নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আম্মুর কান্না এবং পালের গোদা গোলাম আযমের শাস্তি: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০১

১৫ জুলাই ২০১৩ সোমবার রাত্র ১১:০৩ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭



প্রিয় মৃন্ময়ী,



মনটা এমনিতেই বিষণ্ন! ভিতরে-ভিতরে কষ্টে মরে যাচ্ছি! সকালে আম্মু ফোন দিয়েছিলেন। শিশুর মত কাঁদছিলেন! মনে হচ্ছিল তাঁর মত অসহায় পৃথিবীতে কেউ নেই! আম্মুর কান্না এখনো কানে বাজছে! পৃথিবীর মস্ত বড় অপরাধী মনে হচ্ছে নিজেকে!! আম্মুর টাকাগুলোর যথাযথ হেফাজত আমি করতে পারিনি। ১৫ লক্ষ টাকা; আম্মুর হিসাবানুযায়ী এখন সাড়ে সতেরো লক্ষ হবার কথা। অথচ আমার হাতে এখন কোনো টাকাই নেই।



শেয়ারবাজারে হারিয়েছি ছয় লক্ষ টাকা। তারপর হাতে ছিল ৯লক্ষ টাকা। বসুকে নাটক বানানোর জন্য ধার দিয়েছিলাম ২ লক্ষ টাকা (মূলত বসুর কৌশলের কাছে আমার সরলতা পরাজিত হয়!)। বাদল ভাইয়াকে দিয়েছিলাম ৪ লক্ষ টাকা। হিমুকে উত্তরার জমির জন্য দিয়েছিলাম ২ লক্ষ টাকা। আর ন্যাশনঅ্যাডে দিয়েছিলাম ১ লক্ষ টাকা। তুরাগের নলভোগ মৌজায় ১০শতাংশ জমি রাখার জন্য খরচ হয়েছে দেড়লক্ষ টাকার মত। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১০ শতাংশ জমি রাখা বাবদ সর্বমোট ৫০ হাজার টাকার মত দিয়েছি রিয়াজ ভাইকে। রিয়াজ ভাই আমাকে জানিয়েছেন যে, ওখানে প্রতি শতাংশ জমির বাজারমূল্য ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা। জানিনা তাঁর তথ্য কতটুকু সত্য কিংবা মিথ্যা!



হিমুর কাছ থেকে মাত্র সত্তর হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। বসুর কাছ থেকে কোনো টাকা পাইনি। বাদল ভাইয়া তাঁর কথা রাখেননি। মাত্র ২ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছেন। (আমি তওবা পরেছি জীবনে আর কাউকে টাকা দিবো না; একমাত্র মোহনা কিংবা এরকম দু'একজন কাছের মানুষ ব্যতীত!) ন্যাশনঅ্যাড থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ফিডব্যাক পাইনি।



দিনের পর দিন বাসায় মিথ্যে কথা বলেছি। এত কিছুর পরও বাসায় এখনো সত্যটা জানাতে সাহস পাইনি। মোহনা বারংবারই আমাকে বলেছে সত্যটা বাসায় বলে দেয়ার জন্য। এই একটি মাত্র মেয়ে, যে আমাকে প্রকৃতপক্ষেই মন থেকে ভালোবাসে এবং যার কাছে আমার সুখ-দু:খ ও ভালো-মন্দ সবার উপরে প্রাধান্য পায়। আমি এটা অনুভব করতে পারি।



উদ্দেশ্য যতই ভালো থাক, আম্মুর টাকা আমি রক্ষা করতে পারিনি- এটাই বড় কথা। জানিনা কিভাবে এই পাপ থেকে মুক্তি পাবো!



যাহোক, তবে প্রতিটি ঘটনাই একেকটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে; কিছু শিক্ষা দেয় জীবনকে। অনুরূপভাবে গভীর খাদে পরায় আমারো একটি উপকার হয়েছে। আমি আমার চারপাশের মানুষদের চিনতে পেরেছি; নতুনভাবে আবিষ্কা করেছি। আমি কাদের সাথে চলছি, কাদেরকে আপন ভাবছি এবং কতটা ভুলের মধ্যে ছিলাম, তাও অনুধাবন করতে পারছি।



২.

এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। আজ দীর্ঘ তিনমাসের অপেক্ষার পর গোলাম আযমের রায় প্রকাশিত হয়েছে। গোলাম আযম সম্পর্কে নতুন করে কিছু লেখার নেই। শুধু এটুকু লিখব যে, গোলাম আযম হলো সেই নরাধম, যিনি একাত্তরে সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল নায়ক, মাস্টারমাইন্ড এবং লাইটহাউজ। গ্রেফতার হবার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ নামক দেশটির বিরোধিতা করে গেছেন। কখনোই মেনে নিতে পারেননি তিনি স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে।



যাহোক, আজ রায়ে তাকে নব্বই বছরের জেল দেয়া হয়েছে। ফাঁসি দেয়নি ট্রাইবুনাল। পুরো জাতির প্রত্যাশা ছিল যে, গোলাম আযমের ফাঁসি হবে। একই সাথে আমারো প্রত্যাশা ছিল যে, ফাসিঁ হোক। তবে যদি বিচারিক দৃষ্টিকোণ এবং আবেগের উর্ধ্বে উঠে দেখি, তাহলে রায়টি ঠিক আছে বলেই প্রতীয়মাণ হয়। গোলাম আযমের বয়স বর্তমানে একানব্বই বছর। নানা রোগে আক্রান্ত। এসব বিবেচনায় ৫টি অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়া সত্বেও মৃত্যুদণ্ড দেয়নি; বরং ৯০ বছরের জেল দিয়েছে। আমি বিচারক হলেও সম্ভবত একই কাজ করতাম। যদিও আবেগের জায়গা থেকে এই নরাধমকে অনুকম্পা দেয়ার সুযোগ নেই। একাত্তরে তো আশি বছরের বৃদ্ধাকেও ধর্ষণ করা হয়েছে। তখন তো বয়সের কারণে কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা নির্বিশেষে হত্যা-ধর্ষণ-অত্যাচার করা হয়েছে।



হতে পারে এটা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো রাজনৈতিক কৌশল, হতে পারে বিচারকদের একান্তই বিচারিক মনের (Judicial Mind) প্রয়োগ! আর সবচেয়ে বড় উপহাসটা মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে আগামিকাল। গণজাগরণ মঞ্চ রায় প্রত্যাখান করে আগামিকাল হরতাল ডেকেছে; জামায়াতও রায় প্রত্যাখান করে হরতাল ডেকেছে আগামিকাল।



তবে একটি কথা না বললেই নয়। রাজনৈতিক চাপেই হোক কিংবা লোক-দেখানো বা সদিচ্ছা থেকেই হোক, আওয়ামী লীগ সরকার অন্তত একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শুরু করেছে; ট্রাইবুনাল থেকে ইতোমধ্যে ৫ জনের সাজার রায়ও দেয়া হয়েছে। বাকিদের বিচার এখনো চলছে। এটাও বাংলাদেশের কম অর্জন নয়। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এ বিচার মাইলফলক হয়ে থাকবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.