নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\" অগুছালো চিন্তা ধারায় কিছু অনভীজ্ঞ লিখা।\"

মোজাহিদ আলী

খুব সাধারণ পরিবারে জন্ম আর সাধারণভাবে বেড়ে উঠার এক আত্মজীবনি আছে আমার। লিখতে পারব...? সন্দেহ হয় ! অভীজ্ঞতা ছাড়া লিখা অনভীপ্রেত। সাধারণ জীবনের অনভীজ্ঞ লিখাগুলি পাঠকেরা পড়বে কি না সন্দেহ আছে...... তারপরেও লিখি, নিজের আত্ম সন্তুষ্টির জন্য না হয় একটু আধটু লিখবার চেষ্টা করলাম.........।।

মোজাহিদ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি গরিবের হাসপাতাল এবং শিয়ালের স্বপ্নদোষ।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৪৭




আওয়ামিলিগ সরকার সর্বদা দেশের জনগনের সেবা করাকেই ইবাদাত মনে করে পেছনের ইতিহাস, তাদের কার্যক্রম ঘাটলে এটাই প্রতীয়মান। স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে আওয়ামিলিগ সরকারের নতুন নতুন পরিকল্পনা গুলি বেশ বাস্তবমূখী, জনবান্ধব এবং সুপরিকল্পিত সফল। পরিকল্পিত পদক্ষেপ গুলির মধ্য দীর্ঘ্যদিন থেকে চলে আসা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, আর বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক প্রজেক্ট, তার বাস্তব উদাহরণ। তবে একটি উদ্যোগকে সফল অথবা বিফল করার জন্য দায়ী বাস্তবায়নের দ্বায়ীত্ত্বপ্রাপ্ত জনবল।

প্রথমেই আসি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কথায়ঃ যদিও প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ অসম্ভব তাই এখানের মুল দ্বায়ীত্বে একজন স্যাকমো একজন ফার্মাসিস্ট একজন পিয়ন/আয়া থাকেন। এককথায় স্যকমো বা মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্টরাই সর্বেসর্বা।

রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্টান হিসেবে এর কার্যক্রমের মূল্যায়ন সমালোচনা করার অধিকার একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে আমার আছে। সাব সেন্টারগুলির দ্বায়িত্ত্ব পরিসর কি তাও জানার অধিকার আছে? এর সেবা প্রদানের সার্বিক চিত্র নিয়ে সমালোচনা অনধিকার নয় নিশ্চয়। সাব সেন্টারের কার্যক্রম থেকে অনেক খুঁজলাম উত্তর পাইনি কাগজ কলমে দেখি একটি ইউনিয়ন সাব-সেন্টারে বহির্বিভাগে সাধারণ চিকিৎসা,  স্বাস্থ্য শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, সামগ্রি বিতরণ, ছোট্ট কাটাছেড়া সেলাই, এএনসি, পিএনসি সেবা, স্বাস্থ্য তথ্য প্রধান, জটিল রোগি সনাক্তকরন ও রেফার করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা।সর্বোপরি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত খোলা রেখে চিকিৎসা প্রদান।

আমরা কি আদৌ এই সেবাগুলি পাচ্ছি? একজন স্যাকমো নিয়মিত সাবসেন্টারে বসছেন তো? সাব সেন্টার কে জনগনের কাছে জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা বা আন্তরিকথা কতটুক? গ্রামের প্রান্তিক,অসহায় গর্ভবতি মা ও শিশুরা কি সন্তুষ্ট এই সেবায়? নাকি দিনে দিনে সাব সেন্টারের
কার্য্যক্রম গুটিয়ে আসছে? বাস্তব চিত্র সারেজমিনে ভিন্ন ফলাফল। কষ্ট লাগে সাব সেন্টারগুলির দুরবস্থা দেখে। কিভাবে সরকারের এতো সুপ্রতিষ্টিত পুরাতন একটি স্থাপনা দিনের পর দিন অযত্নে অবহেলায় মানুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে ওঠছে। একজন স্যাকমো, ফার্মাসিস্ট  এমএলএস, আয়া পোষ্টিং থাকার পরেও কতো অপরিষ্কার, নোংরা, অপরিচ্ছন্ন জংগল লেগে আছে সাব-সেন্টারগুলিতে চাইলে আমি ছবি সহ দিতে পারি। ১২ টায় গিয়ে দেখেছি পিয়ন চিকিৎসা দেয় আর খিটখিটে মেজাজ নিয়ে বলে স্যার আসেনি। এই কথা বলার ধরণ দেখে বাকি প্রশ্নগুলি ভিতরে চেপে রাখাই সম্মান বাঁচানোর উপায় মনে হয়। পত্র পত্রিকা সরকারি সাময়িকি অথবা সভা সেমিনারে কোনদিন সাব-সেন্টারের কার্যক্রমের কোন প্রশংসা শুনি নি। অথবা জাতীয় পর্যায়ে তাদের কোন কর্মচারীকে শ্রেষ্টত্ত্বের পুরষ্কার পেতে দেখিনি। তাদের অগ্রগতি দেখে সরকারের নতুন করে কোন পরিকল্পনা  নিতে বা আলোচনা করতে শুনি নি। তাদের প্রতি ব্যাক্তিগত কোন আক্রোশ বা হিংসে আমার নেই। একথা অস্বিকার করার পথ নেই সাব সেন্টারের জনবলের অবহেলা আর অযত্নে এটি একটি ব্যার্থ প্রতিষ্টান হিসেবে জনগনের কাছে পরিচিত।

