নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সব সময় সাধারন, অনেক ভাব আনার চেষ্টা করছি কিন্তু আসে ন। শিশু,কিশোর ও বয়স্ক মানুষ ভালবাসি । একা থাকি, পড়তে থাকি।

প্রাইমারি স্কুল

অতি সাধারন

প্রাইমারি স্কুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুর সরলতা

০৩ রা জুন, ২০১৭ সকাল ৯:২৯

শিশুর সরলতা

রোজা শুরু হয়েছে বেশ ক' দিন হলো। প্রচন্ড রোদ্র, খা খা ফসলের মাঠ। বিদ্যুৎ আসে আর যায়। গরমে অতিষ্ঠ্য মানুষ। পনের ঘন্টা বিশ মিনিট দীর্ঘ রোজা। এই গরমে বাগানে গাছের নিচেই একটু শান্তি। দু' বাড়ির মাঝে একটা পথ। সেখানে খেলা করছে হৃদয় ও রুকু। দুটাই ছোট বাচ্চা। দুজনই দুপুরে গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পরে আসছে।
হৃদয় সাদা শার্ট আর রুকু হলদে রংয়ের কাপড় পরছে। রুকুর মাথায় স্কার্ফ। তারাও রোজা। হৃদয় ফুল রোজা রাখে। মাঝে মাঝে ভেঙ্গে ফেলে। আর রুকু সেহরী খায় এরপর দুপুরে খায় আর ইফতার করে। রুকুর দাদু বলছে এতেই তার রোজা হয়ে যাবে। যদিও দুজন কারোই রাজা রাখার বয়স হয়নি।
খুদা থেকে ভুলে থাকতেই তারা খেলতে শরু করছে। একটু পর তাদের মনে হলো মাটি দিয়ে রান্না-বারা খেলবে।
কিন্তু কিভাবে ?
হৃদয় বলল আসো আমরা মাটি দিয়ে ভাত রাঁধব, পাতা দিয়ে মাছ তৈরি করে পানি দিয়ে রাধঁব। রাজি হলো রুকু। আতপর সাদা মাটি খোরা হলো আর পানি আনা হলো।। বানানো হলো সাদা মাটি দিয়ে ভাত আর পানি ও পাতা দিয়ে বানানো মাছ মিলিয়ে তরকারী পাক করা হলো। অতপর সাজাগোজ করা শুরু। রুকু বললো আমার জামায় যেনো ময়লা না লাগে। তাহলে মা রাগ করবেন।
হৃদয় বললো লাগবে না। আমি সাবধানে করবো।
রুকু আবার বললো তাহলে জামা খুলে নেই। এবার রাঝি হলো দুজনই। রুকু খুলে নিলো স্কার্ফ ও জামা। পাশে রেখে হৃদয়কে বললো তোমারটাও খুলে ফ্যালো। তাই হল, জামা খুলে সাজতে বসছে দু'জনেই।
একজন অন্য জনকে সাজিয়ে দিচ্ছে।
রুকু সাজাতে যেয়ে কাদাঁ মাটি হাতে বেশি লেগে যায়। সে হাত জেরে নেয়। হাত থেকে কাদা মাটি যেয়ে পড়ে খুলে রাখা জামার উপর। হৃদয় বলে সাবধান রুকু। জামায় ময়লা লাগবে। আমার সাদা জামা। গতকালকেই দাদু ধুয়ে দিয়েছে। হাত ছিটিও না। সাবধানে করো।
তার কথা শেষ হয়েছে অমনি রুকুর গালে মশা দিয়েছে কামর। ও আল্লাহ বলে যেই মশা মারতে যাবে অমনি হাত আবার জারা দেয়। এবার সব ময়লা জামায় তো পরেছেই সাথে হৃদয়ের র শরিরেও। এই দুরবস্থা দেখে রেগে সে মারতে গেল রুকুকে। রুকু দেখলো মহা বিপদ। ভয় পেয়ে সে ওখান থেকে উঠে দিলো দৌড়। ঠিক সে সময় রুকুর মা ওখান দিয়ে যাচ্ছিলো। মেয়ের জামা কাপড়ে কাদা মাটি দেখে সে রেগে উঠলো। লক্ষ্মীছাড়া মেয়ে, এরকম ময়লা করলি কী করে?
রুকু কাঁদো-কাঁদো কন্ঠে বললো হৃদয় করে দিয়েছে এরকম।
রুকুর মা এ - কথা শুনেই হৃদয়কে ধরে এনে এক থাপ্পড় মেরে দিল তার গালে। হৃদয়ও এমন জোরে কেঁদে উঠল যে বাড়ির এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত তার চিৎকার ছড়িয়ে পরলো। তখন হৃদয়ের বাবা-ও বেরিয়ে এলো। এসেই বললো আমার ছেলেকে মারছো কেনো ?
