর মার্চের পর আর আওয়ামী লীগের সম্পদ ছিলেন নাÑ তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের, বাঙালির সম্পদ। তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির জাতীয় সম্পদ। "
-বাস্তবে তা ঘটেনি: আমৃত্যু শেখ সাহেব আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন; এখানে বড় ভুল হয়ে গেছে।