![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোরআন মহান আল্লাহর বাণী বিধর্মীদের কাছে তার প্রমাণপর্ব -০১)
এ কোরআন কি বর্বর অশিক্ষিত জাতির নিরক্ষর নবী দ্বারা রচিত হওয়া সম্ভব ? আপনাদের মুক্তমনা বিবেক কি বলে ?
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُوا شُهَدَاءَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ [٢:٢٣]
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ ۖ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ [٢:٢٤]
“আমি আমার বন্দার প্রতি যাহা অবতীর্ন করেছি, তাহাতে তোমাদের বিন্দুমাত্র কোন সন্দেহ থাকলে, তোমরা ইহার অনুরুপ কোন সূরা আনয়ন কর। এবং তোমরা যদি সত্যবাদি হও তাহলে আল্লাহ ব্যাতিত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে নিয়ে আস। যদি আনয়ন না কর তবে সেই আগুনকে ভয় কর কাফিরদের জন্য যাহা প্রস্তুত করিয়া রাখা হয়েছে। (সূরা বাকারা:২৩, ২৪)।
এটা এমন এক বিষ্ময়কর কথা, যা মানব ইতিহাসে কোন গ্রন্থকারই নিজের বইয়ের পক্ষে দাবি করেন নি এবং জ্ঞানবুদ্ধি থাকা অবস্থায় কোন মানুষই এমন সাহস করতে পারবেন না যে, সে কোরআনের মত একটা বই লিখে ফেলেছে।
কোরআনের এই চ্যালেঞ্জ চলে আসছে সেই কোরআন নাযিলের সময় থেকে। শত শত লোক, শত শত সংগঠন এই চ্যালেঞ্জ এর মোকাবেলা করতে এগিয়ে এসেছে। চরমভাবে ব্যার্থ হয়ে সম্পূর্ণ নিরাস হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের সাবাইকেই।
দুটি ঘটনা :
১. লবিদ বিন রাবিয়া। তৎকালীন আরবের শেষ্ঠ কবি। তার শক্তিশালী ভাষা আর তেজোদিপ্ত ভাব তাকে সারা আরবে পরিচিত করে তুলেছিল। উনি যখন কোরআনের এই চ্যালেঞ্জের কথা জানলেন তখন জবাবে একটি কবিতা রচনা করে কাবা শরীফের চৌকাঠের উপর ঝুলিয়ে রাখলেন। পরে একজন মুসলমান কোরআনের একটি সূরা লিখে ঐ কিতাবের পাশে ঝুলিয়ে দেন।
লবিদ পরের দিন কাবার দরজায় এলেন এবং ঐ সূরা পাঠ করলেন। অত:পর বললেন, “নি:সন্দেহে এটা মানুষের কথা নয় এবং আমি এর উপর ইমান আনলাম” অত:পর তিনি প্রকাশ্য কালেমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন। তিনি কোরআনের ভাব আর ভাষায এতো বেশী প্রভাবান্নিত হন যে, পরবর্তীতে তিনি আর কোনদিন কোন কবিতাই রচনা করেন নি।
২. দ্বিতীয় ঘটনাটি হল ইবনে মুকাফ্ফা এর। যা ঘটে কোরআন নাযিলের প্রায ১০০ বছর পর। এই ঘটনা প্রথমটির চাইতেও চাঞ্চল্যকর। এই ঘটনা সম্বন্ধে প্রাচ্যবিদ Wollaston বলেন “That Muhammad is boast as to the literary excellence of Quran was not unfounded is further evidence by a circumstance which occurred about a century after the establishment of Islam”
ঘটনাটি এরকম, ধর্মবিরোধীদের একটি সংগঠন সিদ্ধান্ত নিল ওরা কোরআনের অনুরুপ একটি বই লিখবে। এই লক্ষে ওরা ইবনে মুকাফ্ফার (মৃত্যু-৭২৭ খৃ কাছে এলো। যিনি ছিলেন ঐ সময়ের সবথেকে জ্ঞানী, প্রখ্যাতি সাহিত্যিক এবং বিষ্ময়কর প্রতিভার অধিকারী। তিনি তার নিজের কাজের উপর এতো বেশী আস্থাবান ছিলেন যে উনি সাথে সাথে রাজি হয়ে যান। এবং বলেন এক বছরের মধ্যে তিনি কাজটি করে দিবেন। শর্ত ছিল এই এক বছরকাল সময়টা যাতে তিনি পুরোপুরি মনোযোগের সাথে সূরা রচনা চালিয়ে যেতে পারেন এ জন্য তার যাবতীয় সাংসারিক আর অর্থনৈতিক কাজের দায়িত্ব সংগঠনটিকে নিতে হবে।