শুরু হলো চেঁচামেচি। দেখতে দেখতে তুমুল ভাবে বেধে উঠল ঝগড়া। আশেপাশের বাড়ির মানুষও জোরো হয়েগেছে। বাড়ির মুরুব্বি হৃদয়ের দাদু ঘর থেকে বের হয়ে ঝগড়ার নিকট এসে বলল। তোমরা রোজার দিনে কি শুরু করছো। এই আত্মসংযমের মাসে। চুপ হও। রোজা হালকা হয়ে যাবে।
কে কার কথা শুনে।
এ বলে আমার মেয়ের গায়ে হাত আমি ছাড়বো না। অন্যজন বলে আমার ছেলের বিচার আমি করবো অন্যজন কেন গায়ে হাত দিলো।
এর মধ্যে রুকুর সামনে দিয়ে একটা ছাগল ছানা যাচ্ছিলো। ছাগল রুকুদের কাঠাল পাতা খেতে লাগলো। রুক ছাগল ছানা ধরার জন্য তার পিছু নিলো। আর হৃদয়কে চিৎকার করে ডাকছে, হৃদয় ভাইয়া, হৃদয় ভাইয়া দেখে যাও ছাগল আমাদের কাঠল গাছ খেয়ে ফেলছে। লাঠি নিয়ে আসো, ছাগলছানা ধরো।
হৃদয়ও রুকুর ডাক শুনে ছাগল ধরার জন্য পিছু নিলো। অনেক চেষ্টা করেও তারা ছাগল ছানা ধরতে পারলো না। যেই ধরতে যায় অমনি ছাগল লাফ দিয়ে চলে যায় আর রুকু হেসে উঠে। রুকুর হাসি দেখে হৃদয়ও হাসে।
রুকু এমন হাসি হাসছিল যে, হাসির চোটে কথা বলতে পারছিল না। আনন্দে আত্মহারা হয়ে তারা ছাগাল ছানার পিছনে ছুটতে ছুটতে সেই ঝগড়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। তখনও তাদের ঝগড়া থামেনি।
বৃদ্ধ দাদু দু'জনের হাসির আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে হৃদয় আর রুকু হাসছে আর ছাগল ছানার পিছু দৌড়াছে। এই দেখে বুড়ি লোকগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলল, তোমাদের কি এতটুকুও লজ্জা করছো না?
তোমরা কাদের জন্য ঝগড়া করছো?
ঐ দিকে তাকাও!
দেখো!
যাদের নিয়ে ঝগড়া করছো তারা কিন্তু দিব্যি সব ভুলে গিয়ে আবার মনের আনন্দে খেলছে।
ভুলে গেছে তাদের অতিত। এই রোজায় তাদের নিকট থেকে শিখো। আহা সোনার চাঁদ শিশুরা, কি সরলতা, কি কমল মন তাদের।
আহা!! আহা!!
বড়দের চেয়ে তাদের জ্ঞানবুদ্ধিই না-জানি বেশি। লোকগুলো শিশু দু'টির দিকে চেয়ে খুব লজ্জিত হলো। রুকু হৃদয় হাসতে হাসতে চলে যায় মনের আনন্দে ছাগাল ছানার পিছনে

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৫৬

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: শিশুদের সরলতা মুগ্ধ করেছে।

০৩ রা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৫

প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য

২| ০৩ রা জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। ধন্যবাদ।

০৩ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩

প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর

৩| ০৩ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:২০

প্রাইমারি স্কুল বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর, মন্ত্যবের জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.