নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনান্তরিকতা...

০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৩

৭ মার্চ ২০১৪ শুক্রবার রাত্র ১১:১০ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭



প্রিয় মৃন্ময়ী,



আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। একাত্তরের এই দিনে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণটি দিয়েছিলেন, তাকে ভাষণ না বলে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক কবিতা বলা যায়। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠে কবিতাটি যখনি শুনি, রক্তে শিহরণ লাগে, মনটাকে বিপ্লবী করে দেয়, শরীর উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পৃথিবীতে যত ভাষণ রয়েছে, নি:সন্দেহে এই ভাষণ তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।



৭ মার্চ উপলক্ষ্যে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলাম-

''বলা হয়ে থাকে মুগ্ধতা ক্ষণিকের; বেশিক্ষণ থাকে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যতই পড়ছি, যতই জানছি, তাঁর প্রতি দিনদিন আমার মুগ্ধতা বাড়ছে। বাঙালি জাতির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। আজকের দিনে শ্রেষ্ঠ বাঙালির মুখেই রচিত হয়েছিল বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ ‘কবিতা’, স্বাধীনতার অমর ‘কবিতা’। অসামান্য এই মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।।''





তবে দুটো ব্যাপারে আজ ভীষণ বিরক্ত। প্রথমত, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও এবারই সম্ভবত প্রথম বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি কানে আসেনি, মাইকে কোথাও শুনলাম না।

দ্বিতীয়ত, ১৫ আগস্ট যেমন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করা হয়, তেমনি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ খালেদাপুত্র তারেক জিয়ার কারামুক্তিদিবস হিশেবে পালন করা হয়। কতটা অসভ্য হলে মা-ছেলে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে! থ্যু!



২.

আজ প্রথম কেরানিগঞ্জের আঁটিবাজার গেলাম। মোহাম্মদপুরের বছিলা পার হলেই কেরানিগঞ্জ। বাসার কাছেই; অথচ কখনো যাওয়া হয়নি আগে!



সকালে চুন্নু মামার বাসায় যাবার কথা। ফোন দিলাম। তিনি বাসায় না যেয়ে উপরিউক্ত স্থানে যেতে বললেন। সিএনজি ও টেম্পোতে করে গেলাম।



গিয়ে দেখি অবাক কাণ্ড! বাচ্চু আঙ্কেল (ফুল মামির দুলাভাই) ১৫০ শতাংশ জমির উপর বাংলো বাড়ি করেছেন। লোকেশনটাও বেশ চমৎকার। ওইটুকুন বাংলো বাড়ি করতে বেশ ভালোই অর্থকড়ি গেছে। শুনলাম, ২০ লক্ষ টাকার উপরে। আর হ্যাঁ, বাচ্চু আঙ্কেল একজন সচিব; বর্তমানে রেডিওর ডিজি হিশেবে কর্মরত আছেন।



জমিটি তিনি কিনেছিলেন ১৮ বছর আগে। তখন নাকি জমি ছিল না, ছিল শুধু পানি। সেই অর্থে তিনি পানি কিনেছিলেন।:) মাত্র ১২ লক্ষ টাকায় দেড়শ শতাংশ জমি। বর্তমান বাজার মূল্য ৪ কোটি টাকা মাত্র। :D :P



দুপুরে মিলাদের আয়োজন ছিল। জুম্মার নামায আদায় করার পর সবাই বাংলোতে জড়ো হতে থাকে। লোক সমাগম ভালোই হয়েছিল। অন্তত শ'দুয়েক তো হবেই। রিচি-রাব্বিসহ ফুল মামি এসেছিলেন। বাবু মামাও এসেছিলেন। মূলত বাবু মামার সাথে দেখা করার উদ্দেশেই যাওয়া।



ফুল মামির বাসায় যাই না- আমার বিরুদ্ধে ফুল মামির অভিযোগ। অভিযোগটি মিথ্যে নয়। আমি স্বেচ্ছায় তার বাসায় যাইনা। চুন্নু মামা আমার ভীষণ পছন্দের একজন মানুষ। তাঁর প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু মামির ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও তিনি আমার সাথে কখনোই বাজে ব্যবহার করার সুযোগ পাননি। তবে অনেকেই ভুক্তভোগী। আমি ২০০৪ সালে তার বাসায় সপ্তাহখানেক ছিলাম। মামি যাতে আমার সাথে বাজে ব্যবহার করার সুযোগ না পায়, তজ্জন্য নিজে থেকেই রান্নাঘরে থালাবাসন ধুয়ে দিতাম, বাসার টুকটাক কাজ করে দিতাম। মামি তাতে বেশ খুশি হতেন। মডেল কলেজে ভর্তি হবার পর থেকেই মামির বাসা আমি এড়িয়ে চলতে শুরু করি। সত্যি কথা বলতে শুধু রুম্মান ভাইদের বাসা ব্যতীত সব আত্মীয়স্বজনদের বাসাই আমি এড়িয়ে চলি। কারো কাছে উটকো ঝামেলা হবার ইচ্ছে নেই। লোরেন আপুর কারণে এক সময় রুম্মান ভাইদের বাসায় যাওয়াও ছেড়ে দেই।



মূলত আমার দাদু ছিলেন ভীষণ স্বাধীনচেতা মানুষ। তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী। প্রথম জীবনে লজিং থাকতেন। মানুষের সেই 'সুব্যবহার' তিনি ভোলেননি। যার কারণে কখনোই তিনি আব্বুকে কোথাও লজিং থাকতে দেননি। এমনকি পেয়িং গেস্ট হিশেবেও নয়। আব্বুও কখনো আমাদের লজিং বা কারো বাসায় রাখেননি। সব সময় আলাদা থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আব্বুর যতই অর্থকষ্ট হোক না কেন। তবুও কারো কথা শোনা থেকে আমাদের বিরত রেখেছেন। যিশু ভাইয়া আদমজী ক্যান্ট-এ পড়াশুনার সময় কিছুদিন মামার বাসায় ছিলেন; তাও বলা যায় একটি পরিত্যক্ত গার্বেজ রুমে। মামি তাকে বলেছিলেন, তুমি নিজে সাবান কিনে সেটা ব্যবহার করবে। আব্বু এই কথা শুনে ভীষণ কষ্ট পান। তখন একটি বল সাবানের দাম মাত্র ৩ টাকা। অথচ মামি এমন একটি ছোটোলোকি কথা কেমন করে বলতে পারলেন! আব্বু সেই থেকে মামির বাসায় যান না।



৩.

