নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাচাদের আগমণ, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপন এবং অন্যান্য

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭

২০ অক্টোবর ২০১৩ রবিবার দুপুর ১২:২২ এয়ারটেল অফিস গুলশান-২ ঢাকা



১.

গত ৮ অক্টোবর দুপুরে শাহ আলম কাকা লিনকে নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসেন। একই সময় মিমও ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা আসে। পরেরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর একদম ভোরবেলা জাহাঙ্গীর কাকা, পারভীন কাকী ও অর্ণব ঢাকা পৌঁছেন। আব্বু এবং শাহ আলম কাকা ভোর ৫টার সময় এয়ারপোর্টে গিয়ে তাদের রিসিভ করে নিয়ে আসেন। ফারুক দাদু গাড়ি পাঠিয়েছিলেন।



তারা ঢাকার ফ্ল্যাটে এবারই প্রথম উঠলেন এবং দেখলেন। এর আগে ২০০৯ সালে এসেছিলেন বাংলাদেশে। তখন আমাদের নিজস্ব কোনো ফ্ল্যাট ছিল না। আমি ধানমন্ডিতে ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকতাম। সেখানে অবশ্য গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর কাকা ও শাহ আলম কাকা।



২.

চাচাদের আগমণে সবচেয়ে বেশি খুশি আব্বু। ফুফুরাও ভীষণ খুশি। আব্বু দুই ভাইকে কাছে পেলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান; মানসিক শক্তি শতগুণ বেড়ে যায় তাঁর। দুই ভাইকে প্রচন্ড ভালোবাসেন। আমি জানি না আমার দুই চাচা তা অনুধাবন করতে পারেন কিনা। আব্বুর একটি বড় গুণ হল তিনি শর্তহীনভাবে, বিনাপ্রাপ্তিতে কিংবা নি:স্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবাসতে পারেন। আমার বাবার মত এরকম উন্নত মানসিকতার মানুষ আমি জীবনে দেখিনি। আরেকজন মানুষ, যাকে অনুসরণ করে আমার বাবা আজকের পর্যায়ে এসেছেন, তিনি আমার দাদু। আমার দাদু কতটা অসাধারণ মানুষ ছিলেন, তা লিখতে গেলে শেষ হবে না! মৃত্যুর ১৪/১৫ ঘন্টা পর যখন দাদুকে আমরা প্রথম দেখলাম, তাঁর সৌম্য চেহারা জ্বলজ্বল করছিল। মনে হচ্ছিল তিনি গভীর নিদ্রারত। অথচ মৃত্যুর ঘন্টাখানেকের মধ্যেই অনেক ব্যক্তির চেহারা বিকট হয়ে যায়; বীভৎস লাগে দেখতে।



৩.

আমার মেজো চাচা মানে শাহ আলম কাকা থাইল্যান্ডে বসবাস করেন। তাঁর একটি মেয়ে রয়েছে। লিন। কাকীর সাথে সম্ভবত কাকার সেপারেশন হয়ে গেছে। কাকীর নাম ইউপিন। তিনি থাইল্যান্ডের মেয়ে। বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী। কাকা তাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। লিনের জন্মের পর কাকীর সাথে সেপারেশন হয় কাকার। লিন কাকার সাথেই থাকেন। কাকী সম্ভবত নতুন বিয়ে করেছেন। সম্ভবত বললাম এ কারণে যে, আমি সুনিশ্চিত না লিন মাঝে-মাঝে কাকীর কাছে গিয়ে থাকেন।



প্রথম জীবনে শাহ আলম কাকা প্রায় ৪ বছর সিঙ্গাপুর ছিলেন। তারপর জাপান ছিলেন সাড়ে আট বছর। সেখানে সনি কোম্পানিতে কাজ করতেন। জাপানেই কাকীর সাথে পরিচয় তার। তারপর দুজন বিয়ে করে থাইল্যান্ডে স্থায়ী হন কাকা-কাকী।



আমি শাহ আলম কাকাকে কাছে পেয়েছি খুব কম। কিন্তু মানুষটিকে আমার ভীষণ পছন্দ। খুব মিশুক প্রকৃতির। তাঁর রসিকতাবোধ মারাত্মক। সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি তাঁর সততা এবং সরাসরি কথা বলার জন্য। কোনো প্যাঁচ নেই তাঁর মধ্যে। একদম সাদাসিধে মানুষ। স্পষ্টভাষী। অনেক অপ্রিয় কথাও মুখের উপর বলে দেন, কারো তোয়াক্কা করেন না; যদিও এর ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটি দিকই আছে। আমি এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই নিতে চাই।



এখানে আরেকটি বিষয় লেখা প্রয়োজন। কাকা দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় তাকে। যেকোনো সময় সুগার ফল করে তাঁর। দুবার মারাত্মকভাবে মটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করেছেন। তাঁর মতে, অনেক আগেই তিনি ইহলোক ত্যাগ করতেন; বর্তমানে তিনি বোনাস জীবন যাপন করছেন।



