নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মুক্তিযোদ্ধা

মুশে হক

সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য পড়তে এবং লিখতে ভালোবাসি।

মুশে হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনগণ বনাম শাসক ও শোষক চক্র

১৩ ই মে, ২০১২ সকাল ১০:৪১

বাংলাদেশের সকল সমস্যার উৎস শাসন ও শোষণ মূলক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা। জনগণের প্রধান শত্রু শাসক ও শোষক চক্র সমাজে তিন প্রকারে বিদ্যমান ---- ১। গণতন্ত্রের আবরণে রাষ্ট্র ও আর্থিক ক্ষমতা কুক্ষিগতকারী মন্ত্রী, এম পি ও রাজনৈতিক নেতাগণ।

২। রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, কর্মচারী আমলাচক্র।

৩। উপরোক্ত দুই শ্রেণীর সাথে হাত মিলানো ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও সুবিধাভোগী শ্রেণী।

উক্ত তিন শ্রেণীর ক্ষমতাধারিদের অবস্থান আইনের উর্ধে; সমাজ ও রাষ্ট্রের কতৃত্ব তাদের হাতে এবং তাদের জবাবদিহিতার কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেই। ক্ষমতার দাপটে তারা শাসন শোষণ, ঘুষ দুর্নীতি, লুট পাট, জবর দখল, আইন শৃঙ্খলার অবনতি সহ সকল অপকর্ম করে জনগণকে অসহায় অবস্থায় বন্দি করে রাখে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় তাদের উপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিতার পদ্ধতি প্রচলন করা। যার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্র ক্ষমতা (Socio- Political Power) ও আর্থিক ক্ষমতার(Socio- Economic Power) বিকেন্দ্রায়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতন্ত্রায়ন করা। ক্ষমতার কেন্দ্রায়ন ও কুক্ষিগত অবস্থার অবসান করে জনগণের ক্ষমতায়ন করতে নিম্নবর্ণিতভাবে রাষ্ট্র ও আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে----

১। ইউনিয়ন সংসদ ও ইউনিয়ন পরিষদ গঠন ঃ- ইউনিয়ন সংসদের সদস্য হবে--- (ক) পণ্য উৎপাদনকারী ও সেবাদানকারী সকল পেশাজীবি সমিতির ( ইউনিয়নের অধিবাসীগণ বিভিন্ন পেশজীবি সমিতিভূক্ত হবেন) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ; (খ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি; (গ) সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ( মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ) ইমাম/ পুরোহিতগণ; ( ঘ) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ; (ঙ) ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ; (চ) সকল ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিগণ এবং (ছ) সকল রাজনৈতিক দলের ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ। এভাবে প্রতি ইউনিয়নে কমবেশি ১০০ সদস্যের ইউনিয়ন সংসদ গঠন করতে হবে। ইউনিয়ন সংসদ ইউনিয়নের জন্য আইন ও নীতি নির্ধারণ, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন ইত্যাদি কাজ করবে।

ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হবে। ইউনিয়ন সংসদে নির্ধারিত নীতিমালা ও এজেন্ডা সমূহ ইউনিয়ন পরিষদ বাস্তবায়ন করবে এবং সংসদের কাছে জবাবদিহি করবে। বিচার করার জন্য ইউনিয়ন কোর্ট ( দেওয়ানি ও ফৌজদারি ) স্থাপন করতে হবে যার বিচারক বিচার বিভাগের সুপারিশক্রমে রষ্ট্র প্রধান কতৃক নিয়োজিত হবে। ইউনিয়নের প্রশাসনিক ব্যয় ইউনিয়নের রাজস্ব থেকে নির্বাহ করতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ( যাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) জন্য সংসদ কক্তৃক নির্ধারিত ভাতার ব্যবস্থা থাকবে।

ইউনিয়নের উন্নয়ন ও কর্ম সংস্থান প্রকল্পের জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগ তহবিল গঠিত হবে যার ৬০% বিনিয়োগ হবে ইউনিয়নবাসীর সঞ্চয় থেকে; ২০% হবে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ( ব্যাংক, বীমা ইত্যাদি) সমূহের বিনিয়োগ এবং ২০% হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিনিয়োগ। এই তহবিলের ব্যবস্থাপনা কমিটির ৬০% সদস্য হবে ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি, ২০% সদস্য হবে বিনিয়োগকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ২০% সদস্য হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি। স্থানীয় শিডিউল ব্যাংকে একাউন্ট খুলে এই তহবিল পরিচালিত হবে। ইউনিয়ন সংসদে অনুমোদিত প্রকল্প এবং সে অনুসারে প্রদত্ত বাজেট হিসেবে তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। এন জি ও বা অন্য কোন সংস্থার অর্থ এই তহবিলের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগের শেয়ার অনুপাতে আয় বন্টিত হবে।

