![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৩ আগস্ট ২০০৮ ইং তারিখে থিয়েটার সাস্টের “অতঃপর হরেণমণ্ডল” নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল। পুনঃ নির্দেশনা দিয়েছিলেন তোফা ভাই। আমি এই নাটকে নাম ভূমিকায় মানে হরেণমণ্ডল চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। রান-থ্রো থেকে শো পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত আমার এখনও স্পষ্ট ভাবে মনে আছে । তার পেছনে একটা ঘটনা আছে। যেটা গত ৭ বছরে ২/১ জন ছাড়া তেমন কারো কাছে শেয়ার করিনি। আজ করছি .........
১২ আগস্ট ২০০৮, ডি- বিল্ডিং এ বিকাল ৫.০০-টা থেকে “অতঃপর হরেণমণ্ডল” নাটকের ফ্লোর চলছে। রাতে মিনি অডিতে ফাইনাল রান-থ্রো হবে।কখন হবে তার কোন ঠিক নাই। বরকত ভাইয়ের লাইট তোলা শেষ হবে, জোন ঠিক করা হবে, তারপরে রান-থ্রো শুরু হবে। আনুমানিক রাত ৩টায় মিনি অডিতে আমরা গেলাম এবং রাত ৪টার দিকে রান-থ্রো শুরু হল। রিহারসেল বা রান-থ্রোর সময় আমরা ফোন সাথে রাখতাম না। সবার ফোন কোন একজনের ব্যাগে রেখে দেয়া হত। কিন্তু এইদিন আমি লুকিয়ে আমার নকিয়া-১১০০ মডেলের ফোনটি আমার ধুতির ট্যাঁকে রেখে দিয়েছিলাম। রাতে ২/১ বার বাসায় কথা হয়েছিল আমার দাদার অসুস্থতার ব্যাপারে। ওনার শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না।রান-থ্রো চলাকালে গ্রীন রুমে মুত্রবিসর্জনকালে অনুভব করলাম আমার ফোনে একটা কল এসেছে। কিন্তু বেগ বেশি থাকাতে রিসিভ করতে পারিনি।(বিঃদ্রঃ মিনি-অডিতে আমি যতগুলো নাটকে পারফর্ম করেছি, নাটক চলাকালীন সময়ে আমি অডির গ্রীনরুমে মুত্রবিসর্জন করিনি, এমন কখনও হয় নি)।যাইহোক রান-থ্রো শেষে এককিলো দিয়ে হাঁটছি, ফোন বের করে দেখি বাসার নাম্বার। তখন ফজরের আযান দিচ্ছে। কল ব্যাক করলাম, আব্বু রিসিভ করল।বুঝতে দিলাম না যে আমি বাহিরে, যা শুনলাম তাতে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলাম।আমার দাদা হচ্ছে আমার জীবনে এমন একজন পছন্দের ব্যাক্তি যাকে আমি সবথেকে বেশি মিস করি এমনকি আমার মা-বাবার থেকেও বেশি।উনি ১৩ আগস্ট ২০০৮ ইং তারিখে ইহলোক ত্যাগ করেছেন।ব্যাপারটা সবাইকে জানালাম। দোটানায় পরে গেলাম বাসায় রওনা দিব কিনা। বাস সকালের আগে পাওয়া যাবে না। সকালে রওনা হয়ে বাসায় পৌঁছে দাফনে অংশগ্রহন করতে পারব। হঠাৎ মনে পড়ল ওইদিনই সন্ধ্যায় নাটকের ফাইনাল শো। চরিত্রটা শুধু আমার তোলা।তোফা ভাই শুধু বলেছিল, দেখ যেটা ভাল মনে করিস সেটা কর।আমি যাব না, সিদ্ধান্তটা নিতে আমার কয়েক সেকেন্ড লেগেছিল। কারণটা হচ্ছে, থিয়েটারের একটা মোটিভেশন। শুধুমাত্র বাবা-মার মৃত্যু ব্যতিত কোনভাবেই যাতে থিয়েটারের ফ্লোর ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সিনিয়ররা আমাদের সময়ে এভাবেই আমাদের মোটিভেট করত। আর থিয়েটারটা অনেক গভীরের ভাললাগা থেকে করতামতো তাই থিয়েটারের সাথে আপোষ করতে পারিনি। কিন্তু মাঝেমাঝে ভীষণ অপরাধবোধে ভুগি, যখন দাদার কথা খুব মনে পরে; শীতের সকালে তার কোলে শুয়েইতো আমার- “পাখি সব করে রব...... রাখাল গরুর পাল” মুখস্ত করা।সকাল বেলা চিনি দিয়ে গরম পরটা খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা। আরও কত কি বলে শেষ করা যাবে না। মনে হয়,খুব বেশি সাক্রিফাইস করে ফেলিছিলাম নাতো,এই ভেবে যে, মানুষটাতো আর কখনও ফিরে আসবে না। কিন্তু আমার থিয়েটার বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।
আজ আমার দাদার মৃত্যু বার্ষিকী । এই লেখাটা আপনারা যারা পরবেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ একবার হলেও আমার দাদার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন ওনাকে জান্নাতবাসী করেন। মিস ইউ দাদা। ভাল থেক, আর জেনে রেখ আমি সব সময়েই তোমাকে মিস করি।
(বিঃদ্রঃ ইহা নিতান্তই একটি আবেগপূর্ণ লেখা, দয়া করে এর ভিতর কেউ অন্যকিছু খুঁজবেন না।ধন্যবাদ।)
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০
হামিদ আহসান বলেছেন: ঠিক অাছে অন্য কিছু খুঁজলাম না ...।