ছ’মাস পেরিয়ে গেলে সঙ্গিরা কি পরিমান কাজ হয়েছে জানার জন্য তার কাছে এলো। তারা দেখতে পেল বিখ্যাত ঐ ইরানী সাহিত্যিক অত্যন্ত ধ্যানমগ্ন অবস্থায় হাতে একটি কলম নিয়ে বসে আছেন; তার সামনে রয়েছে একটি সাদা কাগজ এবং কক্ষের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছিড়েফারা কাগজের স্তুপ। অসীম প্রতিভাধর, যাদুকরী ভাষার অধিকারী ঐ ব্যাক্তি আপন সর্বশক্তি ব্যায় করে ছয়মাস চেষ্টা করে কোরআন তো দূরের পথ একটি আয়াতও রচনা করে উপস্থাপন করতে পারেন নি।
যা হোক শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত লজ্জিত ও নৈরাশ্যমনে তিনি কাজে ইস্তফা দেন। এই ঘটনাটি ঘটেছিল কোরআন নাযিলের ১০০ বছর পর। কুরআনের ঐ চ্যালেঞ্জ কত শতাব্দি পেরিয়ে গেছে আজো বিদ্যমান। এই চ্যালেঞ্জ থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত।
সত্য প্রত্যাখানকারীরা কি ভেবে দেখে না পৃথিবীর তাবত তাগুতি শক্তি কিভাবে পরাজিত হয়ে আছে কোরআনের কাছে ?
কোরআন নাজিলের সময় বৈজ্ঞানিক পরিস্থিতি :
সপ্তম শতাব্দিতে কোরআন নাযিল হয়। মানুষ তখন পযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে কুসংস্কার ও প্রাচীন উপকথায় বিশ্বাসী ছিল। তখন মানুষ মহাবিশ্ব, পদার্থ, জীববিজ্ঞান, মানুষের সৃষ্টি, বায়ুমন্ডলের গঠন এবং জীবন ধারনের প্রয়োজনীয় উপাদান ইত্যাদি সম্বন্ধে সঠিক কিছুই জানতো না। এই যেমন-
সে সময় তারা বিশ্বাস করত যে,
১. পৃথিবী সমতল। গোলাকার নয়।
২. পাহাড় আকাশকে ধরে রাখে। অর্থাৎ পাহাড় হল আকাশের খুটি বা স্তম্ভ।
৩. পৃথিবীর দুই প্রান্তে বিশাল বিশাল পাহাড় আছে।
৪. মানুষের শুক্রানুর ভিতরে ছোট্ট একটা মানুষ থাকে। ওটাই মায়ের পেটে বড় হয়।
৫. বাচ্চার লিঙের জন্য মা দায়ি।
৬. গাছের লিঙ্গ নেই।
৭. কর্মি মৌমাছি হল পুরুষ মৌমাছি।
৮. ব্যাথা লাগে মস্তিস্কে। ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
এরকম এক সময়, যখন মানুষের জ্ঞান বিজ্ঞানের বহর ছিল ঠিক উপরের অবস্থা সেই সময়েই নাযিল হয়েছিল আল-কোরআন। যাতে শুধু বিজ্ঞানের সাথে রিলেটেড আয়াতের সংখ্যাই আছে হাজারের বেশি। অথচ সেই কোরআনেরই ১ টি আয়াতও পর্যন্ত মিথ্যা প্রমাণিত হয় নি। বরং বিজ্ঞানেরই কিছু ভুল ধারণা পরবর্তিতে সংশোধন করলে দেখা গেছে, তা কোরআনের সাথে মিলে গেছে। এরকমই কয়েকটি উদাহরণ দিয়েই বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু করা যাক।
১। আকাশের খুটি :
সেই সময়ে নাযিল হওয়া কোরআনে লেখা হল- আকাশের কোন দৃশ্যমান খুটি নেই। “তিনিই আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলিকে উচুতে স্থাপন করেছেন কোন দৃশ্যমান স্তম্ভ ছাড়া, যা তোমরা বুঝতে পারবে। (সূরা রাদ:২)
আমাদের বিজ্ঞান আজ জানিয়েছে আকাশমন্ডলির কোন দৃশ্যমান স্তম্ভ নেই। এর আছে একটি অদৃশ্য স্তম্ভ-মধ্যাকর্ষন শক্তি! আর কোরআনও বলে দিচ্ছে একই কথা।
২। মহাবিশ্বের আদি অবস্থা :
আজকের বিজ্ঞান বলছে মহাবিশ্ব গ্যালাক্সিগুলো তৈরী হওয়ার পূর্বে সব পদার্থগুলো গ্যাসিয় অবস্থায় একত্রে ছিল।চলুন দেখি দেড় হাজার বছর আগের কোরআন এ বিষয়ে কি বলে- পৃথিবী সৃষ্টি সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কোরআন বলেছে- “অত:পর তিনি আকাশের দিকে মনযোগ দিলেন যা ছিল ধুমৃকুঞ্জ, অত:পর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন তোমরা উভয়ে আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল স্বেচ্ছায় আসলাম।” (সূরা হামিম আস সিজদাহ : ১১)।
কিভাবে এই আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা কোরআনে এলো!
