নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পথিক মুরাদ

পথ হাটিতেছি এক অন্তহীন পথে....

পথিক মুরাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিন্দার কাঁটা...

১৩ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:০১

ভাল কিছু করলে লোকে প্রশংসা করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাভাবিক সব কিছু এখন অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। আর অস্বাভাবিকই হয়ে যাচ্ছে স্বাভাবিক। এ যেন পরিবেশ বদলের মত। বর্ষার বৃষ্টি শীতকালে হয়। ন্যায্য অধিকারের জন্য রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হয়, ধরনা দিতে বিচারালয়ে দিনের পর দিন বছরের পর বছর। বিচারের জন্য ৪২ বছর অপেক্ষায় থেকেও চুড়ান্ত বিচারের সংশয় কাটেনা।

সরকার ভাল কিছু করলেও বিরোধীদল তাদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে নেমে পড়ে ভুল ত্রুতি ধরতে, তাৎক্ষনিক ভুল না পেলেও পাণ্ডিত্য ভাষায় কিছু নেতি বাচক আপত্তি তুলে ধরে। বিরোধীদলের কাজই ও তো বিরোধী করা ! আর তাইতো একজন সাংসদ সংসদে বলেছিলেন “ আমারা এখানে সরকারের গুণকীর্তন করতে আসিনি”। হ্যাঁ সত্যিই তো, তাঁদের নামই তো বিরোধীদল, তাঁদের কাজই তো সরকারের কাজের দুর্নাম , কুৎসা রটনা আর আন্দোলনের মাধ্যমে বিরোধিতা করা!

আর সরকার ও কম যায় না, তাঁরাও তো বিরোধীদলের গুণগান করার জন্য ক্ষমতায় আসেনি, বিরধিনেতার বক্তব্যের আগেই তাকে মিথ্যাচার বলে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। ক্ষমতায় এসেই বিরোধীদল পূর্বে কি কি খারাপ কাজ করেছে তার ফিরিস্তি তুলে ধরতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যায়। পেছনের কোন কাজেই ভাল কিছু খুঁজে পায়না। যখন কারও মুখ থেকে প্রশংসা শূনতে পায় না তখন নিজের ঢোল নিজে পিটিয়ে দেশ ছেয়ে ফেলে বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে।

এই ভাল কে ভাল না বলার অভ্যাস শুধু রাজনিতিতেই নয়, চর্চা আছে ব্যক্তি জীবনেও। অফিসে সহকর্মীর ভাল কাজের প্রশংসা করতে অন্তরে লাগে, খারাপটা প্রচার করতে আনন্দ লাগে। প্রতিবেশীর মেধাবী সন্তানের মেধার চেয়ে কালো রঙটাই আগে দেখতে পাই। কোন জ্যোতিষী যখন আমাদের হাত দেখে বলে “তোমার প্রতিবেশী থেকে সাবধান তারা তোমার মঙ্গল চায়না”। আমাদের অন্তরে শিহরন যাগে , ভাবি এ জ্যোতিষী নয়, এ যেন সবজান্তা দেবতা।

জেল না খাটলে নাকি ভাল নেতা হওয়া যায় না এমনটাই এখন শুনি, আবার লালন ও বলেছেন ” নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে, প্রেমের কি স্বাদ আছে বল।“তাই হয়তো আমরা নিন্দার কাঁটা হাতে সদা প্রস্তুত প্রেমের স্বাদ বোঝানর জন্য। অথচ কোন ব্যর্থ মানুষেরও ব্যর্থতা না খুঁজে প্রশংসার মাধ্যমে উৎসাহ যোগালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাফল্য আসে এটা প্রমানিত সত্য। এই সত্যকে অস্বীকার করলেও বিজ্ঞানকে অস্বীকার কোন সুযোগ আমাদের নেই।সেই বিজ্ঞানেরই এক চরম সত্য ফর্মুলা স্যার আইজাক নিউটন দিয়েছেন- ‘ প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে’এই তথ্য যদি সত্য হয় তাহলে তো নিশ্চিত, যে নিন্দার কাঁটা আজ অন্যের গায়ে বিধাচ্ছেন, কোন একদিন অন্য কেউ আপনার গায়ে বিধাবে।

এই সংকীর্ণ মনের চর্চা যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে মাঝে মাঝে সংশয় জাগে পুরো জাতী টাই একদিন ভালকে ভাল বলার অভ্যাস ভুলে যাবে না তো!

আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে সেই সকল সদা তিরস্কারকারীদের ব্যক্তি জীবন। আপনারা কি আপনাদের স্ত্রী সন্তানদের ভাল কাজের প্রশংসা না করে তিরস্কার করেন? উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে আমরা প্রশংসা শব্দটিকে হারাতে বসেছি , আর উত্তর যদি না হয় তাহলে আশাবাদী ভালকে ভাল বলার দিন শেষ হয়ে যায়নি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৩

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: প্রত্যকে ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত ক্রিয়া আছে।

যারা বলেন বিএনপি-তে ডান-বাম-স্বাধীনতাবিরোধী সব মিলেমিশে একাকাক, তাদের জন্য উদাহরণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের নূর হোসেন। ১৯৮০ সালে যা ছিল জিয়ার বাঙলাদেশ, তা আজকে হাসিনার বাঙলাদেশ।

শেখ মুজিবের ব্যর্থতা হল গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে একনায়কতন্ত্র সাংবিধানিকভাবেই উনি এনেছিলেন। ফলে সারা জীবনের বিসর্জন দিয়েছিলেন। জিয়া ঠিক সেই মূহুর্তে প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতি বহাল রেখেই সংবিধান থেকে একদল কেটে বহুদলের অনুমতি ও সেই সাথে গণতন্ত্র দিয়েছিলেন।

কিন্তু ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে সেই ১৯৭৪ সালের ২৫ জানুয়ারী মাসের সরকার পদ্ধতিই চালু করা হয়েছিল। বর্তমানের ১৫শ সংবিধান সংশোধনি অতীতের যে কোন সরকারের কৃত কাজের মাত্রাকে অতিক্রম করে গেছে। রাজনীতি এখন পচে গেছে। এবং মানুষের অবক্ষয় তার লাল-সীমা পার হয়ে চলে গেছে। আইনের বিচার দেশ থেকে উঠে গেছে। তাই আমাদের দেশের জন্য ঘোর বিপদ সামনে অপেক্ষা করছে। তাই তো আম্লীগের সাধারণ সম্পাদক ভয়ে বলেই ফেলেছেন, আরেকটা ১৯৭৫ হতে পারে এই দেশে।

সুস্থ জাতি ও দেশ পেতে হলে সুস্থ রাজনীতি ও পুরস্কার-তিরস্কারের ব্যাপারটা থাকা প্রয়োজন।

২| ১৩ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

পথিক মুরাদ বলেছেন: আপ্লুত এমন বিশ্লেষণী মন্তব্যের জন্য। একটি সুস্থ জাতী ছাড়া সুস্থ দেশ সম্ভব নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.