নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজে না বদলালে বদলাবেনা কিছুই

গোলাম রাব্বানী (মুক্তির সৈনিক)

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ। মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি। মানুষের পাশে উপকারে নিজেকে নিবেদিত রাখতে চাই সবসময়। আমি পরিবর্তনে বিশ্বাসী। সুন্দর একটি দুনিয়া দেখতে চাই, যেখানে ধর্ম বর্ণ দেশ বা সংস্কৃতি নিয়ে হানাহানি হবে না। মানবতাই হবে মুখ্য। চাই দুর্নীতি মুক্ত একটি সমাজ। আর এই লক্ষে মানুষের জন্য কিছু করার প্রয়াস নিয়ে সামনে যাবার চেষ্টা করছি।

গোলাম রাব্বানী (মুক্তির সৈনিক) › বিস্তারিত পোস্টঃ

অরিত্রীর আত্মহত্যা এবং শিক্ষিকা গ্রেপ্তার !!!

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০৯

এর থেকে জঘন্য কি আর হতে পারে??
শিক্ষিকা তার দায়িত্ব পালনের জন্য গ্রেপ্তার!!!

ভেবেছিলাম কিছু লিখব না। কিন্তু ঘুমাতে পারছিনা। অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষিকা গ্রেপ্তারের বিষয়টা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। স্রোতে গা ভাসাতে না পারার জন্য দুঃখিত।

##
শিক্ষিকার দিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তোলার আগে প্রশ্ন করুন নিজের বিবেককে...

১. আত্মহত্যার জন্য কারণ হিসাবে এইটা কতটুকু যৌক্তিক?

২. শিক্ষিকার কারণেই কি সে আত্মহত্যা করেছে? শিক্ষিকা কি অনৈতিক কিছু করেছেন? আত্মহত্যার প্ররোচনার মত কি আসলেই কিছু ছিল?

৩. আপনার মতে শিক্ষিকা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনার কাছে যথার্থ মনে হতো। বা আপনি শিক্ষিকার জায়গায় হলে কি করতেন?

৪. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন কারণে-
তার বাবা মাকে অপমান করা হয়েছিল সে কারণে?
নাকি বাবা মার ভয়ে?
নাকি সে নিজে, "এই মুখ কিভাবে দেখাব" এর মতো ভাবনা থেকে?

৫. যদি অরিত্রী আত্মহত্যা না করতো, তবে কি এখন যারা এটাকে সমর্থন করছেন তখনও করতেন? বা যে ভাবে ভাবছেন, সেভাবেই ভাবতেন?

৬. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন ভাবে কি সমর্থন যোগ্য?

৭. অরিত্রীর আত্মহত্যাকে সমর্থনের পরিণাম বা ভবিষ্যৎটা কি হতে পারে?


##
অরিত্রীর আত্মহত্যায় আমার সহানুভূতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন। তাদের জন্য বলে রাখা দরকার, কোন ভাবেই চাই না এভাবে কোন প্রাণ ঝরে যাক।
তার মানে এটাও না যে, তার আত্মহত্যা অন্য একটি অন্যায় কাজকে সমর্থন করার অনুমতি দিয়েছে।

অরিত্রীর আত্মহত্যা যদি শুধুমাত্র এই ঘটনাকেই কেন্দ্র করে হয়ে থাকে, তবে আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি,
যদি মেয়েটার সাথে অন্তত একটা দিন তার মা বা অন্য কেউ পাশে থাকতেন, তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা হতো না।
কারণ মানুষ হয় দীর্ঘদিনের হতাশা, কষ্ট, যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে আত্মহত্যা করে;
নাহয় কোন আকস্মিক ঘটনার আকস্মিকতায় সাময়িক ভাবে কোন পথ খুঁজে পায় না, মানসিক ভাবে অতি আবেগপ্রবণ এবং হয়ে একটা ঘোরের মধ্যে থাকে। আবেগ, মানসিক অস্থিরতা এবং অনেক বেশি জেদ কাজ করে, ঠিক সেই মুহূর্তে এরকম একটি দুর্ঘটনার জন্ম হয়।
সেই মুহূর্তটা কেটে গেলে, একটু শান্ত করতে পারলে আর এরকম আত্মহত্যা হয়না।


