নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিসাব নিকাশে বিএনপি

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:৪৪

সদ্যসমাপ্ত তিন সিটি করপোরেশন নির্র্বাচন নিয়ে নানামুখী হিসাব-নিকাশ চলছে বিএনপিতে। সরকারের বলপ্রয়োগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়াবাড়ির পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যর্থতাকে এ ক্ষেত্রে দায়ী করছেন দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাদের মতে, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট রাখা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া কর্মী-সমর্থক কিংবা সাধারণ মানুষকে কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করা হয়নি। নির্বাচনের দিনও নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ ছিলেন আÍগোপনে। সেই সঙ্গে মাঝপথে হঠাৎ নির্বাচন বর্জনের প্রশ্নবিদ্ধ ঘোষণায় হতবাক তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, নির্বাচন বর্জন না করে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে ফলাফল উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বর্জনের সিদ্ধান্ত ভোটের অনেক আগেই নিয়ে রাখা হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও মত, বিএনপি নির্বাচন বর্জন না করে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে ফলাফল অন্য রকম হতে পারত। দুুপুরের আগেই নির্বাচন বয়কট করলেও বিএনপির নীরব ভোটাররা ছিলেন সক্রিয়। এ কারণে বর্জনের পরও বিএনপি সমর্থিত তিন সিটি মেয়র প্রার্থী বিপুল ভোট পেয়েছেন। বিকাল পর্যন্ত থাকলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদেও বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেত বলে মনে করেন তারা। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের অভিযোগ, ভারসাম্য রক্ষার জন্যই ক্ষমতাসীনরা ফলাফলে একটি কাছাকাছি ব্যবধান দেখিয়েছে। এটা সরকারের একটি অপকৌশল। অবশ্য দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এও মনে করেন, সিটি নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে বিএনপি। ভোটে সরকারের হস্তক্ষেপ দেশবাসীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্ব দেখতে পেয়েছে। এটাই বিএনপির রাজনৈতিক অর্জন। এতে তিন মাসের আন্দোলনের ফলশূন্যতাও কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। জোরদার হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলন।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, ‘ঢাকার দুই ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে ত্যাগী বা কেন্দ্রে থাকার মতো সাহসীদের প্রাধান্য ছিল না। আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এজেন্ট নিয়োগে ভূমিকা রেখেছেন। সেখানে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয়দের নাম আসেনি। আর এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও তা যথেষ্ট ছিল না। এ জন্যই ক্ষমতাসীনদের হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান এজেন্টরা। আবার অনেকে ভয়ে কেন্দ্রেই যাননি।’ প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৭ ভোট। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়াল পেয়েছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮০ ভোট। ভোটের ব্যবধান ১ লাখ ৩৫ হাজার। ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৬ ভোট এবং বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাস পেয়েছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৯১ ভোট। ব্যবধান ২ লাখের ওপরে। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট এবং বিএনপির মোহাম্মদ মনজুর আলম পেয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৩৭ ভোট। ব্যবধান প্রায় পৌনে ২ লাখ। মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মেয়র প্রার্থী মনজুর আলম সাংগঠনিকভাবে বিএনপিতে অপরিচিত মুখ। একইভাবে ঢাকা উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও বিএনপিতে একেবারেই নতুন। তাদের নিজস্ব কর্মীবাহিনী নেই। এজন্য এ দুই মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কোনো নেতা-কর্মীই ‘আদাজল খেয়ে’ মাঠে নামেননি। তবে ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাসের ছিল বিশাল কর্মীবাহিনী। কিন্তু তারাও মাঠে নামেননি। এটাকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে বিএনপি এখন সাংগঠনিকভাবে খুবই দুর্বল। ঢাকা মহানগর বিএনপির এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। আহ্বায়ক কমিটির হেভিওয়েট সদস্যদের অধিকাংশই আত্মগোপনে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিতে মাত্র পাঁচ সদস্যের কমিটি। এর মধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতি দস্তগীর চৌধুরী মারা গেছেন। তা ছাড়া সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে রয়েছে দ্বন্দ্ব। এ ছাড়া বিএনপির আরেক প্রভাবশালী নেতার আলাদা বলয় সক্রিয়। সূত্র জানায়, মনজুর আলমের পক্ষে জোরালোভাবে মাঠে নামেননি সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। এ নিয়েও মহানগর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বিরাজ করছে। একই চিত্র বেশির ভাগ থানা, ওয়ার্ডেও। সূত্রমতে, তিন সিটি নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি এখন কী করবে- এ নিয়ে ধোঁয়াশায় নীতিনির্ধারকরা। আকস্মিকভাবে বর্জনের ঘোষণা ও ভোটে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারায় মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই অনিয়মের নির্বাচনের পরও হরতাল-অবরোধের দিকে যেতে সাহস পায়নি দলটি। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মত, দলে এখন শুদ্ধি অভিযান জরুরি। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে সক্রিয়দের মাধ্যমে নতুন কমিটি করতে হবে। সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে সংগঠন পুনর্গঠনের বিকল্প নেই। ভোট কারচুপি ঠেকাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারা ও কেন্দ্রে এজেন্ট না থাকা সাংগঠনিক দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ। তা ছাড়া ৩৮৬ সদস্যের বিএনপি নির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। নতুন করে আন্দোলনে যাওয়ার আগে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোয় পরিবর্তন আনতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সিটি ভোটে সরকার কারচুপি করবে, আমরা আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলাম। তার পরও গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সহাবস্থানের স্বার্থে এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সরকার গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা দেখায়নি। বিষয়টি শুুধু দেশবাসীর কাছে নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও পরিষ্কার হয়ে গেছে। আর সরকারের দমনপীড়নে স্বাভাবিকভাবেই সাংগঠনিকভাবে নেতা-কর্মীরা এখন আড়ালে। তাই ভোট দখলে সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।’ - See more at: Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:১৪

মিতক্ষরা বলেছেন: বিএনপি মোটামুটি এটা প্রমান করতে পেরেছে যে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জন সঠিক ছিলো। রাকিব কমিশনের জন্য এই সিটি নির্বাচন ছিল অগ্নি পরীক্ষা। কিন্তু তারা তাতে পাশ করতে পারেনি। কারচুপি এতই প্রবল যে আওয়ামী পন্থী পত্রিকাগুলোও ভোট ডাকাতির সমালোচনা করতে বাধ্য হয়েছে। যা নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারেই ভেংগে দিয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.