![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মারিজুয়ানা (Marijuana) কি?
মারিজুয়ানা এক ধরণের শণ জাতীয় উদ্ভিদ বিশেষ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Cannabis indica. সবুজ, বাদামী, অথবা ধূসর বর্ণের শুকনো পাতা, কাণ্ড, বীজ ও ফুল ইত্যাদি মারিজুয়ানা হিসাবে বহুল ব্যাবহার হয়ে থাকে। এর বিভিন্ন নাম আছে। স্থানীয় ভাবে এটি “গাঁজা” নামে বহুল পরিচিত। তাছাড়া অন্যান্য স্থানীয় নামের মধ্যে আছে গঞ্জিকা,গাঞ্জা, সিদ্ধি, শুকনা, ভাং, স্টিক, Somango প্রভৃতি অনেক নাম বিদ্যমান। বহির বিশ্বে একে ক্যানাবিস(cannabis) , উয়িড(weed), হেম্প প্রিপারেশন(hemp preparetion), মারিহুয়ানা নামে পরিচিত। গাছের পাতা বা ডালের আঠালো কষ দিয়ে তৈরি এ অঞ্চলের চরস নামের জিনিসটিই পশ্চিমা দেশের হাশিশ। মারিজুয়ানা সাধারণত psychoactive recreational drug ( যা মন ও ভাবের পরিবর্তন করে আত্মার শান্তি লাভ বা বিনোদন তৈরি করে) হিসাবে ব্যাবহার হয়, এছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞান, আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। কম মূল্য এবং সহজলভ্যতা নিম্ন আয়ের নেশাখোরদের মাঝে এর আগ্রাসনে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। এর ক্ষতিকর দিক ও আসক্তির কারণে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে গাঁজা নিষিদ্ধ করা হয়।
ক্যামিকেল উপাদানঃ
Tetrahydrocannabinol(THC), cannabidiol(CBD), cannabinol(CBN), tetrahydrocannabivarin(THCV), cannabigerol(CBG).
গাঁজা গাছের নির্জাসই মূলত নেশার বস্তু হিসেবে কার্যকর যার নাম ক্যানাবিনল। ক্যানাবিডিয়ল এবং ক্যানাবিনলিক এসিড ও এর কার্যকর উপাদান।
কিভাবে কাজ করে(M/A):
মারিজুয়ানা বা গাঁজার প্রধান উপাদান হল THC(delta-9-tetrahydrocannabinol) যা একটি psychoactive ingredient। পাতা ও ফুলে সবচেয়ে বেশি মাত্রার THC পাওয়া যায়। যখন এটি ধূমপানের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, THC দ্রুত ফুসফুসের মাধ্যমে রক্তস্রোতে পৌঁছে, যা রক্তের মধ্য দিয়ে ব্রেয়েন(brain) ও দেহের সর্বত্র সঞ্চালিত করে। ব্রেয়েনে ক্যানাবিনয়েড রিসেপ্টর (CB receptors) উপস্থিত থাকে, যা THC এর সাথে bind (কাজ) করে। এভাবে গাঁজা নার্ভাস সিস্টামের উপর কাজ করে, ফলে euphoria (একটি বড় সুখ অনুভূতি বা আত্মতৃপ্তি) সৃষ্টি হয়, যা অনেক গাঁজা সেবনকারীর মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।
আর একটি ব্যাপার প্রচলিত আছে, যেমন কঙ্কালসার দেহের জন্য অধিকাংশ সময় গাঁজাকে দায়ী করা হয়। গাঁজা যখন ধূমপানের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, এটি দ্রুত ফুসফুসের মাধ্যমে রক্তস্রোতে পৌঁছে, যা রক্তের মধ্য দিয়ে ব্রেয়েন(brain) ও দেহের সর্বত্র সঞ্চালিত করে। ফলে মাংসপেশির অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয় সংকোচন বা হালকা কাঁপুনি অনুভূত হয়, এর ফলে কোষ (cell) তার স্বাভাবিক adaptability ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। মানে কোষ গুলো তার স্বাভাবিক অবস্থায় আর ফিরে আসে না। তখন কোষ গুলো আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যায় অথবা মারা যায়। এর ফলসরূপ মানবদেহের ফিজিক্যাল গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন দেখা দেয় বা কঙ্কালসার রূপ নেয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে গাঁজার ভূমিকাঃ
গাঁজা ১৯৪২ সাল পর্যন্ত US Pharmacopoeia ( ওষুধের গাইড লাইন ) তে ছিল। অধিক আসক্তি ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারণে অ্যামেরিকা গাঁজাকে নিষিদ্ধ করে। সাধারণত ৮ টি মেডিক্যাল কন্ডিশনে আমরা ক্যানাবিস বা মারিজুয়ানা ব্যাবহার করতে পারি। যেমন-
o ক্যানসার
o গ্লুকোমা
o এইচ আই ভি/ এইডস
o মাসেল স্পাজম (বেদনাদায়ক অনৈচ্ছিক পেশীর সংকোচন )
o সিজার( হঠাৎ মাংস পেশীর সংকোচন বা খিঁচুনি )
o তীব্র বেদনা নাশক ( মূলত নিউরোপ্যাথিক পেইন, হাই লেবার পেইন, rheumatism-গিঁটে বাত ইত্যাদি )
o তীব্র বমি-বমি ভাব(Nausea )
o হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