প্রথম যখন ফুল মামি আমাকে দেখলেন, খানিকটা হতভম্ব হলেন বোধকরি; একটু কাষ্ঠ হাসিও দিলেন। তিনি আমাকে প্রত্যাশা করেননি। আমাকে দাওয়াতও দেননি। তবে পরে তিনি আমাকে ডেকে নিয়ে অনেকক্ষণ গল্প করলেন। সহাস্যে কথা বললেন। অনুযোগ করলেন কেন আমি তার বাসায় যাই না। আমি বললাম, বাসায় না গেলেও কিংবা যোগাযোগ না করলেও আমার আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। তখন তিনি ফোড়ন কেটে বললেন, যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি; এখন তোমার সব হয়েছে, শুধু নেই আমি। ফ্ল্যাট কেনার পর থেকে আর আমাদের বাসায় আসো না। প্রত্যুত্তরে বললাম, মামি ফ্ল্যাটে উঠেছি ২০১১ সালে। এর আগে কিন্তু বাইরেই থাকতাম। ঢাকায় এসেছি ২০০৪ সালে। সুতরাং আপনার বাসায় না যাওয়ার সাথে ফ্ল্যাট কেনার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আমার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। বিরক্তি চোখেমুখে প্রকাশ পেল। প্রসঙ্গ পাল্টালেন।



দীর্ঘদিন পর দেখা হবার পর বাবু মামা প্রথমে তেমন একটা পাত্তা দেননি। তবে যখন চুন্নু মামা তাকে জানালেন যে, আমি ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি এবং ইতোমধ্যে ভিসা পেয়েছি, তখন বেশ আন্তরিকভাবেই কথা বললেন। সবাইকে বললেন, মিশু খুবই ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। বিভিন্ন গল্প করলেন। নানা উপদেশ দিলেন। তার ব্যক্তিগত ও বাসার ফোন নাম্বার দিলেন। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য যে, বাবু মামা ফুল মামির ছোটো ভাই। তিনি ভীষণ মেধাবি। বুয়েট থেকে পড়াশুনা করে বিমানের ইঞ্জিনিয়ার হিশেবে কর্মরত আছেন। পুরো পরিবার কানাডাতে থাকে।



৪.

বাচ্চু আঙ্কেলকে আমি সব সময় অন্য রকম মানুষ হিশেবেই দেখেছি। রাশভারী মানুষ। মাশার বাবা-মা যেমন আন্তরিকভাবে কথা বলেন, সাবার বাবা-মা তেমনটা নন। এক ধরনের দাম্ভিকতা প্রকাশ পায় তাদের আচরণে! আমি যখন ওদের বাংলোতে গেলাম, তখন বাবা-মেয়ে বালুর উপর পাইপের পানি ছিটাচ্ছিলেন। আমাকে দেখে তাদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হলো না। একবার তাকিয়ে দেখারও প্রয়োজনবোধ করলেন না। আমি সামনে এগিয়ে তাদের সালাম দিলাম। সালামের উত্তর দিয়ে আবারো নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। সাবাও শুধু প্রথম একটু কথা বলল। এরপর শুধু চলে আসার সময় কথা বলল। অবশ্য এটার একটা কারণ হতে পারে ওদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ না থাকা। তারপরও যতটুকু আন্তরিকতা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটা পাইনি। আচ্ছা, মানুষ ক্ষমতাশালী হলেই কি দাম্ভিক হয়ে যায়? অহঙ্কারী হয়ে ওঠে? ব্যক্তিত্ব আর অহঙ্কার- দুটো ভিন্ন বিষয়।

মহান স্রষ্টা, আমি যেন কখনো দাম্ভিক না হই; আমার মধ্যে যেন কখনো অহঙ্কার সৃষ্টি না হয়। আমি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিশেবে জীবন যাপন করতে চাই। মানুষকে মানুষ হিশেবে মূল্যায়ন করতে চাই। ভালো মানুষের সান্নিধ্য পেতে চাই।



৫.

যাহোক, ভালো সময় কাটল ওখানে। রিচি-রাব্বিকে কিছুক্ষণ মাছ ধরায় সহযোগিতা করলাম। অদ্ভুত ব্যাপার হল ওরা বড়শি হিশেবে ছিপ্টিপিন ব্যবহার করেছে। পরে ফুল মামিও যোগ দিলো আমাদের সাথে। মোট ৭টা মাছ ধরা হলো। খাবারের ভালো আয়োজন ছিল। বিকেলে নাস্তারও ব্যবস্থা ছিল। সব মিলিয়ে ভালো আয়োজন।



৬.

আমারো স্বপ্ন আছে ঢাকার অদূরে একর তিনেক জমি কেনে নিজস্ব খামার বাড়ি করব। অবকাশকালীন সময়ে সেখানে সময় কাটাবো। পরিবার-আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবরা চমৎকার সময় কাটাবে। স্রষ্টা আমার সহায় হন স্বপ্ন বাস্তবায়নে। আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.