##
একবার চিন্তা করে দেখেছেন কি-

১. এরকম একটা ঘটনা ঘটার পর অরিত্রীর পরিবারের এর কি উচিত ছিলনা, যে কারো এক জনের অরিত্রীর সঙ্গে থাকা? কেন থাকলো না?

২. কেনো এরকম একটা ঘটনার পর, একা রুমে যেতে দিলেন তার বাবা মা?

আপনার কি কোন ভাবে মনে হয় না, অরিত্রীর আত্মহত্যার প্রথম দায়ভার তার পরিবারের! (যদি অরিত্রীর ছাড়া অন্য কাউকে এর দায়ভার দিতেই চান কেবল সে ক্ষেত্রে)।


##
এখন অনেকেই বলতে পারেন ব্যবস্থাপনা ঠিক নাই, শিক্ষা বাণিজ্যের কথা।

ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তাদের সবার বিচার হওয়া দরকার, ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন দরকার। সেক্ষেত্রে এই ৩ জন শিক্ষক আলাদা ভাবে দায়ী হতে পারে না, কোন ভাবেই না। অনন্যা অন্যায়ের বিচার তার আপন গতিতেই সেই বিষয়ের উপর নির্ভর করেই হবে।

১. অরিত্রী কি জানতো না, পরীক্ষার সময় মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ। অথবা ধরা পরলে তার পরিণাম সম্পর্কে?

২. অনেকেই বলছে মোবাইলে যা পাওয়া গেছে সেগুলা আসে নাই। তখন আসলে কিছু বলার থাকে না। তার মানে শুধু মাত্র সেগুলা আসলেই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা সমর্থন যোগ্য হতো?


অরিত্রীর বাবা মার সাথে শিক্ষিকার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, তার বিচার স্বাভাবিক ভাবে যেটা হবার সেটা হবে। সেটার সাথে অরিত্রীর আত্মহত্যার ব্যাপারটা গুলিয়ে বিচার করাটা অনেক অযৌক্তিক বলেই মনে করি। বরখাস্ত করে তদন্ত করা পর্যন্ত ঠিক ছিল। এখানে আদালত, পুলিশ আসবে কেন? এখানে কি দুর্নীতি হয়েছে? এখানে কি অনৈতিক কিছু হয়েছে?

অরিত্রীর বাবা মা এর জায়গায় নিজেদের ভাবছেন, বসাতে বলছেন। কিন্তু কেউ কি শিক্ষিকার জায়গায় নিজেদের বসিয়েছেন।

শিক্ষকদের আচরণ নিয়ে শুধু কথা বললে হবে না, এখানে অভিভাবক, শিক্ষার্থী সবার আচরণ নিয়েই কথা বলা উচিত। আমরা এখন প্রত্যেকেই প্রত্যেককে অনেক বড় মনে করি। আর বিপত্তি সেখানেই। বাবা মা হিসাবেই কতজন আছেন, এখনকার বাচ্চাদের উপরে নিয়ন্ত্রনে সক্ষম?


##
সমস্যার মূল নিয়ে ভাবিনা। শুধু স্রোতে গা ভাসিয়েই চলেছি। এর কারণেই আমাদের নতুন কোন ইস্যু আসলে পুরাতন গুলো সহজেই হারিয়ে যায়।

শিক্ষিকাদের আমরা শিক্ষিত মানুষেরাই এত নোংরা ভাষায় গালি দিচ্ছি, এত বাজে কথা বলছি যা মুখে নেবার মতন না। আবার নিজেদের শিক্ষিত দাবি করছি। আসলে যে দেশে এরকম ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষিকার হাতে হাতকরা পরে, সে দেশে আমাদের মতো গালিবাজ জন্ম নেবে সেটাই স্বাভাবিক।

সব থেকে যে বিষয়টা দুঃখজনক এবং হতাশার সেটা হল, আমরা শিক্ষকদের শাসন এবং দায়িত্ব কর্তব্য পালনের অধিকার হনন করছি, সেই সাথে শিক্ষার্থীদের আহ্লাদের সাথে অন্যায় করার অনুমতি দেবার পাশাপাশি অভয়ও দিচ্ছি!!


