নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপরকে মানুষ মনে করেন তাহলে নিজেও মানুষ হতে পারবেন।

ক্ষুদ্র মস্তিস্ক

নিজেকে মানুষ মনে করি।

ক্ষুদ্র মস্তিস্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাত দেখা হাস্যোজ্জল মেয়েটি-১

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬

ভার্সিটির অরিয়েন্টশন ক্লাস সকাল ১০:০০ টা থেকে শুরু মুফসাতের।দীর্ঘদিনের বেলা করে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাসে সকালে উঠতে পারে কিনা সে ভয়ে রাতে ঘুমানোও হয়নি।খুব সকালেই গোসল আর শেভ করে মোটামুটিভাবে সভ্য ছেলে হয়ে প্রস্তুত মুফসাত।ঢাকা শহরের চিরচেনা জ্যামের ভয়ে একটু আগেই বের হল।গাড়িতে উঠার কিছু পর এই চিরচেনা ঢাকা অচিন ঢাকা হিসেবে হাজির।অকল্পনীয়ভাবে সে বনশ্রী থেকে ধানমন্ডিতে ৪৫ মিনিটে পৌছে গেল।।ক্লাসের আরো ১ ঘন্টার মত বাকি।সময়ের সদ্ব্যবহার আর মাথার ঝিমানি কমাতে ভার্সিটির পাশে এক টংয়ের দোকানে বসা।।৩ কাপ চা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুধা পান করতে করতে ৩৫-৪০ মিনিট শেষ।।অতঃপর ভার্সিটির ভিতর পা রাখা।এক অন্য রকম অনুভূতি।।

ওরিয়েন্টশন রুমে যাওয়ার আগেই সিনিয়র আপুদের উপর ক্রাশ সংখ্যা মোটামুটিভাবে ৫০ এর কাছাকাছি।।নিজের মনের মাঝে আঁকা সপ্নগুলো যেন হঠাত করেই আজ নাড়া দিয়ে উঠছে।ওরিয়েন্টশন রুমের দরজার সামনে এসে বোঝা গেল তার ক্রাশ লিস্ট ছোট করা দরকার ছিল।একটু দেরী হওয়াতে শেষদিকের চেয়ারে গিয়ে বসা।দেরী হওয়াতে মনে মনে যখন নিজেকে শাসন করা হচ্ছিল ঠিক তখন তাকে শান্তনা দিতেই বোধহয় মেয়েটির রুমে প্রবেশ।

আহামরি কিছু না,বর্তমান সময়ের আধুনিক মেয়েগুলোর মত এত ফ্যাশন সচেতন না,মাথায় ঘোমটা টানা এক সাধারন মেয়ে।যার মুখে এক চিলতে হাঁসি পুরোটা সময় জুড়ে।শত মেয়ের মাঝেই মুফসাতের চোখ ঘুরে ফিরে কেবল এই মেয়েটির দিকে।স্যারেরা কি বলছে সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই।যথারীতি একটা সময়ে ওরিয়েন্টশন শেষ হল।রুম থেকে বের হয়ে এই হাস্যোজ্জল মেয়েটিকে অনেক খুজেও না পাওয়ার কারনে মুফসাতের অপেক্ষার দিন শুরু।।

প্রথমবারের মত এই একটি মেয়ের জন্য মুফসাতের একটি নির্ঘুম রাত কাটলো।।আশ্চর্য হলেও সত্য ওরিয়েন্টশনের ৬ দিন পরও সেই হাস্যোজ্জল মেয়েটির মুখচ্ছবি মুফসাতের চোখে ভাসছে!!!

সম্ভবত এটাই প্রেমের বাঁশি।সবকিছুতেই যেন সেই মেয়ের ছবি।।



৭ দিন পর,

ক্যাম্পাসের এই কোনা ওই কোনা ঘুরে ক্লান্ত হয়ে এক ক্লাসমেটের সামনে ক্যান্টিনে বসে আছে মুফসাত।।ক্লাস শুরু কিন্তু এখনো সেই হাস্যোজ্জল মেয়েটিকে খুজে পেল না মুফসাত।এখন পর্যন্ত সেই হঠাত করে আসা মেয়েটির নামটিও জানা হল না।।

ভার্সিটি ক্লাসের দ্বিতীয় দিন।গণিত ক্লাস চলছে।হঠাত করে দেখা সেই হাস্যোজ্জল মেয়েটির আবারও হঠাত ক্লাসের দরজার সামনে।যতটুকু মিষ্টি ভেবেছিল গলা তার চেয়ে মিষ্টি গলায় প্রবেশের অনুমতি চাওয়া আর মুফসাতের প্রথম শোনা।।স্যারের নাম জানতে চাওয়া অতঃপর এক অদ্ভুত ভঙ্গিতে বলা ‘আমি রিনি’।।

কাকতালীয়ভাবে মুফসাতের ভালো লাগা বাড়িয়ে দিতে আর রিনির কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দিতেই বোধহয় মুফসাতের ঠিক পেছনের চেয়ারে রিনির বসা।

ক্লাস শেষ।।ইচ্ছে করেই মুফসাত দেরী করছে ব্যাগ গোছাতে।চিন্তা করছে কি বলে শুরু করা যায়।হঠাত রিনির ডাক পিছন থেকে...

