নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"জ্যাক অফ অল ট্রেড মাষ্টার অফ নান\" কথাটাও আমার জন্য প্রযোজ্য না কারন আমার অল্প কিছু বিষয়ে সীমিত জ্ঞান আর আমি কোন কিছুরই মাষ্টার না! তাহলে লিখছি কেন? অনেকটা বলা যায় বোকা চোখে কিছু বিষয় অসংগতি লাগে সেগুলো অন্যেরা কি চোখে দেখছে সেটা বুঝতে চাই।

মুক্ত মন না

মুক্ত মন না › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেলাপোকা আমি!

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী গ্রহনের সাধারন চিত্রটা ভয়াবহ। যাদের অর্থ ও মেধা এই দুটির প্রাচুর্য আছে তারা ছাড়া সবার অবস্থা প্রায় একই রকম। হ্যাঁ, রাজনৈতিক শক্তি থাকলে অন্য ব্যাপার। ভর্তির সুযোগ পাওয়া, সরকারী হলে মন্ত্রনালয়ের আদেশ হওয়া, এমনি সব ঝক্কি শেষ হলে ইন্সটিটিউটের কাছে কোথাও বাসস্থান! সেটা যদি শাহবাগ এলাকায় হয় তাহলে তো কথাই নাই।
আজিজ সুপার(!) মার্কেট এর উপর আবাসিক ফ্লাট(!) একটা অপশন। যদি খুব সৌভাগ্যবান হন তাহলে একটা সিট পেতেও পারেন। তবে কেউ যদি এখানে যান তাহলে মানবেতর কথাটা যথার্থ উপলব্ধি করতে পারবেন। বস্তি থেকে পার্থক্য একটাই এটা বহুতল। অনেক দেরীতে পড়তে গিয়ে আমার অবস্থাটা ছিল আরও করুন।
প্রথম যেখানে সিট পেলাম সেখানে ৪ জনের এক রুম আর টয়লেট অন্যদের সাথে কমন। ষাটের দশকের আধুনিক ৪ তলা বাড়িটা সংস্কারের অভাবে পুতি গন্ধময়। আমার রুমমেট জ্বালাতেন "কয়েল অনির্বাণ" (২৪ ঘন্টা মশার কয়েল, বলতেন ডেংগু হওয়া থেকে এটা ভাল। ততদিনে ঐ মেছের তিন জনের এই ভয়াবহ রোগটি হয়েছিল। আমার হয়েছিল পরবর্তী মেছে।)। সেখানে টিন এজ এক ছেলে বাবুর্চি যে কি না প্রায়শই চুরি করে ধরা পড়তো এবং একদিন আমার নতুন কেনা সেলফোনটি নিয়ে নিল। কিন্তু যখন ঐ বাসার ছাদ থেকে আরেকটা ছেলেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেললো তখন হন্নে হলাম অন্য কোথাও আশ্রয় খুঁজতে। আজিজ মার্কেটের সরু শিড়ি ভাঙতে ভাঙতে যখন কমড় ব্যাথা হয়ে গেছে তখন অতি সৌভাগ্যে "বি এস এম এম ই উ" খুব কাছে একটা বাসার নীচ তলার একটি অন্ধকার কক্ষে একটি সিট পাওয়া গেল আর দুজনের সাথে।
"রুমমেট" একটা দারুন গবেষনার বিষয় হতে পারে। আমার দুজনের একজন অত্যন্ত মেধাবি এবং সজ্জন। অপরজন "চোখে আঙুল দাতা" ( এই নামের একটা নাটক প্রচারিত হয়েছিল আকাশবাণী কলকাতা থেকে। সেখানে মুখ্য চরিত্রটি সবার ভুল খুঁজে বের করত। শেষে বিধাতার ভুল খুঁজে পেতে শুরু করলো! বিধাতা তাকে জিজ্ঞাস করলো মানুষ দেখতে কেমন হলে ভাল হত? এর পর তার দেয়া ডিজাইনে তাকেই বদলে দিলেন বিধাতা এক কিম্ভুত প্রাণিতে।)। তার প্যাঁচালে কান ঝালাপালা, এর আগে নাকি দু এক জন রুম ছেড়েছে তার অত্যাচারে। তবে আমি তেলাপোকার মত, সেফটি ট্যাঙ্কের অন্ধকার ঘুলি থেকে পাঁচতারা হোটেলের ঝকমকে খাবারের ডিশ সবতেই আমি সাচ্ছন্দ। তাই কোন রকমে বেঁচেবর্তে একটা তকমা যোগার করে ফিরতে পারলাম।
একদিন রুমমেট আমাকে বলছে- ভাই আমি বাথরুমে যাবার সময় চশমা খুলে যাই। আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম অন্য সময়ের মত, কারন এখন আমার নতুন কোন জ্ঞানার্জন হবে। সে যেটা বললো শুনে খুব শান্তি পেলাম। এতে নাকি সে বাথরুমের ময়লাগুলো দেখতে পায় না! বাহ বাহ!
ঠিক মনে নেই তখন হেসেছিলাম কি না? কাউকে বলেছিলাম কি না "পাগলের প্রলাপ"। কিন্তু এখন এটা আমার জীবনের অন্যতম দর্শন। আমি টিভির সংবাদে পহেলা বৈশাখের ইভ টিজিং দেখি না, ফেসবুকে কিশোরকে খুঁচিয়ে হত্যার ভিডিও দেখি না (আমার উত্তম অর্ধেক এটা দেখে কাঁদে!), পত্রিকার মিথ্যার ফুলঝুড়ি ওয়ালা বিজ্ঞাপন ছাড়া কিচ্ছু পড়ি না।
কারন আমি "তেলাপোকা", সভ্যতার বিকাশের সাথে আমাকে টিকে থাকতে হবে অনেক রকমের বিষ হজম করে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.