নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে নিয়েই আমার যত অহংকার

চাওয়া টা খুব অল্প, তাই পাওয়া নিয়ে ভাবিনা..........

সুখাভিলাষ

চাওয়া টা খুব অল্প, তাই পাওয়া নিয়ে ভাবিনা...........

সুখাভিলাষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনেক আগের একটি লেখা, আবার দিলাম। তবে ফারুকী ভাই আমার পছন্দের নির্মাতা

১৩ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার : অশনী সংকেত

এই বহুল আলোচিত ছবিটি গত সপ্তাহে দেখলাম। একটু দেরীতে হলেও ছবিটি দেখার মূল কারন ছিলো মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। এক সময় তিনি আমার পছন্দের একজন নির্মাতা ছিলেন কারন তার ছবি বা নাটকে একটি পরিবর্তনের ছোঁয়া থাকতো। তবে এখন বুঝতে পারছি সব পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানানো যাইনা। জনপ্রিয় নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদ একবার বলেছিলেন যে তার নাটকে যেন শিক্ষনীয় কিছু যেন না খোঁজা হয়। কারন ছবি বিনোদনের জন্য, শিক্ষার জন্য নয়। আমি উনার কথার সাথে তখনও একমত পোষন করতে পারিনি কারন আপনি শিক্ষনীয় কিছু দেন বা না দেন দর্শক কিন্তু নিজের অজান্তেই নাটক বা ছবি থেকে অনেক কিছু গ্রহন করে। সেটি যেমন ভালো হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে। যেমন একসময়কার ভয়াবহ সন্ত্রাসী এরশাদ সিকদার। সে হিন্দি ছবি শোলে দেখে গাব্বার সিং হওয়ার আগ্রহ বোধ করতে থাকে আর আরেকটি ছবি গঙ্গা যমুনা সরস্বতি দেখে মানুষ মেরে মাগুর মাছকে খাওয়ানোর মত ভয়ংকর কর্মকান্ড শুরু করে। স¤প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ওয়ান্টেড এ ভিলেনরা একটা মেয়েকে তুলে এনে তার নগ্ন ছবির ভিডিও ধারন করে তার পরিবারের কাছে সিডি আকারে পাঠায়। এছবি মুক্তির কয়েক মাসের মধ্যেই ঢাকার ভিখারুননিসা নুন স্কুলের এক ছাত্রীকে সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে গিয়ে তার নগ্ন ভিডিও তার পরিবারের কাছে পাঠায়। এটাই বাস্তবতা। এ জন্য চলচ্চিত্র নির্মানের সময় লক্ষ্য রাখা দরকার এ ছবি দেখে সমাজে বিকৃত সংস্কৃতির বিকাশ হচ্ছে কিনা ? যেমন থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার। এটি এমন একটি ছবি যা সমাজের অনেক অস্বাভাবিক বিষয়কে স্বাভাবিক করে তুলতে চেষ্টা করেছে যা স্বাভাবিক হওয়া কোন সুস্থ মানুষের কাম্য নয়। এটি আমার পর্যালোচনা যা নীচে কিছুটা তুলে ধরা হলো:

