![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাতের খাবার খেয়ে প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়লেন কাসেম গাজী। পুরো নাম আবুল কাসেম গাজী। শিক্ষার সব স্তরে বোর্ড স্ট্যান্ড করা কাসেম গাজী মাস্টার্সে প্রথম স্থান অর্জন করেন। অনেক ভাল চাকরীর অফার পেয়েও অধ্যাপনার কাজেই নিজেকে নিয়োযিত করেন। অধ্যাপনার বয়স ২৫ বছর ছুই ছুই । সফলতা ব্যার্থতা বড় কথা নয়। শিক্ষার সাথে আছে এটাই বড় কথা। অনেকের ভালবাসা পেয়েছে । এখন তার হাজার হাজার ছাত্র দেশ-বিদেশে ।
যখন স্যার বলে ডাক দেয়, তখন বাবা ডাকের চেয়েও পাওয়ার ফুল মনে হয়। এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া । এর চেয়ে সন্মান আর কি হতে পারে।
কাসেম গাজী গভীর ঘুমে। হঠাৎ কান্নার আওয়াজ। এত রাতে কান্নার আওয়াজ। ঘুম ভাঙ্গে যায়। রাত তখন তিনটা প্রায়। মোবাইল টিপ দিয়ে দেখেন কাসেম গাজী।
কান্নার আওয়াজ খুব করুন শুরের । অপরিচিত কান্নার আওয়াজ। রাত যেখানে নিস্তব্ধতা। স্বল্প আলোয় গায়ে কাঁটা দেওয়া অদ্ভুত এক ভৌতিক পরিবেশ। শুধু একটি কক্ষ থেকে অদ্ভুত আর্তচিৎকারের শব্দ ভেসে আসছে। না, মানুষের কান্না না।
এ রকম আওয়াজ আর কখনো শুনেনি। বুকটা ধর ফর করে ওঠে। একটু ভয় ভয়ও লাগে। এত রাতে কে কাঁদে। আশে পাশে তো বাসা-বাড়ি নেই। বাসায়ও কেউ নেই। কিন্তু কাণ্নার আওয়াজ কোথা থেকে ?
মনে হয় না এটা মানুষের কান্না । বিড়াল-কুকুর তো নাই ।
তাহলে কে?
কে কাদঁতে পারে?
অজানা প্রশ্ন মনে উঁকি মারে!
হাজার প্রশ্ন মনের কোনায়, কোন উত্তর নাই। কাসেম গাজী বিছানা থেকে উঠে দাড়ায়। শীতের রাত । কিন্তু হালকা ঘাম দিচ্ছে, সাথে শরির কাপছে। বুক ধর-ফর করছে। টিপি টিপি পা দিয়ে দরজা বরাবর। আস্তে আস্তে নিজের রুমের দারজা খুলেন। কোথা থেকে শব্দ আসে একটু বুঝার চেষ্টা।
ও!
এতো আমার পড়ার রুম থেকে। মনে মনে ভাবেন গাজী।
আমার পড়ার রুম!!
ঐ রুমে বই ছাড়া আর কিছু নাই। ৪০ বছরের বই সংগ্রহ করা। অনেক বই। সব বুক সেলফ ভর্তি বইতে।
পড়ার কক্ষের নিকট আসেন । আস্তে করে দরজা খুলেন। ভোরের আভায় পরিস্কারই দেখা যায় রুমটা
কই?
কেউ নাই যে।
কিন্তু কান্নার আওয়াজ ।
মনে হয়, বুক সেলফ থেকে শব্দটা আসছে। ভিতরে প্রবেশ করতে একটু কেমন যেন লাগছে। কিসের শব্দ সেটা বুঝার চেষ্টা।
বই কাঁদে ? দূর আমি বোকা ? বই কি কাঁদতে পারে ?
