নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ মূসা রেজা

সৈয়দ মূসা রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলোকচিত্রীদের বেগ স্যার

২৫ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২১




শাটার পড়ল না।
খুট করে আটকে গেল। সাথে সাথেই ভিউ ফাইন্ডারে অন্ধকারে নেমে এলো। এমন বিশ্বাসঘাতকতা করবে নতুন নাইকন এফএম-২ ক্যামেরা! ভাবতেও পারে নি মূসা।
১৯৯১ সালের শীত কালের একটা বিকালের ঘটনা। গজারিয়ায় ‘ওসডার’ নামের একটা এনজিও’র কর্মকাণ্ডের ছবি তুলতে যেয়ে এ বিপত্তি। ভাগ্যিস! মূল অনুষ্ঠানের ছবি তোলা হয়ে গিয়েছিল দুপুরের দিকে।
হতভম্ব মূসা দ্রুত রোলটা খুলে নিলো। তারপর খানিকক্ষণ ঝাঁকাল এফএম-২কে। না কাজ হল না।
নয়াটোলার বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হল সেদিন। মন খারাপ নিয়ে ঘুমাতে গেল সে। আশেপাশে কেউ নেই যার সঙ্গে আলাপ করা যাবে। ভোরে অফিসে যেতে হবে তাকে। আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান তাঁত বোর্ডের অফিসটি তখন সেগুন বাগিচায়।
মূসা পরদিন অফিসে ঢুকল সাতটার মধ্যেই। তীব্র শীত। ক্যামেরার জন্য মন খারাপ থাকায় মূসার শীত লাগছে না। হাবভাবে মনে হচ্ছে দিন-দুনিয়ার প্রতি আর কোনই আকর্ষণ নেই।
এ অবস্থায় পথ বাৎলে দিতে পারেন একটি মাত্র ব্যক্তিই। তাঁকে কয়েকবার বিপিএস অফিসে দেখেছে। কথাও হয়েছে। ফটোগ্রাফি নিয়ে কথা বলতে গেলে মনোযোগ দিয়ে শোনেন। কে বলছে সে দিকে নজর দেন না। শীতের ভোরে তাঁকেই ফোন করল মূসা।
কয়েকবার ফোনটি বাজতেই ও পাশ সাড়া দিলেন তিনি। হ্যালো। কণ্ঠে তখনও ঘুমের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
-স্যার আমি মূসা রেজা। সালাম দিয়ে দ্রুত পরিচয় দিল। মনে মনে সংশয় চিনতে পারবেন কি! তবে কথা বলার সময়ে মূসার চোখের সামনে ভেসে উঠল কালোমতো শুকনা এক মানুষের চেহারা। মানুষটির নাম এম এ বেগ। বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’র সবাই এ মহান মানুষটিকে ‘স্যার’ বলেন। কী গভীর আবেগ এবং শ্রদ্ধায় সবাই ‘স্যার’ বলেন তা যারা শোনেন নি তাদের ঝোঝান সম্ভব নয়।
মূসার এফএম-২এর বিশ্বাসঘাতকতার কথা শুনলেন বেগ স্যার। আশ্বস্ত করলেন, -চিন্তিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। হকের(ফার্মগেটের কাছে ক্যামেরা মেরামতের দোকান) কাছে নিয়ে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে। আর ক্যামেরা আগের মতই কাজ করবে। একই সঙ্গে তাও নিশ্চিত করলেন বেগ স্যার। কথা শেষ করে মুসার আর কিছু জানার আছে কিনা প্রশ্ন করলেন তিনি।
-না স্যার। বলল মূসা।
কুমিল্লা বোর্ডের মার্ক সিটগুলো মাইক্রো ফিল্মে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সে কথা জানিয়ে এরপর নেহাত কথার ছলে বেগ স্যার বললেন,
-একটা পুরানো যন্ত্র নিয়ে গতরাতে কাজ করতে হয়েছে। তাই শুতে গিয়েছি শেষ রাত ৩ টায়। একটু ভোরে ফোন করে ফেলেছেন আপনি।
অপ্রস্তুত মূসা। কিন্তু সামান্য বিরক্তির আভাসও নেই বেগ স্যারের স্বরে। বরং বললেন, -আবার কোনও সমস্যা হলে ফোন করতে দ্বিধা করবেন না!
