নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আজ সত্য এতোটাই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে, তাকে দ্বারে দ্বারে বিকিকিনি করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা।

সত্যের ফেরীওয়ালা

সত্যের ফেরীওয়ালা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলম্বিত যাত্রা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:০০



(১)
মুহুর্তের নোটিশে যাত্রা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ড্রাইভার পুলক। তেল চকচকে পাজেরোর ড্রাইভিং সিটে বসে সে এখন গুনগুণ করে গান ভাজছে। তার বস সাবেক এম.পি বায়জিদ সাহেব ব্যক্তিগত জরুরী মিটিংয়ে ব্যস্ত। ঘড়িতে এখন দুপুর দুইটা বেজে তিরিশ মিনিট।
ঠিক দুইটা চিল্লিশের মাথায় বায়জিদ সাহেব হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে আসলেন। গাড়ীতে চেপে শুধু একটা শব্দই উচ্চারণ করলেন-“কুইক”। গন্তব্য ড্রাইভারের জানা, রকেট গতিতে ছুট লাগালো সে। কোথায় জানি ডায়াল করে তার বস মোবাইলে বলতে শুরু করলেন-“আমি এক্স জ্বালানীমন্ত্রী বায়জিদ তালুকদার বলছি... হ্যা হ্যা, আমার ঐ ট্রেনেই যাবার কথা, বাট...আমার তো আসতেই আরো চল্লিশ মিনিট লাগবে। হুম...এক কাজ করুন। ট্রেন ডিলে করান। জাস্ট তিরিশ মিনিট লেট করালেই চলবে। উহু,না না, এই ট্রেনেই যাওয়া লাগবে, ইমার্জেন্সি। যা বলছি শুনুন, ট্রেন ডক ইয়ার্ড থেকেই যেনো বের করা না হয়, পাবলিকের সেন্টিমেন্টের কোন ঠিক ঠিকানা নেই। ওকে, রাখছি”।

(২)
আকস্মিক ইন্টারভিউর ডেট পড়ায় অন্য কোনো টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়েই ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট নিতে হলো আরমানকে। এরপর তাড়াহুড়া করে ষ্টেশনে এসে দেখে ট্রেন ছাড়তে দেরী হবে। দুপুর তিনটার ‘গোধুলী’ তিনটা ত্রিশেও এখনো লাইনে এসে পৌছেনি। ডক ইয়ার্ডে নাকি জরুরী মেরামত সারছে। সময়মতো পৌছতে পারবে কিনা সেই টেনশনে আরমান রীতিমত ঘামছে। এদিকে মাইকে তরুণী বকেই চলেছে-“আন্তনগর ঢাকাগামী মহানগর গোধুলী এক্সপ্রেস এখন ডক ইয়ার্ডে আছে, ডক ইয়ার্ডে জরুরী মেরামত শেষে ৫ নম্বর লাইনে দিতে বিলম্ব হবে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত...”। বিরক্ত আরমান অগত্যা বসার জায়গা না পেয়ে পত্রিকা বিছিয়ে মাটিতেই বসে পড়লো।

(৩)
পাশের সিটের লোকটাকে চেনা চেনা লাগছে আরমানের। সম্ভবত বড় কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হবেন। হবেই না বা কেন? ফার্ষ্ট-ক্লাসে কি আর তার মতো বেকাররা চড়ে নাকি?! সেলফোনে কথা বলছে লোকটা-“আরে, ওনাকে বলো বায়জিদ তালুকদার নিজেই এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন”।
হুমম, এ কারণেই চেনা চেনা লাগছিলো ভদ্রলোককে। সাবেক জ্বালানী-মন্ত্রী বায়জিদ তালুকদার। বাহ! আজ তার ভাগ্যটাই ভালো-ভাবছে আরমান।
কল শেষ করে মন্ত্রী সাহেব আরমানের দিকে ফিরে বললেন-“অনেক্ষণ ওয়েট করতে হলো আপনাদেরকে, তাইনা?”। “আপনাকে স্যর ওয়েট করতে হয়নি বুঝি?” বলেই মনে মনে জিভ কাটলো আরমান। কি বলতে কি বলে ফেললো কে জানে। “আরেহ, নাহ। আমি আসতেই তো ট্রেন লাইনে এলো”, বলেই মন্ত্রী লম্বা করে দম নিয়ে আসনে গা এলিয়ে দিলেন।
আরমান ভাবছে, কিছু কিছু মানুষ সত্যিই ভাগ্যবান। দেরী করলেও ফলাফল হাত ফসকায় না।
আরমান কি জানে, আজ তার ইন্টারভিউ মিস হলে তার জন্য পাশের লোকটাই দায়ী থাকবে??!!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৯

সুমাইয়া আলো বলেছেন: darun

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:২০

বাবুলবাদশাগ বলেছেন: ভাল লাগল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.