![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর মানুষ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ বৃহস্পতিবার রাত্র ১১:৫৪ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭
২৩ সেপ্টেম্বর খানিক দুশ্চিন্তায় সময় পার করছি। কেননা, রাত্র সাড়ে আটটায় কানাডার ওজগুড হল ল স্কুল থেকে অ্যামি ব্রিটন-কক্স টেলিফোনিক ইন্টারভিউ নিবেন। সেখানে আমি প্রোফেশনাল জেনারেল এলএল.এম. করার জন্য আবেদন করেছি।
আব্বুর সাথে সকাল ১১টার দিকে ডাইনিং রুমে কথা বলছিলাম। তিনি সকালের নাস্তা করছিলেন। রুমে ফিরে দেখি (হাসান তারেক) পলাশ ভাইর ফোন। আমি ভাবলাম হয়তো আব্বুর সাথে কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছেন। ফোন ব্যাক করলাম। তিনি জানালেন, এয়ারটেল লিগ্যালে নিয়োগ হবে। আমি আগ্রহী কিনা। আমি তাকে জানালাম যে পরের দিন তাঁর সাথে আমি দেখা করব।
পরে আব্বুর সাথে এ নিয়ে কথা বললাম। আব্বু আমাকে আবেদন করতে বললেন। এর মধ্যে পলাশ ভাই আবারো ফোন দিলেন। সিভি চাইলেন। আমি ইমেইল করে পাঠিয়ে দিলাম। বিকেলবেলা তিনি জানালেন পরের দিন অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর আমার ইন্টারভিউ। রাত্রে ওজগুডের সাথে ইন্টারভিউ শেষ (সে কাহিনী আরেকদিন লিখব) করে পলাশ ভাইর সাথে দেখা করতে গেলাম ধানমন্ডির প্রিন্স প্লাজার ওখানে। অনেকক্ষণ নানা বিষয়ে গল্প হল। তিনি আমাকে পরামর্শ দিলেন কি ধরনের প্রশ্ন হতে পারে। এয়ারটেল সম্পর্কে অনেক কিছু জানালেন। বাসায় ফিরে আব্বুর কাছ থেকে জমি সংক্রান্ত অনেক কিছু জানলাম; হাতে-কলমে শিখলাম।
যথারীতি সময়মত বনানীর এয়ারটেল অফিসে হাজির হলাম পরের দিন। মোরশেদ উল্লাহ নামের একজন ইন্টারভিউ নিলেন। মূলত আগে কি করেছি, কি ধরনের কাজ করেছি, ভেটিং পারি কিনা, জমিসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করলেন। সবগুলোর উত্তরই মোটামুটি দিতে পারলাম। তাকে সন্তুষ্ট মনে হল। তারপর তিনি আমাকে বুঝিয়ে বললেন এয়ারটেলে আমাকে কি কাজ করতে হবে। সাথে সাথেই আমার জব কনফার্ম করে এইচআর-এ পাঠিয়ে দিলেন বেতন নির্ধারণ করার জন্য।
এইচআর-এ যার সাথে কথা হল, তার নাম তাহসিন। মানুষটিকে আমি কোনোদিন ভুলব না। তিনি প্রথমে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেন। এক সময় জিজ্ঞেস করলেন আমাকে চেম্বারে কত দেয়া হয়। আমি বললাম, পনেরো হাজার। তিনি বললেন, এয়ারটেলে আমাকে মোট ২৮ হাজার টাকা এবং ২ হাজার মোবাইল বিল দেয়া হবে। কিছুক্ষণ পর কি মনে করে উঠে গেলেন এই বলে যে, তিনি হয়ত একটু ভুল করছেন! পরক্ষণে এসে জানালেন, তিনি আগে ভুল বলেছেন; আমাকে দেয়া হবে ২৪ হাজার টাকা এবং ২ হাজার টাকা মোবাইল বিল। স্বাভাবিকভাবেই মনটা খারাপ হয়ে গেল! আমার প্রত্যাশা ছিল ৩০ হাজার টাকা। মূলত তিনি ভেবেছেন যে, ১৫ হাজারের জায়গায় ৩০ হাজার হলে বেশি হয়ে যায়! তাই একটু ভেবে ২৬ হাজার অফার করলেন! আর আমিও বোকা! কোনো প্রকার বার্গেনিং না করে অবলীলায় মেনে নিলাম! তাহসিন সাহেবকে মনে থাকবে!
আজ এয়ারটেলে যোগদান করলাম। সকাল ১০টা থেকে ৭টা পর্যন্ত অফিস। কাজের পরিবেশ ভালো। দেখা যাক, কতদিন চালাতে পারি!
২.
আম্মুকে ফোন দিয়েছিলাম বেশ কয়েকবার। প্রথমে মোবাইল বন্ধ পেয়েছি। পরে যখন খোলা পেয়েছি, তখনো আম্মু ফোন ধরলেন না। কষ্ট লাগল! ভীষণ কষ্ট! আম্মু আমার উপর ভীষণ ক্ষেপে আছেন; তিনি আমার মুখের উপরই বলেছেন, তিনি আমাকে দুচোখে দেখতে পারেন না। এমনকি ঢাকা এসেও আমার সাথে তেমন কোনো কথা বলেননি।
মহান স্রষ্টা, তোমার কাছে প্রার্থনা আমি যেন আম্মুর টাকাগুলো শোধ করতে পারি। তা না-হলে মানসিকভাবে আমি কখনোই শান্তি পাবো না; আমার আম্মুর দীর্ঘনিশ্বাস আর অভিশাপ নিয়েই আমাকে পথ চলতে হবে! তুমি আমাকে রক্ষা করো। বরাবরই তোমার উপর আমার গভীর আস্থা।
©somewhere in net ltd.