![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত। কিন্তু দেশবাসীর কাছে আকস্মিক এবং তার ১৫ আগস্ট প্রত্যুষে এ ঘটনা জানার পর হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এটাও ঠিক যে, বাংলাদেশ ও বাঙালির মহানায়কের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শোনার পর জনমানসে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত ছিল, সেটা লক্ষ্য করা যায়নি। বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়কে মেনে নেয় না। কিন্তু এত বড় অন্যায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হয়নি। বরগুনা, কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় খুনিদের ফাঁসি দাবি করে মিছিল হলেও সেটা প্রচার পায়নি। কেন এমনটি হতে পারল? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রাখা চাই। সামরিক বাহিনী অনেক দেশে ক্ষমতা দখল করেছে এবং এজন্য রক্তপাত কম হয়নি। সঙ্গত কারণেই গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে যখন সামরিক আমলাতন্ত্র বিমান-ট্যাংক-মেশিনগানের শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন অসংগঠিত জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না।
১৯৭৫ সালে সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র (দুটিতেই ছিল পাকিস্তানপন্থিদের প্রাধান্য_ আজকের সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র থেকে তার পার্থক্য রয়েছে) যখন প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে অবলম্বন করে ক্ষমতা নিয়েছিল, তখন দেশের মধ্যে একটি প্রতি বিপ্লবের আবহ সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বের মহৎ সব স্বাধীনতা আন্দোলন ও বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণের জয়ের পথ জনগণের মধ্যে বিরাট এক আশার সঞ্চার করে। তারা ভাবে, এই বিপ্লব তাদের যাবতীয় আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করবে। কিন্তু আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা বিপ্লবোত্তর বিধ্বস্ত দেশ অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনগণের সেই বিপুল আশা মেটাতে পারে না। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু একটি বিধ্বস্ত দেশ পেয়েছিলেন_ আজকের প্রজন্ম হয়তো এটা ভালোভাবে জানে। তখনকার জনগণও স্বাধীনতা অর্জিত হলে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে সেটা সেভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিল বলে মনে হয় না। বরং প্রত্যাশাই সবকিছুকে ছাপিয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানি সৈন্যরা পরাজয়ের মুখে দেশজুড়ে পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করেছিল। খাদ্য ভাণ্ডারে ছিল বিপুল ঘাটতি। তারা শত শত সেতু-কালভার্ট ভেঙে দিয়েছিল। নদীর সেতুও ছিল এর মধ্যে। যেমন ভৈরব ও পদ্মার রেল সেতু। স্বাধীনতা-উত্তর অবস্থা সম্পর্কে টাইম ও নিউজউইক পত্রিকা আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছিল_ অন্তত এক কোটি লোক স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে না খেতে পেয়ে মারা যেতে পারে। কিন্তু কোনো লোকই মারা যায়নি। ভারতে আশ্রয় নেওয়া ও দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হওয়া এক কোটি লোককে বঙ্গবন্ধু সরকার পুনর্বাসিত করেছিল। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না; কিন্তু তখন প্রায় সব কনজ্যুমার প্রোডাক্ট বা ভোগ্যপণ্য এমনকি প্রতি বছর বিদেশ থেকে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করতে হতো। কিন্তু তার জন্য সরকারের হাতে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না। বঙ্গবন্ধু বিচক্ষণতার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ অনেক বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। আরব দেশগুলো ইসরায়েল এবং পাশ্চাত্যকে শাস্তি দেওয়ার জন্য রাতারাতি পেট্রোলের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথমবারের মতো পাশ্চাত্য দেশগুলোর অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা খায়। সারাবিশ্ব অর্থনীতিতে বিশেষত উন্নত দেশের অর্থনীতিতে মন্দা, মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। আমি সে সময় আমেরিকায় লেখাপড়া করছিলাম। দেখি, ১৯৭৩-এর বড়দিন এবং ১৯৭৪ সালের ১ জানুয়ারি উপলক্ষে জৌলুস আগের বছরের মতো ছিল না। জিনিসপত্রের দম হঠাৎ হয়েছিল আকাশচুম্বী।
