নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি নেতাদের পলাতক থেকে নির্বাচন

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৪৯

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের তিন শতাধিক নেতা। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বিএনপির তিন থেকে চারজন মনোনয়নপত্র কিনে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমাও দিয়েছেন। বিএনপির যেসব নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অন্যদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। নাশকতা আর গাড়ি পোড়ানোসহ বিভিন্ন ঘটনায় দেড় হাজারের বেশি মামলা রয়েছে ওই তিন শতাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে বিএনপির ওই নেতারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পালিয়ে থেকেই তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।

কাউন্সিলর পদে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রার্থী জানান, পলাতক থেকেই তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেবেন। ওই প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের দাবি, ভোটের মাঠ বিএনপির অনুকূলে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হলে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় ঠেকানো যাবে না। তাঁরা বলেন, 'মিথ্যা মামলায়' পুলিশ-র‌্যাব দিয়ে যতই হয়রানি করা হোক না কেন, সিটি নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমেই সরকারকে জবাব দেবেন স্থানীয় ভোটাররা।

ক্ষমতাসীন দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানান, যেসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা আছে কিন্তু জামিনে নেই, সেই প্রার্থীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করবে কি না সেটা তাদের বিষয়। প্রচলিত আইন অনুযায়ী পুলিশই সিদ্ধান্ত নেবে কী করবে, না করবে। তবে ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা আছে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করবে। এ বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আমাদের সম্ভাব্য তিন শতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছেন। ওই প্রার্থীদের মধ্যে হাতে গোনা দু-একজন ছাড়া অন্য সবার বিরুদ্ধে দেড় হাজারের বেশি মামলা রয়েছে। ওই সব মামলার বোঝা মাথায় নিয়েই তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক।' তিনি আরো বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উচিত বিএনপির ওই নেতাদের নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, মিথ্যা মামলায় হয়রানি না করা।

পলাতক থেকেই লড়বেন বিএনপি নেতারা

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, সহসভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান স্বপন ও ঢাকা মহানগর (উত্তর) যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আফতাব উদ্দিন জসিম। এই পাঁচ নেতার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নাশকতা, গাড়ি পোড়ানোসহ বিভিন্ন ঘটনায় একাধিক মামলা আছে। তাঁরা সবাই এখন পলাতক। এমন পরিস্থিতিতেও তাঁরা নির্বাচনের মাঠ ছাড়তে নারাজ। পলাতক থেকেও তাঁরা নির্বাচনে লড়বেন। মোতাহার হোসেন জানান, গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে কয়েক মাস ধরে তিনি পালিয়ে আছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের ওয়ার্ড থেকে আমিসহ পাঁচজন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমাদের পাঁচজনের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা থাকায় কেউ এলাকায় আসতে পারছি না।' আফতাব উদ্দিন জসিম বলেন, 'শুধু আমিই নই, আমার দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। এ অবস্থায় নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে কোনো কিছুতেই অংশ নেওয়া কঠিন মনে হচ্ছে। তবু আমরা মাঠ ছাড়ছি না। পলাতক থেকেই নির্বাচন করব। কারণ মাঠ আমাদের পক্ষে। ফল আমাদের ঘরেই যাবে।'

৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও মামলা থাকায় নিকটাত্মীয়র মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁরা। আদাবর থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসেম ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. নাসিরউদ্দিনসহ চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা থাকায় পলাতক আছেন তাঁরা।

২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রামপুরা থানা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ আহমেদ বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। তবু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না।'

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক হামিদুল হক। তিনি বলেন, 'একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমাদের নেতারা জামিন পাচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে এলাকা ছেড়ে বাইরে অবস্থান করছি। তার পরও কর্মীদের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি। প্রচার চালানোর সুযোগ হয়তো পাব না। তবে আমার ওপর স্থানীয় ভোটারদের আস্থা আছে।'

৪ নম্বর ওয়ার্ডে (বাসাবো-মাদারটেক) প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হোসেন। তিনি বলেন, 'মিথ্যা মামলার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এক প্রকার পলাতক জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছি। গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াও আছে গুম হওয়ার ভয়। এসবের পরও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। দলের নির্দেশনা পেলে প্রচার চালানো হবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে বিএনপি অবশ্যই ৯০ শতাংশ কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হবে।' গোলাম হোসেন আরো বলেন, 'আমার ওয়ার্ডে মোট পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের সবাই বিভিন্ন মামলায় আত্মগোপনে আছেন।'

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরে বাংলানগর, কাফরুল থানা ও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে কোথাও উল্লেখ করার মতো কোনো বিএনপি নেতাকে দেখা যায়নি। পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বিএনপি সমর্থক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় বিএনপি নেতাদের কাউকে দেখা যায় না। গ্রেপ্তারের ভয়ে সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। বিএনপি সমর্থক পাইকপাড়ার বাসিন্দা মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'বিএনপির প্রার্থীরা পলাতক থেকে কিভাবে নির্বাচন করবেন বুঝতে পারছি না। এভাবে নির্বাচন করা মানে হাত-পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটতে দেওয়ার মতো।'

শেরেবাংলা নগর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. সেলিম মিয়াও তিন মাস ধরে পালিয়ে আছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'শুধু আমি না, আমাগো ওয়ার্ডের প্রায় সব নেতাই পালাইছে। পলাতক থেকেই নির্বাচন করব।'

কাফরুল থানার ওসি মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, 'যদি নাশকতা, মানুষ পোড়ানো- এসব অভিযোগ থাকে, তাহলে তো আমরা তাদের গ্রেপ্তার করবই। অনেককে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা নাশকতার কথা স্বীকার করেছে।'

সবুজবাগ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, 'ঢালাওভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে না। বিএনপির যেসব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, শুধু তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।'

- See more at: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.