##
একটা ঘটনাকে আবেগ দিয়ে ভাবছেন তাতে আমার কোন সমস্যা নাই,
কিন্তু তাই বলে বিবেকটাকে ঘুমিয়ে রাখবেন!!!


যারা শিক্ষিকার ফাঁসি চাচ্ছেন, তাদের কাছে আমার শেষ প্রশ্ন-
আপনার সন্তান অপরাধ করলে, আপনি যখন শাসন করবেন,
তখন যদি সে আত্মহত্যা করে, তখন আপনি তার দায়ভার নিয়ে জেলে যেতে প্রস্তুত আছেন তো?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

আকিব হাসান জাভেদ বলেছেন: শিক্ষকদের আরো সচেতন হওয়া দরকার । আরো কৌশলী এবং সুশিক্ষিত ।

শিক্ষার্থী শুধু ছাএ বা ছাত্রী না সে একটা মেয়ে বা বোন । সেখানে শিক্ষার্থীর মেয়েকে যদি এই অত্যাচার করা হতো সে ক্ষেত্রে শিক্ষক কি করতেন ।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০

করুণাধারা বলেছেন: একটা ঘটনাকে আবেগ দিয়ে ভাবছেন তাতে আমার কোন সমস্যা নাই,
কিন্তু তাই বলে বিবেকটাকে ঘুমিয়ে রাখবেন!!!
মূল কথা এটাই- আবেগের স্রোতে বেশিরভাগের সমস্ত যৌক্তিক ভাবনা বিদায় নিয়েছে!!! তাই আপনার এই যুক্তিপূর্ণ লেখা টি খুবই ভালো লাগলো। আপনার প্রশ্নের জবাব দেবার আগে একটা বলি, অরিত্রির বাবা অভিযোগ করেছেন শিক্ষিকাদের অপমানজনক কথা সইতে না পেরে অরিত্রি আত্মহত্যা করেছে। এই কথার প্রমান কই? এমনও তো হতে পারে, অপমানিত হয়ে বাবা মা তাকে প্রচন্ড বকাঝকা করেছেন, যেটা খুবই স্বাভাবিক, তারপর সেই কারণে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। চিল কান নিয়েছে শুনেই সবাই চিলের পিছনে ছুটছে।

এবার আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে:

১) একেবারেই অযৌক্তিক। আমার মেয়ের ১০ বছর ভিকারুন্নেসায় পড়াকালীন সময়ে আমি নাইন- টেনের কয়েকটা মেয়েকে টিসি পেতে দেখেছি কয়েক রকম অভিযোগে। সেই মেয়েগুলো থমথমে মুখের মা বাবার সাথে মাথা নিচু করে টিসি হাতে স্কুল থেকে বের হয়ে গেছে; ধারণা করতে পারি অরিত্রির মা-বাবাকে যেমন অপমান করা হয়েছে, সেই মা-বাবাকেও তেমনি অপমান করা হয়েছিল। তাদের কেউ আত্মহত্যা করেনি, তাদের মা-বাবা ও মেয়েকে একা ঘরে ফিরতে দেয় নি!