লিন অনেক বড় হয়ে গেছে। লম্বা প্রায় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি যদিও মিমের চেয়ে বয়সে ছয় মাসের ছোট। মেয়েটি বেশ চমৎকার। কাকার প্রায় সব গুণই সে পেয়েছে। লিন যদি ইংরেজিটা ভালোভাবে রপ্ত করতে পারে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগটা আরো কার্যকর হবে। ওকে যে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াবে, সেই সামর্থ্য কাকার নেই। তবে ওকে আমি ইংরেজিটা ভালোভাবে রপ্ত করতে বলেছি। ওকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম বাংলাদেশ পছন্দ করে কিনা। প্রত্যুত্তরে সে বলল, আমাদের পরিবারকে সে ভালোবাসে; তবে বাংলাদেশে অনেক ট্রাফিক জ্যাম; দেশটি নোংরা। ঢাকার চেয়ে সে বরগুনাকে বেশি পছন্দ করেছে। কিছুই বলার ছিল না। কেননা, ওর কথা তো সত্য।



শাহ আলম কাকা ও লিন গত ২৫ অক্টোবর থ্যাইল্যান্ডে চলে গেছেন। নি:সন্দেহে তাদেরকে আমরা মিস করব। সবাই বেশ কান্নাকাটি করেছে। লিনও অনেক কেদেঁছে।



৪.

জাহাঙ্গীর কাকাকেও আমার ভালো লাগে; বিশেষ করে তার সততার জন্য। তবে তুলনামূলক বিচারে তাকে আমার কম পছন্দ। তিনি পরিবারের চেয়ে বাইরের মানুষের কথায় বেশি গুরুত্ব দেন। সত্য-মিথ্যা যাচাই করার প্রয়োজনবোধ করেন না। আর আমার অজান্তে তামান্নার সাথে তিনি আমার বিয়ে নিয়ে কথা বলায় আমি চরমভাবে বিব্রত। তামান্নার বিয়ের পুরো বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখার ক্ষেত্রে কাকা এককভাবে দায়ী। তিনি আমার কাছে একবার জিজ্ঞেস করারও প্রয়োজনবোধ করেননি। তবে পারভীন কাকী একবার আমাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন আমি কাকীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, তামান্নাকে আমি বিয়ে করব না। মেয়েটিকে পছন্দ নয়। এমনকি এক পর্যায়ে এসে জাহাঙ্গীর কাকাকেও ফেসবুকে ইনবক্স করেছিলাম তামান্নার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব জানিয়ে। এতকিছুর পরও তিনি তামান্নার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন; আমার বিয়ের ব্যাপারে ওকে আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন।



গত পরশুদিন তামান্নার সাথে দেখা হল ঘটনাক্রমে; কথাও হল ঘন্টাখানেক। তামান্না পুরো দায়ভারটি কাকার উপর চাপিয়েছে। ওর এমন একটা উপস্থাপনা যে, তামান্না অনেক আগেই আমার বিষয়টি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলত যদি-না কাকা ওকে উৎসাহ দিতো! আমি নিশ্চিতভাবেই জানি কাকার সাথে কথা বললে আমি ভিন্ন কথা শুনব। কারণ, তামান্না ইচ্ছেকৃতভাবে ভুল করে উপস্থাপন (মিসরিপ্রেজেন্ট) করায় সিদ্ধহস্ত। সবসময় সে নিজের দায়ভারটাকে এড়িয়ে অন্যের উপর পুরো দায়ভার চাপায়। সত্য ঘটনাও তুলে ধরেনা; আর তুলে ধরলেও সেটা এমনভাবে তুলে ধরে যে, পুরো বিষয়টি বিকৃতভাবে প্রতিভাত হয়।



যাহোক, তবে পারভীন কাকীকে আমি বেশ পছন্দ করি। মানুষটিকে ভালোই মনে হয়। তাকে যথেষ্ট সামাজিক এবং পরিপক্ব মনে হয়।



অর্নবকেও ভীষণ ভালো লাগে। ভীষণ শান্ত, নম্র, ভদ্র, লাজুক প্রকৃতির ছেলে। বয়সের তুলনায় সে বেশ পক্ব। ওকে দেখে আমি মুগ্ধ!



৪.

তামান্নার কর্মকাণ্ডে চরম বিরক্ত! এই মেয়েটি যে এতটা স্টুপিড, প্রতারক এবং নিচুমনের মানুষ, সেটা জানতামই না! এটা বুঝলে কোনোদিনও এমন একটি মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে যেতাম না। নিজের ভুলের মাশুল দিচ্ছি এখন। পরিবারের কাছে ওর জন্য ভীষণভাবে ছোটো হয়েছি। এটা ছিল আমার কল্পনার অতীত!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.