এইবার আসি কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা সম্পর্কেঃ প্রান্তিক জনগোষ্টি, গ্রামের অসহায় হতদরিদ্রদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে মাননীয় প্রধান মন্ত্রির অনেক পরিকল্পনা, সুচিন্তিত গবেষণা, এবং অগ্রাধীকার ভুক্ত একটি সেক্টর হলো কমিউনিটি ক্লিনিক। একজন সিএইচসিপি এখানের সর্বেসর্বা এবং সপ্তাহে নামেমাত্র ৩ দিন সহযোগিতা করেন সংশ্লিষ্ট এইচএ এবং এফডব্লিউএ । সিএইচসিপি শুধুমাত্র এইচএসসি পাশ আর কম্পিউটারে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার উপর সরকারীভাবে ৩ মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।




একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা পরিসর হলো স্বাভাবিক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, ঔষধ বিতরণ, স্বাস্থ্য শিক্ষা, জনসচেতনতা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান, গর্ভবতীদের গর্ভকালীন, প্রসবকালীন, প্রসবত্তোর, সেবা সহ নিরাপদ প্রসব করানো, পুষ্টি সেবা কার্যক্রম, মা ও শিশুদের বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা, কিশোর-কিশোরিদের স্বাস্থ্য সেবা, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সহায়তা, যক্ষা, কুষ্ট, জটিল রোগি সনাক্ত এবং রেফার, এছাড়াও উক্ত এলাকার সকল গর্ভবতীদের তালিকা সংগ্রহ, তাঁদের খোজ নেয়া, মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যু নিবন্ধন সহ অনলাইনে এন্ট্রি, প্রতিমাসে মাসিক রিপোর্ট ইন্ডিভিজুয়্যাল রিপোর্ট প্রেরণ। সকাল ৯টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত খোলা রেখে সেবা প্রদান।
নিঃসন্দেহে সাব-সেন্টার থেকে তাদের কার্য্যপরিসর ব্যাপক বিস্তৃত।




প্রশ্ন হলো সিএইচসিপি এই সব কাজগুলি করছে কি না? জনগণ সেবা পাচ্ছে কি না ? সন্তুষ্ট কি না? জনবল উক্ত প্রতিষ্টানকে জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টায় আন্তরিক কি না? পরিষ্কার পরিচ্চন্নতার মান ভালো কি না? যদি এককথায় উত্তর দিতে বলেন তবে বলবো উক্ত প্রতিষ্টানের কার্যক্রমের প্রশংসা শুনে স্বয়ং জাতিসংঘ মহাসচিব মৌলভিবাজারে মোবারাকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে এসেছেন এবং ভূয়সি প্রশংসা করেছেন।  এই অকর্মণ্য সিএইচসিপিরা বেহিসাব নিরাপদ প্রসব করেছে এমনকি রাস্তায়, গাড়িতে নিরাপদ প্রসব করিয়ে মাননীয় মহাপরিচালক মহোদয় স্বাক্ষরিত অভিনন্দন পত্র পেয়েছে। সিএইচসিপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে জাতীয় পত্রিকাগুলি সিএইচসিপি দের নিয়ে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক গুলির কার্যক্রম নিজে পরিদর্শন করে সন্তোষ জ্ঞ্যাপন করেছেন, উনার নিজের হাতে সারা বাংলাদেশে শ্রেষ্ট সিএইচসিপিইদের কে সম্মাননা তুলে দিয়েছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সফলতা দেখে প্রয়িনিয়ত নতুন নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছেন, এবং তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমাদের মডেলে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করে ইতিমধ্য সেবা প্রদান শুরু করেছে। হতদরিদ্র মানুষদের কতো আপন করে সেবা দেয় সিএইচসিপিরা। সর্বোপরি এদেশের জনগণের কাছে বেশ সমাদৃত এই গরিবের হাসপাতাল।



