![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা নতুন আসছি । একটা ম্যাসে থাকি । সাথে আরও চার জন থাকে । শরিফ ভাই নামক একজন পরিচালক । অলি, জাবেদ ও ওয়ারেস। পাঁচ জন পাঁচ ক্যসেমের লোক। আমি গ্রাম থেকে আসছি ক্ষেত ক্ষেত টাইপের। সহজ-সরল কিছু বুঝি না । সারা দিন চুপ-চাপ থাকি । ক্লাশে যাই আর বাসায় আসি এই আমার কাজ। শরিফ ভাই আমাকে নিয়ে মাঝে-মাঝে ঘুরতে যাইতেন।
ইদানিং শরিফ ভাইর পড়ালেখার বেশ চাপ। পরীক্ষা চলছে। বেশ ক্লান্ত দেখায় তাকে। ক্লান্ত হওয়ার আর একটা কারন আছে। সে প্যান্ট পরে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না।
আবার ঘণ ঘণ প্রসাব হওয়ার একটা প্রব্লেমও আছে। তবে কোন রোগ নাই বিশেষ করে ডাইবেটিকস নাই । পানি বেশি খাওয়ার কারনে প্রসাব বেশি হয়। আরও মজার ব্যাপার হলো প্রসাবের ডাক আসলে আর ধরে রাখতে পারে না। এই কারনে পরোনের পোশাক নষ্ট করেছেন বহুবার । এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই হাসাহাসি হয়।
আমি সবার সাথে হাসাহাসিতে অংশ নেই। কিন্তু কোন কথা বলি না । কারন আমি ঠিক ভাবে কথা বলতে পারতাম না। শরিফ ভাই এ কারনে আমাকে বেশি ভালোবাসেন । আজ তার পরীক্ষা শেষ। আমাকে বললেন চলো যাত্রাবাড়ি যাই। আমি একটা লুঙ্গি কিনবো। আমি কথা না বাড়িয়ে বললাম চলেন।
আমি রাজি হওয়ার আর একটা কারন হলো তার সাথে কোথায়ও গেলে সে কিছু নাস্তা খাওয়ায়। আমি নাস্তার লোভে মুলত যাই। সত্য কথা কি ম্যাসে যে ভাত খাই তাতে আমার পেট ভরে না। বাড়ি থাকতে পেট ভরার পরও মা’ এক চামিচ ভাত বেশি দিতেন। না বললেও শুনতেন না, বলতেন বেশি বেশি খেয়ে তাড়াতাড়ি বড় হও।
আমার কারনে মা’ যে কত বেলা না খেয়ে ছিলেন তার কোন ইয়াতা নেই। যাই ইউক আমরা যাত্রাবাড়ি থেকে একটা বারমিজ লুঙ্গি কিনলাম। আমি এর আগে বারমিজ লুঙ্গি দেখি নাই। তবে পলেষ্টার লুঙ্গি পরেছি। এক সময় লুঙ্গি চিনতাম না।
আমাদের বাড়ি একা। বাড়িতে আমি, মা, ছোট ভাই ও বোন বাস করতাম। ছোট সময়ের কথা মনে পরে। একবার মা আমাকে একটা নতুন লুঙ্গি কিনে দিতে চাইলেন। এটাই প্রথম লুঙ্গি পরা। তখনও লুঙ্গির ব্যাপারে জ্ঞান হয়নি।
আমি মা’ কে প্রশ্ন করি, লুঙ্গি কি মা’?
মা বললেন, লুঙ্গি কাপুর। (ফেন্দে) মানে পরে। দেখতে ছায়ার মতো।
ছোট ভাইর প্রশ্ন ছায়া কি মা’ ?
মা এবার বিপদে পরে গেলেন। ছায়া বস্তার মতো। এই বস্তা । একটা বস্তা দেখিয়ে। তবে লুঙ্গি বা ছায়ার দু’পাশ খোলা, বোন বুঝিয়ে দিলেন।
মা’ বললেন, একটি পরিধেয় বস্তু যা মানুষের শরিরের নিচের অংশ ঢাকতে সাহায্য করে থাকে । এর মাধ্যমে শরিরে হাওয়া লাগিয়ে যেমন ঘুরে বেড়ানো জায় , তেমনি লজ্জাও নিবারন করা যায় । বেডারা (পুরুষ) পরে।
তুই এখন বড় হয়েছো না ?