আগেই উল্লেখ করেছি, পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শোষণের জন্য তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কোনো কিছুই (ভোগ্যপণ্য) উৎপাদিত হতো না। যদিও পূর্ব পাকিস্তানের পাট বা পাটজাত পণ্যই ছিল সারা পাকিস্তানের প্রধান রফতানি পণ্য বা অর্থকরী ফসল। আমাদের এ পণ্যে আয়ের ওপর ভিত্তি করেই পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পায়ন হয়েছিল। কিন্তু ১৯৬৭-৬৮ সালে পাটের বিকল্প কৃত্রিম রাসায়নিক তন্তু বের হওয়ায় বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা ও দাম আর তেমন ছিল না। স্বাধীন হওয়ার পরই বাংলাদেশকে প্রায় সবকিছুই কমবেশি আমদানি করতে হতো। ফল হয়েছিল, আমদানি করা সব জিনিসপত্রের মূল্য ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর প্রচণ্ডভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ১৯৭৪ সালের বর্ষাকালে এক ব্যাপক বন্যায় বাংলাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল জলমগ্ন হয়েছিল। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে যে সমবন্ধুত্ব নীতি গ্রহণ করেছিলেন, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল আমেরিকা কর্তৃক নিষিদ্ধ দেশ কিউবা। কিউবার কাছে বাংলাদেশের পাটের বস্তা বিক্রি করা হয়েছে_ এই অজুহাতে তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিক্সন সরকার বাংলাদেশের ক্রয় করা খাদ্যশস্যবাহী বাংলাদেশমুখী জাহাজ মাঝ সমুদ্র থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি এবং বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। যে জনগণ ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে বিশাল সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিল, তাদের মধ্যেই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে ক্ষোভের সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছিল। এ বিষয়ে সে সময়কার কাগজ-পত্রপত্রিকায় (যারা পড়বেন ও বিশ্লেষণ করবেন_১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত তারা যুক্তি প্রয়োগ করলে বুঝবেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ১৯৭৪-৭৫-এর ঘটনাবলি নিয়ে একটি দিনলিপি লিখেছেন। সেই দিনলিপিতে উপরের বিস্তারিত অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা না থাকলেও জনগণের ক্ষোভের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপের সময়ও বঙ্গবন্ধু যে এই বিষয়ে সজাগ ছিলেন তা উলি্লখিত আছে) সাধারণ জনগণ ইতিহাসের এই কঠিন সত্য সবসময় বুঝতে পারে না। অনেক সময় তাদের কাছে মুখ্য সমস্যাটা জীবনধারণ এবং জীবনধারণে মূল্যবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সমস্যাই মুখ্য হয়ে ওঠে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানপন্থি প্রতিক্রিয়াশীলরা নানাভাবে সক্রিয় ছিল, চক্রান্ত করে যাচ্ছিল তারা। প্রথমদিকে তাদের অনেকে জাসদকে অবলম্বন করে বিপ্লবের স্লোগানের আড়ালে প্রতি বিপ্লবের স্লোগান মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি, আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের ফলে মুদ্রাস্টম্ফীতি, বন্যার ফলে খাদ্য সংকট ইত্যাদি সবকিছুর জন্য একদিকে অতি বাম স্লোগান ও অন্যদিকে অতি ডান প্রচারণা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে চালু রয়েছিল। সে সময়কার তিনটি পত্রিকা এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল। এই তিনটি পত্রিকা হলো_ গণকণ্ঠ, হক কথা ও হলি ডে। এমনকি মওলানা ভাসানীর কিছু বক্তব্যও প্রতি বিপ্লবীদের শক্তি জুগিয়েছিল। এ কারণেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের পর তাৎক্ষণিকভাবে জনগণ মাঠে নামেনি। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরও এই প্রতি বিপ্লবী আবহের কারণেই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান আইনানুগভাবে এই কুৎসিত হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়াকে বন্ধ ঘোষণা করতে পেরেছিলেন। তার এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার ছিল খন্দকার মোশতাকের জারি করা কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। জাতির জনকের এ রকম অমানবিক হত্যাকাণ্ড বিচারবহির্ভূত রাখার নজির বিশ্ব ইতিহাসে নেই। বিশ্ব ইতিহাসে বিপ্লবের পরেই অনেক বেশি প্রতি বিপ্লব হয়েছে। ইংল্যান্ডে ১৬৪০ সালে রাজতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে পার্লামেন্ট ক্ষমতা নিয়েছিল। ১৬৬০ সালে প্রতি বিপ্লবীরা আবার ক্ষমতায় আসে। ফ্রান্সে ফরাসি বিপ্লবের অব্যবহিত পরেই বিপ্লবী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে প্রতি বিপ্লবীরা ক্ষমতা নিয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ায় স্বাধীনতার জনক সুকর্নকে প্রতি বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। ঘানায় নত্রুক্রমাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। ভারতে মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল। চিলিতে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সালভেদর আলেন্দেকে সামরিক জান্তা হত্যা করেছিল।
