নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আস্ সালামু আলাইকুম্

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-)

নীল-দর্পণ

নগণ্য একজন মানুষ। পছন্দ করি গল্পের বই পড়তে, রান্না করতে। খুব ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর।

নীল-দর্পণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাঠপ্রতিক্রিয়া: আমেরিকার দিনগুলি

২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:২০

যার বই নিয়ে পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখতে বসেছি তাঁর আমার প্রতি অভিযোগ আছে, আমি নাকি খালি ভালই বলি, নেতিবাচক কিছু বলিনা। এই ব্লগে ভুল-ত্রুটি আর নেতিবাচক কথা বলার জন্যে মুরুব্বীতো আছেন একজনই, তার কাজ আমি ছোট মানুষ কী করে করি! তবে যাদের রিভিউ এখানে সংযোগ না করলেই নয় তাদেরটা আগে বলি,
কন্যাদ্বয়ের জন্মের আগ থেকে দুই-আড়াই বছর অবদি বই পড়ায় একদম ভাটা পরেছিল। জীবনের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করতে করতে ভাবলাম এই যুদ্ধ সহসা থামবে না কিন্তু আমার ভালোলাগার বিষয়টা হারিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। তাইতো আবার বই পড়া শুরু করলাম টুকটাককে। তো কন্যাদ্বয়কে এখন খেলতে বা বই খাতা দিয়ে বসিয়ে আমিও পড়ি টুকটাক। তেমনি একদিন সুলেখক হিসেবে পরিচিত জনপ্রিয় ব্লগার (যদিও অনিয়মিত হয়ে গেছেন এখন) মলাসইলমুইনা এর 'প্রবাসের মেমোয়ার, স্বদেশের মুখচ্ছবি আমারিকার দিনগুলি' বইটি পড়ছি ।এক পর্যায়ে এক কন্যা আমার হাতের বইটি দেখিয়ে বলে ওঠে, "আম্মু এতায় কিচ্চু নাই, (একই সাথে তাদের বই দেখিয়ে বলছে), এতায় কিচ্চু আসে" অর্থাৎ আমার হাতের বইয়ে কোন ছবি নাই অন্য দিকে ওদের বইয়ে অনেক রকম সুন্দর ছবি আছে। লেখকের কাছে আমার কন্যাদ্বয়ের মেসেজ তাদের জন্যে কিচ্চুওয়ালা বই আনা যায় কিনা সামনে সেই চিন্তা করবেন। :D


'আমেরিকার দিনগুলি' বইটি পড়া শুরু করবার আগে ভেবেছিলাম স্মৃতিচারনমূলক কিংবা আমেরিকার যাপিত জীবনের কথা সচরাচর যেমনটা পড়ে থাকি তেমনি হবে। কিন্তু শুরু করে বুঝলাম একটু ভিন্নভাবে শুরু হয়েছে। লেখক পড়ালেখার সূত্রে যাওয়ায় সেই বিষয়ের আলাপ ই বেশি প্রথমে। শুরুটা একটু ধীর হলেও মাঝ পর্যন্ত পড়া শেষ হবার পর মনে হচ্ছিল খুব দ্রুত পড়া শেষ হয়ে যাচ্ছে! আফসোস হচ্ছিল।

প্রতিটি ঘটনা, স্মৃতিকথার শুরুতে লেখকের নিজস্ব ধারায় বড় করে শিরোনাম যা অন্যদের থেকে আলাদা। শব্দের বুনন, রসাত্নবোধক উপস্থাপনা, প্রবাসে দেশের প্রতি অনুভূতির হৃদয় নিংড়ানো প্রকাশ সব মিলিয়ে অনন্য। প্রথম সেহরীর বর্ণনা পড়ে আমি নিজেকে ঐখানে কল্পনা করছিলাম। দেখতে পাচ্ছিলাম ভাত, মাংস ভুনার কল্পনা করে কলা-রুটি খাচ্ছি আর চোখের পানিতে শুকনো রুটি ভিজে যাচ্ছে! যাহোক জীবন যেখানে যেমন। এতো হাজার মাইল দূরের বিদেশ, কয়েকশো কিলোমিটার দূরের শ্বশুর বাড়ী গেলেই খাবার নিয়ে যেমন আমি বিড়ম্বনায় পড়ি তেমনি তারাও পড়েন!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের ক্যাম্পাস জীবনের সাথে যখন পিটসবার্গের ক্যাম্পাসের সব কিছুর তুলনা করছিলেন এত বছর পরেও আমার দেখা কিছু স্মৃতি, অভিজ্ঞতার তুলনা চলে আসছিলো চোখের সামনে। তেমন কিছুই বদলায়নি।
এই না বদলটাই পীড়া দেয়। প্রবাসের মেমোয়ার, স্বদেশের মুখচ্ছবি…নামকরণটা স্বার্থক তাই!

পীড়া দিয়েছে সদ্য জন্মানো ছোট্ট এক হরিণ শাবকের জন্যে যেই দেশ এত অনুভুতিশীল, যত্নশীল একই দেশ ফিলিস্তিনের মুসলমান শিশুদের প্রতি কতটা পাষান্ড! কতটা পাষবিক তান্ডব চালাচ্ছে তা ভেবে।

চিলাই, শীতলক্ষ্যা কিংবা কর্ণফুলী নদী আগের মতই স্রোতস্বীনি আছে কিনা জানতে চেয়েছে লেখকের মন, হঠাৎ করেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো সম্প্রতি ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার ঈদ করতে যাওয়ার সময়ে কর্ণফুলী নদীর উপর দিয়ে ট্রেন যাবার সময়ে দেখা দৃশ্য। কালুরঘাট ব্রিজের উপর দিয়ে ধীরে ধীরে যাওয়ার সময় নিচে তাকালে দেখি অত্যন্ত স্রোত নদীতে। এপাড় ওপাড় দেখা যায় নদীর কিন্তু পুরো নদীতে স্রোত! এমনটা আগে পদ্মা পাড়ি দিয়ে বর্ষাকালে গ্রামে যাবার সময় দেখতাম জায়গায় জায়গায়। সেতু হবার পর থেকে পদ্মার বুকে স্থায়ী বালুচর জেগে ওঠা দেখে মনে শংকা জাগে যমুনা কিংবা তিস্তার ভাগ্যই বরন করতে যাচ্ছে এই পদ্মাও! আমাকে খুব ভাবায় ব্রিজ করলেই কেন নদীগুলোর এই দূর্ভাগ্য হয়। এত উত্তরও এই বইয়ের বিভিন্ন লাইনের সারমর্মে পাওয়া যায়। নীতি, সদিচ্ছা, স্বচ্ছতার অভাব সবখানে যার ফলে অর্নামেন্টাল ডেভেলাপমেন্ট প্রচুর হলেও আসল জায়গা অন্তঃসারশূণ্য!
সব মিলিয়ে খুব ভালো লেগেছে বইটি। এরকম আরো লেখা লেখকের কাছ থেকে পাবো সেই আশা রাখছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.