নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ে নির্লজ্জ প্রচারনায় আন্তর্জাতিক দুটি সংগঠন

০৫ ই মে, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬

বিগত প্রায় এক দশকে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বিকাশ ও বিস্তৃতি কতটা ঘটেছে বিদ্যমান চিত্রই এর সাক্ষ্যবহ। ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রচার-প্রসার এখন বাংলাদেশে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বিকাশমান- এই সত্যও অনস্বীকার্য। সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ মুক্তভাবে মত প্রকাশ করছে। সাংবাদিকতা প্রায় সব দেশেই একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। সামাজিক অপশক্তি, ক্ষমতাবান নানা মহল বরাবরই সাংবাদিকদের প্রতি রক্তচক্ষু প্রদর্শন করে থাকে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বাংলাদেশে ধর্মান্ধ উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী, সামাজিক নানা রকম বৈরী শক্তি সাংবাদিকদের প্রতি উৎকট দৃষ্টি রাখে- এর নজির আমাদের সামনেই আছে। কিন্তু এই বাস্তবতা গৌণ করে দেখে ‘বিশ্বমুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা সম্পর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা একপেশে বলেই মনে হয়। অন্যদিকে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের সমীক্ষাটিও প্রশ্নবিদ্ধ। বাংলাদেশের সচেতন মানুষ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পোষণ করেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে এবং সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় এই সংগঠনটির ভূমিকা কি ছিল তা সচেতন মানুষ মাত্রই জানা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারেও অ্যামেনেস্টির ভূমিকা বিস্ময়কর যুগপৎ প্রশ্নবোধক। এই দুটি সংগঠন বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি বিষয়ক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা সঙ্গত কারণেই প্রশ্নের দাবি রাখে।
যদি বাংলাদেশের সাংবাদিকতার পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূল হতো তাহলে এখানে গণমাধ্যমের বিকাশ ও বিস্তৃতি কিভাবে সম্ভব হলো? একটা সময় ছিল, যখন আদালতের রায় নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ কিংবা প্রচার দুরূহ বিষয় ছিল। কিন্তু বর্তমানে গণমাধ্যমে আদালতের রায়েরও সমালোচনা হচ্ছে। সংগঠন দুটির প্রতিবেদন পক্ষপাতমূলক, উদ্দেশ্যমূলক কিংবা দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজের কোনো প্রতিফলন কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আমরা সঙ্গত কারণেই এই দুটি সংগঠনের প্রতিবেদনকে গুরুত্বহীন মনে করি। বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় যদি কোনো বাধা থাকত তাহলে কিভাবে গণমাধ্যমে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশিত-প্রচারিত হলো? আমরা সাংবাদিকতা পেশাকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য বরাবরই দাবি জানিয়ে আসছি। গণমাধ্যমে ৫৭ ধারার সমালোচনা হওয়ার পর সরকার তা আমলে নিয়েছে বলেই মনে হয়। আশার কথা হলো, ৫৭ ধারা বাদ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রীও এ ব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। আমরা স্মরণ করতে পারি প্রধানমন্ত্রীও গঠনমূলক সমালোচনার পক্ষে বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য দিয়েছেন। এসব কথার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে চাই এবং দ্রুত ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি করি। গণমাধ্যম হলো সমাজের দর্পণ এবং মুক্তভাবে মত প্রকাশ করা হলো মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। এই দুইয়ের শক্তিশালী উপস্থিতিতে সমাজ যেমন এগিয়ে যেতে পারে তেমনি দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করাও সম্ভব। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ অন্যান্য বিরূপ আইননীতি বাতিল করে শক্তিশালী গণমাধ্যমের বিকাশে সহায়ক নীতি গ্রহণে সরকার আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা নেবে আমরা এটিই প্রত্যাশা করি। একই সঙ্গে এও প্রত্যাশা করি যে, সাংবাদিকদের সুরক্ষার ব্যাপারে সরকারের আরো সচেতন এবং সজাগ দৃষ্টি। যে দুটি সংগঠন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছে, সেই দুটি সংগঠনের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ এবং সমালোচিত। গণমাধ্যমে কর্মরতরা যেন কোনো রকম শঙ্কায় না ভোগেন তা নিশ্চিত করাও সরকারের দায়িত্ব। পেশাদারিত্বের বিকাশ এবং স্বাধীন মত প্রকাশে সরকারের যে অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি রয়েছে এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া গতিশীল হলে ইতিবাচক প্রভাব আরো বেশি স্পষ্ট ও লক্ষণীয় হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে ইতিমধ্যে অনেক রকম স্বেচ্ছাচারমূলক কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে। স্বেচ্ছাচারিতা কখনোই স্বাধীনতার সম্পূরক হতে পারে না। আমরা চাই, শত ফুল ফুটুক এবং ফুলের সুগন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়–ক। দুর্গন্ধে পরিবেশ যাতে বিষাক্ত না হয় এক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও দায় রয়েছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে যেসব প্রতিবন্ধকতা এখনো বিদ্যমান তা নিরসনে সরকার কঠোর কার্যকর পদক্ষেপ নিলে সুনামের ক্ষেত্রটিই উজ্জ্বল হবে। একই সঙ্গে আমলে নিতে হবে প্রতিকূল কিংবা বৈরী পরিবেশ কি কারণে, কাদের মাধ্যমে, কিভাবে ব্যাপৃত হয় তা স্পষ্ট করে তুলে ধরা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.