নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাস্তবতাই সত্য

হাসানুজ্জামান খান (হীরা)

হাসানুজ্জামান খান (হীরা) › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্ত্রাস বিরোধী আইন নিয়ে সন্ত্রাস....।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২২

শৈশবে পড়েছিলাম, 'অন্ধকার কে মুছে দিতে চাহিও না, তাহলে আলোও মুছে যাবে " । যদি অন্ধকার না থাকে তাহলে আলো কে চেনা যাবে না।তাই বোধহয়, সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবীতে অন্ধকারের অবস্থান চিরদিনের জন্য স্থায়ী হয়েছে। কিন্তু কালক্রমে, এই অন্ধকারের জন্য দিতে হয়েছে অনেক মুল্য যা আজোবধি বর্তমান। সেই অন্ধকার বাংলাদেশের সমাজকে আলোকিত করার জন্য করা হয়েছিল সন্ত্রাস বিরোধী আইন যদিও এই আইন এর আগে গুম, খুন এবং কি জোড়া অথবা সাত খুনের বেলায়ও প্রয়োগ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, এই আইন সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের জানার পরিমান খুবই কম, এতই কম যে অনেকে হয়তো এই আইনের নামও শুনে নাই।





সন্ত্রাস বিরোধী আইনটি সংসদ কতৃক গৃহীত হয় ২৪ শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৯ (বাংলা: ১২ই ফাল্গুন, ১৪১৫) এবং রাষ্টপতির সম্মতি লাভ করে। এটি ২০০৯ সালের ১৬ নং আইন। এই আইনটি প্রথমে ২০১২ সালে এবং সর্বশেষ ১১ ই জুন, ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। এই সংশোধনে বলা হয়েছে যে " মহামান্য আদালত ভিডিও ফুটেজ, ছবি, অডিও , ফেসবুক, টুইটার , স্কাইপি এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের কর্মকান্ড আদালতে প্রমান হিসাবে গ্রহণ করবে। পুলিশের দেওয়া কোনো তথ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রট যে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং কি বিদেশী নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে।" এই আইনের মাধ্যমে অতীতে (২০১৩ সালের পর থেকে ) "মোবাইল কোর্ট" নামে হরতাল কারীদের বিচার ও করা হয়েছিল। এই আইনটি অন্য যে কোনো আইনের চেয়ে শক্তিশালী। এই আইনে বলা আছে যে " অপরাধ ও শাস্তির দায় দায়িত্ব সংক্রান্ত দন্ডবিধির সাধারণ বিধানবলী, যতদুর সম্ভব এই আইনের অনন্য বিধানের সহিদ অসঙ্গতিপূর্ণ না হইলে এই আইনের অধীনে অপরাধ সমূহের ক্ষেত্রে পযোজ্য হইবে। তাছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানবলী কার্যকর থাকিবে।" সমগ্রিক বিষয়টি অল্প কথায় বললে, এই আইনে পুলিশের অনেক ক্ষমতা এবং দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশের পুলিশের পক্ষে ১০ ভাগ পালন করা সম্ভব নয়। এই আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক ক্ষমতা থাকলেও এর প্রয়োগ এখন পযন্ত দেখা যায়নি।



সন্ত্রাস বিরোধী এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের এন্টি-টেররিজম এক্ট এর আমলে করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার টুইন টাওয়ার ধংসের পরে ইউ.এস.প্যাট্রিয়ট এক্ট -২০০১ (US PATRIOT ACT- 2001) নামে কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন এবং পাস করে যা এন্টি-টেররিজম এক্ট –র (ANTI-TERRISM ACT) একটি অংশ। এই আইনটি তে ২৬ শে জুন, ২০০১ প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সই করলে তা আইনে পরিনিত হয়। ইউ এস প্যাট্রিয়ট এক্ট -২০০১ আইনটি করা হয় এফ.এ.টি.এফ (OFAC-OFFICE OF FOREIGN ASSETS CONTROL) এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রেও একটি ভয়ানক আইন যা মানতে হয় সবাইকে। এই আইনে তৈরী হয়েছে অফেক( OFAC-OFFICE OF FOREIGN ASSETS CONTROL) যেখানে ছিল ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নাম (মোদী), নেলসেন মান্ডেলার নাম এবং ওসামা বিন লাদেনের মত শীষ সন্ত্রাসীর নাম। অনেকের কাছে এটি আমেরিকার ব্লাকলিস্ট নামে পরিচিত। এই আইনের ক্ষমতা বলে প্রেসিডেন্ট বা ইউ এস কংগ্রেস বিভিন্ন দেশের (SANCTIONED COUNTRY) উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মানিলন্ডারিং হচ্ছে এই আইনের অন্যতম একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে এই আইনে সবচেয়ে বেশি মুল্য দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরকে যেমন এইচ.এস.বি.সি, সুইস ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কে গুনতে হয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার জরিমানা ।





যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাস বিরোধী আইনটি প্রয়োগ করার স্থান হচ্ছে গোটা পৃথিবী কিন্তু বাংলাদেশে সন্ত্রাস বিরোধী আইন প্রয়োগের জায়গা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। সন্ত্রাস সমাজের একটি জন্মলগ্ন ব্যাধি যা নির্মূল করতে সচ্ছ আইন প্রয়োগ অপরিহার্য। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা পড়াবে কে ? ২০০৯ সালে, যখন এই আইনটি পাস হয় তখন বি এন পি এর ঘোর বিরোধিতা করেছিল। সুশীল সমাজ তেমন জোরেস্বরে কিছু বলেনি শুধু গুটি কয়েক সমলোচনা ছাড়া। আজ আমরা সেই আইনের মুখোমুখি যে আইনের বিষ সম্পর্কে আমাদের বিন্দু মাত্র ধারণা নেই। এই আইনের অপব্যবহারে মাধমে একটি দেশ বা জাতি ধংসের জন্য যথেষ্ঠ। বর্তমান চলমান সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যার কার্যকলাপ কে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের তুলনা করা হবে একটি রাজনতিক ভাবে ভুল সিদ্ধান্ত। এই ভুল সিদ্ধান্ত যদি সঠিকভাবে সংগ্রামী জনতার উপর প্রয়োগ করা হয়, তাহলে গৃহযুদ্ধ অবধারিত আর তাতে আমরা পিছিয়ে পরবো শত বছর, হারাবো পোশাক শিল্প, ভেঙ্গে পরবে অবকাঠামো হয়ে যাবো নিঃস্ব। একটি রাজনৈতক দল যখন মুক্তভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারেনা, শান্তি পূর্ণ সভা করতে পারেনা, মত প্রকাশ করতে পারেনা তাহলে তাদের কি করা উচিত তা আমার জানা নাই তার উপর যদি সাধারণ নিরাপরাধ মানুষ মারার দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় তাদের উপর। দায় চাপানো একটি সহজ কাজ যা সবসময় সরকারী দল বিরোধী দলের উপরে চাপিয়ে দিয়ে আসে। কিন্তু কখনো জানা যায় না কে আছে এই নিষ্ঠুরতার পিছনে, কে পুলিশের সামনে পেট্রোল বোমা মারছে আর সব হারানো পরিবার গুলো কিভাবে জীবন-যাপন করছে? যদি আমরা জানতে না পারি কে বা কারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তাহলে সরকার কার উপর এই আইন প্রয়োগ করবে, বিরোধী দলের উপর? আমাদের মনে রাখতে হবে, বিরোধী দল গণতন্ত্রের একটি সর্ববৃহৎ অংশ যাদের উপর চোখ বন্ধ করে সন্ত্রাসী আইন প্রয়োগ করাটা হবে দেশের জন্য এবং ভবিষ্যত বিরোধী দলের জন্য দুঃসংবাদ তাই সন্ত্রাস বিরোধী আইন নিয়ে সন্ত্রাসী না করাই সবার জন্য শ্রেয়।ধন্যবাদ



লেখক : এইচ, কে হীরা (একজন সচেতন নাগরিক )

নিউ ইয়র্ক থেকে

http://www.facebook.com/HKHeraforpeople

[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


শৈশবে মাস্টার ডিগ্রি থেকে পড়ালেখা শুরু করেছিেলেন?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২১

হাসানুজ্জামান খান (হীরা) বলেছেন: Yes. HOPE YOU LIKE MY ANSWER.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.