-এক্সকিউজ মি।

-ইয়েস প্লিজ।

-আচ্ছা তুমি কি শুরু থেকে ক্লাস করছ?সব লেকচার তুলছো?আমি তুলতে পারিনি।

(সৌভাগ্যক্রমে আজকে মুফসাত লেকচার খাতায় তুলে নিয়েছে)

-হ্যাঁ।তুলে নিতে পারো।

-তুলতে দিলে অবশ্যই তুলে নিব।

-ক্যান্টিনে চল,,ওখানে গিয়ে বসে তুলে নিতে পারো।

-হুম চল।।

ডিপ ডিপ বুকে রিনিকে সাথে নিয়ে ক্যান্টিনের দিকে হাটছে মুফসাত।রিনি নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠল...

-আচ্ছা তোমার নামটা জানা হল না।

-আমি মুফসাত।তুমি?

-রিনি।রিনি রহমান।।



ক্যান্টিনের এক কোণে বসে টুকটাক কথা আর লেকচার তুলে নেয়া।এভাবেই শুরু রিনি মুফসাতের বন্ধুত্বের।।



কয়েকদিন পরের কথা।মুফসাত রিনি ফোনে কথা বলছে ঘড়িতে তখন রাত ১১:৪০ এর মত।এই কথা ঐ কথা নিয়ে দুইজনের ফাজিলামি চলছে।কথায় কথায় মুফসাত জানলো রিনির জীবনে এমন একজন আছে যাকে নিয়ে রিনি সপ্ন দেখে।এটা শোনার পর মুফসাত কিছুটা চুপ মেরে কথা বলছিল।

রিনি হঠাত করেই বলে উঠলো...

-আচ্ছা আমি এখন রাখি

-কোন সমস্যা?

-না না, রিফাত ফোন করছে তাই।

-ও আচ্ছা।বাই...

-বাই...



‘শুরুর আগেই শেষ।কি দরকার ছিল বন্ধুত্বের।দূর থেকেই দেখতাম।খুব কাছের বন্ধু হিসেবেই থাকব সারাজীবন।’-ফোন রাখার পর এমন চিন্তা করছে মুফসাত......





দুই বছর পরের কথা।রিনি মুফসাতের এখন অনেক ভাল বন্ধুত্ব।সব ধরণের সাহায্য দুইজন দুইজনকে করে আসছে।তাদের এই বন্ধুত্ব অনেকের কাছেই ঈর্ষার বিষয়।গত বছর রিনি আর রিফাতের ২ বছর পুর্তিতে ছোটখাটো এক সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করেছিল মুফসাত।এরপরেই চাকরীর সুবাধে রিফাতের বাহিরে চলে যাওয়া।রিনির সপ্নে যেতে না পারলে নিজেকে রিনির সপ্নগুলো যাতে না ভাঙ্গে তার চেষ্টা করে যাচ্ছে মুফসাত।।



রাত ৩ টার কাছাকাছি।মুফসাত মুভি দেখা শেষ করে মাত্র ঘুমাতে যাবে এমন সময়ে মোবাইলের স্ক্রীনে রিনির নাম জ্বলে উঠাটা কিছুটা অস্বাভাবিক।

-কীরে এত রাতে?ঘুমাস নাই কেন??

-...............(কিছুই শোনা যাচ্ছে না)

-হ্যালো,,,,কেউ কি আছে!!!

-(ফুফিয়ে কেঁদে উঠার শব্দ)

-কি হয়ছে?কোন সমস্যা?কাঁদছিস কেন?

-রিফাতের আজ গায়ে হলুদ!!!

-............ হোয়াট!!রিফাত ভাই না বাহিরে??

-........................

-ঠিক করে বলবিতো কি হয়ছে?উল্টাপাল্টা এগুলো কি বলছিস?চুপ করে আছিস কেন বল।।

-(আবারো কান্নার আওয়াজ)

-খুলে বল কি হয়ছে।

-আজকে ১৪ দিন রিফাত দেশে।আমি জানতাম না।একটু আগে আফসানা ফোন দিয়ে বলল।

(আবারো কান্না)

-আফসানাতো ভুলও বলতে পারে।

-আফসানা বলার পর আমি ওর বাহিরের নাম্বারে অনেক ফোন দিই।কিন্তু কল যায় নি।একটু আগে বাসার নতুন নাম্বার থেকে ওর দেশের নাম্বারে কল দিই।আর তখনি বুঝলাম আমি হেরে গেছি!!!

(কান্না..............................)





সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা মুফসাতের জানা নেই।মানুষ এতটা নিচ হতে পারে?যে মানুষ সপ্নগুলোকে একটার উপর একটা দাড় করালো,,,,হঠাত এক লাথি দিয়ে কিভাবে ভেঙ্গে ফেলতে পারে সেই মানুষ??





মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৮

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: সাধারণ

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২৬

ক্ষুদ্র মস্তিস্ক বলেছেন: ভাই আমি সাধারণ একজন তাই লেখাটাও সাধারণ হওয়াটা স্বাভাবিক।।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০১

অপ্রচলিত বলেছেন: বেশ ভালো লাগলো। সাবলীল খোলামেলা লেখনী। +++

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২২

ক্ষুদ্র মস্তিস্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.