৩। মহাবিশ্বের প্রসারনশীলতা :
“আমি আকাশ নির্মান করিয়াছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা-সম্প্রসারণকারী” (সূরা জারিয়াত : ৪৭)
মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল এটা এই কিছুদিন আগে প্রমাতি হয়েছে। বিজ্ঞানী আরভিন সর্বপ্রথম আলোর লোহিত অপসারন পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রমাণ করেন এ বিশ্বজগত সম্প্রসারিত হচ্ছে, গ্যালাক্সিগুলো একটার থেকে আরেকটা দূরে সরে যাচ্ছে।
মুহাম্মদ (স এর কাছে কি শক্তিশালী কোন টেলিস্কোপ ছিলো, যা দিয়ে উনি গ্যালাক্সিগুলোর সরে যাওয়া দেখেছিলেন ?
৪। বিগ ব্যাং থিওরি :
“সত্য প্রত্যাখানকারীরা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলি ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অত:পর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম” (আম্বিয়া:৩০)।
আয়াতটি আমাদেরকে একেবারে পরিস্কারভাবে বলছে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রেরা একসময় একজায়গায় পুঞ্জিভুত ছিল। এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ে এদের জন্ম হয়।
আজকের বিজ্ঞান কি বলে এ সম্বন্ধে ? ষ্টিফেন হকিং এর বিগ ব্যাং থিওরী আজ সর্বময় স্বীকৃত। এ থিওরী অনুযায়ী মহাবিশ্বের সকল দৃশ্য অদৃশ্য গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টির শুরুতে একটি বিন্দুতে পুঞ্জিভুত ছিল। এবং একটা বিশাল বিষ্ফোরণের মাধ্যমে এরা চারিদেকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। কিভাবে মরুভুমির বুকে সংকলিত দেড় হাজার বছর আগের একটি বই এ এই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা ধারণ করতে পারল ?
ড:মিলার বলেছেন, এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা-গবেষণার পর কোরআন যে ঐশী গ্রন্থ তা মেনে নিতে বাধ্য হই। যারা প্রচার চালাচ্ছে কোরআন হযরত মুহাম্মদ (সএর নিজস্ব বক্তব্য তাদের দাবি নাকচ করার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট।
ড:মিলার বলেছেন, দেড় হাজার বছর আগে ইসলামের নবীর পক্ষে কিভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে কথা বলা সম্ভব, যিনি কোন দিন কোন স্কুলে পড়ালেখা করেন নি। কারণ এটি এমন এক বৈজ্ঞানিক বিষয়, যা সম্পর্কে তত্ত্ব আবিষ্কার করে মাত্র কয়েক বছর আগে ১৯৭৩ সালে নোবেল পুরুস্কার পেয়েছেন এক বিজ্ঞানী। মিলারের মতে এই আয়াতে সেই বিগ ব্যাং এর কথাই বলা হয়েছে যার মাধ্যমে পৃথিবী, আকাশমন্ডলী ও তারকারাজি সৃষ্টি হয়েছে।এই বিগ ব্যাং থিওরীর একটা অনুসিদ্ধান্ত হল “অনবরত দূরে সরে যাওয়া গ্রহ নক্ষত্রগুলো একসময় আবার কাছাকাছি আসা শুরু করবে কেন্দ্রবিমুখী বল শুন্য হয়ে যাওয়ার ফলে এবং সময়ের ব্যাবধানে সব গ্রহ নক্ষত্র আবার একত্রে মিলিত হয়ে একটা পিন্ডে পরিনত হবে”।
“সেই দিন আকাশমন্ডলীকে গুটিয়ে ফেলব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর” (সূরা আম্বিয়া : ১০৪)
কি কিছু বুঝা গেল ? এই হল কোরআন———–!