***
ছোট গর্তের পানিতে সমগ্র আকাশ প্রতিবিম্বিত হয়। অর্থাৎ পুরো আকাশের দিকে তাকাতে হয় না। অতি ছোট এ ঘটনায় আলোচিত্রীদের জন্য বেগ স্যারের দরদী হৃদয়-আকাশের পুরো ছবিটা ধরা পড়বে।
আলোকচিত্রীদের চিরকালীন বরাভয় হয়ে বিরাজ করেছেন তিনি। ফটোগ্রাফি নিয়ে যে কোন সমস্যায় তার দরজা ছিল চির অবারিত। সময় অসময়ে ভাবার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। এমনকি বেগ স্যারের সঙ্গে পরিচয় থাকারও দরকার ছিল না।
বাংলাদেশের আলোকচিত্রের জগতে বেগ স্যার না জন্মালে কি হতো?
বাংলা একটা প্রবাদে ঝামেলা পোহান বোঝাতে নানা ঘাটের পানি খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বেগ স্যার না জন্মালে পানি নয় সাথে কাদাও খেতে হত বাংলাদেশে আলোকচিত্রে উৎসাহী ব্যক্তিদের। ইন্টারনেটের এ সময়ে দাঁড়িয়ে কথাটায় অতিশয় উক্তির তীব্র গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু তথ্য বিশেষ করে আলোকচিত্র সংক্রান্ত তথ্য যোগাড় করা বেশ কষ্টকর সে সময়টাকে বুঝতে হবে তখনকার প্রেক্ষাপটে।
ইউসিস এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলে কিছু বই-পত্র এবং সাময়িকী পাওয়া যেত। ঢাকা কেন্দ্রিক ইংরেজি জানা আলোকচিত্রে উৎসাহী এবং আগ্রহী ব্যক্তিদেরই কেবল তাতে অধিকার ছিল। দেশের বাকি আলোকচিত্রী এবং তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
হ্যাঁ বাকি দেশের আলোকচিত্রী এবং আলোকচিত্রে আগ্রহীদের প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিয়ে বই রচনা করেছেন বেগ স্যার। পশ্চিমা প্রযুক্তিকে দেশীয় ভাবে গ্রহণ করতে হয় কি করে তার উদাহরণ হতে পারে বেগ স্যারের বই। ইন্টারমিডিয়েট টেকনোলজির বড় কথা তিনি বলেন নি কখনও। তারপরও নতুন প্রযুক্তি-জ্ঞান দেশীয় প্রেক্ষাপটে বিস্তারে সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন বেগ স্যার।
সরল বাংলায় সহজ ভাষায় তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য রচনা করেছেন এ সব বই তিনি। ভারিক্কি চালের ভারি কথায় পীড়িত করেন নি। বরং পরিচিত জিনিসের উদাহরণ দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়েছেন আলোকচিত্রের অপরিচিত জটিল জগতের দিকে। এই যেমন ফিল্টারের কাজ বোঝাতে যেয়ে দিব্যি আটপৌরে ছাকনির সঙ্গে তুলনা করেছেন বেগ স্যার।
এ ছাড়া, আলোকচিত্রে আগ্রহী ব্যক্তিটি যেন সস্তায় কাজ করতে পারেন সে লক্ষ্যে নানা প্রযুক্তিকে দেশীয় উপায় প্রয়োগ করেছেন। প্যাটারসনের দামী ট্যাংকের বদলে বনস্পতি তেলের প্ল্যাস্টিকের কৌটা ব্যবহার করা যায় তা বাৎলে দিয়েছেন তিনি। আলোকচিত্রকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নামিয়ে আনার চেষ্টায় তার তৎপরতার কোনও নজির নেই।