কমিউনিটি ক্লিনিক কে নিয়ে শুধু জননেত্রী স্বপ্ন দেখে না প্রতিটি সিএইচসিপি এই প্রতিষ্টানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, এদেশের প্রতিটা হতদরিদ্র মানুষ তাদের প্রাণের প্রতিষ্টান কে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। একজন সিএইচসিপি কমিউনিটি ক্লিনিককে তাদের নিজের বেডরুমের মতো করে গুচিয়ে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে একজন সিএইচসিপি একাধারে স্বাস্থ্য সেবক, ফার্মাসিস্ট, পিয়ন,পরিচ্ছন্ন কর্মি, কম্পিউটার অপারেটর সবকিছু। সম্পুর্ণ নতুন সৃষ্ট একটি জনবল অনেক প্রতিকুলতা প্রতিবন্ধকতা থাকা স্বত্ত্বেও নিজের কর্মক্ষেত্রে অভিরাম কাজ করে সুনাম কুড়াচ্ছে। অতচ মাসের পর মাস তাঁদের বেতন বন্ধ থাকে।  ক্লিনিক সুন্দর পরিপাটি রাখতে গিয়ে নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে এও দেখেছি।



সম্প্রতি কানাঘুষো শুনছি স্যাকমোরা নাকি সিএইচসিপিদের অযোগ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করে কমিউনিটি ক্লিনিকের দ্বায়ীত্ত্ব নিতে আগ্রহী। এর জবাবে কি বলবো আমি খুজে পাচ্ছি না কি কারণে তাদের দ্বায়িত্ব নিতে খায়েশ জাগলো? কেনইবা এতো বড় মাপের ডাক্তার সিএইচসিপির মতো ছোট মানুষদের চেয়ারে বসতে চাইছে। সাব সেন্টার ধ্বংস করে এখন কি কমিউনিটি ক্লিনিক ধ্বংসের পায়তারা করছে? সরকারের স্বিদ্ধান্ত পরিকল্পনা ডিংগিয়ে তারা যুক্তি দেখানোর দুঃসাহস পায় কোত্থেকে? তারা এই কথা কি জানে না আরেকজনের রিজিকে ভাগ বসানোর স্বপ্ন দেখা একমাত্র ডাকাতেরই সাজে। কতো নিচু ফ্যামেলি থেকে উঠে আসা আর নিচু মনমানসিকতা ধারণ করলে তারা এমন উদ্ভট কুচিন্তা করতে পারে? তাদের অবস্থাদৃষ্টে একটি গল্প দিয়ে শেষ করছি।
একদিন সিংহের সখ হলো বনে পশুদের লড়াই আয়োজন করার। লড়াই দেখতে বন্য সব পশুরা হাজির। যথারিতি ডাকা হলো মহিষকে আর বন্য ষাঁড়কে লড়াই করার জন্য। ষাঁড় যেহেতু লড়াইয়ে পারদর্শি কৌশলি তাই লড়াই করে ষাঁড় মহিষকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হলো।  এতো বড় শিং থাকার পরেও মহিষ যেহেতু হেরে গেলে তাই শিয়াল আমতা আমতা করে বলে উঠলো আমার বেশ বুদ্ধি সবাই আমাকে পন্ডিত বলে ডাকে, কৌশলেও আমি বেশ পারদর্শি, আমার যদি মহিষের মত শিং থাকতো তবে ষাঁড়কে হারিয়ে দেয়া চুটকির ব্যাপার।এই খবর সিংহের কানে গেলো সিংহ আদেশ করলো মহিষের শিং শিয়ালের মাথায় বসিয়ে ষাঁড়ের সাথে লড়াইয়ের ব্যাবস্থা করার।
আদেশ পেয়ে শিয়ালের মাথায় মহিষের শিং বসিয়ে দেয়া হলো। লড়াই তো বহুদূরে শিয়াল তো আর মাথা তুলে দাড়াতে পারে না। এবার সিংহ আদেশ করলো শিয়ালের এই ধৃষ্টতার জন্য পাছার মধ্য ১০০ টা বেত্রাঘাত করা হল। উক্ত বেত্রাঘাতের পরে শিয়ালের মাথায় সুবুদ্ধি এলো। এবং কুবুদ্ধির জুরে ফাও খাওয়ার কুচিন্তা মুক্ত হলো !!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: বিশেষ করে ঢাকা মেডিকেল আর পিজি হাসপাতালে গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। খুব বেশি অগোছালো। আর খুব লম্বা লাইন ধরতে হয়।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:১২

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.