৬। কে স্থির আর কে গতিশীল :
টলেমী বিশ্বাস করতেন থিওরী অফ জিওছেনট্রিজম এ। আর মতবাদটি হল- পৃথিবী একদম স্থির, আর সূর্য সহ সব গ্রহ নক্ষত্রগুলো ঘুরছে পৃথিবীর চারিদেকে। এ মতবাদটি ষোরস শতাব্দি পর্যন্ত বিজ্ঞান হিসেবে টিকে ছিলো। এরপর কোপার্নিকাস এসে প্রমাণ করলেন, পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহগুলো সূর্যের চারিদেকে প্রদক্ষিণ করছে। মাত্র ২৫ বছর আগেও বিজ্ঞান মানুষকে জানাচ্ছিল সূর্য স্থির থাকে, এটি তার নিজ অক্ষের চারপাসে প্রদক্ষিন করে না।কিন্তু আজ এটা প্রমানীত যে পৃথিবী ও সূর্য দুটোই গতিশীল। আর এদের দুজনের রয়েছে আলাদা কক্ষপথ। চলুন দেথি দেড় হাজার বছর আগের কোরআন এই ব্যাপারে কি বলে !
“তিনিই একজন যিনি নিদ ও রাত সৃষ্টি করেছেন, সুর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করছে। (সূরা আম্বিয়া:৩৩)
“এবং সূর্য তার নিজস্ব পথে চলছ যা সর্বশক্তিমানেরই আয়ত্বে। তিনিই সব জানেন।”(সূরা ইয়াসিন:৩৮)
এই কিছুদিন আগে প্রমাণিত হয়েছে যে, সূর্যও স্থির নয় বরং গতিশীল এবং ২০ লক্ষ বছরে একবার ওর নিজস্ব কক্ষপথে আবর্তন করে। আর এর গতি ৭২০০০০ কিমি/ঘন্টা।
“আকাশ, যা পথ ও কক্ষপথ দ্বারা পরিপূর্ণ”(সূরা জারিয়াত:৭)
এটা প্রমাণ করে যে, মহাবিশ্বের অন্য তারকারাজিও স্থির নয় বরং গতিশীল। যার সাথে আধুনিক বিজ্ঞান একাত্বতা ঘোষণা করেছে।
৭। ব্লাক হোলস :
“আমি শপথ করছি সেই জায়গার যেখানে তারকারাজি পতিত হয়। নিশ্চই এটা একটা মহাসত্য, যদি তোমরা তা জানতে।” (সূরা ওয়াক্বিয়া : ৭৫, ৭৬)
৭৫ নং আয়াতটি স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে, মহাবিশ্বে এমন জায়গা আছে, যেখানে তারকা পতিত হয়। ঠিক পরের আয়াতেই এটাকে, মহাসত্য বলে দাবি করা হয়েছে। মহাকাশে এরকম স্থান আছে, এটা মাত্র কিছুদিন আগে আবিষ্কার করা হয়েছে। এই জায়গাগুলোর নাম দেয়া হয়েছে ব্লাক হোলস। এগুলোতে শুধু নক্ষত্র নয়, যে কোন কিছুই এর কাছাকাছি এলে, এখানে পতিত হতে বাধ্য।
৮। নিরাপত্তার ছাদ :
“আমরা আকাশে একটি সংরক্ষিত ও নিরাপত্তার ছাদ বানিয়েছি।” (সূরা আম্বিয়া : ৩২)।
আয়াতটি বলছে আকাশে এমন কিছু আছে যা পৃথিবীকে নিরাপত্তা দেয়।
১.আমাদের পৃথিবীল বায়ুমন্ডলের উপরিভাগ কোটি উল্কাপাত থেকে হামেশা রক্ষা করছে। এটা এমন কিছু যা পৃথিবীকে নিরাপত্তা দেয়।
২. বায়ুমন্ডলের একেবারে উপরিভাগে ভ্যান-এলেন-বেল্ট নামের একটি অতিরিক্ত স্তর রয়েছে। এই স্তরটি প্রায় ৬০,০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত। এই স্তর শুধুমাত্র সেই সমস্ত রশ্মিই পৃথিবীতে আসতে দেয় যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়। এটা সত্যি বিষ্ময়কর যে শুধু রেডিও ওয়েভ বা আল্ট্রা ভায়োলেট রে এর মত ক্ষতিকর রশ্মিগুলোই পৃথিবীতে আসতে পারে না। যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। একইসাথে এই স্তর সূর্যের ক্ষতিকর কসমিক রে কে পৃথিবীকে আসতে বাধা দেয়। অতিরিক্ত কম ঘনত্বের কারণে, এই স্তরটি আয়োনিত বা প্লাজমা অবস্থায় আছে। এই প্লাজমা মেঘ প্রায় ১০০ বিলিয়ন আনবিক বোমার (হিরোসিমায় মাত্র ১ টা ফেলা হয়েছিল) সমান পরিমান ক্ষতিকর শক্তি বিশিষ্ট রশ্মিকে আটকিয়ে দিতে পারে!
