![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্টার জলসা নিয়ে এর আগে অনেক লেখা-লিখি হয়েছে, এমনকি টকশো, নিউজ মিডিয়া গুলোর লাফালাফির কমতি ছিল না। যদিও কিছু থেকে কিছুই হয় নি; বরং মানুষের মুখে কিছু মুখরোচক গল্প এবং কেচ্ছায় রূপ নিয়ে এক সময় ঠান্ডা হয়ে গেছে। অবশ্য ঈদের সাথে এর জোয়ার বেশি লক্ষণীয়, তার সুনির্দিষ্ট একটি কারণও আছে বটে, সেটা না হয় পরে বলছি...
এইবার আসি স্টার জলসা নিয়ে আমার এত উৎসাহের কারণ কোথায়? বেশ কিছুদিন যাবত আমি স্টার জলসার কিছু টিভি সিরিয়াল দেখছি, তাই এই প্রসঙ্গের উপর একটি ব্লগ লেখার প্রয়োজন বোধ করছি। এর আগেও দেখেছি, তবে তা দেখতে বাধ্য হয়েছি বলা যেতে পারে।
সিরিয়াল গুলোর একটি বিশেষ দিক হচ্ছে এগুলো ফ্যামিলি পটভূমির উপর তৈরি। একটি ফ্যামিলি মূলত কিছু ভাল খারাপ মানুষের সমন্বয় তৈরি হয়। এর ভিতর ভাঙ্গা-গড়া, হাসি-আনন্দ সবকিছু মিলিয়ে একটি শুভ সমাপ্তি তে রূপ দেওয়া হয়। স্টার জলসা কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে যে, তারা সিরিয়াল গুলোর মধ্য দিয়ে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি একটি নৈতিক শিক্ষা প্রত্যেক পরিবারে পৌঁছে দেয়।
তাহলে প্রবলেম কোথায়? স্টার জলসা, স্টার প্লাসের প্রভাব আমাদের দেশে মারাত্মক! বিশেষ করে মহিলা সমাজে, মানে আমাদের মা-বোনদের উপর। সিরিয়ালের ঘটনা গুলোকে এমন ভাবে সাজানো হয়, যাতে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চলে যায় তবুও সিরিয়াল আর শেষ হয় না। যেমন একটি পর্বে একটি সমস্যা তৈরি করে,পরে সেটাকে সমাধান করতে আরও তিন-চার পর্ব সময় নেয়। আর এভাবে এগোতে থাকে পর্বের পর পর্ব। আর আমাদের দেশের একদল উৎসুক নারীরা বছরের পর বছর অপেক্ষা করে হ্যাপি এন্ডিং দেখার জন্য। এদের কথা আর কি বলবো, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাপুর টুপুর নামের সিরিয়ালটি নাকি কখনই মিস করতেন না। যদিও বা মিস করে ফেলতেন, তাহলে পুরনপ্রচার দেখতেন অথবা অনলাইনের সাহায্য নিতেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী স্টার জলসার সিরিয়াল দেখেন কি না, তা আমার জানা নেই। তবে উনারা এমনেতেই যেভাবে চুল ছেঁড়া ছেঁড়ি করেন, দেখলে কি হত!!? আল্লাহ্ই ভাল জানেন...
