নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলায় কথা কই

আমি অতি সাধারণ মানুষ

মুহিত আলম

অনুমতি ব্যতিত কোনো লেখা বা লেখার অংশ কপি করবেন না। এই নিন্দনীয় কাজটা আমিও করি না, আশা করবো আপনিও করবেন না।

মুহিত আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দোকান পর্ব-১

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:১৮

-তা মনু মিয়া, তোমার দোকান কেমুন চলতাছে? বৃদ্ধ নাজিম আলী জিজ্ঞেস করে।

মনু মিয়া কাপে চা ঢালতে ঢালতে জবাব দেয় – তা চাচা আল্লাহ্‌র রহমতে ভালই চলতাছে। এই লন চা, বলে চায়ের কাপ নাজিম আলীর দিকে এগিয়ে দেয় মনু মিয়া।

-তুমি যে কেমনে এই দোকান চালাইতাছ আল্লাহ্‌ মালুম। এই দোকানের যেই কুফা।

মনু মিয়া হেসে জবাব দেয় – চাচা, ঐ কুফা টুফায় আমার বিশ্বাস নাই।

চায়ের কাপে একটা চুমুক দিয়ে কাপটা টেবিলে নামিয়ে রাখতে রাখতে নাজিম আলী বলল – যত যাই কও, এই দোকানের একটা কুফা আছে। এর আগে যারা এই দোকান চালাইতো, ব্যাবাকের ঝামেলা হইছে। কেউ মইরা গেছে, কারো বউ মরছে, কারো ব্যবসায় ভরাডুবি হইছে। তুমি এহনো কোনো বিপদে পরো নাই বইলা আশ্চর্য লাগে। তয় বিপদ আইতে আর কতক্ষণ!

মনু মিয়া আগের মতই হেসে জবাব দেয় – চাচা, আমার এই কুফা টুফায় বিশ্বাস নাই। হেগো ভাইগ্যে লেখা আছিলো, তাই হেগো সমস্যা হইছে। এই আবুল মিয়ার কথাই ধরেন, হে ব্যবসায় ধরা খাইবো না কেন কন! দোকান একটা দিয়া সারাদিন পইরা থাকত যাত্রা দল নিয়া। এমনে দোকান চলে? কর্মচারি দোকানের টেকা মাইরা খাইব এইটাই তো নিয়ম। তাই নিজের থাকন লাগে দোকানে। তাইলে আর টেকা মারতে পারে না। হেতো সেইটা করে নাই। ব্যবসা তো ডুববই।

-যত যাই কও বাবা, তুমি সাবধানে থাইকো। তুমি যতই কও কুফা টুফা কিছু নাই, আমি বিশ্বাস করুম না। কুফা আছে। সবাই জানে এই দোকানে কুফা আছে। তাই সাবধানে থাইকো।

-আমি সাবধানেই আছি চাচা। দোয়া কইরেন আপনেরা।



মনু মিয়া আজ থেকে প্রায় সোয়া এক বছর আগে এই দোকান ভাড়া নেয়। খুবই সস্তা দরে ভাড়া পেয়ে যায় দোকানটি। মাসে মাত্র তিনশ টাকা। অগ্রিম টাকা দেয়ার কোনো বালাই নেই। কিন্তু এত সস্তা দরেও এই দোকান কেউ ভাড়া নিতে চায় না। এই দোকানের “কুফা” আছে -গ্রামে এই কথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। দোকানের মালিক সিরাজ খান এই দোকান বিক্রিও করতে পারছিলেন না, আবার ভাড়াও দিতে পারছিলেন না। প্রায় পাঁচ মাস পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে থাকার পর মনু মিয়া এই দোকান ভাড়া নেয়।