ইতিহাসে এ রকম অনেক প্রতি বিপ্লবের উত্থানের ঘটনা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে যা ঘটেছিল তা বিশ্বে তুলনাহীন। কারণ এখানে ক্ষমতা দখলকারী পাকিস্তানপন্থিরা আইনের আশ্রয় নিয়েই বিচার কাজ বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নেয়। দেশে সৃষ্টি করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিষময় ফল এখনও আমরা প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করছি। দেশজুড়ে নারী হত্যা, শিশু হত্যা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পর আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের যে বিরাট ত্যাগের ইতিহাস তা '৭১-পরবর্তী প্রজন্মকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। শাসক চক্র তাতে সাময়িকভাবে সফলও হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশকে মুক্ত করার চেষ্টা করে আসছে। সে জন্য প্রতিনিয়ত তাকে বিশাল সব বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আজও দেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পায়নি। আমাদের নতুন প্রজন্ম আজও ভালো করে আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জানে না। আমাদের পাঠ্য তালিকায় আজও এই ইতিহাস উপেক্ষিত। দেশজুড়ে যারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তাদের অনিচ্ছা না অজ্ঞতা এ জন্য দায়ী, সেটা স্পষ্ট নয়। বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ দেশেই গণতন্ত্র রয়েছে। ভোটের গণতন্ত্র রয়েছে। সর্বজনীন ভোটের গণতন্ত্র বেশি দিনের নয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই বিংশ শতাব্দী শুরু হওয়ার পরেও নারীরা ভোটাধিকার বঞ্চিত ছিল। ভোটের অধিকার ছিল সামান্য কিছু লোকের হাতে।
ইউরোপের দেশে দেশে পার্লামেন্টের এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠান ও বর্গের প্রতিনিধিদের নির্বাচনের মাধ্যমে। এক শ্রেণীর ভিত্তিতে। যেমন_ নির্বাচন হতো ফার্স্ট স্টেট বা প্রথম বর্গ-চার্চ, সেকেন্ড স্টেট বা দ্বিতীয় বর্গ সামন্ত, থার্ড স্টেট বা তৃতীয় বর্গ অর্থাৎ জনগণ। বিশেষত বিত্তভিত্তিক জনগণ। ফরাসি বিপ্লবের পরেই বিশ্বে সব মানুষের স্লোগান দেওয়া হয়েছিল সমানাধিকারের। কিন্তু সেই স্লোগান পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হয়নি। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অধুনা বিশ্বের প্রথম সংবিধান। কিন্তু সে সংবিধানে ক্রীতদাসদের কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি।
প্রকৃত গণতান্ত্রিকভিত্তিক সমাজ নির্মাণের জন্য কেবল আমাদের দেশ নয় বিশ্বের সব দেশকেই আরও বহুদূর যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড থেকে আমরা এই শিক্ষা পাই, শোষকের হাত অনেক শক্ত। এখনও শক্ত। বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার ভাষায় শোষিতের গণতন্ত্র চেয়েছিলেন। বারবার তার বিভিন্ন বক্তৃতায় শোষিতের কথা বলেছিলেন। তার দেওয়া সংবিধানে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। তিনি সেই অঙ্গীকারের জন্য সদা সচেষ্ট ছিলেন। তাই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। তার সহযোদ্ধা চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। তার পরিবারবর্গকে হত্যা করা হয়েছিল। তার অনেক অনুসারীকে হত্যা করা হয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর এই হত্যাকাণ্ড থেকে আমাদের এই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যে, মানুষকে মানুষের অধিকার দেওয়ার জন্য যারা সংগ্রাম করে, প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সুযোগ পেলেই তাদের হত্যা করবে কিংবা চিরতরে মুখ বন্ধ রাখতে চাইবে। তাদের আদর্শকে হত্যা করবে। তাই আমরা যারা জনগণের গণতন্ত্র চাই, জনগণের বাঁচার অধিকার চাই তাদের কখনও ঘুমানো চলবে না, সদা জাগ্রত থেকে প্রতিক্রিয়ার শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। ড. অনুপম সেন, সমকাল
©somewhere in net ltd.