আওয়াজটা আরো জোরে আসা শুরু হলো। নিজের হৃদপিন্ডের হার্ডবিট বেরে যায়।।
কে? জানতে চাইলেন গাজী কাসেম।
কোন উত্তর আসে না।
বুকের ধর ফর শব্দের গতি বৃদ্ধি পায়, গলাটাও শুকিয়ে যায়। কথা আর আসতে চায় না।
মুখে দোয়া চলে আসে। = ‘লা লাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জলেমিন’।
এরপর আবার প্রশ্ন কে? কে ওখানে?
কে কাঁধে?
উত্তর আসে আমি ''শিক্ষা''।
শিক্ষা ????
চমকে উঠেন গাজী। মনে মনে ভাবেন জ্বিন নাকি? না অন্য কেউ, মানুষ না প্রানী!
না, দরজা তো দেয়া । কারো ভিতরে আসার সুযোগ নেই। কিন্তু জ্বিন তাড়ানোর দোয়া আমি জানি।
শিক্ষা মানে? গাজী সাহেবের আবার প্রশ্ন।
রাগ্মত্ব স্বরে জি, আমিই শিক্ষা। তুমি যা ছাত্রদের শিক্ষা দাও। আমিই সে ! আমিই জাতীর মেরুদন্ড। আমিই আজ জীবন রুপে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারন আজ আমার জীবন শেষ । আমার অঙ্গ কেটে চুর্ণ বিচুর্ন করা হয়েছে। শুধু গলাটা আছে। এক টানে কথাগুলো বলে ফেলে শিক্ষা নামক আওয়াজ থেকে । আমি বাঁচতে চাই। তোমরা আমাকে মেরো না?
ভয় পেয়ে গেলেন গাজী। সাহস নিয়ে উত্তর দিতে ইচ্ছা করলেন। কী আর হবে। আল্লাহ ভরসা। একটু উৎসাহী হলেন।
তোমাকে আমরা মারবো কেন ? আমরা তো বাঁচিয়ে রাখতে চাই? তোমার কারনেই আমরা বেচেঁ আছি?
হিম !! কচু ? আজ আমার মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে,আংগুল গুলো এক এক করে কেটে দিয়েছে, হাত-পা ভেঙ্গে ফেলেছে । সারা অঙ্গ আমার আগাতে আগাতে ভরে গেছে । এখন শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস টুকু বাকি আছে। হত্যার প্রচেষ্টা চলছে। যে কোন সময় আমাকে হত্যা করা হবে।
গাজী কাসেম মনে মনে ভাবেন – শিক্ষা? আবার কথা বলে? কাঁদে? বাচতে চায়। কি এসব। আযব! হে আল্লাহ তুমি রক্ষা কর । কোন বিপদে পরছি আল্লাহ জানে ?
সাহস নিয়ে আবার বলে শিক্ষা মানে? শিক্ষার তো জীবন নাই।
তুমি আসলে কে?
সত্য করে বলো। তুমি কে?