অন্যদিকে ফলিত প্রযুক্তি-জ্ঞান বিতরণে কার্পণ্যের প্রবণতা রয়েছে বাংলাদেশে। নিজে যা কষ্ট করে অর্জন করেছি তা নিজেরই। অন্যের কোনও ভাগ নেই। এমন মনোভাবের জোরাল উপস্থিতি রয়েছে সবখানে। আলোকচিত্রের জগতও এর ছোঁয়াচ থেকে রক্ষা পায় নি। নেগেটিভ ডেভেলপ করার ফর্মুলা নিয়ে বেগ স্যারের ডার্ক রুম সহকারীর ভেগে যাওয়ার কাহিনীর মধ্য দিয়ে তাই ফুটে উঠছে। ভেগে যাওয়ার বহুদিন পর হঠাৎ করে সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বেগ স্যার যখন তার কাছে জানতে চাইলেন, ওই ফর্মুলা নিয়ে কেনও তুমি চলে এলে? তখন সে ব্যক্তি জবাব দিয়েছিল, এমন বিদ্যা কি কেউ কাউকে শেখায়? বাংলাদেশের আলোকচিত্রের জগতের সবারই জানা আছে এ কাহিনী।
অথচ বেগ স্যার ‘এমন বিদ্যা’ শেখানোরই স্কুল খুলে ছিলেন। আলোকচিত্রের জগতের অজ্ঞতার এমন অন্ধকার দূর করতে সরকারি উদ্যোগের ভরসা না করেই মাঠে নামেন তিনি। তার সাহসী এ কাজের একটি রূপ বেগার্ট ইন্সটিটিউট অফ ফটোগ্রাফি। অপরটি বাংলাদেশে ফটোগ্রাফিক সোসাইটি বা বিপিএস।
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর কথা আমরা জানি বাংলা প্রবাদের গুনে। নিজের জীবিকার অংশ দিয়ে একটি সংস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার ও বিকশিত করার কাজটি করেছেন বেগ স্যার। একে কি বলা হবে তা জানায়নি বাংলাভাষার কোনো প্রবাদ। অন্যদিকে শত ফুল ফুটতে দাও বলে কোনো শ্লোগান দেন নি তিনি। বরং শত ফুল ফোটার আয়োজন করেছেন। বীজ সংগ্রহ থেকে বীজতলা তৈরি এবং ফুলবাগান নির্মাণ পর্যন্ত সকল কাজ করেছেন। স্যারের এ বৃহৎ কর্ম উদ্যোগ নিয়ে কোনও প্রবাদ রচনা হয় নি। আর তার ইতিহাসই বা জানেন ক’জন!
বেগার্টে থেমে না থেকে বিপিএস ভিত্তিক শিক্ষা সংগঠন বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক ইন্সটিটিউট গড়ে তুলতে সহায়তা করলেন তিনি। বেগার্টে ছাত্র ভর্তি না করে সে ছাত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বিপিআইয়ে! অর্থাৎ নিজের আয় ভাগ করে দিয়েছেন বিপিআই’কে। ব্যান্সডকের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন বেগ স্যার। তেমনই একটা সময়ে এ কাজ করেছেন তিনি। তার সীমিত আয়ের উৎসকে নির্বিবাদে ঘুরিয়ে দিয়েছেন বিপিআই’এর দিকে।
গামাল আবদুল নাসের মিশরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, সম্পদ নেই তো কি হয়েছে আসুন আমরা দরিদ্রতা ভাগ করে নেই। কিন্তু নিজের আয় অন্যকে তুলে দেয়ার ডাক দিতে সাহস পান নি বিপ্লবী নাসেরও।
সভামঞ্চের ওপরে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশ্যে বেগ স্যার কখনও কোনও আহ্বান জানান নি। বরং নিজে করে দেখিয়েছেন। সেটাও ঝোঁকের মাথায় কোনও কাজ ছিল না। বরং ঢাকে বাড়ি না দিয়ে, আত্মপ্রচারের দারুণ সুযোগ জুতসই ভাবে কাজে না লাগিয়ে, বাণিজ্য বুদ্ধিকে নির্বাসনে দিয়ে এমন কাজটা করেছেন তিনি।
আজকের দিনে বাংলাদেশের আলোকচিত্রের বিকশিত মহীরুহকে সে দিন নিজের প্রাণশক্তি দিয়ে রক্ষা করেছেন। খরার দিনগুলোতে তাতে পানি দিয়েছেন। তার বিস্তার ও বিকাশ ঘটিয়েছেন। কথাটা মানতে কষ্ট হতেই পারে। কারও হয়ত ভালও না লাগতে পারে। তবে আজকের দিনে বাংলাদেশের সোনালি আলোকচিত্র পরিমণ্ডলের শীর্ষ ব্যক্তিত্বগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাদেরকে কখনও না কখনও আসতে হয়েছে বেগ স্যারের সান্নিধ্যে। তাদের অনেকেরই চলার পথ এবং মত বেগ স্যারের থেকে আলাদা। কিন্তু চলার বেগ সৃষ্টির আদিতে বেগ স্যারের বেগবান উপস্থিতি ছিল এ কথা চাইলেও মনে হয় অস্বীকার করার জো নেই।