৩. আবার এই স্তর পৃথিবীকে মহাকাশের অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে, যা মাইনাস ২৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
দেড় হাজার বছর আগে মহানবী (স কি করে জানলেন, পৃথিবীর উপরের এই সংরক্ষিত আর নিরাপত্তার ছাদের কথা ? তার এই তথ্যের উৎস কোথায় ?
৯। আকাশের চক্রশীলতা বা পর্যায়বৃত্ততা :
“শপথ চক্রশীল আকাশের এবং বিদারণশীল পৃথিবীর”। (সূরা তারিক:১১-১২)
আমাদের বায়ুমন্ডল সাতটি স্তরে বিভক্ত। পত্যেকটি স্তর কিছু ভিন্ন চক্র সম্পূর্ণ করতে কাজ করে। এই যেমন-
ট্রপোস্ফিয়ার : তের থেকে পনের কিলোমিটার উর্দ্ধে অবস্তিত। বায়ু থেকে জলীয় বাস্পকে ঠান্ডা করে বৃষ্টির ফোটা তৈরী করে। এভাবে পানিকে আবার পৃথিবীতে পাঠাতে সাহায্য করে। এভাবে পানি চক্র পূর্ণতা পায়। এই স্তর না থাকলে পৃথিবী সম্পূর্ণ শুস্ক ও অন্ধকার থাকতো।
ওযোন স্তর : ২৫ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি ও রেডিও রশ্মি থেকে পৃথিবীকে বাচতে সাহায্য করে। এই রশ্মিগুলোকে পুনরায় মহাকাশে পাঠিয়ে দেয়।
আয়নোস্ফিয়ার : পৃথিবী হেত পাঠানো বিভিন্ন রেডিও ওয়েভ আবার পৃথিবীতে ফেরত পাঠাতে সাহায্য করে। যা দ্বারা রেডিও ও টেলিভিশন সিস্টেম কাজ করছে।
…………………………………………বাকীগুলো আর লিখলাম না।
১০। সাত আসমান :
“তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন, যা কিছু যমিনে রয়েচে সেই সমস্ত, অতপর তিনি মনোযোগ দিয়েচেন আকাশের প্রতি। বস্তুত তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত”। (সূলা বাকারাহ:২৯)
আমাদের মাথার উপরের আকাশ অর্থাৎ বায়ুমন্ডল সাতটি বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত। এটা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। এই কিছুদিন আগে বিংশ শতাব্দির আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা ইহা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানীত হয়েছে। কোরআনে দেড় হাজার বাছর আগে এই সাতটি স্তরের কথাই এভাবে বলেছে!খুবই বিষ্ময়কর।
এই সাতটি স্তরের নামগুলো এরকম- ট্রাপোস্ফিয়ার, স্ট্রাটোস্ফিয়ার, ওযনোস্ফিয়ার, মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার, আয়নোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিযার।
১১। ভূমির সাতটি স্তর :
“তিনিই আল্লাহ যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং পৃথিবী সেই একই পরিমানে”। (সূরা তারেক:১২)
আয়াতটি আমাদের কি বলছে ? আয়াতটি আমাদের বলছে শুধু আসমানই নয় বরং পৃথিবীরও সাতটি স্তর রয়েছে। মোহাম্মদ (স তখনকার দিনে কিভাবে একথা বলতে পারেন!যখন মানুষ পৃথিবীর ব্যাসার্ধ নির্ণয় করাই শেখেনি ?
আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে এর উপরিভাগ পর্যন্ত সাতটি স্তর রয়েছে। গঠনগত এবং কার্যগত দিক থেকে একটার সাথে আরেকটার কোন মিলই নেই। এগুলো হল – Crust, 2. Lithosphere, 3. Upper mantle, 4. Asrenosphere, 5. Lower mantle, 6. Outer core, 7. Inner core. (Robart Gardner, Samuel F, Allyn and Bacon, Newton, Howe: General science-1885 Page-319-322)
১২। চাদের আলো কার আলো ? :
“আল্লাহ তায়ালাই এই সূর্যকে করিয়াছেন তেজস্কর আর চন্দ্রকে করিয়াছেন পিতিবিম্বিত আলো”। (সূরা ইউনুস:৫)
“কত কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাসিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ এবং চাদ-যাহার রহিয়াছে ধার কার আলো”। (সূলা ফুরকান:৬১)
চাদের আলো যে প্রতিবিম্বিত আলো অন্য কথায় ধার করা আলো একথাটা দেড় হাজার বছর আগের একটা বইয়ে আসাটা খুবই স্বাভাবিক, যদি সে বইটা হয় এমন এক মহাসত্বার কাছ থেকে যিনি সাময়িক জাগতীক ধ্যান-ধারণার অনেক উর্ধে। সুবহানাল্লাহ। বিজ্ঞান সুস্পষ্ট কোরআনের সাথে এখন একমত।
১৩। থিওরী অফ রিলেটিভিটি :
রিলেটিভিটি থিওরী মতে আমাদের দৃশ্যমান সময়ের পরিমান, আমাদের নিজেদের আপেক্ষিক বেগের উপর নির্ভর করে। সহজ কথায় সময়ের পরিমাণ বেগের সাথে পরিবর্তনশীল। আইনস্টাইনের আগে কোন বিজ্ঞানী আমাদেরকে এই বিষয়ে ধারণা দিতে পারেন নি। মানুষ তখন সময়কে একটা ধ্রুব রাসি হিসেবে বিবেচনা করতো। আথচ দেড় হাজার বছর আগের কোরআনে আছে আমরা যে সময়কে বাস্তবে বিবেচনা করতে পারি, সেই সময়ই অন্য একটি ক্ষেত্রে সময়ের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
“ফেরেশতারা আর রুহেরা আল্লাহর দিকে উর্ধগামী হয়, এমন একদিনে যাহার পরিমান একহাজার বছরের সমান।” (সূরা মায়ারিজ:৪)
“তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কার্য পরিচালনা করেন, অত:পর তা তার কাছে পৌছবে এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান”। (সূরা সেজদাহ:৫)
সময়ের পরিমান ক্ষেত্রভেদে ভিন্ন হয়, এই কথাটা থিওরী অফ রিলেটিভিটি যতটা পরিস্কারভাবে বলেছে, তার থেকেও বেশি পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে এই আয়াতদুটিতে। ভুলে গেলে চলবেনা, থিওরীটি আবিষ্কার হয়েছে মাত্র এক শতাব্দি আগে!
১৪। পর্বতের গঠন ও কাজ :
“আমি কি করিনি ভূমিকে বিস্তৃত এবং পর্বতমালাকে পেরেকের মত করে” (সূরা নাবা:৬,৭)।
আয়াতটি বলছে পর্বতমালাকে পেরেকের মত করে তৈরী করা হয়েছে।
পেরেকের কাজ হলো দুই বা ততোধিক কাষ্ঠখন্ডকে এমনভাবে জোরা লাগানো, যাতে সংযুক্ত বস্তুটিকে নাড়াচড়া করে হলেও খুলে না যায়।
আমরা যে বিস্তির্ণ ভূমির উপর বিচরণ করি, তা মূলত একধরনের পাতলা প্লেট। এদেরকে বলা হয় টেকটোনিক প্লেট। পৃথিবীর ঘুর্ণনের ফলে এই প্লেটগুলো সদা নড়াচড়া করে থাকে। আধুনিক বিজ্ঞান ব্যাখ্যা দিয়েছে, দুই বা ততোধিক প্লেট যখন একটির উপর আরেকটি চলমান হয়, অথবা ধাক্কা খায়, তখন এদের মিলনস্থলে পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। এই পাহাড় ভূমির উপরে যতদূর উপরে উঠে, পরের অংশে অনেকগুন পরিমানে ভূমির নিচে দেবে যায়। অনেকটা ভাজ সৃষ্টির মত। এর ফলে টেকটোনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়া কমে যায়। অর্থাৎ এই প্লেটগুলোর সংযোগ স্থলে পাহাড় বা পর্বত অনেকটা পেরেকের মত কাজ করে। পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ একটা ভীষণ উত্তপ্ত গলিত তরল পদার্থে পূর্ণ। পেরেকের আকৃতির এই পাহাড়গুলো না থাকলে, পৃথিবীর ঘুর্ননের কারনে, হয়তো কোন একদিকের প্লেট সরে গিয়ে ঐ অঞ্চলের গলিত তরলকে বাইরে বের হয়ে আসার সুজোগ করে দিতো। ফলে ভয়ানক বিপর্যয় ঘটতো।
যেমন এভারেষ্ট পর্বতমালার সবচেয়ে উচু মাথা ভূমির প্রায় ৯ মাইল উপরে উঠেছে। ঠিক একই জায়গায় এর ভিত্তিমূল মাটির নীচে পৌছে গেছে ১২৫ কিমি পর্যন্ত। শুধু যদি এই অংশটিকে আমরা বিবেচনা করি, তাহলে একে দেখতে মনে হবে-দৈত্যাকার এক পেরেকের মত!