উত্তর আসে -
শিক্ষা, শিক্ষা !! আমিই শিক্ষা, আদমকে শিক্ষা দেয়ার মধ্যমে আমার জন্ম । শয়তান এসে আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সেই থেকে চলছে দন্ধ। আজও চলছে লড়াই। অনেক অত্যাচার-নির্যাতন, হাংগামা, যুদ্ধ-বিগ্রহ,কাটা-কাটির পর আমার জীবন যখন মৃত্যুর কাছা-কাছি এমন সময় মুহাম্মাদ (সঃ) “ইকরা’’ পড়’ শব্দ আগমনের মাধ্যমে নতুন জীবন ফিরে পাই। শুরু হয় আমার বিচরন সারা পৃথিবী জুড়ে।
যখন মুহাম্মাদ “ইকরা” মানে পড় বলে, তখন ইউরোপ-আমিরিকায় আমার কোন অসতত্বিই ছিলো না। তারা পরস্পরে যুদ্ধে ও রাজ্য জয় লিপ্ত ছিলো। যখন তারা আরবের কথা শুনল যে, আরব জাহিলিয়াত থেকে আলোর পথে আসছে শিক্ষার মাধ্যমে । মুহাম্মাদ নামক এক ব্যাক্তি শিক্ষা দিচ্ছে । তখন তারা মুহাম্মাদ থেকে আর্দশ বাদ দিয়ে শুধু আমাকে চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর তারা দুনিয়ার মানুষে পরিনত হয়।
অপরদিকে, আফ্রিকা পুরাই অন্ধকারে সেখানে মুহাম্মাদের অনুসারিগন আমাকে নিয়ে যায়। আমার মাধ্যমে পরিবর্তন করে আজকের আফ্রিকা।
আর একই সময় এশিয়ায় দেব-দেবী ও অগ্নিপূজক রাজাদের অত্যাচার চলছিলো। তখন মুহাম্মাদের অনুসারিগন আমাকে সাথে করে এশিয়ায় নিয়ে আসে। বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশে।
১৭৫৭ সাল পযর্ন্ত ভালই চলছিল আমার বিচরন । কিন্তু ইংরেজ ও দেশীয় মুর্খ্যদের কারনে আমার উপর আবার চলে জোর পূর্বক অপারেশন। কাটা শুরু হয় আমার অঙ্গ- প্রতাঙ্গ। আমার উপর নির্যাতন নেমে আসে। যা চলে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত।
আতপর আমার মুক্তি হয়। মনে হলো এবার হয়ত আমার শান্তি হবে। আমি মনে করছি ১৯৪৭-র পর আমি নতুন করে প্রজনন করতে পারবো। না, সে আশায় গুরেবালি। আবার ভাগ হলো। যদিও এবার আমার উপর আগাত আসেনি ।
গোলামী ও ষড়যন্ত্রের ফলে আবার ১৯৭১ আমাকে ভাগ করা হয়। সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ। ইংরেজরা এখানে রাজত্ব ছেরে যান নি। তারা রেখে যায় বীজ। বপন করে যায় সমাজতন্ত্র ও পুজিঁবাদ, সেক্যুলার ও হিন্দুত্ববাদ । হিন্দুত্ববাদ বলতে বাংলাদেশের হিন্দু নয়। ইন্ডিয়ার আর্দশে বাংলাকে যারা প্রতিষ্টা করতে চায়। বামপন্থি নামক ক'তিপয় স্টুপিড।
জাতির মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে শিক্ষার (আমাকে) দরকার হয়। যা সাক্ষরতা দিয়ে শুরু করতে হয়। কিন্তু শিক্ষার (আমাকে নিয়ে ) ষড়যন্ত্র এখানেই শুরু।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতীয় পরীক্ষায় গণ-নকলের মাধ্যমে আমার (শিক্ষার) উপর দুর্নীতির বীজ রোপিত হয়। এই টা হলো হাতুরী দিয়ে আমার উপর আগাত কারার মতো। তারপর আমরা পড়ছি তো পড়ছিই। এই ‘পড়া’মানে পড়াশোনা নয়, এই ‘পড়া’ হলো পতন।
একসময় আমার বড় বাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ছিল –সে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান আজ বিশ্বের প্রথম পাঁচ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একেবারে শেষের দিকে। তোমাদের সবার চোখের সামনে দিয়ে ধীরে ধীরে আমার শিক্ষাকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেছে।
