নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাস্তবতাই সত্য

হাসানুজ্জামান খান (হীরা)

হাসানুজ্জামান খান (হীরা) › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটা কি কোন বিয়ের বাজেট?

১৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:৫৪

ইচ্ছে ছিল অনেক ধুমধাম করে বিয়ে করব, হেলিকোপটার করে বউ নিয়ে আসব, পরিচিত অপরিচিত গণ্য-মান্য সবাইকে দাওয়াত দিব। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করে, কেনা কাটা-র শেষ পর্যায়ে পরলাম বাজেট সংকটে। সেটা ছিল জীবনের প্রথম এবং খুব গুরুত্ব পূর্ণ বাজেট। সেইবার অনেক লজ্জা পেয়েছিলাম, কোনো মতে বন্ধুদের কাছ থেকে কিছু ধার নিয়ে লজ্জাটা ঢেকেছিলাম। এরপর থেকে বাজেট নিয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগে তবে সেই লজ্জা কেটে গেছে আবুল সাহেবের গত অর্থ বছরের বাজেট দেখে।যারা জানেন না তাদের জন্য বলি যে, গত অর্থ বছরের বাজেট বারো মাসের জন্য হলেও ৮ মাসের মাথায় অর্থ ঘাটতি পরে এবং প্রবৃদ্ধির হার যা ধরা হয়েছিল তা উপার্জন করতে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল সরকার। তাই আমি এ কথা বলতে পারি যে গত অর্থ বছরের বাজেট আমার বিবাহ বাজেটের চেয়ে ছিল নিম্ন।এবার আসি ২০১৪/২০১৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রতি বছর বাজেট আসলেই সরকার, বিরোধী দল এবং অর্থনীতি বিদের মধ্যে শুরু হয় কথা এবং বিশ্লেষনের ঝড়। বরাবরের মতই, কে শোনে কার কথা।



অর্থমন্ত্রী আবুল সাহেব নিজেকে একজন উচ্চবিলাসী মানুষ ভাবতে পছন্দ করে, তা তিনি নিজেই অনেকবার স্বীকার করেছেন। তাই তিনি আগামী অর্থ বছরের বাজেট করেছেন সরকারের ব্যয় নির্ভর। কিন্তু এই ব্যয়ের জন্য, আয়ের উৎস খুবই স্বল্প।এই বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭.৩% এবং বাজেটের অংক হচ্ছে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আয়ের উৎস, প্রবৃদ্ধির হার আর বাজেটের অংক হিসাব করেলে যে কেউ বলে দিতে পারবে যে আগামী অর্থবছরের জন্য এই বাজেটে জনগনের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি।

এখানে বলে রাখা ভালো যে আগামী অর্থ বছর হবে, বিশ্বের সকল দেশের কাছে অর্থনৈতিক ভাবে সফল হওয়ার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়া, চীন এবং মদির ভারতের সম্পর্ক বিশাল ভাবে আঘাত হানতে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বিশ্ব অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যে প্রকট তাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।এ অবস্থায় বাংলাদেশে গণবিরোধী সরকার কোনভাবে ৬.৩৯% বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে বলে আমি মনে করিনা। প্রবৃদ্ধির হার লক্ষ্য মাত্রায় পৌছাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে বেসরকারী বিনিয়োগ যা বর্তমানে ২০ শতাংশের একটু বেশি। প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরো প্রায় ৫.৫% বেসরকারী বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে বেব্সায়িদের লাভের পরিমান ১০ লক্ষ টাকার বেশি হলে ৩% হারে কর নির্ধারণ করায়, বিনিয়োগের উৎসাহ আরো কমাবে। অন্য দিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করলে ২ লক্ষ্য ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট এই মুহুর্ত্তের জন্য একটি স্বপ্ন। আগামী অর্থ বছরের জন্য সবোচ্চ ২ লক্ষ্য ১৭ হাজার কোটি টাকা যা সরকার পক্ষ থেকে উপার্জন সম্ভব হলেও হতে পারে বলে আমি মনেকরি । এই বাজেটে সরকার সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু করা। সরকারের এই সিদ্ধন্ত পুরো জাতিকে পদ্মাতেই ডুবাতে পারে। অন্য দিকে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুদ্র্রাস্ফীতি হারের সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যক্তি খাতের করসীমা বাড়ানো উচিত, নয়তো সরকার আরো বেশি বেদেশী লোনের উপরে নির্ভর হয়ে পড়বে । সর্ব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে সরকার বেশি পরিমান লোন নিবে বেসরকারী বাংকগুলো থেকে, যা কিনা দেশের অর্থনীতির ভবিষতের জন্য হবে সবচেয়ে বড় হুমকি। বেসরকারী ব্যংক থেকে লোন নেওয়ার ফলাফল হবে- ভারতীয় সীমান্তে ফালানির মতো দেশের অর্থনীতিকে হত্যা করা। যদি আরো স্পষ্ট করে বলি তাহলে বলতে হয় শেয়ার মার্কেট ধংসের পরে, এই সিদ্ধান্ত হবে ব্যাংকিং সেক্টরকে ধংসের অন্যতম সূচনা। আশা রাখি সরকার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাড়াবে।