এছাড়া ক্ষুধা বর্ধক হিসাবেও কাজ করে, সর্বশেষ একদল গবেষক ও বিজ্ঞানী দবি করেছে, গাঁজা ব্যাবহার করে ইবোলা প্রতিহত করা সম্ভব। তরা জানান, গাঁজার মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ ইবোলা প্রতিরোধ কারি উপাদান রয়েছে।
বর্তমানে গাঁজা শব্দটি নেশাখোরদের মাঝে নেশার বস্তু, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের কাছে এটি ট্যাবু(taboo) , এক কথায় নিষিদ্ধ। কিন্তু আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ও আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ভাং ও গঞ্জিকা সেবনে ফুসফুসের ক্ষতি তামাক পাতায় প্রস্তুত সিগারেট পানের চেয়ে কম ।
তাই বলে তামাক ছেড়ে গাঁজা ধরারা কথা বলা হয়নি। এটি যদি সঠিক ব্যাবহার করতে পারি, তাহলে শিগগিরই গাঁজা ও মারিজুয়ানার নির্যাস থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ প্রস্তুত সম্ভব।
গাঁজার ক্ষতিকর প্রভাবঃ
গাঁজা বা মারিজুয়ানা সেবনের পর যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়,তাহলো—চোক্ষু লাল, দৃষ্টিভ্রম, বাচালতা, মাংসপেশির অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয় সংকোচন, দিকভ্রান্ত হওয়া, মাথা ঘুরা, ক্ষুধা লাগা, গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে যাওয়া, সময়-জ্ঞান হারানো থেকে শুরু করে প্রলাপ বকা, বিকার আসা এমনকি মানুষকে হত্যাকরার ইচ্ছাও জাগ্রত হতে পারে।
মাত্রা বেশী হয়ে গেলে অনেক সময় হাত পা এর নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরা এবং অবশ হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে যাওয়া থেকে শ্বাস কষ্ট হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
নিয়মিত এবং বেশী মাত্রায় গাঁজা জাতীয় দ্রব্য সেবনে গাঁজা সাইকোসিস (Ganja-psychosis) নামে একধরনের লক্ষণ হয়। এতে চোখে রক্তজমে চোখ লাল হয়ে যায়, ক্ষুধামন্দা, নির্জীবতা, শরীরের মাংস-পেশী শুকিয়ে যাওয়া, অত্যধিক দুর্বলতা, হাত-পা অনবরত কাপতে থাকা, পুরুষত্বহীনতা থেকে শুরু করে পুরোপুরি মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
রানিং এমোক (Running amok) নামক আরেক ধরণের মানসিক বিপর্যয় ও গাঁজা সেবীদের পরিণতি হয়ে আসতে পারে । যা মানুষকে hallucinate (মতিভ্রম) করে রাখে, ফলে সামাজিক জীবনে বিপর্যায় ডেকে আনে।
শেষ কথাঃ
গাঁজা প্রাচীন কাল থাকে নেশার বস্তু হিসাবে ব্যাবহার হচ্ছে, লালন সাঁইয়ের মাযার থাকে শুরু করে ঢাকার অলিগলিতে এর বিশাল সমাহার, বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষিত যুব সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে এর বিষ বাষ্প। অনেকে গ্রহণ করছে আধুনিকতার মাধ্যম হিসাবে, অনেকে আবার ডিপ্রেশন দূর করার জন্য। কিন্ত দেখা যায়, গাঁজায় ডিপ্রেশন এবং দুশ্চিন্তা কমার চাইতে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
বেশি গাঁজা খেলে যে মনোযোগ কমে তা পরীক্ষিত সত্য। ফলে পড়াশোনা কাজকর্মে ব্যাঘাত হয়। হতাশা আসে। যা থেকে মানুষ আরও নেশার জালে জড়িয়ে পড়েন।
শেষ কথায়, গাঁজাকে বিনোদনের মাধ্যম হিসাবে না দেখে, মেডিসিন (ওষুধ) হিসাবে ভাবতে পারলে। গাঁজার নেশা অন্তত হতাশায় রূপান্তরিত হবে না, এটুকু আশা করা যেতে পারে...।
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২০
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আমি আপনের সাথে একমত .........।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭
তাসজিদ বলেছেন: ভাইরে, চারিদিকে ত গাজাখোরদের জয় জয়কার।
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১১
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: হাঁ হাঁ হাঁ ...।
ভাইরে, এই জয় হচ্ছে স্বল্প আয়ুর জয়, বুঝতে পারার আগে বাতাসে মিলিয়ে যায়...।
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫২
অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম মারিজুয়ানা কে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৫
ফা হিম বলেছেন: ও, মারিজুয়ানাই তাহলে গাজা, জানা ছিল না। আমাদের আসে পাশের গাছপালা থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ প্রস্তুত করা সম্ভব। সমস্যা হল এ নিয়ে গবেষণা খুবই অপ্রতুল। কিন্তু চাইলেই এটি দিয়ে একটা ইন্ডাস্ট্রি খুলে ফেলা সম্ভব।