মনু মিয়া অবিবাহিত, বাবা মা মারা গেছেন বছর দুই আগে। দুই বোন আছে, তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। কোনো ভাই নেই। জায়গা জমি খুব একটা নেই তার। বসত ভিটা আছে। আর দুইটা ধানি জমি ছিলো। কিন্তু খুব একটা ফসল উঠত না জমিতে। একটা জমি বিক্রি করে সেই টাকায় এই দোকান দিয়েছে মনু মিয়া। অনেকেই তাকে নিষেধ করেছে এই দোকান ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে। কিন্তু সে কারো কথায় কান দেয় নি। এখন সে দোকানেই থাকে, রান্না বান্নাও করে দোকানে। দোকানের পিছনের অংশে একটা চৌকি পেতেছে। রাতে এখানেই ঘুমায়। দোকানের আয়ে ভালই দিন কেটে যাচ্ছে তার।

কিছুদিন আগে মনু মিয়া দোকানে কাপড় ইস্ত্রি করার ব্যবস্থা করেছে। আশেপাশে কোনো কাপড় ইস্ত্রি করার দোকান নেই। কাপড় ইস্ত্রি করতে সেই গঞ্জে যেতে হয়। এখন এখানেই কাপড় ইস্ত্রি করার যায়। মনু মিয়ার রোজগারও বেড়ে যায়।

একদিন রাত দশটার দিকে সেলিম আসে কাপড় ইস্ত্রি করার জন্য। মনু মিয়া তখন দোকান বন্ধ করার আয়োজন করছে। সেলিম কাপড় বাড়িয়ে দিয়ে বলে – মনু ভাই, একটু ইস্ত্রি কইরা দাও।

মনু মিয়া চিপস, বিস্কুট, পাউরুটির প্যাকেট ভিতরে ঢুকাতে ঢুকাতে বলে – তুমি এই রাইত দশটায় আইছ ইস্ত্রি করার লাইগা! আগে কি করছিলা?

-ইস্টিশন গেছিলাম টিকিট কাটতে। কাইলকা ঢাকা যামু।

-তা হঠাৎ ঢাকা যাইবা ক্যা?

-বড় চাচা হাসপাতালে ভর্তি হইছে। দেখতে যামু।

-বড় চাচা মানে রজব চাচা, কি হইছে উনার?

-হার্ট এটাক করছে।

-কবে? হুনলাম না তো!

-আইজকা বিকালে। তয় এহন অবস্থা ভালা আল্লার রহমতে। তুমি তাড়তাড়ি ইস্ত্রি কইরা দাও।

-করতাছি। তুমি বহ। খাইবা কিছু? বিস্কুট দেই?

সেলিম মাথা নাড়ে। -না এহন কিছু খামু না।

-তুমি এট্টু বহ। আমি জিনিসগুলা গুছাইয়াই তোমারে ইস্ত্রি কইরা দিতাছি।

সেলিম দোকানের বাইরে রাখা বেঞ্চিতে বসে। মনু মিয়া গোছগাছ শেষ করে ইস্ত্রি করতে থাকে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ইস্ত্রি করা শেষ হয়ে যায়। মনু মিয়া শার্টটা সেলিমের দিকে বাড়িয়ে দিতে যাবে, এমন সময় হঠাৎ তার দোকানের চাল থেকে অদ্ভুত এক আওয়াজ ভেসে আসে। মনে হয় কেউ যেন হাঁটছে। পা টেনে টেনে হাঁটছে।

সেলিম ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে যায়। কাঁপা কাঁপা স্বরে মনু মিয়াকে জিজ্ঞেস করে – কিসের আওয়াজ মনু ভাই?

মনু মিয়া শার্টটা টেবিলে রেখে বলে – খাড়াও, দেইখা আসি।

মনু মিয়ার কথা শুনে সেলিম আরো ভয় পেয়ে যায়। মনু মিয়াকে যেতে বাধা দিয়ে বলে – কোনো দরকার নাই মনু ভাই। এই গুলানের দিকে তাকাইলে চোখ খুইলা পইরা যাইব। মারা পরবা।