বেগ স্যারের জীবন বোধের মধ্যে লক্ষণীয় আরেকটি বিষয় ছিল। তিনি যতটুকু মানতে পারতেন কেবল ততটুকুই বলতেন। বহুমতের সমন্বয়ে বিশ্বাস করতেন তিনি। নিজ সন্তানদের নামকরণের একান্ত ব্যক্তিক পরিমণ্ডলেও এমনটি মেনেছেন। নিজে নাম দেন নি বরং অনুষ্ঠান করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে নবজাতক সন্তানের নাম আহ্বান করেছেন। তারপর তিনি লটারির মাধ্যমে তার থেকে একটি নাম বেছে নেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
নবজাতকের ঠাট্টা শ্রেণীর মানে নানা-দাদা শ্রেণীর কিছু কিছু ব্যক্তি দুষ্টামি জুড়লেন। তারা ‘গোবর’, ‘পচা’ জাতীয় নাম দেয়া শুরু করলেন। সবার সঙ্গে মিলেমিশে নাম দেয়ার পথ থেকে এমন উৎপাতে সরে আসলেন না তিনি। বরং এ জাতীয় বদবুদ্ধি ঠেকানোর কৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন বেগ স্যার। তিনি বলেছেন, “লটারিতে সে সময় একটার বদলে দু’টো নাম বেছে নেয়ার ব্যবস্থা করলাম। ব্যাস ওতেই এ সব আত্মীয়ের দুষ্টবুদ্ধি ঘায়েল ।”
তিনি সবার ‘ছবিগুরু’ ছিলেন। তবে ছদ্ম গাম্ভীর্য বা আঁতেল ভাব ছিল না। বরং বেগ স্যার রসিকতা করতে জানতেন। বেগ স্যারের হাতেকলমে রসিকতার একটি অনবদ্য উদাহরণ হলো, বিপিএসের মাসিক প্রতিযোগিতায় ছদ্মনামে ছবি জমা দেয়া।
বিপিএসের মাসিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতাকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে এ কাজ করতেন বেগ স্যার। এ কাজ করতেন খুবই গোপনে। স্যারের নিজের মনে অফুরান রসিকতা বিরাজ করায় এ কাজ করতে তিনি দ্বিধা করেন নি। এক-দু’জনের বেশি এ ঘটনা কখনোই টের পেতেন না। বেগ স্যারের ছবিকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিয়েছে বিপিএসের নতুন কোনো সদস্যের তোলা ছবি। এমন ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। মাসিক সভায় সে সময় বেগ স্যার বেশ একটা ভাব নিয়ে এ কথা ফাঁস করে দিয়ে বলতেন, বিচারকরা তার প্রতি সুবিচার করেন নি। তাতে মাসিক সভায় হাসির রোল পড়ে যেত।
পুরানো একটি নাইকন ক্যামেরা বিক্রি করবেন বেগ স্যার। দাম চাইলেন নতুন ক্যামেরাও কয়েকগুণ বেশি। এ কেমন কথা স্যার? বেগ স্যার গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, দশ বছর ছবি তুলেছে ক্যামেরাটা , অভিজ্ঞতার একটা দাম আছে না!
আরেকবার জুমে তোলা ছবির শার্পনেস বেশি হলো কি করে জানতে চাওয়া হলে তিনি তার পুরো কৃতিত্ব দিলেন (বিপিএসের তৎকালীন অফিস সহকারী) নুরুল ইসলাম ভাইকে। মানে? প্রশ্নকর্তা হতবাক হয়ে জানতে চাইলে স্যার বললেন, ও সস্তায় কয়েকটা ফোর হানড্রেড আইএসও’র কালার ফিল্ম বিক্রি করেছিল আমার কাছে তাই বেশি করে ‘এফ’ খাওয়ানো’ গেছে!

