![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিবেশী দেশ ভারত যখন বিশ্ব সেরা অর্থনীতির দ্বারপ্রান্তে, তখন অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক সূচকে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশে চলছে জ্বালাও-পোড়াও আর প্রাণহাণির ঘটনা। নিত্যশংকায় নাগরিক জীবন প্রায় বিপন্ন। প্রতিদিনই পুড়ছে কেউ না কেউ। প্রাণহানি আর গাড়ি পোড়ানো-ভাংচুরের ঘটনায় গোটা সমাজ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। থমকে যাচ্ছে প্রতিবছরই বাড়তে থাকা অর্থনীতি। দেশের বাইরে ইমেজ সংকট আর ভেতরে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে ‘এগিয়ে যাওয়ার মানসিক শক্তি’ হারিয়ে যাচ্ছে উদ্যোক্তাদের। সবাই শংকায়, গন্তব্য কোথায়?
ব্যবসায়ীরা বরাবরই বলছেন, এসব বন্ধ হোক। তারা সম্ভাবনাময় এই দেশটিকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে চান। তাদের মতে, ‘শুধু রাজনৈতিক স্থিরতা দিন, প্রবৃদ্ধি আরো তিন শতাংশ বাড়ানোর দায়িত্ব আমাদের।’
এমন সম্ভাবনার মধ্যেও সহিংসতার রাজনীতি বন্ধ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। গত ২২ দিনে পেট্রোল বোমা, আগুন ও সংঘর্ষে মারা গেছে ২৭ জন। প্রায় সাড়ে ৩শ’ গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছ। ভাংচুর করা হয়েছে সাড়ে ৪শ’ গাড়ি। পাঁচ দফায় রেলেও নাশকতা চালানো হয়েছে। সর্বোপরি যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া দুরূহ হয়ে পড়বে যদি হরতাল-অবরোধ বন্ধ না হয়।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর তথ্য মতে, রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। ইমেজ সংকট তো হচ্ছেই, যা টাকার অংকে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে উন্নত দেশগুলোর নাগরিকদের ভ্রমণেও সাবধানতা জারি করা হয়েছে। ভ্রমণ স্থগিত করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারী, ক্রেতারাও। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে এ খাতের প্রতিযোগী দেশ যেমন ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনস, মায়নমার, ভারত প্রভৃতি দেশ এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া এ খাতের ক্রেতা রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানসমূহ রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে নিরাপত্তার অজুহাতে পণ্যের দাম কমিয়ে দেয়ার সুযোগ নিতে পারে।
বাণিজ্য সংগঠনগুলো এই হরতাল-অবরোধে তাদের ক্ষয়ক্ষতির যে বিবরণ দিয়েছে তা স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে অনাকাঙ্ক্ষিত। এক দিনের অবরোধ-হরতালে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়। কৃষি খাতে দিনে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা। পোল্ট্রি শিল্পে দিনে ক্ষতি ১৮ দশমিক ২৮ কোটি টাকা। হিমায়িত খাদ্য খাতে সেই ক্ষতি প্রায় ৮ কোটি টাকা। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে দিনে ক্ষতি ৩০০ কোটি টাকার বেশি।
জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, চলমান অবরোধে ২০ হাজার টন পাট-সুতা রফতানি কমেছে। পণ্য জাহাজীকরণ সময়মত না হওয়ায় ক্রেতারা বিক্রয় চুক্তি বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শহিদুল করিম জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ২৫০টি পাটকল অচিরেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এভাবে প্রতিটি খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে।
অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, বিশ্বজুড়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে তাতে টিকে থাকার জন্য আমাদের যে উদ্যম ও পারিপার্শ্বিক সহায়ক ভূমিকা দরকার তা হচ্ছে না। বরং অবিরত সহিংস রাজনীতির শিকার হয়ে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অর্থনীতির ক্ষতি করে এমন রাজনীতি কাদের স্বার্থে-সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) বলেছেন: গন্তব্য আমার বাড়ি। হা হা হা।