![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর মানুষ
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বুধবার রাত্র ১১:০৬ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা- ১২০৭
প্রিয় মৃন্ময়ী,
দুপুরবেলা হঠাৎ করেই মনে হল আজ বইমেলায় যাওয়া উচিৎ। নতুবা আর সময় পাবো না। আগামিকাল বন্ধু ডাক্তার সজীবের জন্য ল্যাপটপ কিনতে হবে। আর পরশুদিন সকালে উত্তরা যেতে হবে। যদি ঠিকভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে হয়তো বিকেলে ফিরে বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ হতে পারে। সহকর্মী পুষ্পালদাকে বললাম, চলেন আজ আমরা বইমেলায় যাই। তিনি রাজি হলেন। দুপুরের খাবারের পর তিনি বেঁকে বসলেন। তিনি যাবেন না। কি আর করার! অগত্যা একাই অফিস থেকে বের হলাম সোয়া চারটার দিকে। অফিসের অধিকাংশ সহকর্মী তখন এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের বাংলাদেশ বনাম ভারতের ক্রিকেট খেলা দেখতে ব্যস্ত।
বাসে চেপে (৬নং বাস- 'হাফ পাশ নাই' লেখাটি এই বাসের বিশেষত্ব) গুলশান-২ থেকে ফার্মগেট পৌঁছলাম। তারপর যানজটে বিরক্ত হয়ে হাটা শুরু। বইমেলা পৌঁছলাম সম্ভবত পৌনে ছ'টার দিকে। আর হ্যাঁ, পিঙ্কসিটির ডাচ-বাংলা ব্যাঙ্কের বুথ থেকে তিন হাজার টাকা তুলে নিয়েছিলাম পছন্দের বই কেনার জন্য।
প্রথমেই কবিবন্ধু আজাদের স্টলে হাজির। ওর দুটি বই বেরিয়েছে এবার- 'এবং ইয়াম্মি সিরিজ' ও 'প্রিয়াঙ্গনে রণাঙ্গনে'। প্রথমোক্ত বইটি বন্ধু সাফিন মনিরকে উৎসর্গ করেছে। আজাদের অটোগ্রাফসহ বইগুলো কিনলাম। তারপরই কিনলাম জহির আশাফাক (ফেসবুকে 'ক্যাঙ্গারু জ্যাক' নামে পরিচিত) ভাইর কবিতার বই। বিভিন্ন স্টলে ঘুরছিলাম। আজাদ কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে ওর 'অগ্রদূত' প্রকাশনীর ৪২৬ নং স্টলে চলে গেল।
তারেক অণুর 'পৃথিবীর পথে পথে' বইটি কিনলাম। ওঁর সম্পর্কে একটু লেখা প্রয়োজন। যুবক তারেক অণুকে বলা যায় বর্তমান সময়ের বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত পর্যটক। তাঁর নেশাই হল বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ানো। সাহিত্যেও বেশ ভালো বিচরণ। লেখার হাতও বেশ ভালো। নিয়মিত সচলায়তনে ব্লগ লেখেন। মূলত ওই ব্লগসাইট থেকে তাঁর সম্পর্কে জানতে পারি। সমাজতান্ত্রিক দেশ ফিদেল কাস্ত্রোর কিউবা নিয়ে লেখা ব্লগ পড়েই আমি ভক্ত হয়ে যাই। পরবর্তীতে ফেসবুকের বন্ধু তালিকায়ও যুক্ত করি তাঁকে। আশা করি বইটি পড়ে তৃপ্তি পাবো। তার লেখা পড়েই বিভিন্ন দেশ ঘোরার স্বাদ আস্বাদন করব।
বর্তমানে বেশ প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় প্রকাশনী হল 'প্রথমা'। সেখান থেকে আরো ৩টি বই কিনলাম। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান-এর 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ভার', আনোয়ার উল আলম-এর 'রক্ষীবাহিনীর সত্য-মিথ্যা' এবং শাহীন আখতার-এর উপন্যাস- 'ময়ূর সিংহাসন'। শেষোক্ত বইটি পড়ার আগ্রহ জন্মাল মূলত আরেক জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হকের ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ে। তাঁর অভিমত- শাহীন আখতার বর্তমান সময়ের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের বাংলাদেশী লেখক। আর ভীষণ আগ্রহ রয়েছে রক্ষীবাহিনীর উপর লিখিত বইটি পড়ার জন্য। এটিই প্রথম পড়ব। বঙ্গবন্ধু, তাঁর শাসনকাল, তাঁর সম্পর্কিত যে কোনো কিছু পড়তে-জানতে বরাবরই আমার ভীষণ আগ্রহ। সর্বশেষ কিনলাম নোবেলজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী মুহাম্মদ ইউনূসের 'সামাজিক ব্যবসা' বইটি। এই মানুষটির প্রতি আমার ভীষণ শ্রদ্ধা রয়েছে। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণটুকু বাদ দিলে বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় নতুন আঙ্গিকে পরিচিত করানোয় তাঁর ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
২.
২০০৪ সাল থেকে ঢাকা আসার পর অনেকগুলো অঘটনই আমার জীবনে ঘটেছে। বেশ কয়েকটি মোবাইলও চুরি গেছে। তবে যে ঘটনা কখনো ঘটেনি, সেই ঘটনার অভিজ্ঞতা হল আজ। বইকেনা পর্ব সম্পন্ন করে শাওন-মনিরদের সাথে আড্ডাশেষে পৌনে দশটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে রিকশায় মোহাম্মদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। নীলক্ষেত মোড়ে যানজটে বসে ছিলাম আর মোবাইলে ফেসবুক চেক করছিলাম। হঠাৎ করেই মোবাইলের উপর একটি হাতের থাবা পড়ল, মোবাইলটি হাত থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে গেলো। মুহূর্তেই রিকশা থেকে নেমে হাঁক দিলাম। মোবাইলটি আর রাস্তা থেকে না তুলে লাল গেঞ্জি পরহিত তরুণ ছিনতাইকারী দৌড়ে পালালো। আশেপাশের মানুষের বুঝে উঠতেও সময় লেগেছে। স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আমার মোবাইলটি খোয়া যায়নি। চাইলে ছিনতাইকারীকে পাকড়াও করা যেতো। কিন্তু রাস্তা থেকে মোবাইলটি তুলে হাতে দেয়ায় আর পাকড়াও করার আগ্রহ পেলাম না। তবে জনসম্মুখে এরকম প্রকাশ্য একটি ঘটনায় আমি হতভম্ব! ছিনতাইকারীর অসীম সাহস আছে বটে!
আর হ্যাঁ, বইমেলাতে মোহনার ভাই-বোন মৌসুমী আপু আর সাফাতের সাথে দেখা হয়েছিল। মৌসুমী আপু বেশ আন্তরিকভাবে তাদের বাসায় যেতে বললেন।
খেলার ফলাফলটা বোধহয় লেখা উচিত। নিয়মমাফিক বাংলাদেশ ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে। মুশফিকের সেঞ্চুরি কোহলির সেঞ্চুরির কাছে পাত্তা পেলো না।
©somewhere in net ltd.