আমিও !
ছোট ভাই বলে উঠলো ও আমি বুঝতে পারছি, অনেকটা বেলুনের মত , যা গোলাকার এবং এর মাঝে পুরা ফাঁকা যেখানে মানুষের শরীর অবস্থান করে। সবাই হ্যা সূচক জবাব দিয়ে তাকে বুঝ দেয়া হলো।
অতপর আমার একটা লুঙ্গি ক্রয় করে দিলেন। প্রথম দিন লুঙ্গি পরে কি বিরুক্তি যে লাগছে, খালি খুলে যায়। অবশ্য তখন কাউকে না দেখলে কাঁধে ঝুলিয়ে রাখতাম। রাতে লুঙ্গি নিয়া কি কান্ড যে হইতো । জীবনের প্রথম যেদিন লুঙ্গী পরে ঘুমাতে যাই। সকালে দেখি লুঙ্গী নাই।
হায়! হায়!
লুঙ্গী কই আমার? পরে দেখি খাটের নিচে।
এবার আমরা লুঙ্গি সেলাই করতে নিয়ে যাই। সেলাইম্যানের নিকট শরিফ ভাই বলেন সেলাই করে একটা চেইন লাগিয়ে দিবেন।
লোকটা মনে হলো বোকা হয়ে গেলেন। শরিফ ভাইর মুখের দিকে তাকি রইলেন। আমিও হতোবাগ!
কি বলে ? আমি কোনদিন দেখিনি আর শুনি তো নাই যে লুঙ্গিতে চেইন থাকে বা লাগায়।
শরিফ ভাই, চাচা কে বললেন, তাকিয়ে আছেন কেন ? প্যান্টে যেভাবে চেইন লাগান সেরকম একটা চেইন লাগিয়ে দিবেন । কত টাঁকা নিবেন?
সেলাইম্যান বললেন, এক টাকাও লাগবে না । আমি আপনার লুঙ্গি সেলাই করতে পারবো না।
শরিফ ভাই কেন পারবেন না ?
সেলাইম্যান বললেন আপনাকে দেখতে শিক্ষিত লোকের মতো দেখা যায় আর কথা বললেন একটা গাধার মতো।
লুঙ্গিতে কেউ চেইন লাগায়? চেহারায় ক্রোদের ছাপ। খুব রাগ করেছেন মনে হয়েছে। লোকের সাথে আমিও বললাম জি শরিফ ভাই আমিও শুনিনি। শরিফ ভাই আমাকে বললেন আপনি বুঝবেন না । পরে বুঝিয়ে বলবো। আমি চুপ হয়ে গেলাম।
শরিফ ভাই সেলাইম্যান কে আবার বললেন চাচা কাপরের ব্যাগে চেইন লাগানো যায়, প্যান্টে যায়, হুজুরদের পায়জামায় যায়, মেয়েদের ব্যনিটি ব্যাগে যায় তাহলে আমার লুঙ্গিতে যাবে না কেন?
সেলাইম্যান এবার শান্ত হয়ে বললেন যাবে না কেন?
একশত বার যাবে। কিন্তু আমার বাব-দাদার চৌদ্দগোষ্টিতেও শুনুনাই।
শরিফ ভাই, এবার শুধু শুনছেন না নিজে করেই দিবেন।
চাচা হাহাহাহা করে হেসে উঠলেন। সাথে আমি এবং শরিফ ভাইও এক সাথে ।
শরিফ ভাই আমর দিকে তাকিয়ে বললেন আলবার্ট আইনষ্টাইন আমার একটা ঝামেলা করে দিয়ে গেছেন। আমি বললাম সে আবার কি করলো । শরিফ ভাই বললেন,
তিনি না কি বলে গেছেন, ‘তোমাকে কেউ যদি বলে এক কেজি পাথর এবং এক কেজি তুলা উপর থেকে এক সংগে ফেললে পাথরটি আগে মাটিতে পরবে- তুমি সেটা বিশ্বাস করো না- যতক্ষন না পর্যন্ত নিজে সেটা করে প্রমাণ পাও’।
তাই আমি প্রমান করে ছারলাম যে লুঙ্গিতেও চেইন লাগিয়ে পরা যায়। আবার হাহাহাহা করে হাসলেন, তার সাথে আমিও হাসলাম।
চেইন লাগিয়ে আসার পথে আমি জিজ্ঞাস করলাম লুঙ্গিতে কেন চেইন লাগালেন ? উত্তরে বললেন আপনি জানেন যে লুঙ্গিতে অনেক উপকার আছে ঠিক ?