অসম্বব কে সম্বব করাই যদি "জলিলের" কাজ হয় তাহলে "আবুল" সাহেব পিছিয়ে থাকবেন কেন? বাজেট পরবর্তী সংবাদ সমেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে আবুল সাহেব বললেন "উনার ইচ্ছা ছিল কিন্তু প্রধান মন্ত্রী চাননি"। বাজেট তৈরী হয় প্রধান মন্ত্রীর ইচ্ছায় আর রাজনৈতিক স্বার্থে, বাজেটে আবুল সাহেবরা দেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন মনে করেননা। অসম্ববকে সম্বব করতে আবুল সাহেব প্রধানমন্ত্রী উপদেশ নিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু আবুল সাহেব কে মনে রাখতে হবে ওনি ১৬ কোটি মানুষের জন্য বাজেট করছে, এটা কোনো বিয়ের বাজেট নয় ।



এইচ, কে হীরা

ব্যাংকার, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।

[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:০২

ঢাকাবাসী বলেছেন: আবুলরা কাউকে কেয়ার করেনা মনে হয়! কমিশন কত আসবে সেই হিসাবটাই বড়!

২| ১৬ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

রাতুলবিডি৫ বলেছেন: সর্ব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে সরকার বেশি পরিমান লোন নিবে বেসরকারী বাংকগুলো থেকে, যা কিনা দেশের অর্থনীতির ভবিষতের জন্য হবে সবচেয়ে বড় হুমকি।

স্পষ্ট করে বলি তাহলে বলতে হয় শেয়ার মার্কেট ধংসের পরে, এই সিদ্ধান্ত হবে ব্যাংকিং সেক্টরকে ধংসের অন্যতম সূচনা।

৩| ১৬ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১১

মদন বলেছেন: সরকার শেয়ার বাজারের টাকা গিলে খেয়েছে। এবার খাবে ব্যাংক। গত টার্ম থেকেই ব্যাংক খাওয়া কর্মসুচী শুরু হয়েছে। এবারে ১৬কলা পূর্ন হবে।

জয়বাংলা।

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৮

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ভাইজান ব্লগে দেখে মোগেম্ব খুশ হউয়া। বাজেট ঘাটতি নিয়ে একটা ভাল লেখা চাই। আমি পড়া-লেখা শুরু করেছিলাম কিন্তু অনেক পরিশ্রম তাই আপাতত বন্ধ রেখেছি।

ব্যংকার ভাইয়ের তো পড়া-লেখার দরকার নাই। ঝট-পট একটা লেখা লিখে ফেলান।


অর্থনিতী নিয়ে নিয়মিত লিখুন। মামা কবে আসতেছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.