![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর মানুষ
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বৃহস্পতিবার দুপুর ১:৩৩ ৩৫, প্লামরোজ রোড, টরন্টো
অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে টেনশানে আছি। বিস্তারিত লেখার সময় নেই। ঘন্টাখানেক আগে এতদসংক্রান্ত ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসটা হুবুহু তুলে দিলাম।
কানাডা এসেছি বেশ কিছুদিন হয়ে গেল! সব পরিমাপেই নিজের দেশ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা দেশ! স্বাভাবিকভাবেই সব কিছু বুঝে উঠতে একটু সময় লাগছে! অনেক কথা, অনেক গল্পও জমে আছে। সেগুলো লিখব সামনের দিনগুলোতে। তবে আমার বেশিরভাগ সময় কাটে এটা আবিষ্কার করে যে, কেন এই দেশটি এতটা উন্নতি করেছে, আর আমরা কেন পারছি না!
এবারে একটা ঘটনা বলি। গতকাল একজন ক্লায়েন্টের সাথে কোর্টে যেতে হয়েছিল। (এটাই আমার প্রথম কোর্টে যাওয়া)। ক্লায়েন্টের মামলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস হলো তিনি ৬ বছর আগে বিয়ে করেছেন। আইনি জটিলতার কারণে স্ত্রীকে কানাডা আনতে পেরেছেন এই বছর। ছ'মাস এক ছাদের নিচে থাকার পরই স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মামলা করে দিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেছেন। ক্লায়েন্টের ভাষায়, 'বউয়ের পাখা গজাইছে! এই মাইয়ার পিছনে আমি ষাট-সত্তর লক্ষ টাকা খরচ করছি। আর এখন সে আমারে ডিভোর্স দিয়ে সব সম্পত্তির ভাগ চায়!'
কোর্টে যাবার কারণ হলো এখানে খুবই সুন্দর একটা প্রোগ্রাম আছে। ম্যান্ডেটরি ইনফরমেশন প্রোগ্রাম-- যেখানে ক্লায়েন্টদের পুরো কোর্ট প্রোসেসিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। এমনকি লয়ার সার্ভিস দিতে অবহেলা করলে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে, তাও জানানো হয়। তবে প্রােগ্রামটির আসল উদ্দেশ্য ক্লায়েন্টদের বুঝানো যে, তোমরা আর যাই করো, মামলা চালিয়ে নেয়ার মত বোকামি করো না। কারণ এটা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো নেগোসিয়েশন, মেডিয়েশন বা আর্বিট্রেশনের মাধ্যমে দুইপক্ষের সমঝোতায় পৌঁছানো। এর সুবিধাও অনেক। দ্রুত সমস্যা সমাধান, খরচও কম, সম্পর্কের তিক্ততাও বাড়বে না। শুধু তাই নয়, নাম্বারসহ ঠিকানা দেয়া হলো যাতে তারা প্রাইভেট লয়ার না ধরে কিছু এনজিওর ফ্রি সার্ভিস নিতে পারে।
আর হ্যাঁ, এই প্রোগ্রামটির আয়োজক আদালত নিজেই এবং সব ক্লায়েন্টদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।
আমার মনটা এক পর্যায়ে ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। আমাদের আদালত-ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে! আমাদের ঢাকা কোর্টের বিভীষিকাময় চিত্রটা বারংবার আঘাত করছিল মনকে!
যাই হোক, লেখাটি শেষ করব আমার শ্রদ্ধেয় স্যারের একটা মন্তব্য দিয়ে। ক্লায়েন্টের মামলা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে স্যার বললেন, "কানাডার আইন-আদালত সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয় শিশুদের, তারপর নারীদের, তারপর পশুপাখির, তারপর পুরুষদের।"
©somewhere in net ltd.