এই ধরেন, লুঙ্গি হাওয়া চলাচলে সহায়তা করে ,যা গরমের দিনে ভাল কাজ দেয় । ইহা পরতে খুব সহজ , কোন ঝামেলায় পরতে হয়না। বিছানায় এর ব্যাপক সুযোগ – সুবিধা পরিলক্ষিত হয়। বিস্তারিত বুঝে নিয়েন।
প্যান্ট পালটাতে লুংগির ভাল বিকল্প কিছু নেই। যে কোন সময়, যে কোন পরিস্থিতিতে ইহা ছোট-বড় ও উপর-নিচ করে সুবিধামত পরিধান করা যায় ( উল্টা-পাল্টা চিন্তা কইরেন না )
তার সাথে চেইন থাকলে আরও যে সুবিধা হয়। তাহলো বাথরুমে ইহা অনেক ঝামেলা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দান করে। এ ছাড়া মাঝায় কইতান বেধে তার সাথে টাঁকা রাখার ঝুলিতে অতি সহজেই চেইন দিয়ে টাঁকা আনা নেয়া যাবে। আর বাথরুমে প্রাকৃতিক কাজ করতে চেইন খুলেই কাজ সারা যাবে পুরা লুঙ্গি উঠানো লাগবে না।
তার এই কথা শুনে আমার মাথা হেঁট হয়ে যায়। মনে মনে ভাবলাম সে লুঙ্গির চেইন দিয়ে প্রসাব করবে ? এর মাথা ঠিক আছ কি? আমার খালি হাসি পায় কিন্তু ভয়ে হাসছি না ।
আমি তাকে বললাম, সকল ক্রিয়ার যেমন সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে , তেমনি প্রায় প্রত্যক জিনিসের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই আছে , তেমনি লুঙ্গির কিছু অসুবিধাও আছে। সে বললেন হিম আছে !
যেমন- রাস্তার মাঝখানে অথবা যে কোন জায়গায় ইহা বাতাসে উপরে উঠে জেতে পারে । যে কোন পার্টি বা অনুষ্ঠানে সবার সামনে ইহা খুলে জেতে পারে । রাতে গড়াগড়ির সময় লুঙ্গি হারিয়ে জেতে পারে। দুজনই অট্রহাসি।
লুঙ্গি একটি আরামদায়ক কিন্তু অতি বিপদজনক বাঙালি বস্ত্র ।এর ভেনটিলেশন সিস্টেম অত্যন্ত চমৎকার। সুন্দর বায়ু প্রবাহ ভীতরের পরিবেশ সবসময় ঠানডা রাখে। তবে মাঝে মাঝে অতিরিক্ত বায়ুপ্রবাহে সব কিছু দৃশ্যমান করে তুলতে পারে।
কথা বলতে বলতে আমরা বাসায় চলে আসলাম । সবাইকে আমি পুরো ঘটনা খুলে বলার পর সবাই তার লুঙ্গির উপর ঝাপিয়ে পরে। প্রত্যেকে পরে দেখতে লাগলো । আর এই অদ্ভুদ কর্মকান্ড দেখে সবাই হাসাহাসি করলো।
একদিন শিরফ ভাই বাথরুমে গেলেন । একটু পর চিল্লাইয়া উঠলেন অলি আমার রুম থেকে আরেকটা লুঙ্গি দে । অলি লুঙ্গি দিতে যেয়ে দেখে পরোনের লুঙ্গি ভেঁজা । কি হলো ? পরে জানা গেলো চেইন খুলতে খুলতে কাজ সেরে ফেলছেন। সেই থেকে আর শরিফ ভাই চেইনের এই লুঙ্গি পরে না।
এক দিন শরিফ ভাইর এক বন্ধু আসলেন। দুপুরে গোসল করবে । শরিফ ভাই তাড়াহুড়া করে চেইনের লুঙ্গি টা দিলেন । বন্ধু গোসল করে আসার পর আমরা একাত্রে দুপুরে খেতে বসলাম। জাবেদ মিট মিট করে হাসছে । সবাই জাবেদের দিকে তাকিয়ে । কি হয়েছে জাবেদ? অলি জানতে চাইলেন।
কিছু না, জাবেদ বলল।
কিছুক্ষন পর দেখি অলিও হাসছে । আমার কানে-মুখে অলি বলল শরিফ ভাইর বন্ধুর লুঙ্গির চেইনে দিয়ে পাকিস্থান দেখা যায়!!!
