নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই শিক্ষা লইয়া আমরা কী করিব!

১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

১০ মার্চ ২০১৪ সোমবার বিকেল ৪:৩০ এয়ারটেল অফিস পিঙ্কসিটি গুলশান- ২ ঢাকা



প্রিয় মৃন্ময়ী,



আইন ব্যবসা সারা বিশ্বে একটি মর্যাদার পেশা হিশেবে বিবেচ্য। উন্নত দেশগুলোতে সবচেয়ে ভালো ছাত্ররা আইন পড়ার সুযোগ পায়। সমাজে তাদের সম্মান অন্য মাত্রার। উচুঁ কদর।



কিন্তু বাংলাদেশে ঠিক বিপরীত চিত্র বিদ্যমান। প্রবাদ আছে, যার নেই কোনো গতি, সে করে ওকালতি। এখানে আইন পেশায় যুক্ত বেশির ভাগ মানুষ ছ্যাঁচরা শ্রেণির। এরা আর কিছু পারুক কিংবা না পারুক, ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজ থেকে কোনো রকমে এলএল.বি. ডিগ্রি নিয়েই আইনপেশায় যুক্ত হয়ে যান। এদের না আছে ব্যক্তিত্ব, না আছে আইনের ন্যূনতম জ্ঞান। ঠিকভাবে নিজের নাম লিখতেও এরা কলম ভাঙে তিনবার। কিন্তু তারা 'বিজ্ঞ' আইনজীবী। এসব ছ্যাঁচরা আইনজীবীরা মানুষের পকেট কাটায় সদা ব্যস্ত। এদের ব্যক্তিত্বহীন কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে আইনজীবীদের কোনো মূল্য নেই। আমি নিজেও এই পেশাজীবীদের সম্প্রদায়ভুক্ত। সুতরাং আত্মসমালোচনা করাই যায়।



বার কাউন্সিল হল বাংলাদেশের আইনজীবীদের সনদ দেয়ার জাতীয় প্রতিষ্ঠান। স্বায়ত্তশাসিত বার কাউন্সিল বাংলাদেশের একটি অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান। বাজারে কথিত আছে দুই-আড়াই লাখ টাকা ঘুষ দিলেই আইনজীবীর সনদ মেলে। আর রাজনৈতিক কোনো নেতার সুপারিশ থাকলে তো কথাই নেই; আইনজীবী হওয়া ঠেকাবে এমন সাধ্যি কার! দিন দুয়েক আগে বার কাউন্সিলে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শুনলাম পরীক্ষার হলে সবাই নকল করে লিখেছে, হুবুহু বই দেখে লিখেছে অনেক পরীক্ষার্থী। এই হলো অবস্থা! এমসিকিউ পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার হলে অবাধ মোবাইল ব্যবহারের কারণে উত্তরগুলো ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে পেয়ে যায়। সঙ্গোপনে প্রশ্ন ফাঁস তো নিয়মিত ঘটনা। আমি যখন পরীক্ষা দিয়েছি, আমার রুমে তেমন নকল হয়নি অবশ্য। অন্তত আমার চোখে পড়েনি। ঢাকা কলেজের এই রুমটিতে বেশ কড়া নজরদারি ছিলো পরিদর্শকদের।



বার কাউন্সিলের দুর্দশার আরেকটি উদাহরণ দেই। কানাডায় অ্যাসেসমেন্ট করার জন্য বার কাউন্সিল থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র নিতে হয়। প্রত্যয়ন পত্র হাতে নিয়ে দেখি ভুল রয়েছে ইংরেজিতে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলাম। ম্যাডাম বেশ ঠাঁটের সাথে সুন্দর করে বললেন, আমাদের স্যার (বার কাউন্সিলের সচিব) এভাবেই দিতে বলেছেন। সবাই নিচ্ছে, তাদের তো সমস্যা হচ্ছে না। আপনার সমস্যা কেন? আমি শুধু বললাম, সবাই একটি ভুল পত্র নিচ্ছে, সেজন্য আমারো নিতে হবে, এরকম তো কোনো কথা নেই। আর কথা বাড়ালাম না সময় স্বল্পতার কারণে। পরে আরো বিব্রত হলাম খাম চাইতে গিয়ে। আমাকে বার কাউন্সিলের অফিসিয়াল খাম দেয়া হল। কিন্তু খামটির উপরে বাংলায় লেখা সব কিছু। বললাম, বিদেশে পাঠাবো বলে ইংরেজিতে লেখা খাম প্রয়োজন। জানলাম, সেই খাম নেই! এমনকি বার কাউন্সিলের লোগোযুক্ত ইংরেজি সিল পর্যন্ত নেই! এই হলো আমাদের বার কাউন্সিল!



২.

যে কারণে আজকের লেখার অবতারণা, তা হলো মোবাইলে পাওয়া একটি ক্ষুদেবার্তা। গত মাসে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল বিপুলভাবে জয়ী হয়। খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি করে গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিউটে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের অনুষ্ঠান হয়। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হবার সুবাদে আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। ক্ষুদেবার্তা দিয়ে নিমন্ত্রণ জানান ঢাকা কোর্টের বর্তমান সময়ের একজন 'জাদঁরেল' আইনজীবী। যুবরাজের মামলা পরিচালনার সুবাদে তাঁর ভাগ্যাকাশে সূর্যদেবতা বেশ হাস্যেজ্জ্বল। তার নামে পাঠানো ক্ষুদেবার্তায় লেখা হয়েছে-



''You are invited to join lawyer gathering victory of Dhaka bar Election before 3.15 pm, Engineer's Institute, Dhaka today including senior lawyer of BNP requested to present, Chairperson of BNP Begum khaleda Zia will present and addresse the meeting.

As Regards

Adv. Sanaullah Miah"




স্রষ্টার অশেষ রহমত যে, ন্যূনতম ইংরেজি জ্ঞান আছে বলে এই ক্ষুদেবার্তার মর্মোদ্ধার আমি করতে পেরেছি। তবে যথাযথভাবে অর্থ বোঝার জন্য সম্ভবত আমাকে নতুন করে ইংরেজি শিখতে হবে এই 'খ্যাতনামা' আইনজীবীর কাছে।



আইনজীবীদের নামের আগে 'বিজ্ঞ' বলা হয়। তাদের জানাশোনার পরিধি হতে হয় অনেক বেশি। বলা হয়ে থাকে, আইনজীবীদের সারা জীবন অতিবাহিত হয় পড়াশুনার মধ্য নিয়ে; পেশার বয়স যতই হোক না কেন, একজন আইনজীবী সব সময় 'প্র্যাকটিস' করেন। কেবল মৃত্যুর পরেই তার জ্ঞানার্জনের সমাপ্তি ঘটে। এমন একটি মহান পেশায় যারা যুক্ত হবেন, তাদের ন্যূনতম মান (স্ট্যান্ডার্ড) থাকা উচিৎ। বার কাউন্সিলের সংস্কার প্রয়োজন। নতুন নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করা উচিৎ। সেসবের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা উচিৎ। নচেৎ ছ্যাঁচরা আইনজীবীদের ধাক্কায় পরিশ্রমী নিষ্ঠাবান আইনজীবীরাও সমাজের কাছে অমূল্যায়িত থেকে যাবেন, যথাযথ মর্যাদা পাবেন না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.