-আরে কে হাঁটে দেখতে হইব না। এহন তো দেহি আর হাঁটে না। তুমি খাড়াও। আমি দেইখা আহি।

-না মনু ভাই। তোমার যাওনের দরকার নাই। তুমি শার্টটা দেও। এই লও টেকা। আমি যাইগা।

সেলিম পড়িমরি করে দৌড় দেয়। মনু মিয়া দোকান থেকে বের হয়ে একটু দূরে গিয়ে চালের দিকে তাকায়। একটা পেঁচা বসে আছে চালে। এই তাহলে আওয়াজের রহস্য! মনু মিয়া আবার দোকানে ফিরে এসে ঘুমানোর আয়োজন করে।

পরদিন সকালে মনু মিয়ার দোকানে লোকজনের ভিড় করে। সেলিমের কাছ থেকে ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে। সবাই ভেবেছিলো মনু মিয়া রাতেই মারা পরবে। কিন্তু সকালে এসে তারা দেখে মনু মিয়া দিব্যি বেঁচে আছে।

-কি মিয়া, কাইল রাইতে কি হইছিলো? জিজ্ঞাসা করে রফিক।

মনু মিয়া চুলায় চা বসাতে বসাতে বলে – কি আর হইব!

-কি হইব মানে? কাইল রাইতে নাহি তোমার চালে জিন ভূত নাইমা আইছিলো?

মনু মিয়া রফিকের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে – কে কইছে তোমারে? সেলিম? অয় দেখছে ভূতরে? অরে জিগাইলানা ভূত দেখতে কেমুন?

বৃদ্ধ সুরুজ বিরক্ত হয় মনু মিয়ার কথার ধরণে। -মনু, এই জিন ভূত লইয়া ফাইজলামি কইরো না। বুঝলাম তোমার সাবাস আমাগো থেইকা বেশি। তয় বেশি সাবাস দেখান সব সমুয় ভালা না।

মনু মিয়া সুরুজের দিকে তাকিয়ে বলে – চাচা, বেয়াদপি লইয়েন না। কাইল রাইতে আমার চালে এট্টা পেঁচা বইছিলো। এর লাইগাই এট্টু শব্দ হইছে।

-কি কও মিয়া, পেঁচা বইছে? এইটা তো ভালা লক্ষণ না। পেঁচা কাইলকা তোমার চালে আৎকা বইল ক্যা?

-ক্যা বইছে তার আমি কি জানি! বইতে ইচ্ছা করছে তাই বইছে।

-যাই কও, পেঁচা চালে বহা ভালা লক্ষণ না। তুমি সাবধানে থাইকো।

-কি মনু মিয়া, আছো কেমুন? চা দাও দেহি এক কাপ, বলতে বলতে গ্রামের মসজিদের ইমাম সাহেব দোকানে ঢুকলেন।

-আসসালামালাইকুম হুজুর। বসেন। চা দিতাছি। কি খাইবেন? রঙ চা নাহি দুধ চা?

-দুধ চা দাও। লিকার কড়া কইরা দিও।

-ঘটনা হুনছেন ইমাম সাব, মনুর দোকানে তো কাইল রাইতে পেঁচা বইছিলো? রফিক খুব আগ্রহ নিয়ে বলে।

-তাই নাহি!

-হ। মনুরে কইতাছি সাবধানে থাকবার লাইগা। হে গা করতাছে না। পেঁচা বহন কি ভালা, আপনেই কন?

-ভালা খারাপের কি! পেঁচা বইতে চাইছে, বইছে। আল্লার ইচ্ছায় পেঁচা বইছে, এর মইদ্যে ভালা খারাপ কি?

মনু মিয়া বাদে দোকানের সবাই আশ্চর্য হয়ে ইমাম সাহেবের দিকে তাকালো। বৃদ্ধ সুরুজ বলল – কি কন ইমাম সাব! পেঁচা বইলে খারাপ কিছু অবশ্যই হয়। আমাগো গেরামে এর আগে যার বাড়িতেই পেঁচা বইছে, হেরি এট্টা না এট্টা বিপদ হইছে। আর আপনে কন পেঁচা বইলে সমস্যা নাই!