আমার সন্তান বিজ্ঞান শিক্ষার অবস্থা খুব খারাপ। ইউনিভার্সিটি পর্যায়েও এখন মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ের কোন কদর নেই। সমাজবিজ্ঞান পড়া শেষ করে এখন জীববিজ্ঞান-রসায়ন পড়াছে। বাকীটা তো বাদই দিলাম।
আবুল কাসেম গাজী মনোযোগ সহকারে শুনে।
কোন উত্তর দেয় না , সুযোগও নাই।
শিক্ষা, আবার বলা শুরু করে দিয়েছে।
আমাকে লালন-পালনের পরিবর্বতে বাণিজ্য করা হয়। ভর্তি বাণিজ্যে এখন কত লাভ! অভিভাবকরা ভর্তি-বণিকদের হাতে জিম্মি। ব্যবসায়ীরা যখন স্কুল-কলেজ খোলেন তখন তা তাদের অন্য ব্যবসার মত হবে এটাই তো স্বাভাবিক।
সরকারও আমাকে নিয়ে ব্যাবসা করেন। পড়ার অজুহাতে অনেক শিক্ষকই কোচিং-টিউশনের নামে নিজেদের টাকা কামানোর মেশিনে পরিণত হচ্ছে।
গ্রামে আমার অবস্থা খুব খারাপ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল কলেজ থেকেও কোন না কোন শিক্ষার্থী জাতীয় পর্যায়ের মেধাতালিকায় স্থান পাইতো।
এখন সে সংখ্যা কমতে কমতে একেবারে শূন্যের কোঠায় এসে পৌছেছে। একই বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়, কমিউনিটি সেন্টার, সেলুন, সুপারমার্কেট সব এক সাথে দেখা যায়।
শিক্ষক নিয়োগের যে পদ্ধতি প্রচলিত আছে তা লজ্জা জনক। লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে যে কোন লোককে পড়ানোর সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কয়েক ঘন্টা। এলাকার সাংসদ নেতা- পাতি-নেতাদের সংবর্ধণার জন্য। ছাত্রদের পিঠ-পেটের উপর নেতারা হেঁটে যাবে এটা এখন স্বাভাবিক ব্যাপার ।
রাজণীতি শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার পরিবেশকে করেছে কুলশিত। ছাত্র-রাজনীতি ও শিক্ষক-রাজনীতি সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা, সেশন-জট, ধর্মঘট, আন্দোলন, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, মারামারি, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, ধর্ষন, হত্যা, টেন্ডারবাজী প্রভৃতি ঘটনায় অশান্তি করে রাখছে আমার প্রতিটা শিক্ষা নমক বাড়ি। যত প্রকার খারাপ কাজ সবই হয় আমাদের বাড়ি (শিক্ষা প্রতিষ্টানে।
কাসেম গাজী হাই তোলেন।
শিক্ষা বলে, কি শুনতে কষ্ট হয়। হিম, হবেই তো কেঊ আমাকে নিয়ে ভাবে না। সবাই বর্তমান নিয়ে আছে। টাকা, টাকা, সবাই টাকার পিছনে। জাতী গঠনে কারো কোন ভূমিকা নাই।
আগামীর শিশুর জন্য কারো মাথা ব্যাথা নেই। দেখিস তোদের দেশ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। ঘরের মধ্যে মীর জাফর । মীর জাফর মরবে তোদেরও মারবে।
আজ উদ্দেশ্যমূলক সিলেবাস তৈরি করা হয় । কেঊ হিন্দু, কেউ নাস্তিক, কেউ আমেরিকা বা কেউ লন্ডনের আদর্শের লোক বানাতে চায়। এখানে একদিকে ধর্মীয় পাঠ্যগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রবেশ করানো হয়েছে হিন্দুত্ববাদ। ইতিহাস করা হয়েছে বিকৃত। প্রকাশ্যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে- ৪৭ এর দেশভাগ করা ঠিক হয়নি। ভারতের সাথে থাকলে ভাল হইতো।