২। উপজেলা সংসদ ও উপজেলা পরিষদ ঃ- প্রত্যেক ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে এবং ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত ১০ জন করে সদস্য নিয়ে উপজেলা সংসদ গঠিত হবে। উপজেলা সংসদ উপজেলার জন্য আইন ও নীতি নির্ধারণ, উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাজেট প্রণয়ন ইত্যাদি করবে যা উপজেলা পরিষদের দ্বারা বাস্তবায়ন করা হবে এবং পরিষদ সংসদের কাছে জবাবদিহি করবে।

উপজেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপজেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হবে যারা হবেন—(ক) প্রত্যেক পেশা হতে ১জন প্রতিনিধি ; (খ) ১ জন শিক্ষক প্রতিনিধি; (গ) প্রত্যেক ধর্মের ১ জন (ইমাম, পুরোহিত) প্রতিনিধি; (ঘ) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের ১জন করে প্রতিনিধি; ( ঙ) ব্যবসায়ী সংগঠনের ১জন প্রতিনিধি; (চ) প্রত্যেক ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ১জন প্রতিনিধি এবং (ছ) প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের ১জন প্রতিনিধি।

উপজেলার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপজেলা পরিষদের অধীনে কাজ করবেন এবং পরিষদের মাধ্যমে উপজেলা সংসদের কাছে জবাবদিহি করবেন। উপজেলা হতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের সদস্য উপজেলা সংসদে অনুমোদিত এবং জাতীয় পর্যায়ে বস্তবায়ন আবশ্যক এজেন্ডা সমূহ জেলা সংসদের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন এবং এ সকল এজেন্ডার বিষয়ে উপজেলা সংসদে জবাবদিহি করবেন।

বিচার কাজ পরিচালনার জন্য উপজেলা কোর্ট ( দেওয়ানি, ফৌজদারি) থাকবে যার বিচারক বিচার বিভাগের সুপারিশক্রমে রাষ্ট্র প্রধান কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।

উপজেলার প্রশসনিক ব্যয় উপজেলার রাজস্ব হতে বহন করা হবে। রাষ্ট্রের বেতনভোগী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত সকল নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ( যাদের জন্য প্রযোজ্য) ভাতা পাবেন।

উপজেলার উন্নয়ন ও কর্ম সংস্থান প্রকল্পের জন্য উপজেলা সঞ্চয় ও বিনিয়োগ তহবিল গঠিত হবে যার ৬০% বিনিয়োগ হবে উপজেলাবাসীর সঞ্চয় থেকে; ২০% বিনিয়োগ হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ( ব্যাংক, বীমা ইত্যাদি) সমূহের এবং ২০% বিনিয়োগ হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তহবিলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হবে ৬০% উপজেলার সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি যারা উপজেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন; ২০% সদস্য হবে বিনিয়োগকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ২০% সদস্য হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি। স্থানীয় শিডিউল ব্যাংকের মাধ্যমে তহবিল পরিচালিত হবে। উপজেলা সংসদে অনুমোদিত বাজেট ও প্রকল্প অনুসারে এই তহবিল হতে অর্থ যোগান দেয়া হবে। বিনিয়োগের শেয়ার অনু্পাতে আয় বন্টিত হবে।

৩। জেলা সংসদ ও জেলা পরিষদঃ- প্রত্যেক উপজেলা সংসদ থেকে এবং উপজেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত ১০ জন করে সদস্য নিয়ে জেলা সংসদ গঠিত হবে। জেলা সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে এবং জেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে জেলা সংসদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হবে। জেলা পরিষদ সদস্য হবেন—(ক) প্রত্যেক পেশাজীবিদের ১জন করে প্রতিনিধি; (খ) স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ১জন করে শিক্ষক প্রতিনিধি; (গ) প্রত্যেক ধর্মের ১জন করে ( ইমাম, পুরোহিত) প্রতিনিধি; (ঘ) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের ১জন করে জেলা প্রতিনিধি; (ঙ) ব্যবসায়ী সংগঠনের ( চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি) ১জন করে প্রতিনিধি; (চ) সকল ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ১জন করে প্রতিনিধি এবং (ছ) সকল রাজনৈতিক দলের ১জন করে জেলা প্রতিনিধি।

