![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি:ফিলিপাইনের জাতীয় মাছ বাংউস।
ফিলিপিনে যখন প্রথম এসেছিলাম,তখন প্রথম কয়দিন রেস্টুরেন্টে খাবার ব্যবস্থা হয়েছিল। মাংশে শুকুর ভিতি থাকায় রেস্টুরেন্টে গিয়ে মাছ খুঁজতাম।একদিকে ঝাল মশলা হলুদ বিহিন রান্না আবার এক তেলাপিয়া ছাড়া আর কোন পরিচিত মাছ খুজে পেতাম না।অধিকাংশই সামুদ্রিক মাছ।আমার বাড়ী উত্তরবঙ্গে হওয়ায় সামুদ্রিক মাছের সাথে আমার বিশেষ কোন পরিচয় ছিল না। আর সমুদ্রের বুকে হাজার দ্বীপের এই দেশে সামুদ্রিক মাছের পরিমাণই বেশী হবে সেটাই স্বাভাবিক।
তিনদিন পরে বাজারে যাবার সুযোগ হল। বাজারে গিয়ে প্রথমেই ধাক্কা খেলাম কাঁচা বাজারের মত যায়গায় অধিকাংশ মহিলা দোকানি দেখে। সুন্দর করে সেজেগুজে হাসি মুখে দোকানদারী করছে। দেখলাম অনেক পরিচিত সবজি। সেটা ছিল জুলাই মাস, বেশ গরম। তারপরও ফুলকপি,বাঁধাকপি,টমেটোর মত শীতের সব্জি দেখে অবাক হয়েছিলাম।পরে জেনেছি কিছু অঞ্চলে তুলনামুলক তাপমাত্রা কম থাকায় বছর জুড়ে এই ধরনের শীতের সব্জি উৎপন্ন হয়। আবার কিছু কিছু সবজি নতুন চিনতে পারছিলাম না।রেস্টুরেন্টের খাবারে মরিচ ব্যবহার করা না হলেও বাজারে দেখলাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। মনে ভরসা পেলাম আর হয়তো মিষ্টি মাছ মাংশ খেতে হবেনা। মাংশের দোকানে শুকুরের মাংশের আধিক্য। তাজা মুরগি কোথাও দেখলাম না। মুরগিও মাংশ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। চাইলে যেকোনো পরিমান কেনা যাচ্ছে। আবার শুধু পাখা,পা,মাথা ইত্যাদি আলাদা করেও বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংশ হাড় সহ এবং হাড় ছাড়া দুই রকম দামে বিক্রি হচ্ছে। মাংশে হাড় কম দেবার জন্য কসাইয়ের সাথে মুলামুলি করার দরকার নেই। কাঁচা মাংশের একটা উৎকট গন্ধ থাকলেও পচা রক্তের দুর্গন্ধ কোথাও নেই। বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।এদের কসাইখানা শহর থেকে দূরে কিছুটা নির্জন যায়গায়।সেখানে সরকার নিযুক্ত পশু ডাক্তারের পরীক্ষা শেষে সুস্থ পশুর সনদ পাবার পরই পশু জবাই করতে পারে এবং জবাইয়ের পরে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে বাজারের অনুমোদিত দোকানে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে।
মাংশ বাজারের পাশেই মুদি দোকান। সুন্দর সাজানো গোছানো দোকানের সারি। অনেক গুলো চালের দোকান খুঁজেও পরিচিত সেদ্ধ চাল পেলাম না। ভিন্ন ভিন্ন জাতের চালের মধ্যে আলাদা নাম এবং দাম লেখা প্ল্যাকার্ড আছে। মজার ব্যপার হল “ইরি” ফিলিপাইনে অবস্থিত হলেও কোন ইরি লেখা চাল দেখলাম না। পরে জেনেছি এই চালের অধিকাংশ জাত ইরিতে উৎপন্ন হলেও সুন্দর সুন্দর নাম রাখা হয়েছে। মশুর ডাল পেলাম না। অনেক খুঁজে মুগ ডাল পেলেও জানলাম এখানে খোসা সহই রান্না হ্য়। তেমন কোন মশলা পেলাম না। নারিকেলের তেল এরা রান্নায় ব্যবহার করলেও পাম তেল বা সয়াবিন তেলও আছে।
