নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ এখন এশিয়ার টাইগার

০২ রা মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫

এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। সে বাংলাদেশই এশিয়ার বাঘে পরিণত হতে চলেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনার যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তাকে আশাজাগানিয়া বলেই অভিহিত করা যায়।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিজনেস ইনসাইভারের সহযোগিতায় ডবিস্নউ্লউইএফ 'দেয়ার কুড বি অ্যা নিউ এশিয়ান টাইগার', হেয়ারস হোয়াই শীর্ষক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এক সময় এশিয়ান টাইগার বলে বোঝাতো হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানকে। ১৯৬০ থেকে ৯০ সালের মধ্যে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির সুবাদেই তারা এই খ্যাতি পেয়েছিল। গত এক দশকে এশিয়ার যে গুটিকয়েক দেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ বছরে ছয় শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে। যা এশিয়ার বাঘ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
তবে নিবন্ধে একই সঙ্গে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যদি ২০২০ সালের মধ্যে সরকারের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অনুযায়ী অর্থনীতিতে ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চায়, তাহলে তৈরি পোশাকের বাইরে ইলেকট্রনিকস ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণেও জোর দিতে হবে। যাতে বাড়বে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা। উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশকে অবধারিতভাবে আরও দুটি কাজ করতে হবে। তা হলো অবকাঠামো ও বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন। অবকাঠামোগত দুর্বলতায় বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে মাত্র ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ বর্তমানে বিদ্যুৎ-সুবিধা পায়। কল-কারখানার উৎপাদন সচল রাখতে প্রায়শই নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হয়।
নিবন্ধে বলা হয়, ব্যাপকহারে দুর্নীতি থাকায় বাংলাদেশ ব্যবসায়ের জন্য হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন জায়গাগুলোর একটি। এ জন্য দুর্নীতি কমানো এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে যত্নবান হতে হবে। সত্তর দশকের 'ষড়যন্ত্রমূলক' তলাবিহীন ঝুড়ি, নব্বই দশকের তুলনামূলক অচেনা বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী এক বিস্ময়ের নাম। উন্নয়ন নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা মানুষের কপালে ভাঁজ ফেলে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও দেশ আজ প্রায় মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে। সম্ভাবনার দিগন্তে পত পত করে উড়ছে পতাকা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি-সন্ত্রাস-জটিলতার মধ্যেই পাল্টে যাচ্ছে দেশের চিত্র। কোনো চক্রান্তই থামাতে পারছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন রথ। তার একনিষ্ঠ তত্ত্বাবধানে দেশের উন্নয়ন প্রকল্প একের পর এক পেখম মেলে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।
চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, গ্যাস সংকট নিরসনে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রাজধানীর চারপাশে স্যুয়ারেজ ট্যানেল নির্মাণের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। সমপ্রতি উন্নয়নের এ কর্মযজ্ঞে যোগ হয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম প্রকল্প।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঞ্চলের কাজের উদ্বোধনও করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ নিরাপদ এবং পণ্য পরিবহন-খালাস সহজীকরণ করতে নেয়া আরো কিছু অবকাঠামোর সংস্কার হচ্ছে। একই সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তি খাতেও এগিয়েছে দেশ। ১৬ কোটি মানুষের দেশে কয়েক বছরে সক্রিয় মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি, আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সম্ভাবনার নবদিগন্তে বাংলাদেশসংখ্যা সাড়ে ৫ কোটি। দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট' মহাকাশে উৎক্ষেপণের কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী বছরে যা উৎক্ষেপণ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশের সব মানুষকে যোগাযোগ ও সমপ্রচার সুবিধার আওতায় আনার পাশাপাশি দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত হবে। এমনকি স্যাটেলাইটের বর্ধিত ফ্রিকুয়েন্সি ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রাও উপার্জন করা যাবে। পরিশেষে বলছি, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার যে সম্ভাবনা বাংলাদেশের সামনে হাতছানি দিচ্ছে তাকে কাজে লাগাতে জঙ্গিবাদের শেকড় উৎপাটন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে সম্ভাবনাময় দেশের বদলে ব্যর্থ রাষ্ট্রের অভিশাপ যে জাতির জন্য অনিবার্য হয়ে উঠবে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ বিপদ ঠেকাতে পেশাদারিত্বের মনোভাব দিয়ে জঙ্গিবাদ দমনের প্রয়াস চালাতে হবে। বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে হতে হবে আপসহীন।
বাংলাদেশের মানুষ কয়েকবার এভারেস্ট বিজয় করেছে, বাংলাদেশের শান্তি মিশন সারাবিশ্বে কত সুনাম কুড়িয়েছে, বাংলাদেশের ক্রীড়া জগৎ বিশেষ করে ক্রিকেট কত উন্নত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এসবকিছুই সম্ভব বাংলাদেশের জনগণের দ্বারা। এ জনগণ দিয়ে সবকিছুই সম্ভব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.