২) ভিকারুন্নেসা স্কুলে ভর্তির সময়, এবং তারপর প্রতি বছরের শুরুতে স্কুলের নিয়ম কানুন সম্পর্কিত একটা ছাপানো কাগজ প্রতি ছাত্রীকে দেয়া হয়, যেখানে বলাই আছে মোবাইল নিষিদ্ধ, মোবাইল পাওয়া গেলে প্রথমে ওয়ার্নিং দেয়া ও দ্বিতীয় বার বহিষ্কার করা হবে। একটা ছাত্রী যদি নিয়ম ভঙ্গ করে, তখন যা করা দায়িত্ব শিক্ষিকা তাই করেছেন। দায়িত্ব পালন করাটাই আত্মহত্যায় প্ররোচনা?

৩) শিক্ষিকা তার জায়গা থেকে একেবারে ঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

৪)  আত্মহত্যার কারণ হিসেবে আপনি যে তিনটির উল্লেখ করেছেন, আমার মনে হয় তার শেষ দুটিই প্রধান কারণ।

৫) অরিত্রি আত্মহত্যা করায় আবেগ আর সহানুভূতিতে ভেসে গিয়ে তারা এখন এভাবে ভাবছেন, যদি আত্মহত্যা না করত তারা ঠিক বিপরীত ভাবনা ভাবতেন। খোঁজ নিয়ে দেখুন, এভাবে কতজনকে টিসি দেয়া হয়েছে; তখন কেউ আবেগে ভাসেননি, কারণ কেউ আত্মহত্যা করেনি সেসব ক্ষেত্রে।

৬) না, কেউ তা সমর্থন করছেও না।

৭ এই আত্মহত্যা সমর্থনের পরিণাম ভবিষ্যতে এই হবে, অপরিণতবয়সী অনেকেই তাকে অনুসরণ করবে। কারন তারা দেখছে, এভাবে আত্মহত্যা করলে বেশ পরিচিতি পাওয়া যায়!! 

আপনার পোস্টে উল্লিখিত সব কথাই খুবই যৌক্তিক এবং সুবিবেচনাপ্রসূত, অকারণ আবেগবিহীন। আরো আলোচনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সময়ের অভাব। আমি গতকাল একটি পোস্ট দিয়েছিলাম পড়ে দেখবার অনুরোধ:
দায়

পড়তে পারেন এটাও:

শ।মশীর

৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৩

শায়মা বলেছেন: এরপর মনে হয় স্কুলে মোবাইল এলাউ করে দিতে হবে। ক্লাসরুম এবং পরীক্ষার হলেও। 8-|

আমাদের স্কুল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। এই স্কুলকে আমি দারুণ ভালোবাসি। আমার ধারণা আমাদের চাইতে বেশি কেউ স্টুডেন্টদেরকে এত কেয়ার করতে পারবেনা। আমাদের স্কুলেও মোবাইল আনা আলাউড না। শুধু ক্লাস ইলেভেন এবং টুয়েল্ভএর স্টুডেন্টরা মোবাইল আনতে পারে। তার আগে না। তবুও অনেকেই এনে ফেলে। এটাই স্বাভাবিক।

আমাদের পূর্বপুরুষ বা আমাদের কথা ভেবে দেখি যদি তো দেখতে পাই স্কুল পালানো অপরাধ ছিলো। সিগারেট খাওয়া বা গল্পের বই আনাও হয়তো। সেসব রুলস থাকার পরেও তারা কিন্তু সেসব অনেকেই করতো। মার খেত, বকা খেতো। প্যারেন্টসদেরও অত্যাচার চলতো। রিতীমত অমানবিক ব্যাপার স্যাপার। যা চাইল্ড সাইকোলজীতে একেবারেই নিষিদ্ধ আজকাল।

গবেষনায় দেখা গেছে এমন অবান্তর অত্যাচারের কোনো মানেই নেই যা মোটেও ফলপ্রসু না বরং বুঝিয়ে বলা ও বুঝাতে পারানো একটি রুলের সুফল কুফল বা নিয়ম মানার অভ্যাসটাই আসল। এর দায়িত্ব প্রথমত পরিবার নামক বিদ্যালয়ের। তারপর স্কুল। কিন্তু প্রায়শই পরিবার যেখানে ব্যার্থ হয়, তখন স্কুল তা শেখায় এরপর সমাজ থেকেও মানুষ অনেক কিছুই শেখে।