একটা সময় ছিল যখন মায়েরা সন্ধ্যার পর পরই বসে যেত সন্তানের শিক্ষার জন্য। কিন্তু এক্ষণকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সন্তানকে কোনোরকম পড়তে বলে, নিজে বসে যায় স্টার জলসায়। ফলে ছেলে মেয়েদের এক কথায় সুবিধাই হয় কেউ ফেইসবুকে চ্যাট করে, কেউ বা আবার ফোনে খোশ গল্প শুরু করে , আর না হলে মায়ের সাথে স্টার জলসায় মেতে উঠে। পড়া নিয়ে ত আর টেনশন নেই, ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং এন্ড রেজাল্ট এ+ ।
যদি স্টার জলসা কর্তৃপক্ষের কথাও বিশ্বাস করি, তাহলে অন্তত একটি সান্ত্বনা পাওয়া যেত। কিন্তু মানুষ হিসাবে আমরা খারাপ জিনিসটা বেঁছে নিতেই বেশি পছন্দ করি। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ একই জিনিস যখন বারবার দ্যাখে, তখন তা তার স্মৃতিতে থেকে যায় এবং এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবে ওই জিনিস গুলোর সাথে নিজেকে মিলাতে শুরু করে। সাধারণত স্টার জলসার সিরিয়াল গুলো সপ্তাহে ছয় দিন দেখানো হয়। ফলে একই সিরিয়াল বারবার দেখতে দেখতে নিজেকে এবং চারপাশের পরিবেশকে পছন্দের সিরিয়ালের সাথে ভাবতে শুরু করে। আর প্রবলেম টা এখান থেকেই শুরু হয়। যেমন এর কথা ওর কানে লাগানো, কুটনামী, বৃদ্ধ শাশুড়িকে শত্রু মনে করা,এমনকি পছন্দের নায়ক নায়িকার স্টাইল থেকে শুরু করে কোন পোশাক পরল ইত্যাদি অনুসরণ করে। মোট কথা লাইফটা এক জায়গাতে আবদ্ধ রেখে, লাইফটা কে কমপ্লিকেটেড করে ফ্যালে। যার ফলে ফ্যামিলিতে শান্তির থেকে অশান্তির ছোঁয়াই বেশি লাগে।
গত ঈদের কিছু ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে-
1. বাগেরহাটে ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ সিরিয়ালের পাখি ড্রেস কিনে না দেওয়ায় স্বামীকে তালাক স্ত্রীর।
2. পাখি ড্রেস কিনে না দেওয়ায় অভিমান করে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর আত্মহত্যা।
3. যশোরে ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর লঙ্কাকাণ্ড।
ঈদ আসলেই ভারতীয় ফিল্ম সিরিয়ালের অনুকরণে তৈরি পোশাকে বড়ে যায় বাংলাদেশী বিপণী বিতান গুলো। যেমন মাজাক কালী, পাগলু এবং গত ঈদের আলোড়ন সৃষ্টি কারি পাখি ড্রেস। মজার ব্যাপার হল, আমাদের বোকাস ভোঁ দেখিয়ে, কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় চ্যানেল ও পোশাক প্রস্তুতকারী কোম্পানি। আগামী ঈদে কি চমক থাকবে, কতজন মানুষ মারা যাবে, কার সংসার ভাঙ্গবে? তা এখনও আমাদের অজানা...
বিভিন্ন মহল থেকে স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা মত এই চ্যানেল গুলো বন্ধের জোর দাবী উঠলেও, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে তথ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে গেছে। শিশুদের ক্ষতির কথা ভেবে ডরিমন বন্ধ করা হয়েছিল। তবে স্টার জলসা কেন বন্ধ করা হচ্ছে না, এটা কি পরোক্ষ ভাবে শিশু তথা জাতির ক্ষতির কারণ হচ্ছে না...?
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩১
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: শুনে খুশি হলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২১
জুলহাস খান বলেছেন: ধন্যবাদ। সময় উপযোগী একটি লেখা।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: ...ধন্যবাদ!
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২১
জেকলেট বলেছেন: ভাইরে অরন্যে রোধন।
ঐ দিন পরিচিত একজনকে ফোনে জিগাইলাম কি করেন বল্লেন নাটক দেখি। আমি তো আশ্চর্য এই যামানায় কেউ নাটক দেখে?? জিগাইলাম কোন চ্যানেলে কি নাটক??? উনার উত্তর "বোঝেনা সে বোঝেনা" আমি তো হতভম্ব আমি আবার কি বোঝিনা???
উনারে বল্লে উত্তর আসলেই তোমি কিছু বোঝনা। এইটা একটা ইন্ডিয়ান বাংলা নাটক!!! আমি কইলাম ওহ ইন্ডিয়ান সিরয়াল??? উনি মনে হয় মাইন্ড করলেন। একটু রেগে গিয়ে বললেন হা ইন্ডিয়ান সিরয়াল।
ভাইরে এখন সিরয়াল নাটক হয়ে গেছে।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৭
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: হা হা হা... মজা পাইলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯
মোঃ সাবিকুল ইসলাম (হৃদয়) বলেছেন: অসাধারণ লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৮
মোহাম্মাদ শফিক বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৮
মিতাহামিদা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক অনেক! এমন একটি লিখার প্রয়োজন ছিল! তবে দেরীতে হলেও পেয়েছি! যারা ব্লগ পড়েন তারাউপকৃত হবেন আশা করি!