-চাচা, আমি এইসব কথা বিশ্বাস করি না। এইগুলির কোনো ভিত্তি নাই। আমি একবার ঢাকা গেছিলাম। ঐ হানে এক বাড়িতেও পেঁচা বইছিলো আমার পষ্ট মনে আছে। ঐ বাড়ির কারু তো কোনো বিপদ হয় নাই।

-অইন্য জায়গায় কি হয় তা কইবার পারুম না। তয় আমাগো এইখানে কারু বাড়িতে পেঁচা বইলে হের বিপদ হয়। এইটা এক্কেবারে সইত্য কথা।

-ঠিকাছে চাচা, আপনের কথা মানলাম। তয় আমি বিশ্বাস করি না।

বৃদ্ধ সুরুজ মাথা নেড়ে বলে – ইমাম সাব, আপনে তো আমাগো গেরামের মানুষ না, তাই বিশ্বাস করেন না। এই গেরামের বেবাকেই এই কথা বিশ্বাস করে। এই মনুডাই খালি করে না।

মনু মিয়া ইমাম সাহেবের দিকে চা এগিয়ে দিল। ইমাম সাহেব চা খেতে খেতে বলল – চাচা, বাদ দেন এই কথা। আমি একটু আলীপুর যামু। আপনে যাইবেন?

-কি কামে যাইবেন?

-একটু দরকার ছিল মিজান ভাইয়ের কাছে। যাইবেন? চলেন দেহা কইরা আহি।

-শরীলডা বেশি ভালা না ইমাম সাব। আপনে যান।

চা শেষ করে ইমাম সাহেব উঠে গেলেন। -যাই চাচা। আসসালামুয়ালাইকুম।

-ওয়ালাইকুমসাসালাম।





সেদিন রাত দশটায় ইমাম সাহেব আবার মনু মিয়ার দোকানে গেলেন। মনু মিয়া দোকান বন্ধ করার জন্য সবকিছু গুছাচ্ছিলো। ইমাম সাহেবকে দেখে উঠে দাঁড়াল সে। -আসসালামালাইকুম হুজুর। কিছু লাগব?

ইমাম সাহেব বেঞ্চে বসতে বসতে বলল – একটা সাবান দাও দেহি। গায়ে দেওনের সাবান।

-কোনডা নিবেন? তিব্বত, কেয়া, এরোমেটিক, কোনডা দিমু?

-দেও ভালা দেইখা একটা। আর এক কাপ চা দিতে পারবা নি?

-এট্টু বহেন হুজুর। আগুন নিভাই ফালাইছি। আগুন ধরাইয়া তারপর দিতাছি আপনারে। বহেন।

-তাইলে বাদ দাও। আবার হাঙ্গামা করতে হইব। দরকার নাই। আর আকাশের অবস্থাও ভালা না। কখন আবার বিষ্টি শুরু হয় ঠিক নাই।

-আরে বহেন হুজুর। হাঙ্গামা আর কি? আপনে দশ মিনিট বহেন। আমি আপনেরে চা কইরা দিতাছি।

মনু মিয়া ব্যস্ত ভঙ্গিতে একটা কেয়া সাবান টেবিলে রেখে চুলা ধরায়। চুলা ধরিয়ে কেতলি চুলায় বসিয়ে পানি ঢালে কেতলিতে। পানি গরম হতে থাকে।

-আইচ্ছা মনু মিয়া, এই দোকানরে সবাই কুফা কয় ক্যান?