এই জন্য প্রয়োজন, প্যারেন্টস এবং টিচারের কো অপারেশন। একটা বাচ্চার ভালোর জন্য, তাকে কিছু শেখানোর জন্য দু'পক্ষের সহযোগীতার প্রয়োজন। মোবাইল না নেওয়া একটা রুল। তা পরিবার শেখাবে এবং বাচ্চা সেটা মানছে কিনা তা লক্ষ্যও রাখবেন। এরপর স্কুল তা পেলে তা বাজেয়াপ্তও করবে তবে বাচ্চা বা প্যারেন্টসকে অপমান বা অভিযোগের সূরে নয়। শুধুই বুঝাতে হবে এটা রুল আর কেনো রুল আর কেনো তা করা যাবেনা সেটাই। মেজাজ গরম করে বা অপমান করে নিজেদেরকে সুপিরিওর ভেবে নয়। এখানে আসল স্বার্থ বাচ্চাটার। বাবা মা এবং টিচার দুপক্ষের মনোবৃত্তিই হবে শিশুর উন্নয়ন! তার মানসিক ও শাররিক সুস্থ্য বিকাশ।

এখানে কিছু গড়বড় হয়ে যায় বলেই কিছু স্কুল ও টিচারদের নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

অরিত্রীর ঘটনায় আমার বার বার মনে হচ্ছিলো এই বাচ্চাটা আর প্যারেন্টসের সাথে আসলে আমার কথা বলাই উচিৎ ছিলো তাহলে এমন ঘটনা হয়তো ঘটত না। আমি জানি এই কথা শুনে আমাকে অনেকেই ওভার কনফিডেন্ট ভাববে। তবে এও সত্যি আমার স্কুল আর আমার শিক্ষার বিষয় আমাকে এটাই শিখিয়েছে হাউ টু কনভিন্স আ চাইল্ড এন্ড প্যারেন্টস ইন পজিটিভ ওয়ে।
আমি আমার স্কুলের কাছে কৃতজ্ঞ এই কারণেই।

আমার স্কুলেও অনেক বাচ্চাই মোবাইল আনে। আমরা বাজেয়াপ্ত করি এবং প্যারেন্টকে ডাকিনা যদি না তারা একদম শিশু শ্রেনীর হয়। তারা বললেই শুধু প্যারেন্টস আসবে এবং তাদেরকে দেওয়া হবে উইদাউট এনি ব্যাড বিহেব। আমরা টিচার আর প্যারেন্ট সমপর্যায়ের রেসপেক্টের অধিকারী। তাই আমাদের বাচ্চারা বেড়ে উঠছে কমফোর্টেবল এনভায়রনমেন্টেই।

সমাজ, শিক্ষার স্থান এবং পরিবার সকলেরই দায়িত্ব আছে । গুরু দায়িত্ব আছে ....

৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

শায়মা বলেছেন: এবারে আসি প্রশ্নগুলোতে-

১. আত্মহত্যার জন্য কারণ হিসাবে এইটা কতটুকু যৌক্তিক?

উঃ ১%। সেটা শিক্ষিকার জন্য নয়। যেই রুল বা সিস্টেমের কারণে সে সেটা নিয়ে নিয়েছেন সেটার জন্য। তিনি রুল পালন করেছেন।

২. শিক্ষিকার কারণেই কি সে আত্মহত্যা করেছে? শিক্ষিকা কি অনৈতিক কিছু করেছেন? আত্মহত্যার প্ররোচনার মত কি আসলেই কিছু ছিল?
উঃ - না । না। না, তিনি রুল পালন করবেন এটা তার জবেরই একটা পার্ট।

৩. আপনার মতে শিক্ষিকা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনার কাছে যথার্থ মনে হতো। বা আপনি শিক্ষিকার জায়গায় হলে কি করতেন?

