নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চারটি বই এবং সংক্ষিপ্ত মন্তব্য

০২ রা মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫

২ মে ২০১৩ বৃহস্পতিবার রাত্র ৮:৪৫ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭



পরাপর চারটি বই পড়ে ফেললাম। হুমায়ূন আহমেদ’র ‘দেয়াল’, এম সাখাওয়াত হোসেন’র ‘বাংলাদেশ: রক্তাক্ত অধ্যায় ১৯৭৫-১৯৮১’, এবিএম মূসা’র ‘মুজিব ভাই’ এবং নীল লোহিত’র ‘সুদূর ঝর্ণার জলে’। বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, জিয়া, উভয়ের শাসনকাল এবং সেনা অভ্যুত্থান--- এগুলোই প্রথমোক্ত তিনটি বইয়ের বিষয়বস্তু। আর চতুর্থটি সম্ভবত সুনীলের আত্মজৈবনিক উপন্যাস। উপন্যাসটি পড়ার পর এক ধরনের ঘোরলাগা কাজ করছে মনের মধ্যে, প্রেমের অপ্রত্যাশিত অপরিণতির জন্য মনের ভেতরটা হাহাকার করছে!



বহুল আলোচিত-সমালোচিত হুমায়ূন আহমেদ’র ইতিহাসনির্ভর উপন্যাস ‘দেয়াল’ কতটা নির্মোহভাবে তিনি লিখতে পেরেছেন, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। পুরো উপন্যাসটিতে তাঁর ব্যক্তিগত মনোভাবের ছাপ স্পষ্ট। তবে যথারীতি হুমায়ূনীয় স্টাইলে রয়েছে গল্পের ধাঁধা, চমক এবং নাটকীয়তা। উপন্যাসটির ভূমিকা লেখা আনিসুজ্জামানের সাথে আমিও একমত--- বইটি পাঠক সমাদর লাভ করলেও শেষ পর্যন্ত বিতর্কিতই থেকে যাবে।



এম সাখাওয়াত হোসেন’র বইটি সুখপাঠ্য যদিও একজন সেনা কর্মকর্তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই লেখা। তারপরও বিভিন্ন অভ্যুত্থানের বিস্তারিত বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি চেষ্টা করেছেন যথাসাধ্য নিরপেক্ষ থাকার, অভ্যুত্থানসমূহের কারণগুলোর নিজস্ব বিশ্লেষণও তুলে ধরেছেন; যদিও বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করার যথেষ্ট অবকাশ আছে। তবে একটি বিষয়ে আমি একমত--- রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ব্যর্থতাই অভ্যুত্থান হবার প্রধান কারণ। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিরোধ না করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানগণ যেভাবে মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেন, তা সীমাহীন লজ্জার এবং অমার্জনীয় অপরাধ।



শেষ করব বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলে। বঙ্গবন্ধু সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন বাকশাল, রক্ষীবাহিনীর কর্মকাণ্ড এবং চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের জন্য। আমার নিজস্ব ধারণা, বঙ্গবন্ধুর সকল ব্যর্থতার পিছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী তাঁর সুবিশাল হৃদয় এবং শিশুর মত সারল্য। বাঙালি জাতির জন্য তাঁর হৃদয়ের ভালোবাসা ছিল আকাশের মতই অসীম। তিনি কখনো কঠোর হতে পারেননি। কেউ কোনো অপরাধ করলেও তিনি কিছু বলতে পারতেন না। এ দুর্বলতাই তাঁকে দক্ষ শাসক হতে দেয়নি, রাষ্ট্রের অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেয়নি যথার্থভাবে। চারপাশের মানুষদের চাটার দল-চোরের দল প্রকাশ্যে বললেও মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম। শত্রুর প্রতিও ছিল সম্যক সমাদর। তাঁর তোষণকারী এবং শত্রুরা যথার্থই এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছেন। যখন তাঁকে সরাসরি জিয়া-ওসমানী-ফারুক-রশীদের নামোল্লেখ করে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা জানানো হয়েছিল, তখন কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরে থাক, উল্টো খুব বিরক্তি নিয়ে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘ওরা আমার সন্তানসম। এসব আমি বিশ্বাস করিনা।’ বঙ্গবন্ধু যথার্থই বলেছেন, তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল বাঙালি জাতি আর সবচেয়ে বড় দোষ ছিল বাঙালি জাতির প্রতি তাঁর মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা।




উপরের লেখাটি কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস হিশেবে দিলাম। চারটি বই শেষ করার প্রেক্ষিতে উপরের লেখা। বঙ্গবন্ধুকে এবং জিয়াকে নিয়ে আরো কিছু লেখার ইচ্ছে আছে। ভবিষ্যতে লিখব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.