মুদি বাজারের লাগোয়া মাছ বাজার। বেশ ভিড় থাকলেও কোন শোরগোল নেই। কয়েকটি সামুদ্রিক মাছের দোকানের পরে একটি দোকানে চোখ পড়তেই অবাক হয়ে এগিয়ে গেলাম। অনেকটা ইলিশ মাছের মত দেখতে। নাম বলল “ বাংউস”, মিল্কি ফিস। আরও আশ্চর্যয়ের বিষয় আমাদের ইলিশের মত এই মাছটিই ফিলিপিনোদের জাতীয় মাছ। ইলিশের মত দামি নয়। অধিকাংশ মানুষের নাগালের মধ্যে। এটি সামুদ্রিক মাছ হলেও মৎস্যচাষি ও বিজ্ঞানীদের অনেক পরিশ্রমে এখন পুকুরেই চাষ হয়। তাই এই জাতীয় মাছ শুধু অভিজাত শ্রেণীর হয়ে যায়নি।একটি মাছ কিনে বাসায় ফিরে অনভিজ্ঞ হাতে রান্না করলাম। স্বাদ বা গন্ধ ইলিশের মত না হলেও মাছের কোশ এবং কাঁটার বিন্যাস ইলিশের মতই। ভাবলাম আমাদের মৎস্যচাষি ও বিজ্ঞানীরাও হয়তো একদিন কৈ,পাঙ্গাসের মত ইলিশের চাষযোগ্য পদ্ধতি বের করবেন। তখন ইলিশ হবে সর্বসাধারণের সামর্থ্যের মাছ।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৯
পথিক মুরাদ বলেছেন: সহমত। এ জন্যই কোলকাতার বাজারে বাংলার ইলিশের জন্য কাড়াকাড়ি হয়।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩০
ঢাকাবাসী বলেছেন: উপরে শাহ আজিজ বুঝিয়ে দিলেন সব। ভালই লাগল পোস্ট, প্রবাসীর জীবনের আহারের বৈচিত্র।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪২
পথিক মুরাদ বলেছেন: আপনার ভালো লাগায় আমার ও ভালো লাগছে, অনুপ্রেরণা অনুভব করছি।
ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।
৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
রাখালছেলে বলেছেন: ইলিশ এমন এক মাছ যা দেখলেই মুখে পানি চলে আসে।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
পথিক মুরাদ বলেছেন: হুম! মন্তব্যে একমত। ধন্যবাদ।
৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৮
ভিটামিন সি বলেছেন: আমি সিংগাপুরের ফিশারি পোর্টে গিয়ে ইলিশ এবং রুই মাছ দেখে আশ্চর্য্য হয়েছিলাম। পরে থাইল্যান্ডি মাছ বিক্রেতা জেনেছি, সিংগাপুরের সমুদ্রেও ইলিশ পাওয়া যায়। কদাচিৎ রুইয়ের দেখা মেলে। ফিশারি পোর্টে মাছ কিনতে যেতে হয় রাত ১ টার পরে। এসময় গভীর সমুদ্র থেকে জাহাজ ধরে নিয়ে এসে পোর্টে ভীড়ে।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫
পথিক মুরাদ বলেছেন: তথ্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আমার অন্য পোস্টগুলো পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।
৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৬
রাখালছেলে বলেছেন: দু:খিত আপনার সাথে একমত হতে পারছি না । ইলিশ মাছ শুধু নদীরটাই ভাল । যদি পুকুরে চাষ হত তাহলে মাছের মজাই নষ্ট হয়ে যেত ।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২
পথিক মুরাদ বলেছেন: পুকুরে ইলিশ চাষ হলে মাছের মজা নষ্ট হয়ে যাবে , এই মন্তব্যে একমত হতে পারলাম না। অনেক দেশি জাতের মাছ পুকুরে চাষ করে এদের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা হয়েছে। আর পুকুরে চাষ হলে ও নদিরটা তো থাকছেই।
ধন্যবাদ।
৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮
কলমের কালি শেষ বলেছেন: বৈচিত্রময় মানুষ বৈচিত্রময় খাদ্যাব্বাস । ফিলিপিনোদের সম্পর্কে কিছু জানা গেলো । ভালো লাগলো পড়ে ।
পুকুরে ইলিশ চাষ !!!..উহ্ নো । সেটা রুই হয়ে যাবে ।..
৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮
জামিল হাসান বলেছেন: পুকুরের ইলিশের সাথে ট্যানারির ক্রোমিয়াম ফ্রি খাইতে মঞ্চায়.........
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৫
শাহ আজিজ বলেছেন: ইলিশ শুধু আমাদের নয় এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় উষ্ণ জলবায়ু এলাকার অনেক জায়গাতে পাওয়া যায়। আমাদের ইলিশের মিষ্টি ও লোনা পানির মিলন এলাকায় জন্ম হয় বলে এর স্বাদ অপূর্ব এবং অন্ন্যান্য এলাকার থেকে ভিন্ন ।