উঃ- মোবাইলটা দেখার পর, চুপচাপ দেখে এসে সেটা কর্তৃপক্ষকে জানানো যে সে মোবাইল ক্যারি করছে। যদি সে দেখতো কোন প্রশ্নের নকল করছে সেইটা কোট করে রাখা ও পরীক্ষা যেহেতু স্কুলের আন্ডারে তাই সেই উত্তরের মার্ক কেটে রাখা। পরীক্ষা বন্ধ করা নয় এবং কোনো ভাবেই পরীক্ষার মাঝে তাকে জানিয়ে দিয়ে তার মানসিক অবস্থার অবনতি নয়। পরীক্ষার পর তাকে জানানো সে রুল মানেনি এবং নেক্সট ডে তে ফোন আর যেন না আনে। এটা ফার্স্ট ভারবাল নোটিস হতে পারতো। তারপর প্যারেন্টস কল এবং তাদের সহযোগীতা চাওয়া যেন এইভাবে বাচ্চা রুল না মানার প্রাকটিস করে।

৪. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন কারণে-
তার বাবা মাকে অপমান করা হয়েছিল সে কারণে? - জানিনা তবে হতে পারে
নাকি বাবা মার ভয়ে? জানিনা তবে হতে পারে
নাকি সে নিজে, "এই মুখ কিভাবে দেখাব" এর মতো ভাবনা থেকে? হতে পারে... আবেগী প্যারেন্টরা এভাবেই বলেন আমি হলে আত্মহত্যা করতাম, তুই কেমনে এটা করলি?

৫. যদি অরিত্রী আত্মহত্যা না করতো, তবে কি এখন যারা এটাকে সমর্থন করছেন তখনও করতেন? বা যে ভাবে ভাবছেন, সেভাবেই ভাবতেন?
উঃ- হয়ত অনেকেই অনেক কিছু ভাবে আসলে না ভেবেই ভাবেন।

৬. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন ভাবে কি সমর্থন যোগ্য?
উঃ - না ।

৭. অরিত্রীর আত্মহত্যাকে সমর্থনের পরিণাম বা ভবিষ্যৎটা কি হতে পারে?
উঃ- ভীষন খারাপ
অন্যায় বা রুল ভাঙ্গার অধিকার পেতে শেখানো। ইমোশনাল ব্লাকমেইল করতে শেখানো। তবে সাথে টিচারদেরকেও আরও কিছু ভাবতে ও শিখতে হবে।



অরিত্রীর আত্মহত্যায় আমার সহানুভূতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন। তাদের জন্য বলে রাখা দরকার, কোন ভাবেই চাই না এভাবে কোন প্রাণ ঝরে যাক। তার মানে এটাও না যে, তার আত্মহত্যা অন্য একটি অন্যায় কাজকে সমর্থন করার অনুমতি দিয়েছে।
উঃ - ঠিক তাই। সহমত।

অরিত্রীর আত্মহত্যা যদি শুধুমাত্র এই ঘটনাকেই কেন্দ্র করে হয়ে থাকে, তবে আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি,
যদি মেয়েটার সাথে অন্তত একটা দিন তার মা বা অন্য কেউ পাশে থাকতেন, তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা হতো না।
কারণ মানুষ হয় দীর্ঘদিনের হতাশা, কষ্ট, যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে আত্মহত্যা করে;
উঃ- একদম সঠিক আমার মতেও। হুট করে কেউ জানেনা তাকে আত্মহত্যা করতে হবে।