লুঙ্গির চেইন খোলা।
জাবেদ বলে উঠলো আন্দার মহল দেখা জায়।
ওয়ারেস বলে, না আন্ধারমানিক দেখা যায়। শরিফ ভাই বুঝতে পারলেও তার বন্ধু বুঝে উঠতে পারেনি। ইতিমধ্যে শরিফ ভাইর চেহারা লজ্জায় লাল হয়ে যায় । কিন্তু সবার মুখে হাসি। এমনকি শরিফ ভাইর বন্ধু হাসছে ।
সে কেন হাসছে ?
আসলে সে জানে না আমরা কেন হাসছি? তাই তালে-তালে আমাদের সাথে সে হাসছে। কিন্তু শরিফ ভাই উঠে চলে গেলেন। সে এবার লজ্জাই পেলেন মনে হয়েছে। সে বুঝতে পারছে অনেক সময় কোন কোন সুবিদা বিপদ ডেকে আনে। খাল কেটে কুমির আনার মতো অবস্থা।
দেশে আজ খোলা চেইন যুক্ত লুঙ্গি পরিয়ে দিয়েছে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। অনেক সুবিধা আছে হয়তো। অনেক সুবিধার চেয়ে একটা অসুবিধাও অনেক সময় ক্ষতি বেশি হয়। কে ক্ষতির দিকে তাকায়! সাময়িক সুবিধাই আসল।
উহ্য খোলা চেইন যুক্ত লুঙ্গি দেখে সবাই হাসছে কিন্ত লজ্জায়-ভয়ে কেউ বলতে পারছে না। সাথে আমাদের রাষ্ট্রের কর্তাগনও হাসছে । তারা কি জানে? না, জানে না। যে তাদের চেইন খোলা। যে খোলা চেইন দিয়ে সব স্মমান চলে যাবে।
আজ সিক্রেট কিছুই থাকলো না? সেই দুর্বলতার খোলা চেইন যুক্ত লুঙ্গির মধ্যেই জঙ্গি আগুন,ব্যাংকে আগুন, শিক্ষায় আগুন, সাংস্কৃতিতে আগুন।
এতে যে দেশের সন্মান হানি হয়, নিরাপত্তার সমস্যা হয়। তা কি কর্তাগন জানে না। মনে রাখবেন, একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। কাছের বন্ধুর চেয়ে দুরের শ্ত্রু ভালো। সতর্কতা স্বআধীনতার শর্ত।
২৯ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:৫৭
প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ, বানানে সমস্যা দু-একটা ধরিয়ে দিলে ভালো হতো
২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা, ভাল লাগল।
২৯ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:৫৮
প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকাবাসী
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৫২
রক্ত পলাশী বলেছেন: ী আর কাল, খুললেই,,,,
২৯ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:৫৮
প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: হিম
৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
ওকে, আপনার লেখার গতি শ্লো; এগুকে গতিশীল করার কথা ভাবেন।
৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:২৪
প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: পড়ালেখার চাপবেশি দাদা, সময় পাই না। আপানার মন্তব্য পরার্মশ মনে করে নিলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:১৫
কে এম এফ তানভীর বলেছেন: ্লিখেছেন ভাল। তবে বানানের দিকে আরেকটু যত্নশীল হবেন। ধন্যবাদ