আর কোরআন চমৎকার ভাবে বলে দিয়েছে একথাটাই দেড় হাজার বছর আগে। আচ্ছা মুহাম্মদ (স কি পৃথিবী ঘুড়ে পর্বতগুলোর নিচে কি রকম তা দেখেছিলেন ?
১৫। পর্বতমালার অবস্থান :
“তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর (আসলে সেগুলো সচল), অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত সচল হবে। এটা আল্লাহর কারিগরি যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংগত। তোমরা যা কিছু করছ তিনি তা অবগত।” (সূরা নামল:৮৮)
১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সোসাইটি (ওয়াশিংটন ডিসি) প্রমাণ করে যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়ার কারণে পাহাড়গুলোও সম্পূর্ণ স্থির নয় বরং প্রতি বছর ২-৫ সেন্টিমিটার করে সরে যাচ্ছে। যদিও এদের কার্যক্রম পেরেকের মতই। আর আমরা পাহারকে স্থির মনে করে যে একটা ভুলের মধ্যে আছি. একথাটাই কোরআন বলেছে কাব্যিকভাবে।
১৬। লোহার রহস্য :
আমি লৌহ নাযিল করেছি, যার মাঝে অনেক শক্তি রয়েছে এবং যা মানবজাতির অনেক ব্যবহারে আসবে।” (সূরা হাদীদ:২৫)
বিজ্ঞান আমাদের জানাচ্ছে, আমাদের সৌরজগতের কোন গঠন প্রনালী নেই যা লোহার উৎপত্তি ঘটাতে পারে। লোহা কেবলমাত্র সূর্যের চেয়ে বড় কোন নক্ষত্রেই তৈরী হতে পারে যেখানে তাপমাত্রা কোটি ডিগ্রির কাছাকাছি। এ রকম কোন গলিত নক্ষত্রের বিস্ফোরনের মাধ্যমেই লোহার উৎপত্তি সম্ভব। আর এই ধরনের বিস্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্ট লোহার টুকরাগুলো পরবর্তিতে পৃথিবীতে পরার ফলেই লোহা অস্তিত্বলাভ করেছে।
অর্থাৎ লোহা যে আকাশ থেকে এসেছে এটা বিজ্ঞান মেনে নিয়েছে।
আরেকটি বিষয় লক্ষনীয়, সুরা হাদিদ (হাদীদ অর্থ লোহা) কোরআনের ৫৭ নং সূরা। আজব ব্যাপারটা হলো ‘আলহাদিদ’ এর সংখ্যাগত অর্থও ৫৭, অর্থাৎ আরবীতে এই শব্দের মান হল ৫৭।
শুধু ‘হাদিদ’ এর সংখ্যাগত অর্থ হল ২৬, যা লোহার এটমিক নাম্বার (২৬) এর সাথে মিলে যাচ্ছে। আর সূরাটির ১ থেকে ২৫ নং আয়াত (২৫ নং আয়াতে লোহার গুন সম্বন্ধে বলা হয়েছে) পর্যন্ত হাদিদ শব্দটি এসেছে ২৬ বার। (হা=৮, দাল=৪, ইয়া=১০, দাল=৪)।
১৭। পেট্রোলিয়ামের সৃষ্টি :
“তিনি তৃনাদি বের করে এনেছেন, অত:পর তিনিই তাদের পরিনত করেন কাল বন্যার পানির মত” (সুরা আলা:৪,৫)
গাছ-গাছরা, ফার্ন, শ্যাওলা এসব অরগ্যানিক পদার্থ ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে একটা দীর্ঘ পদ্ধতির মাধ্যামে শেসে পেট্রোলিয়াম (খনিজ তেল) এর রূপ নেয়। খনিতে পদার্থটি অনেকটা বন্যার পানির মত গার থাকে, একই সাথে এটির রং থাকে কালোবর্ণের। যদিও মানুষ পেট্রোলিয়ামের ব্যাবহার শিখেছে অনেক আগে, কিন্তু তারা জানতো না কি থেকে এই পদার্থটি পৃথিবীতে তৈরী হয়েছিল।
কোরআন উক্ত আয়াতে একটি তরলের কথা বুঝিয়েছে, যা পেট্রোলিয়ামের বৈশিষ্টের সাথে মিলে যায়। এভাবে-
১. এটি তৈরী হয় তৃনাদি থেকে। অর্থাৎ অরগ্যানিক ম্যাটারিয়াল থেকে।