***
বেগ স্যার সাধারণ ভাবে সবাইকেই আপনি সম্বোধন করতেন। সবার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার জন্যেই এমনটি করতেন? তা হলে আলোকচিত্রের নিয়ে জটিল সমস্যা সমাধানে দ্রুত এগিয়ে আসতেন কি করে? বেগ স্যারকে কখনও বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হয় নি মূসার। আব্বার কাছ থেকে শোনা একটি গল্প মনে পড়ায় এ প্রশ্নের উত্তর বোধহয় খুঁজে পেলও মূসা।
ব্রিটেনের স্বনামখ্যাত ইটন স্কুলের এক প্রিন্সিপাল সব সময় ছাত্রদের আগেই সৌজন্য সম্ভাষণ জানাতেন। ছাত্ররা কখনও আগে তাকে ‘সালাম’ দেয়ার সুযোগ পেত না। একবার এক ছাত্র এর কারণ জানতে চাইলে, সে দূরদর্শী মহান শিক্ষক বললেন, আমি তোমাদেরকে ‘সালাম’ দেই না। তোমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামী দিনের ব্যাপক সম্ভাবনা। তোমাদের এ সম্ভাবনা যখন বিকশিত হবে তখন হয়ত আমি থাকব না। তাই আগেভাগেই আগামী দিনের ওই ব্যক্তিত্বকে জানিয়ে রাখছি ‘সালাম’।
বেগ স্যার তার কাছে আসা প্রতিটি আলোকচিত্রী এবং প্রতিটি মানুষের মধ্যের সম্ভাবনাকে দেখতে পেতেন। সে প্রতিভা যখন বিকশিত হবে তখন বেগ স্যার থাকবেন না। সে কথাও জানতেন তিনি। তাই হয়ত সবাইকে ‘আপনি’ বলে অনাগত কালের সে সম্ভাবনাকেই সম্মান দেখাতেন বেগ স্যার!
(লেখার সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিটা ইন্টারনেট থেকে যোগাড় করেছি। কার তোলা জানি না। তবে বেগ স্যারের সুন্দর ছবি তুলেছেন এ জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০

লাবণ্য ২ বলেছেন: শুভ ব্লগিং!

২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯

সৈয়দ মূসা রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।

২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

সৈয়দ মূসা রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: উনি একজন গ্রেট ব্লগার।

২৭ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৭

সৈয়দ মূসা রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.