-অনেক কথা হুজুর। খামোখা তো আর কয় না! তয় আমি এই কুফা টুফা মানি না।

-কি কাহিনী কও তো।

-অনেক বছর আগে, ধরেন যে প্রায় বিশ বছর হইব, তহন এই দোকানের মালিক আছিলো সামসু নামের এক লোক। তার এই দোকান ছাড়াও আরো ব্যবসা ছিলো। আয়রোজগার খারাপ আছিলো না শুনছি। কিন্তু ব্যাডা অনেক মদ টদ খাইত। মাতাল হইয়া থাকত। এরম একদিন মাতাল হইয়া নিজের বাড়ি মনে কইরা গিয়া ঢুইকা পরে খান সাবের বাড়ি। খান সাবের ছেলের বউয়ের ঘরে ঢুইকা দরজা আটকাইয়া দেয়। বিরাট চিল্লাচিল্লি লাইগা যায়। খান সাব অরে গুলি কইরা মাইরা ফালায়। এরপর থেইকাই এই দোকানে কুফা লাগে। যেই আহে দোকান করতে হেরি কোনো না কোনো বিপদ হয়। কারো পোলা মইরা যায়, কারো বউ মইরা যায়, কেউ ব্যবসায় মাইর খায়। এই হইছে ঘটনা।

আশেপাশে কোথাও বিরাট শব্দে বাজ পরে। সেই সাথে বৃষ্টি শুরু হয়। বড় বড় ফোটায় নেমে আসছে আকাশ থেকে। ইমাম সাহেব বাইরে তাকিয়ে বললেন – এই বিষ্টি যে কখন বন্ধ হইবো আল্লাহ্‌ই জানেন। বর্ষার বিষ্টির তো কুনু আগামাথা নাই। ঝামেলা হইয়া গেলো।

-ঝামেলা কি ইমাম সাব! আপনে বহেন আর কিছুক্ষণ। আর বিষ্টি না কমলে আমার এইহানেই রাইতটা কাটাইয়া দিয়েন। সমস্যা নাই।

-তোমার কাছে ছাতা আছে মনু মিয়া? থাকলে দাও দেহি।

-ছাতা তো নাই হুজুর। আপনে বহেন। চা খান আরেক কাপ।

-না না। আর চা খামু না। তাইলে আর রাইতে ঘুম হইব না।

ইমাম সাহেব একঘন্টা বেঞ্চে বসে বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করলেন। কিন্তু বৃষ্টির বেগ একটুও কমেনি। বৃষ্টি কখন থামবে বলা যায় না। এই বর্ষাকালের বৃষ্টির কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।

মনু মিয়া ইমাম সাহেবের জন্য বিছানা করে দিয়েছে। ইমাম সাহেব মনু মিয়ার বিছানায় ঘুমালো। মনু মিয়া দুইটা বসার বেঞ্চ একত্র করে তার উপর একটা খ্যাতা বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরদিন সকালে আবার মনু মিয়ার দোকানে ভিড় দেখা যায়। দোকানের সামনে একটি মৃতদেহ মাটিতে রাখা। ঐ মৃতদেহকে ঘিরেই মানুষের ভিড়।

কেউ একজন প্রশ্ন করল – ক্যামনে মরল?

আরেকজন উত্তর দেয় –সাপে কাটছে।

বৃদ্ধ সুরুজ কিছুক্ষণ আগে এসেছেন। তিনি মনু মিয়াকে প্রশ্ন করেন –ইমাম সাব তোমার এহানে ঘুমাইলো ক্যান?

মনু মিয়া সব খুলে বলে।

বৃদ্ধ সুরুজ বললেন –আমি কইছিলাম না যে চালে পেঁচা বহন কুলক্ষণ। আমার কথা তো তহন আমলে নিলা না। তুমিও লও নাই, হুজুরেও লয় নাই। দেখলা মিয়া, ফলছে তো আমার কথা! কাইলকা হুজুর যদি না আইতো তয় তুমি মরতা। সাপ আইয়া তো তোমার বিছনাতেই উঠছিলো। হুজুর ঘুমাইছে বইলা হুজুরে মরছে, তুমি ঘুমাইলে তুমি মরতা।

মনু মিয়া কোনো জবাব দেয় না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।

ইমাম সাহেবের লাশ দোকানের সামনে থেকে নিয়ে যায় লোকজন। গোসল শেষে জানাজা পড়ানোর পর লাশ ইমাম সাহেবের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।



শেষ পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link



©Muhit Alam

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.