ছবির প্রথমেই দেখানো হয়েছে নায়ক নায়িকা লিভ টুগেদার করছে আর তার স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছে। অথচ লিভ টুগেদার জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সবার কাছেই একটি ঘৃনিত ব্যাপার যা মানুষ আর পশুর মধ্যে কোন পার্থক্য রাখেনা। কুকুর যেমন পথে ঘাটে যার তার সাথে জৈবিক ক্রিয়া সাধন করে তেমনি লিভ টুগেদার হলো যখন যাকে ভালো লাগে তার সাথে থাকা, ভালো লাগলে বিয়ে হবে না হলে নয়। এ বিকৃত রুচির বিষয়টি নিয়ে লিখতেও লজ্জা লাগছে তাই বেশী কিছু লিখলামনা শুধু এটুকুই বলতে চাই আমরা এই সারমেয় আধুনিকতা চাইনা।
ছবিতে দুই জন বৃদ্ধ আবুল হায়াত আর -- কে দেখানো হয়েছে নারীলোলুপ চরিত্রে। অথচ বাস্তবে ঐ বয়সী কোন লোক সেক্সুয়ালি এত বেশী এক্সপোজড কখনো হয়না। হ্যাঁ দুএকটি ব্যতিক্রমের কথা পত্রিকায় প্রায় সময় আসে যার সংখ্যা ৫-১০ শতাংশের বেশী হবেন। তাছাড়া ব্যতিক্রমকে উদাহারন হিসাবে দাঁড় করানো অযৌক্তিক। অথচ এ ছবি দেখলে মনে হবে দেশের ৭০-৮০ শতাংশ বৃদ্ধই যুবতী মেয়েদের সেক্সুয়ালি হেরাসড করে যা আমাদের বাবাদেরকেউ প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়।
ছবিতে বন্ধুত্বকে এত আপন করে দেখানো হয়েছে যার জোরে একজন ছেলে আর একজন মেয়ে শুধুমাত্র বন্ধুত্বের জোরে একঘরে থাকছে। বাস্তবে কখনো একজন ছেলে আর একজন মেয়ে একঘরে থাকতে পারেনা। তাদের মধ্যে অসামাজিক কিছু ঘটবেই যার একটা ইঙ্গিত ছবির শেষের দিকে দেওয়া হয়েছে। এটি কি বন্ধুত্বের উপর এ ধরনের অবাস্তব বিশ্বাসকে নিরুৎসাহিত করার জন্য দেখানো হয়েছে নাকি উৎসাহিত করার জন্য ঠিক বুঝলামনা। যদি নিরুৎসাহিত করার জন্য হয়ে থাকে তবে ভালো কিন্তু টিন এইজ ছেলেরা এর সুযোগ নিয়ে ব্যপারটাকে ব্যবহার করে খারাপ দিকটা গ্রহন করতে পারে।
নায়িকার মা নিজের সংসার ছেড়ে আগের প্রেমিকের সাথে চলে যাওয়ায় নায়িকা তার মাকে প্রচন্ড রকম ঘৃনা করতো। এটি ভালো দিক কারন এর মাধ্যমে এ ধরনের সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কারন যে ঘরে এধরনের ঘটনা ঘটে শুধুমাত্র তারাই জানে এটি কতটা মানসিক যন্ত্রনার বিষয়। তবে সমস্যা হলো নায়িকা যখন নিজেই এরকম একটা কাজ করে ফেলে তখন সে মাকে ভূল বোঝার জন্য ক্ষমা চায়। এর মাধ্যমে ত মায়ের ঐ কাজকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু উচিত ছিলো সেই ঘৃনাটাকেই জিইয়ে রাখা যাতে দর্শকদের মনে এটির বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে।
শেষের দিকে নায়িকা ঋনশোধ করার জন্য তপুকে যে ভঙ্গিমায় ডাকে সেটি যথেষ্ঠ অশালীন। আর এই অশালীনতার ষোলকলা পূর্ন হয়েছে তপুর দোকানে দোকানে ঘুরে কনডম কেনার দৃশ্যের মাধ্যমে। আমরা এখনও মা-বাবা, ভাই-বোনদের সাথে নিয়ে বাংলা ছবি দেখতে অভ্যস্থ। এ অবস্থায় এরকম দৃশ্য সবাইকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দেই তাছাড়া ছবির প্রথমে কোন ওয়ার্নিং ও দেয়া নাই যে এটি ১৮+।
এছবি এবং ফারুকী ভাইয়ের ফার্স্ট ডেট সহ অনেক নাটকেই প্রেমকে একটি দৈহিক সম্পর্ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি খুব খারাপ একটা দিক। ভালোবাসার অমর চরিত্রগুলো কখনই দৈহিক প্রেম ছিলোনা। যেমন লাইলি মজনু, পার্বতী দেবদাস ইত্যাদি। কারন যে ভালোবাসার মধ্যে দেহ চলে আসে সেটি আর স্বর্গীয় ভালোবাসা থাকেনা।


আরও অনেক বিষয় নিয়ে আমি আমাম মতামত দিলাম এবং মতামতগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত। তবে এ বিষয়গুলো নিয়ে যথেষ্ঠ চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.