২. এটির রং কাল হবে, আর এটি বন্যার পানির মত তরল হবে।
কোরআন হাজার বছর আগে বলে দিয়েছে পেট্রোলিয়াম তৈরী হয়েছে গাছ-গাছড়া থেকে। আজ এটা বৈজ্ঞাকি সত্য।
১৮। বাতাশ ও বৃষ্টির সম্পর্ক :
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ুকে চালিত করে আকাশের কছে নিয়ে যাই, অত:পর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, এরপর তোমাদের তা পান করাই। বস্তুত তোমাদের কাছে এর ভান্ডার নেই” (সূরা হিজর:২২)
বিংশ শতাব্দির প্রথমদিকেও মানুষের ধারনা ছিল যে, বৃষ্টির সাথে বাতাসের সম্পর্ক হল, বাতাস মেঘকে চালিত করে দূরে নিয়ে যায়, ফলে বৃষ্টি সমভাবে হয়। বাতাসের মাধ্যমেই যে জলিয়বাস্প উপরে উঠে মেঘের সৃষ্টি করে, এ সম্পর্কে মানুষ জানত না।
বৃষ্টিভর্গ বায়ু বলতে জলিয়বস্পপূর্ণ বায়ু বুঝানো হয়েছে। “বাতাস জলিয়বাস্পকে আকাশে উড়িয়ে নেয়, অত:পর মেঘ সৃষ্টি হয়” একথা এই আয়াতে। বাতাসের ভুমিকা না থাকলে সূর্য যতই তাপ দিক না কেনো জলিয়বাস্প কখনোই আকাশে পৌছতেই পারতো না, মেঘ হওয়া তো দূরের কথা।
১৯। পরিমানমত বৃষ্টি :
“তিন সে যিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুযায়ী পানি পৃথিবীতে বর্ষণ করেছেন। যা একটি মৃত জমিকেও জীবিত করতে পারে, ঠিক সেভাবে যেভাবে একদিন তোমরা জীবিত হবে” (সূরা যুখরাফ:১১)
প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৬ কোটি পানি বাতাসের সাথে মিশে। যা বছরে পাচ হাজার তেরশ কোটি টন। এই পানির পুরোটাই আবার প্রতি বছর মাটিতে ফিরে আসে। যদি এই ফিরে আসাটা পরিমিত না হত তাহলে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যেতো। যেমন পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশী হয়। পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ঠিক রাখার জন্য যা খুবি জরুরী। গবেষনায় দেখা গেছে যদি ঠিক এই পরিমাণ পানি বাতাশে না মিশে কিছু কম মিশতো, তাহলে মেরু অঞ্চলের জীববৈচিত্র নষ্ট হয়ে যেত। কারন মেরু অঞ্জলে বরফ স্তরের গভীরতা বেড়ে যেতো। যা গোটা পৃথিবীর জীববৈচিত্র রক্ষার সাথে সম্পর্কিত।
২০। সমুদ্রের পানির রহস্য :
“তিনি পাশাপশি দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, উভয়ের মাঝে রয়েছে এক অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না।”(সূরা আর-রহমান:১৯-২০)
সমুদ্রের এই বৈশিষ্ট্য অতি সম্প্রতীককালে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্রের সারফেস টেনসন এবং ঘনত্বের পার্থক্যের জন্য এক সমুদ্রের পানি অপরটির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মিশে যায় না। যেমন গালফ অফ মেক্সিকোতে এর হাজার হাজার মাইলব্যাপি লোনা আর মিষ্টি পানির সাগর পাশাপাশি প্রবাহিত হলেও একটির পানি আরেকটির সাথে মিশে যায় না। কোরআন নাযিলের সময় মানুষের মাঝে পদার্থবিজ্ঞানের কোন জ্ঞান ছিল না আর মুহাম্মদ (স ছিলেন মরুভুমির মানুষ।
- See more at: Click This Link
©somewhere in net ltd.