নাহয় কোন আকস্মিক ঘটনার আকস্মিকতায় সাময়িক ভাবে কোন পথ খুঁজে পায় না, মানসিক ভাবে অতি আবেগপ্রবণ এবং হয়ে একটা ঘোরের মধ্যে থাকে। আবেগ, মানসিক অস্থিরতা এবং অনেক বেশি জেদ কাজ করে, ঠিক সেই মুহূর্তে এরকম একটি দুর্ঘটনার জন্ম হয়।
সেই মুহূর্তটা কেটে গেলে, একটু শান্ত করতে পারলে আর এরকম আত্মহত্যা হয়না।
উঃ- হ্যাঁ সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের মাঝেও এমন প্রবনতা থাকে। কি হবে ? কে কি বলবে? কেমনে সামলাবো? ভেবেই পায়না তারা। বাট ইচ এন্ড এভরী প্রবলেম হ্যাজ স্যলুশন.... শুধু ভেবে বের করতে হবে। আত্মহত্যা সেই পথ বন্ধ করে।



একবার চিন্তা করে দেখেছেন কি-

১. এরকম একটা ঘটনা ঘটার পর অরিত্রীর পরিবারের এর কি উচিত ছিলনা, যে কারো এক জনের অরিত্রীর সঙ্গে থাকা? কেন থাকলো না?

উঃ- কেনো থাকলো না এটা চিন্তা করে মনে হয়েছে তারাও বিরক্ত হয়েছিলেন। ভেবেছেন যা ইচ্ছা তাই করুক বেয়াদপ মেয়ে। মানে তারা নিজেরাই মনে হয়েছে মেয়েটাকে অন্যায়কারী মনে করিয়েছেন। এমন মনে হবার কারন আমাদের দেশের মা বাবারা এমন ঘটনায় এমনই করে থাকেন অজ্ঞতার কারণে বা অধিক ভালোবাসার অধিকারে।

২. কেনো এরকম একটা ঘটনার পর, একা রুমে যেতে দিলেন তার বাবা মা?
উঃ- তারাও বিরক্ত ছিলেন মনে হয়েছে। তার কাছে থাকেন নি।

আপনার কি কোন ভাবে মনে হয় না, অরিত্রীর আত্মহত্যার প্রথম দায়ভার তার পরিবারের! (যদি অরিত্রীর ছাড়া অন্য কাউকে এর দায়ভার দিতেই চান কেবল সে ক্ষেত্রে)।

উঃ- প্রথমত মনে হয়। একমাত্র নয়।

৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৯

শায়মা বলেছেন:

১. অরিত্রী কি জানতো না, পরীক্ষার সময় মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ। অথবা ধরা পরলে তার পরিণাম সম্পর্কে?

উঃ- অবশ্যই জানতো। তবুও এ বয়সে জেনে বুঝে এমন কাজ সবাই বলতে গেলে আমরাও অনেকেই করেছি, ওরাও করবে।

২. অনেকেই বলছে মোবাইলে যা পাওয়া গেছে সেগুলা আসে নাই। তখন আসলে কিছু বলার থাকে না। তার মানে শুধু মাত্র সেগুলা আসলেই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা সমর্থন যোগ্য হতো?
উঃ- কি পাওয়া গেছে না গেছে সেটা বড় ব্যপার নয়। ব্যাপার রুল ভাঙ্গতে শেখা। ভুল করা এবং একই সাথে বাচ্চারা এমন ভুল করলে কিভাবে শোধরাতে হবে তার পজিটিভ ওয়ে খুঁজে বের করা সেটা শিক্ষকের দায়িত্ব।


অরিত্রীর বাবা মার সাথে শিক্ষিকার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, তার বিচার স্বাভাবিক ভাবে যেটা হবার সেটা হবে। সেটার সাথে অরিত্রীর আত্মহত্যার ব্যাপারটা গুলিয়ে বিচার করাটা অনেক অযৌক্তিক বলেই মনে করি। বরখাস্ত করে তদন্ত করা পর্যন্ত ঠিক ছিল। এখানে আদালত, পুলিশ আসবে কেন? এখানে কি দুর্নীতি হয়েছে? এখানে কি অনৈতিক কিছু হয়েছে?