পড়ানো হচ্ছে রাধা-কৃষ্ণের লীলাখেলা, রামায়ন, পাঠাবলীর নিয়ম-কানুন। প্রবেশ করানো হয়েছে রুদ্র শহীদুল্লাহ’র মত সিফিলিস রোগীর কবিতা । পড়ানো হচ্ছে আনিসুজ্জামান. জাফর ইকবাল, সামসুর রহমান, সনজিদা খাতুন, সেলিনা হোসেন, হুমায়ুন আজাদদের মত প্রকাশ্য বাম-নাস্তিকদের গল্প-কবিতা । শুধু ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ইসলাম ধর্ম বইয়ে করা হয়েছে ৫৮টি ভুল।
বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাসের বিপরিতে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। আমি স্রোতের সাথে চলি। বিপরিত নিতে চাইলেই ভয়ংকার জাতী দেখবে।
আমার শরিরের সবচেয়ে বড় আগাত প্রশ্নপত্র ফাঁস। মানুষের কোমর কেটে ফেললে যা হয়। আমার ( শিক্ষার) প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে সেই কোমর বিহিন মানুষের অবস্থার মতোন হয়। আর সে কোন কাজই করতে পারে না।
আমার উপর দিয়ে সব অপকর্ম করে যাচ্ছে সরকার থেকে নিচ পর্যন্ত। অথচ আমি ছিলাম পূত-পবিত্র। উপর ভাল না হলে নিচে কখনই ভাল হবে না।
আরো ভয়ংকর হলো যারা দেশের শাসক শ্রেণী তারা কখনই মানুষকে সত্যিকার অর্থে শিক্ষিত করতে চায় না। তারাই আমাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে মেথে ওঠে।
আমাকে কাটতে থাকে। আঙ্গল,হাত, কান, পা। তুলে ফেলে আমার শরিরের চামরা । ক্ষতবিক্ষত করে আমার শরির । কেউ আমার পা চেপে ধরে রাখে। আবার একজন বড় হাতুড়ি দিয়ে পায়ের ওপর পিটিয়ে যাচ্ছে অবিরাম। পা থেঁতলে গেছে। চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে দুই পায়ের হাড়।
নাড়াচাড়া করার শক্তি আমার এখন বন্ধ। নাক-মুখ এমনকি চোখ দিয়েও রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। জিব একটু বেরিয়ে পড়েছে। তোরা মানুষরূপী দানব । আমার মৃত নিশ্চিত করতে নাকের কাছে হাত রেখে দেখো । প্রাণ আছে কি নেই। এর পরও তোরা বুঝতে চাস না ।
আমার শত্রুরা ঠাণ্ডা হয় না। হঠাৎ দেশের ওপর পড়ে থাকা আমার দেহের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে লাফাতে শুরু করে । বুকেরপাঁজর ভেঙে যায়। আমি চিৎকার দেই। কিন্তু কেউ শুনে না । আজ আমার কানের সাথে সাথে সবার কান চলে গেছে। সবাই অন্ধ,বোবা,বধিরে পরিনত হয়েছে।
আমি বাংলার নতুন প্রজন্মের জন্যই বাচঁতে চাই। আমি আমার (শিক্ষার) আলো দিয়ে আলোকিত করতে চাই।
ছড়িয়ে দিতে চাই শিশুদের মনে শিক্ষার আলো। যারা গরবে এই দেশ। সুন্দর রবে এই পৃথিবী। তুমি পারবে কি গাজী ?
পারবে গাজী আমাকে বাচাঁতে ?
গাজী কথা গুলো শুনেতে শুনতে কখন যে চোখ দিয়ে পানি বেঁয়ে চলছে নিজেই অনুভাব করতে পারে না। কান্নার সাথে শব্দ বের হয়ে আসছে। চোখের পানিতে হাত, দাড়ি ভিজে গেছে । নাক-মুখ দিয়েও পানি বের হয় আসছে । এরকম কান্না কখন হয়েছে কিনা মনে করতে পারে না গাজী।
পা- টা অবশ হয়ে যায়,
গাজী বসে পরে। হাউ-মাউ করে কাঁদে ।
কি হবে এই জাতীর !
আমি কি করব? ২৫ বছরের অধ্যাপনা আমার।
কি শুনালো শিক্ষা !!
দু’পায়ের উপর মাথা দিয়ে কাদছে আর ভাবছে............
ইতিমধ্যে ফজরের আজান হয়ে যায়.....................!!!!!।
২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:১৫
প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৩
শরীফুর রায়হান বলেছেন: সত্যি তাই