জেলা সংসদে নির্ধারিত নীতি, উন্নয়ন প্রকল্প, বাজেট সহ অনুমোদিত এজেন্ডা সমূহ জেলা পরিষদ বাস্তবায়ন করবে। জেলার কর্মকর্তা কর্মচারীগণ জেলা পরিষদের অধীনে কাজ করবে। জেলা পরিষদ জেলা সংসদের কাছে জবাবদিহি করবে।

জেলা হতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যগণ জেলা সংসদে গৃহীত এজেন্ডা সমূহ( যা জতীয় সংসদের আওতাভূক্ত) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন এবং এসব এজেন্ডা বাস্তবায়নের ব্যাপারে জেলা সংসদে জবাবদিহি করবেন।

বিচার কাজ ( দেওয়ানি ও ফৌজদারি) পরিচালনার জন্য জেলা কোর্ট থাকবে যার বিচারক বিচার বিভাগের সুপারিশক্রমে রাষ্ট্র প্রধান কতৃক নিয়োজিত হবেন।

জেলার প্রশসনিক ব্যয় জেলার রাজস্ব হতে বহন করা হবে। বেতনভোগী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ( যাদের জন্য প্রযোজ্য) জেলা সংসদ কতৃক নির্ধারিত ভাতা পাবেন। জেলার উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্ম সংস্থানের জন্য জেলা সঞ্চয় ও বিনিয়োগ তহবিল গঠিত হবে যার ৬০% বিনিয়োগ হবে জেলাবাসীর সঞ্চয় থেকে; ২০% বিনিয়োগ হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের এবং ২০% বিনিয়োগ হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটির ৬০% সদস্য হবে জেলা সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি; ২০% সদস্য হবে বিনিয়োগকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ২০% সদস্য হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি। স্থানীয় শিডিউল ব্যাংকের মাধ্যমে তহবিল পরিচালিত হবে। জেলা সংসদে অনুমোদিত প্রকল্প ও বাজেট অনুসারে এই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে এবং আয় বন্টিত হবে বিনিয়োগের শেয়ার অনুপাতে।

রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং অর্থ ব্যবস্থার গণতন্ত্রায়ন করতে উপরোক্তভাবে স্থানীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং স্থানীয় অর্থ ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনগণের মুক্তি অর্জন আজ আমাদের রাজনীতির মৌলিক কর্তব্য। আজকের যুব সমাজ এই রাজনীতিতে অংশগ্রহন করা আবশ্যক। দলীয় রাজনীতির সংঘাত---- যা জাতীয় সংসদের মেজরিটি ও মাইনরিটি এবং সরকারী দল ও বিরোধী দলীয় সমস্যার জন্য সমাধান করা যায় না --- তার সমাধান সব দল ও শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিত্বকারী স্থানীয় সংসদের মাধ্যমে করা সম্ভব হবে। হরতাল, মিছিল, জ্বালাও ইত্যাদির পরিবর্তে স্থানীয় সংসদে দাবিদাওয়া ও মতামত প্রকাশের পদ্ধতি চালু হবে এবং নেতা ও দলের দাবি ও মতামত জনগণের দাবি ও মতামত হিসেবে চাপিয়ে দেয়া ক্রমান্বয়ে অচল হয়ে যাবে। বিশেষ করে স্থানীয় সঞ্চয় ও বিনিয়োগ তহবিল গঠন করলে এন জি ও পদ্ধতির মহাজনী শোষণ; হায় হায় কোম্পানিদের লুটপাট; শেয়ার মার্কেটের দৌরাত্ম; বিদেশী পুজির অবাধ শোষণ, মৌসুমে কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া, বাধ মেরামতের অবহেলায় ফসল তলিয়ে যাওয়া, ব্যবসায়ীদের ইচ্ছামত বাজার নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি হতে জনগণ মুক্ত হবে।

পৌরসভার সংসদ ও পরিষদ ইউনিয়ন ও উপজেলা সংসদ ও পরিষদের ন্যায় গঠিত হবে।সিটি করপোরেশন জেলা সংসদ ও জেলা পরিষদের ন্যায় গঠিত হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.