উঃ- ভাবতে হবে। যদিও মোবাইল আনা রুল না হলে, টিচার তা নিয়ে নিতে পারে যারা আরও পজিটিভলি এখনও ভাবতে শেখেননি।

অরিত্রীর বাবা মা এর জায়গায় নিজেদের ভাবছেন, বসাতে বলছেন। কিন্তু কেউ কি শিক্ষিকার জায়গায় নিজেদের বসিয়েছেন।
উঃ- হ্যাঁ আমি নিজে একজন শিক্ষক। শুধু পড়ালেখারই নই নানা রকম এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিজেরও।

শিক্ষকদের আচরণ নিয়ে শুধু কথা বললে হবে না, এখানে অভিভাবক, শিক্ষার্থী সবার আচরণ নিয়েই কথা বলা উচিত। আমরা এখন প্রত্যেকেই প্রত্যেককে অনেক বড় মনে করি। আর বিপত্তি সেখানেই। বাবা মা হিসাবেই কতজন আছেন, এখনকার বাচ্চাদের উপরে নিয়ন্ত্রনে সক্ষম?

উঃ- খুব কম! তাই আগের দিনের তরিকায় আর চলবে না । নতুন নতুন কনভিন্সিং অস্ত্র বাবামাকেও খুঁজে বের করতে হবে। সবচেয়ে বড় অস্ত্র পজিটিভ ফ্যামিলী ডিসকাশন।

টিচারের সাথেও ওয়ান টু ওয়ান ডিসকাশন হতে পারে। যেখানে টিচারকে সহানুভূতিশীল হতে হবে। সমস্যার সমাধানের পথ বাতলাতে হবে। দরকারে সুন্দর প্রমিজ করাতে হবে।


সমস্যার মূল নিয়ে ভাবিনা। শুধু স্রোতে গা ভাসিয়েই চলেছি। এর কারণেই আমাদের নতুন কোন ইস্যু আসলে পুরাতন গুলো সহজেই হারিয়ে যায়।

উঃ- হুম

শিক্ষিকাদের আমরা শিক্ষিত মানুষেরাই এত নোংরা ভাষায় গালি দিচ্ছি, এত বাজে কথা বলছি যা মুখে নেবার মতন না। আবার নিজেদের শিক্ষিত দাবি করছি। আসলে যে দেশে এরকম ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষিকার হাতে হাতকরা পরে, সে দেশে আমাদের মতো গালিবাজ জন্ম নেবে সেটাই স্বাভাবিক।

উঃ- ভাবনার বিষয় কিন্তু ভাবছি না

সব থেকে যে বিষয়টা দুঃখজনক এবং হতাশার সেটা হল, আমরা শিক্ষকদের শাসন এবং দায়িত্ব কর্তব্য পালনের অধিকার হনন করছি, সেই সাথে শিক্ষার্থীদের আহ্লাদের সাথে অন্যায় করার অনুমতি দেবার পাশাপাশি অভয়ও দিচ্ছি!!

উঃ - হুম



একটা ঘটনাকে আবেগ দিয়ে ভাবছেন তাতে আমার কোন সমস্যা নাই,
কিন্তু তাই বলে বিবেকটাকে ঘুমিয়ে রাখবেন!!!

উঃ- না কাম্য নয়।

যারা শিক্ষিকার ফাঁসি চাচ্ছেন, তাদের কাছে আমার শেষ প্রশ্ন-
আপনার সন্তান অপরাধ করলে, আপনি যখন শাসন করবেন,
তখন যদি সে আত্মহত্যা করে, তখন আপনি তার দায়ভার নিয়ে জেলে যেতে প্রস্তুত আছেন তো?

উঃ- এমনটা অনেক হয়েছে। মায়ের সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা। বাবা সাইকেল দেয়নি, বড়ভাই মোবাইল দেয়নি তাই আত্মহত্যা তার জন্য কোনো মা বাবা বড়ভাই জেইলে যায়নি বলেই এতদিন শুনেছি ....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.